Recent Tube

আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে জুমআ'র খুতবার ভূমিকা অপরিসীম---- মাহিম চৌধুরী।

 


আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে জুমআ'র খুতবার ভূমিকা অপরিসীম-।

জাতিয় ইমাম সমিতির মাধ্যমে খুতবা তৈরী করে  তার অনুলিপি পৌছে দিতে পারেন স্থানীয় পর্যায়ে।
খুতবায় জাতিয় সমস্যার কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সমাধান দেবেন খতিবগণ । 
সূদ,ঘোষ,দূর্ণীতি,হত্যা,ধর্ষণ,ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি দমনে কোরআন সুন্নাহ আলোকে পথ এবং পদ্ধতি বাতলে দিতে পারেন।================♦===============
খুতবা জুমআ'র দিনের একটি বিশেষ আমল যা বক্তা (খতিব) এবং শ্রোতা উভয়ের জন্যই ওয়াজিব
হুজুর (স) মদীনায় হিজরত করে কয়েকদিন কুবা নামক স্থানে অবস্থান করেছিলেন । সেখানে শুক্রবার দিনে সর্বপ্রথম আল্লাহর নবী (স) সাহাবীদেরকে সাথে নিয়ে জুমআ'র সালাত আদায় করেন । সেই সালাতের পূর্বে দুটি খুতবা প্রদান করেন । যদিও তখনই আনুষ্টানিকভাবে জুমআ'র সালাত চালু হয়নি । পরবর্তীতে মসজিদে নববীতে জুমআ'র সালাত আনুষ্টানিকভাবে চালু হয় এবং প্রত্যেক মু'মিন পুরুষের উপরে তা ফরজ হয়ে যায় । তবে জুমআ'র সালাত এবং খুতবা প্রদানের নিয়ম সেভাবেই থেকে যায় যেভাবে হুজুর (স) কুবায় অবস্থানকালীন সময়ে আদায় করেছিলেন । 

জুমআ'র খুতবার মধ্যে রয়েছে সুদূর প্রসারী হিকমাত । যার দ্বারা মুসলিমরা এক আল্লাহর একত্ববাদ এবং তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করার জজবা আহরণ করবে ।  উম্মাহর সমকালিন অবস্থা সম্পর্কে অবগত হবে । নিজ দেশ এবং জাতির সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হবে এবং তা থেকে উত্তরণের দিক দিক নির্দেশনা পাবে । 

খতিবরা রাষ্ট্রকে বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করতে পারেন তাদের খুতবার মধ্য দিয়ে।
মধ্যেমপন্থা অবলম্বন পূর্বক সরকারের ভাল কাজগুলির ব্যাপারে  প্রশংসা এবং যে কাজগুলো কোরআন এবং সুন্নাহর সাথে যায়না সেগুলোর ব্যপারে সরকারকে আন্তরিকতাপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিতে পারেন । সূদ,ঘোষ,দূর্ণীতি,হত্যা,ধর্ষণ,ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি দমনে কোরআন সুন্নাহ আলোকে পথ এবং পদ্ধতি বাতলে দিতে পারেন । 

একজন সচেতন প্রজ্ঞাবান আলেম ও খতিব তাঁর মেধা ও মননশীলতা প্রয়োগ করে খুতবার বিষয় নির্ধারণ করবেন। স্বাভাবিকভাবেই এতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগের বিষয় আলোচনায় থাকবে; থাকবে এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ কোরআন ও হাদিসের আলোকে; থাকবে এর থেকে পরিত্রাণের দিকনির্দেশনা।         

আমাদের দেশে জাতিয়,বিভাগীয়,জেলা এবং অনেক জায়গায় উপজেলা পর্যায়েও রয়েছে ইমাম সমিতি । 
ইচ্ছে করলে তাঁরা জাতিয়ভাবে খুতবা তৈরী করে তার অনুলিপি স্থানীয় পর্যায়ে পৌছে দিতে পারেন । এতে করে সারা দেশে একযোগে খতিবরা একই ভাষায় কথা বলবেন । এবং তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে সারা দেশ জুড়ে ।     

জুমআর খুতবাকে সংক্ষিপ্ত করতে রাসূলুল্লাহ (স) উৎসাহ প্রদান করেছেন ।
বেশী দীর্ঘ করতে চাইলে''তিওয়ালে মুফাসসাল'' অর্থাৎ খুতবা কোরআনুল কারীমের যে কোন দীর্ঘতম সূরার সমপরিমাণ দীর্ঘ করা । এর চাইতে বেশী নয় ।

অথবা এভাবেও হিসেব করা যায়-যতটুকু সময় দু'রাকায়াত জুমআর ফরজ সালাতে ব্যয় হয় ততটুকু পরিমান সময়ের মধ্যেই খুতবা শেষ করা ।
প্রকৃতপক্ষে জোহরের চার রাকায়াত সালাতের মধ্যে দু'রাকায়াতের সমমর্যাদায় অভিষিক্ত হচ্ছে জুমআর খুতবা ।

জুমআর খুতবায় মহান আল্লাহর উপরে হামদ হবে, রাসূল (স) এর শানে সালাত ও সালাম হবে এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া হবে ।

পাশাপাশি সমসাময়িক প্রসঙ্গ বোধগম্য ভাষায় মুসল্লিদের সামনে উপস্থাপন করা হবে । সমস্যা,সম্ভাবনা এবং করনীয় সম্পর্কে সচেতন করাই হবে জুমআর খুতবার মূল উদ্দেশ্য ।
এজন্য সম্মানিত খতিবগণের উচিত খোতবা নোট করে নিয়ে আসা এবং বোধগম্য ভাষায় তা উপস্থাপন করা ।

আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে জুমআ'র খুতবার ভূমিকা অপরিসীম। 
মহান আল্লাহ আমাদের মসজিদের মিম্বরগুলিকে আদর্শ জাতি গঠন ও দ্বীন প্রতিষ্টার মারকাজ  হিসেবে কবুল করুন ।
------------------------- 
লেখক ঃ প্রবন্ধ লেখক কলামিস্ট ও অনলাইন একটিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments