Recent Tube

ভাস্কর্য ও চেতনার সংরক্ষণ। আব্দুল্লাহ আরমান।

             ভাস্কর্য ও চেতনার সংরক্ষণ। 

     শেখ মুজিবুর রহমান; একটি নাম,একটি ইতিহাস! যার নাম ব্যতিরেকে  বাংলাদেশের ইতিহাস লিখন ও পঠন আদৌ  সম্ভব নয়! এদেশে তাঁর ব্যক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব  এতোটাই বেশি যে ভাস্কর্যের নান্দনিকতার নামে এক টুকরো পাথর দিয়ে তাঁর নাম ও চেতনা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা নিষ্প্রয়োজন। কারণ তাঁর ব্যক্তিত্ব ও অর্জন নিথর পাথর খন্ডের বহু উর্ধ্বে!!

      তিনি ছাড়াও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা, মাওলানা ভাসানী,মেজর জিয়া সবাই এদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ইতিহাসের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। তারা প্রত্যেকেই বাঙলার রাজনৈতিক অঙ্গনের এক একটি নক্ষত্রের ন্যায়। মানুষের হৃদয়ে তাঁদের অবস্থান তাঁদের কর্ম ও অবদানের মাধ্যমেই, ভাস্কর্যের মাধ্যমে নয়!

      পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তির নাম মুহাম্মাদ (সাঃ)। প্রায় ১৫০০ বছর যাবৎ  প্রতিটি মুহূর্তে কারও না কারও মুখে তার নাম উচ্চারিত হয়ে আসছে বিরতিহীনভাবে!! বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলিম তাঁর ঈমানী চেতনার দাবীদার, অথচ এই চেতনা জাগ্রত রাখতে তাঁর কোন মূর্তি/ভাস্কর্য দূরে থাক একটি অস্পষ্ট  ছবিও নেই! ছবি-মূর্তি ছাড়াই তাঁর জন্য আমাদের উপচে পড়া ভালোবাসা হৃদয়ে ধারণ করি, এটা কিভাবে সম্ভব!?
হ্যা,সম্ভব! কারণ ব্যক্তি ও তাঁর লালিত চেতনা বেঁচে থাকে তাঁর কর্মে এবং চরিত্রে, কোনো জড় পদার্থের প্রতিকৃতিতে নয়!

      বিশ্বের শত শত মনিষী,বিজ্ঞানী,বীর সেনানায়ক, সমাজসেবক,রাষ্ট্রনায়ক,কবি-সাহিত্যিক সবাইকে আমরা তাঁদের কর্মের মাধ্যমেই চিনি,স্মরণ করি। অবশ্য তাদের অনেকেরই ছবি ও ভাস্কর্য আছে। কিন্তু তাদেঁর অর্জন,অবদান ও কর্মটুকু বাদ দিলে তাদের সেই ভাস্কর্য আমাদের নিকট পাথরের টুকরো ছাড়া আর কিছুই নয়। শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাস্কর্য তৈরীর আগেও তাঁকে মানুষ ভালোবেসেছে,শ্রদ্ধা করেছে,হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছে,কারণ তিনি কোটি হৃদয়ে বেঁচে আছেন তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সংগ্রামে।

         শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী পড়ে সহজেই উপলব্ধি করা যায় তিনি নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন! তাঁর পূর্বপুরুষ এদেশে ইসলাম প্রচারকদের প্রাণপুরুষদের অন্যতম বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। তাই তিনি আজ বেঁচে থাকলে একজন গর্বিত মুসলিম হিসেবে নিজের ভাস্কর্য গড়ার অনুমতি দিতেন একথা অন্তত আমি বিশ্বাস করি না!

       মূর্তি ও ভাস্কর্য একে অপরের প্রতিশব্দ মাত্র। উপাসনা করা বা না করার দিক থেকে পরিভাষাগত যে পার্থক্য রয়েছে তা আমাদের নিজেদের তৈরী, শরীয়তে এর কোনো অস্তিত্বই নেই। উপরন্তু মূর্তির শুরুই হয়েছে (ভাস্কর্যের ন্যায়) মহান ব্যক্তিদের স্মারক হিসেবে,পরবর্তীতে তা উপাস্যে পরিণত হয়েছে। সুতরাং যারা মূর্তি ও ভাস্কর্যের পৃথক সংঙ্গা দিচ্ছেন তাদের যে ইসলামি মূল্যবোধ ধ্বংসের  অসদুদ্দেশ্য আছে তা সহজেই অনুমেয়।

Abdullah Arman

Post a Comment

0 Comments