Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৬৩ নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

   

     
                      বিতি কিচ্ছা,
                         পর্ব-৬৩;

বিজয় অতি নিকটবর্তী
--------------------------------- 
       মোখলেস লোকটির সাথে সখ্যতা গড়ার সাধ আমার নতুন নয়। কারণ তার কাছে গেলে আর নাহোক নিজের চেহারাটা অন্তত দেখে নেয়া যায়। চেহারায় কালিমা থাকলে তা যথারীতি সারিয়ে নেয়া যায়, এলোকেশ বিন্যাস করা যায়, পাশাপাশি মন হয়ে যায় সংশয়মুক্ত ও ফুরফুরে। কারণ সে তো একজন আয়নাওয়ালা। কিন্তু দিনকে দিন আমার মত অনেকেই এখন মোখলেস এই আয়নাওয়ালার কাছে ভীড় জমাতে শুরু করছে কিনা - তাই আগের মত আর তার ধার ঘেষা সহজ হয়ে উটে না। দেখতে দেখতে আয়নাওয়ালার চারিপাশ হয়ে উটলো রীতিমত একটা ব্যস্ততম এলাকা। এদিকে দুর পাড়ায়ও আরো অনেক আয়নাওয়ালার বাস। তাদের ধারে ওতোটা ভীড় হয় না : যতটা ভীড় হয় এই মোখলেসের চারপাশে। এতএব ব্যবাসায়ীক মন্দাভাব অবলোকনে প্রবীন সকল আয়নার কারিগররা দারুন হতাস।

          তাদের সীমানায় জনতার পদচারনা সর্বকালেই তেমন ছিলনা ,তার উপর ভাটার টানে তা একদম বেমানান ঠেকছে বৈ কি। তাই নিয়ে কোন কোন আয়নাওয়ালার মাথাব্যথা এতোটা চরমে পৌছেছে যে তারা রীতিমত চেঁচামেচি, চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিয়েছে। 

        জনসমাগমের মাধ্যমে অযাচিতভাবে প্রাপ্ত হাদিয়া তোহফায় তথা হালুয়া-রুটিতে কিছু কিছু আয়নাওয়ালাদের দিনকাল বেশ ভালই যাচ্ছিল। কিন্তু কোথাকার কোন আনখোরা নতুন আয়নাওয়ালার যন্ত্রনায় বুঝি আর পারা গেল না। নতুন এই আয়নাওয়ালা অনেকের কাছে নতুন হলেও : আমার সাথে তার সখ্যতা যেন অতি পুরোনো। কেন জানি হৃদয়ের গহীনে সম্মানের একটি  আসন তার জন্যই সংরক্ষিত হয়ে রয়ে  গিয়েছে সেই কবে আমি নিজেও জানিনা। তবে ইদানীং বিরুদ্ধবাদী ও হিংসুটে প্রতিপক্ষের প্রচারে নাকি অপপ্রচারে এই নতুন মোখলেস আয়নাওয়ালার প্রতি ঝোঁক আরোও বেড়ে গেল মনে হচ্ছে।

         সমাজে টাকা আর থুথির ধাপটে মর্যাদা  তৈরীর হিড়িক নতুন কিছু নয়। শুধুমাত্র টাকা দিয়ে যা হয় না, তা শুধুমাত্র থুথির ধাপটেই সম্ভব। আর টাকা আর থুথি দুটোই যার আয়ত্বে সে কোন দুঃখে ধরাকে সরা জ্ঞান করবে না? তবে আচমকা যদি বেসুরো বৃষ্টির বদৌলতে জনপ্রিয়তা প্রমানে অসুবিধা হয়েই যায় তবে পরবর্তী  পদক্ষেপ হিসাবে কিছু একটা করার জন্য মাথাটা উসখুস করবে, এটাই স্বাভাবিক। এতএব কেউ কেউ নানান বাহারী ঢঙে কতযে কৌশল আঁটছেন জনপ্রিয়তা প্রমান করতে, তার সুমার নাই। যেহেতু বাজার বাজিমাতই সকল আয়নাওয়ালার উদ্দেশ্য,  সেহেতু এখলাস মোখলেস এখানে পুরোটাই অনুপস্থিত। ভক্ত বৃদ্ধি, আর ভক্তি ভড়ং প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতায় আজ এইসব আয়নার দোকানদারা খুব পটু। এই সময়ে মোখলেস আয়নাওয়ালা বিপদের ঘনঘটা নিয়েই কাল অতিবাহিত করতে হবে সন্দেহ নাই।

        সেই বিপদই আজ দশ দিক থেকে ঝাপিয়ে পড়ে খালেস, মেখলেসদের ঈমানের দৃঢ়তার পরীক্ষা হিসাবে আভির্ভূত হল। কিন্ত এতে মোখলেসরা ঘাবড়ে যায়নি, বরং খুশি হয় এজন্য যে পরীক্ষা এলো, মানে পাশের সময় বা বিজয় অতি নিকটবর্তী। যে সব আয়নাওয়ালাদের বিপদসংকুল পথ পাড়ি দেবার প্রয়োজন পড়ে না, বরং পায় সার্বিক পৃষ্টপোষকতা তাদের জন্য বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ নয় কি?
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক, কলামিস্ট রম্য লেখক কবিতা ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments