Recent Tube

শেষ অবদি নাস্তিক্যবাদী শহরিয়ার কবিরের সাথে হেরে গেলেন এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী। ইবনে যুবাইর।

 
 শেষ অবদি নাস্তিক্যবাদী শহরিয়ার কবিরের সাথে হেরে গেলেন এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী


এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী একজন অরাজনৈতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব।ভাস্কর্য ইস্যুতে তিনি যে বিরোধীতা করেছেন তা ইসলামী রাজনৈতিক কারণে নয়,বরং ইসলামের মধ্য থেকে অরাজনৈতিকভাবে করেছেন।

 আর হেফাজত থেকে যারা ভাস্কর্যের বিরোধীতা করেছেন তারা রাজনৈতিক ভাবেই করেছেন।তিনি উদাহারণ টেনেছেন,খেলাফতে মজলিসের কথা দিয়ে।

 কাদিয়ানি বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারি হিসাবে তিনি দুই জন বিদগ্ধ আলিমের নাম উল্লেখ করেছেন। এদের একজন হলেন মাওলানা আব্বাসীর উস্তাদ মাওলানা তাকি উসমানী।শাহরিয়ার কবির প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন,কাদিয়ানি বিরোধী আন্দোলন অংশ নেয়ার দরুন মাওলানা  মওদূদীকে ফাঁসির আদেশ দেয় পাকিস্তান আদালত। তার কথায় কাদিয়ানিদের কাফির আখ্যা দেয়া-এটা মৌল্লাদের ইসলাম নিয়ে অপব্যাখ্যা বটে।

 আব্বাসী সাব খুব সহজ এবং সরল ভাষায় জবাব দেন।বলেন,মাওলানা মওদূদী যেহতু(ইসলামী) রাজনৈতিক নেতা ছিলেন সেহেতু তাঁর সাথে পাকিস্তান সরকারের রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত আক্রোস থাকতেই পারে।যার কারণে সরকারি আদালত তাঁকে ফাঁসির আদেশ দেয়। 
শাহরিয়ির কবির ইসলমকে জঙ্গি ধর্ম বানানোর সব রকম অপচেষ্টা করেছেন এবং আব্বাসী সাব খুব উপযুক্ত ভাষায় এবং যুক্তিযুক্ত উত্তর দিয়েছেন। 

  জ্ঞানী ব্যক্তির  মূর্খ পন্ডিতের অবস্হা হয় বড় করুন ও অসহয়।যেমনটা শাহরিয়ার কবিরের অসহয়ত্ব দেখা গেছে আব্বাসীর সামনে।আমরা জানি যে,ইসলামী চিন্তাবিদদের সামনে এসব কথিত বুদ্ধিজীবিগণ চিরদিন অসহয় থাকবে।যার কারণে আলিমদেরকে টকশোতে নেয়া হয় না।
 জ্ঞান চর্চায় গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে মহান আল্লাহ অজ্ঞতাকে অন্ধকারের সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيْرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّوْرُ- 

   ‘বল, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান অথবা অন্ধকার ও আলো কি এক?’ (রা‘দ ১৬) এ আয়াত থেকে বুঝা যায় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান ব্যক্তির মধ্যে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি জ্ঞানী ও জ্ঞানহীন ব্যক্তির মধ্যেও রয়েছে ব্যাপক তফাৎ। 

   যা হোক,মূল কথা হল,মাওলনা মওদূদী(রহ.) এর  মতার্দশের সাথে আব্বাসী সাব ও তাঁর অনুসারীগণ একমত নন,একমত নন কৌমি আলিমগণও।

প্রথমত:  কথা হল,মাওলনা মওদূদী(রহ.)-এর নিজেস্ব কোন মতাদর্শ নেই।তিনি কুরআন হাদিসের আলোকে একটি ইসলামী রাজনৈতিক দল গঠন করে সে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।এই দলটি চাই জমিনে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী করতে।

দিত্বীয় কথা হল,মতপার্থক্য সাহাবিদের মধ্যেও ছিল,কিয়ামত পর্যন্ত এই ধারা মুসলিম জাতির মধ্যেও থাকবে এটায় নিয়ম।কিন্তু ইসলামের মৌলিক বিষয়ে মতপার্থক্য থাকার কথা সাহাবিদের আমলে ছিল না,এখনো থাকার কথা নয়,সেই সুযোগও নেই।

জমিনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করা ফরজ।এই ফরজ কাজকে পাশ কাটিয়ে যাবার যেমন কোন সুযোগ নেই তেমনি অস্বীকার করারও জো নেই।অস্বীকারকারীগণ অবশ্যই কাফির বলে গণ্য হবে।

আমার জানামতে, মাওলানা তাকি উসমানী সাহেব এবং আব্বাসী সাহেব ও তার ভক্ত  অনুসারীগণের রাজনৈতিক কোন সংগঠন নেই।কিন্তু কেন নেই,এই না থাকার ব্যখ্যা কি হবে?
 
তৃতীয়ত, শাহরিয়ার কবির যখন ইসলামকে জঙ্গি ধর্ম হিসাবে চিত্রিত করতে এবং আলেম ওলামদের সন্ত্রাসী রং লাগাতে জিহাদ করছিল তখন দুনিয়ার তাবৎ কাফির মুশরিক গোষ্ঠীর অবিভাবক হিসাবে তা করছিল,কাউকে ভাগ করেনি এবং দুনিয়ার তাবৎ কাফির-মুশরিক ও নাস্তিক,রাম-বামেরা কায়মনে এই নেতার সফলা কামনা করছিল।

অপরদিকে আব্বাসী যখন এই নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষী এবং ব্রাহ্মণ্যবাদীদের পা চাটা গোলাম, দেশ জাতির শত্রুর সাথে বাকযুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন, তখন আমরাসহ তাবৎ দুনিয়ার  ইসলাম প্রিয় মানুষগুলো যে যেখান থেকে এই অনুষ্ঠান দেখছিলেন, সকলেই কায়মনে রবের দররাবের আব্বাসী সাবের সফলতা ও বিজয় কামনা করছিলেন। 
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের সাথে লক্ষ্য করতে হল যে,আব্বাসী সাব উদার মনোভাবের পরিবর্তে  সংকীর্ণমনতার পরিচয় বহন করলেন। ভাগ করে দিলেন, কে জামায়াতী,কে খেলাফতে মজলিস,কে হেফাজতী ইত্যাদি নামে।ইসলামিস্টদের পরাজয়টা ঠিক এখানেই।

শেষ অবদি কাফির-মুশরিক, নাস্তিক্যবাদী ও ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতের তাবেদার শাহরিয়ার কবিরদের জয় হল,নৈতিকতার প্রশ্নে হেরে গেল ইসলামিস্টরা।
------------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments