Recent Tube

আদর্শচ্যূত আলেম বয়সে মুরব্বী হলেও তার আনুগত্য করা যাবেনা। -ইবনে যুবাইর ।

 আদর্শচ্যূত আলেম বয়সে মুরব্বী হলেও তার,আনুগত্য করা যাবেনা


   কিছু দিন আগে পদত্যাগ  করা হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির ও বাবুনগর মাদ্রাসার পরিচালক বর্ষীয়া আলেম আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, “আমাকে মুরব্বী মানার দরকার নাই। আকাবির বলারও দরকার নাই। তোমরা সালফে সালেহীনের নীতি-আদর্শ অধ্যয়ন করো। দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পড়ো। হযরত মাওলানা কাসেমী নানুতুভীর উসূল তথা নীতি-আদর্শ কী ছিল, তা অধ্যয়ন করো। হযরত মাওলানা কাসেম নানুতুভী ও মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী (রাহ.)এর জীবনী পড়ো। তাদের চিন্তাধারা মুতাআলা করো”।

জনাব বাবু নগরীর নিকট প্রশ্ন হল, মাওলানা কাসিম নানুতুভী যদি ইসলামী আন্দোলনের কথা তথা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ থেকে বিমুখ থাকতে নির্দেশ করেন,তারপরও কি তার আনুগত্য করা যাবে?
দেওবন্দ যে ৮ টি মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় তার মধ্যে একটি মূলনীতিতেও ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মানে কথা বলা হয়নি।
 আপনার বক্তব্যের মধ্য থেকে আপনার নিকট জিঞ্জাসা যে,কুরআন মাজীদ থেকে ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মানের আয়াতগুলো কি রহিত করা হয়েছে যে,যার কারণে আপনারা ইসলামী আন্দোলন করছেন না?
 

এরপর তরুল আলেমদের উদ্দেশ্যে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, “যদি তাঁদের নীতি-আদর্শের সাথে আমার কথার মিল পাও, তাহলে আমাকে অনুসরণ করবে। আর যদি মিল খুঁজে না পাও, তাহলে আমাকে প্রত্যাখ্যান করবে”।

জনাব বাবু নগরী কোরআন হাদিসেরর নীতি আদর্শের দিকে না গিয়ে বরং বলেছেন দেওবন্দের নীতি আদর্শ খুঁজে দেখতে।অথচ,কুরআন মাজীদের ভাষ্যমতে, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের আনুগত্য শর্তহীন।উলিল আমর তথা দায়িত্বপ্রাপ্তদের আনুগত্য শর্তসাপেক্ষ।
আর যদি কোন মত বিরোধের সৃষ্টি হয় তবে কুরআন সুন্নাহর দিকে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, “আমাদের পূর্বসুরী হক্কানী উলামায়ে কেরামের উসূলের সাথে যদি মিল থাকে,আমার চেয়ে কমবয়সী আলেমের কথাও আমি মেনে চলতে দ্বিধা করবো না। আর পূর্বসুরী হক্কানী আলেমদের নীতি-আদর্শের সাথে মিল না থাকলে আলেম বেশী বয়সের মুরুব্বী হলেও তার আনুগত্য করা কখনো জায়েয হবে না। এটাই আমাদের আকাবিরগণের নীতি।

এখানেও তিনি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উপরের কথা পূণরাবৃত্তি করেছেন।দেওবন্দের পূর্বপূরুষগণ যা বলেছেন তাকেই দলিল হিসাবে গ্রহণ করা ছাড়া যেন দিত্বীয় কোন রাস্তা তাদের সামনে আর খোলা নেই;যা সরাসরি শয়িয়তের নীতি বিরুদ্ধ কিনা সেই প্রশ্নও জনাবের নিকট রয়ে যায়?

আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী আরো বলেন, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, ভুল থেকে ফিরে না আসলে অচিরেই কওমী ও সরকারী মাদরাসার পার্থক্য উঠে যাবে। প্রকৃত ইলম নিঃশ্বেষ হয়ে রসমী তথা আনুষ্ঠানিক ইলমের পরিবেশ তৈরী হবে। 

জনাবের নিকট দিত্বীয় জিঞ্জাসা হল,আপনার কথায়,আলিয়া  সরকারী মাদরাসা।তাই সেখানে প্রকৃত ইলম শিক্ষা দেয়া হয়না।প্রকৃত ইলম বলতে কি বোঝায়?
প্রকৃত ইলম বলতে  দ্বীন বিমুখ কিনা সেই প্রশ্নটিও কিন্তু রয়ে যায়?

তারপর তিনি বলেন,ঈমানী জযবাহ খতম হয়ে দুনিয়াবি চিন্তা গ্রাস করবে। শাসকদের সাথে ঘনিষ্ঠ সখ্যতা তৈরি থেকে এ কারণেই আমাদের পূর্বসুরী আকাবিরগণ দূরে থাকতেন। কারণ, এর পরিণতি খুবই বিষাক্ত, খুবই ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, এটা তো হাদীসেও আছে-
وعن ابن عباس رضي الله عنهما ، قال : قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم ” إن أناسا من أمتي سيتفقهون في الدين ويقرءون القرآن ، ويقولون : نأتي الأمراء فنصيب من دنياهم ونعتزلهم بديننا . ولا يكون ذلك ، كما لا يجتنى من القتاد إلا الشوك ، كذلك لا يجتنى من قربهم إلا – قال محمد بن الصباح : كأنه يعني – الخطايا “. رواه ابن ماجه .
অর্থাৎ- হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের একদল লোক দ্বীনি ইলম অর্জন করবে। কুরআন তিলাওয়াত করবে, আর বলবে- আমরা তো শাসকদের দরবারে যাই আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য। কিন্তু আমরা দ্বীনকে হেফাজত করি (আদর্শ ঠিক রাখি)। এটা কখনো সম্ভব নয়। যেমন- কাঁটাযুক্ত গাছ থেকে কাঁটা ছাড়া অন্যকিছু আশা করা যায় না। একইভাবে শাসকদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দ্বারা আল্লাহর নাফরমানি অর্জন ছাড়া আর কিছুই আশা করা যায় না”। (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

Post a Comment

0 Comments