Recent Tube

তাহ’লে দাজ্জাল কি পূর্ব থেকেই জীবিত না কি শেষ যামানায় জন্ম লাভ করবে❓






 
তাহ’লে দাজ্জাল কি পূর্ব থেকেই জীবিত না কি শেষ যামানায় জন্ম লাভ করবে❓
--------------------------------- 

 প্রশ্ন :
 ইবনু ছাইয়াদকে রাসূল (ছাঃ) দাজ্জাল বলে সন্দেহ করার কারণ কি ❓
 ""তাহ’লে দাজ্জাল কি পূর্ব থেকেই জীবিত না কি শেষ যামানায় জন্ম লাভ করবে❓

 উত্তর :
  দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং   বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার   ত্রিশজন সাথী সাগরে পথ হারিয়ে এক দ্বীপে   গিয়ে ওঠেন। 
 সেখানে পানির খোঁজে বের হ’লে একজন   ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়।
 যে তার চুল টেনে নিয়ে চলছিল।
 অতঃপর তিনি দাজ্জালের কাহিনী বর্ণনা   করেন।

       যেখানে দাজ্জালের বক্তব্য এসেছে এভাবে যে, যদি আমাকে এখান থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহ’লে আমি পুরা পৃথিবী ধ্বংস করে দেব মদীনা ব্যতীত। 
অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) লোকদের মাঝে নিয়ে এলেন এবং সে তাদেরকে পূর্ণ বৃত্তান্ত বর্ণনা করে শুনাল।
 রাসূল (ছাঃ) বললেন, এ শহরটি হ’ল ত্বাইবাহ (মদীনা)। 
আর সে হ’ল দাজ্জাল’ 
(মুসলিম হা/২৯৪২ (১২১)। 

    অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে’
 (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)।

    অপর বর্ণনায় ফাতেমা বিনতে ক্বায়েস (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা) বলেন, 
একদিন রাসূল (ছাঃ) এশার ছালাতে দেরীতে  এলেন ও বললেন, 
তামীম দারী আমাকে এমন কিছু ঘটনা বলেছে, যা আমাকে আটকে রেখেছিল।
 সে বলল, সাগরের কোন এক দ্বীপে তার সাথে এক নারীর সাক্ষাৎ হয়। 
যার মাথার চুল এত লম্বা যে, তা যমীনে হিঁচড়িয়ে চলে। 
 তামীম দারী তাকে বলল, তুমি কে *?* সে বলল, আমি গুপ্তচর।
 অতঃপর সে বলল, ঐ প্রাসাদে প্রবেশ করুন।
 তখন আমি সেখানে গেলাম ও লোহার শিকলে বাঁধা লম্বা চুলবিশিষ্ট এক ব্যক্তিকে দেখলাম।
 সে আসমান যমীনের মাঝখানে ছটফট করছে।
 আমি জিজ্ঞেস করলাম, 
তুমি কে ?
 সে বলল, আমি দাজ্জাল।
 সে বলল, নিরক্ষরদের নবীর আবির্ভাব ঘটেছে কি ?
 আমি বললাম, হ্যাঁ । 
সে বলল, লোকেরা তাঁকে মান্য করছে নাকি অমান্য করছে ?
 আমি বললাম, মান্য করছে।
 সে বলল, এটাই তাদের জন্য কল্যাণকর’ 
(আবুদাঊদ হা/৪৩২৫; মিশকাত হা/৫৪৮৪)।

    উক্ত হাদীছদ্বয়ে বুঝা যায় যে,
 দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে।
 এক্ষণে ইবনু ছাইয়াদকে দাজ্জাল হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবীগণের সন্দেহের কারণ হ’ল, 
 রাসূল (ছাঃ)-কে দাজ্জালের আগমনের সময় সম্পর্কে অবহিত করা হয়নি। 
সেকারণ তাঁর ও ছাহাবীগণের মনে সন্দেহ ছিল। 

  তবে এই সন্দেহ দূর হয়ে যায় যখন ইবনু ছাইয়াদ হজ্জ সম্পাদন করে। 
যেমন হাদীছে এসেছে যে, 
হজ্জের সফরে ইবনু ছাইয়াদ আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-কে আপ্যায়ন করতে চাইলে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। 
 
      এই অবস্থা দেখে ইবনু ছাইয়াদ বলল,
 হে আবু সাঈদ! লোকেরা আমার ব্যাপারে যেসব কথা বলে তাতে আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি একটি রশি নিয়ে সেটা গাছে লটকিয়ে ফাঁসি দিয়ে মরে যাই এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাই।

 তারপর সে বলল, 
 হে আবু সাঈদ! তোমাদের আনছারদের নিকট রাসূল (ছাঃ)-এর কোন হাদীছ গোপন নেই। 
তুমি কি রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ সম্বন্ধে সবচেয়ে বেশী জ্ঞাত নও ?
 রাসূল (ছাঃ) কি বলেননি যে,
 সে ব্যক্তি (দাজ্জাল) কাফির হবে ?
 অথচ আমি মুসলিম। 
তিনি কি বলেননি যে, দাজ্জাল নিঃসন্তান হবে ?
 অথচ মদীনায় আমি আমার সন্তান রেখে এসেছি। 

  রাসূল (সাঃ) কি বলেননি যে, দাজ্জাল মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না ?
 অথচ আমি মদীনা থেকে এসেছি। 
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তার কথায় আমি তাকে বিশ্বাস করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। 

   অতঃপর ইবনু ছাইয়াদ বলল, আল্লাহর কসম! আমি তাকে (দাজ্জালকে) চিনি, তার জন্মস্থান চিনি এবং এখন সে কোথায় আছে, তাও আমি জানি। 
 এ কথা শুনে আমি বললাম, তোমার সারাটা দিন ধ্বংস হোক’ (মুসলিম হা/২৯২৭ (৯১)।

  উক্ত হাদীছের শেষাংশে ইবনু ছাইয়াদ সন্দেহের তীর ছুঁড়েছে।
 সেজন্য হাফেয ইবনু হাজার (রহঃ) এই সংক্রান্ত হাদীছগুলির সমন্বয় করে বলেন, 
তামীম দারী (রাঃ) যে দাজ্জালকে দেখে এসেছেন সে-ই প্রকৃত দাজ্জাল।
 আর শয়তান ইবনু ছাইয়াদের রূপ ধারণ করে দাজ্জালী কর্মকান্ড ঘটিয়ে রাসূল (সাঃ) সহ ছাহাবায়ে কেরামকে সন্দেহে নিক্ষেপ করেতে চেয়েছিল।

  সেজন্য সে হাররার দিন ইছফাহানের দিকে রওয়ানা দিয়ে হারিয়ে যায়। 
যাকে পরবর্তীতে কোথাও দেখা যায়নি
 (ফাৎহুল বারী ১৩/৩৮০)।

 ‘হাররার দিন’ অর্থ ইয়াযীদের সেনাবাহিনী কর্তৃক মদীনা অবরোধের দিন।

     উল্লেখ্য যে, বর্তমান যুগে কোন কোন ব্যক্তি বা দল ইহূদী-খৃষ্টান জগৎ, এমনকি যালেম শাসক, অনৈসলামী মিডিয়া প্রভৃতিকে ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে থাকে।
 ইসলামী শরী‘আতে যার কোন ভিত্তি নেই।

Post a Comment

0 Comments