Recent Tube

খেলা হচ্ছে তিউনিসিয়ায় কিন্তু মূল টিম কাতার, তুরস্ক বনাম আরব আমিরাত, ফ্রান্স! কুতুব শাহ





 খেলা হচ্ছে তিউনিসিয়ায় কিন্তু মূল টিম কাতা, তুরস্ক বনাম আরব আমিরাত,ফ্রান্স!

 তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত, পার্লামেন্ট স্থগিত, রশিদ ঘানুশীর পরিণতি কি মুরসীর মত হবে? 

   এই প্রশ্নের জবাব অগ্রীম দেয়া মুস্কিল। তবে ঘটনা প্রবাহ সেদিকে মোড় নিচ্ছে! গত নির্বাচনে তিউনিশিয়ার ইসলামপন্থী দল আন নাহদা সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আাসন পেয়েছিল। দলটি নির্বাচনে ২১৭টি আসনের মধ্যে ৫২টিতে জয়লাভ করে। উল্লেখ্য, এই দলকে মুসলিম ব্রাদারহুডের তিউনিসিয়ার শাখাও বলা হয়ে থাকে। তুরস্কে ঘনিষ্ট বন্ধু ঘানুশী সরকার গতকাল ক্ষমতাচ্যুত হল।
---------------
 ২০১৩ সালে মিশরে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থাও বেকারত্ব বৃদ্ধিকে পূজি করে মুরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাকে উৎখাত করেছিল। ঠিক অনুরুপ বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে তিউনিসিয়ায়। এই অজুহাতে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ পার্লামেন্ট স্থগিত করে ক্ষমতা দখল করেন। বিশ্লেষকদের মতে এর পিছনের আসল প্লেয়ার ফ্রান্স, আমিরাত জোট। কারণ, তিউনিসিয়ায় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আন নাহদা পার্টিও ব্রাদারহুডের আদর্শিক জায়গায় মিল রেখে চলে। লিবিয়া ও সুদানের আসন্ন সম্ভাব্য নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুডকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে তিউনিসিয়ায় ক্ষমতার পালাবদল জরুরি। তা না হলে তিউনিসিয়ার সাহায্যে লিবিয়া ও সুদানের আসন্ন নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুডের নির্বাচনে ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। তাই আঞ্চলিক রাজনৈতিক খেলার মূল টিম তুরস্ক বনাম অন্যরা।

   এই পরিস্থিতি তৈরীর মাধ্যমে আগামীর লিবিয়া থেকে তুরস্ক-কাতার বলয়কে দূরে রাখাই মেইন। প্রায় আট মাস ধরে লিবিয়ায় উভয় পক্ষ শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধকে বিদায় বলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যুদ্ধবিহীন মীমাংসায় হাফতারের আগ্রহ নেই এবং ভবিষ্যৎও নেই। তাই লিবিয়ায় যুদ্ধকে বাঁচিয়ে রাখতে হাফতার সবকিছু করে যাচ্ছে। আর হাফতারকে উসকে দিচ্ছে আমিরাত, ফ্রান্স আর মিসর। লিবিয়া প্রশ্নে প্রতিবেশী আলজেরিয়া তার নিরপেক্ষতা অনেকটা মজবুত করলেও তিউনিসিয়া বিশেষ করে আন নাহদা ক্রমে লিবিয়ার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। রশিদ আল ঘানুশি ত্রিপোলির তুরস্ক-কাতার সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে ‘সমর্থন ঘোষণা’ করেছে। এ অবস্থায় তিউনিসিয়ায় ক্ষমতা থেকে আন নাহদাকে উৎখাত না করলে আগামীর লিবিয়ায় আমিরাত-ফ্রান্স বলয়ের স্বার্থ বৃহৎ সংকটে পড়বে। এটাই আপাতত খেলার মূল গ্রাউন্ড। 

   .... ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হল, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয়না। যেই অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা ও বেকারত্ব বৃদ্ধির প্লটে মুরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল  জনতার একটি অংশ বর্তমানে এরচাইতেও অধিক খারাপ অবস্থা বিরাজমান থাকা সত্বেও এখন কেউই রাজপথে নেমে "উহ" শব্দটুকুও করার অধিকার নেই! অতচ, মুরসী তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদে বুকে গুলি চালান নাই। আর এখন?

     অনুরুপ, তিউনিশিয়ায়ও আজকে যারা বিক্ষোভ করছে তারা হয়ত মিশরের জনগনের মত একদিন টু শব্দ করার অধিকারও হারাবে যখন সিসির মত কেউ মসনদে বসবে। জ্ঞান ও দূরদর্শিতার কোনো বিকল্প নাই। গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করতে নেই, তাহলে কথা বলার অধিকারও হারাতে হয়। ফাঁকে নিজ দেশের পরিস্থিতিও চিন্তা করতে পারেন।

     ✍️ দেখা যাক খেলার ফলাফল কি হয়। কাতার, তুরস্ক এবং আমিরাত, ফ্রান্স টিমের মধ্যে যারা জিতবে তারাই আগামীর মধ্যপ্রাচ্যের মূল নায়ক হবে।
--------------------------------- 

Post a Comment

0 Comments