Recent Tube

আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) এর নামে 'হাদীস অস্বীকার' এর মিথ্যা অপবাদ ও আমাদের জবাবঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।




আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) এর নামে 'হাদীস অস্বীকার' এর মিথ্যা অপবাদ ও আমাদের জবাবঃ পর্ব ১
-----------------------------------------------------------------
ইমাম সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (রাহঃ) এর বিভিন্ন লেখনি নিজের মনমত কাটছাঁট ও কনভার্ট করে তাঁর বিরুদ্ধে যত মিথ্যা অভিযোগ করা হয় 'হাদীসের প্রতি সন্দেহবাদ বা হাদীস অস্বীকার' তার অন্যতম। যেমন তিনি হাদীসের রেওয়ায়াত ও দিরায়াতের উপর দীর্ঘ আলোচনা করার পর বলেন, 
"এ আলোচনা থেকে একথা জানা গেল যে, হাদীসকে সম্পূর্ণ নাকচ করে দেওবার পক্ষপাতী ব্যক্তিরা যেমন ভ্রান্ত, তেমনি হাদীসকে অনুসরণ করার ব্যাপারে শুধু  (সনদ তথা) রেওয়ায়েতের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরাও ভুল থেকে নিরাপদ নয়। নির্ভুল পথ এ দু'টির মাঝখানে রয়েছে, যে পথ অনুসরণ করেছেন মুজতাহিদ ইমামগণ। ইমাম আবু হানিফা (রাহঃ) এর ফিকহের মধ্যে এমন কতিপয় মাসয়ালা দেখা যাবে যা মুরসাল, মু'যাল এবং মুনকাতি হাদীসের উপর নির্ভরশীল অথবা কোন মাসয়ালায় সহীহ হাদীস বাদ দিয়ে যঈফ হাদীস গ্রহণ করা হয়েছে কিংবা যেগুলোতে হাদীস এক কথা বলছে ইমাম আবু হানিফা (রাহঃ) ও তাঁর সহচর অন্য কথা বলছেন। একই অবস্থা ইমাম মালিক (রাহঃ) এর। তথ্য নির্ভরতার দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর মধ্যে জোরালো থাকা সত্ত্বেও ফিকহের বুঝ তাঁকে এমন হাদীসের খেলাফ ফতোয়া দিতে বাধ্য করেছে, যেগুলোকে মুহাদ্দিসগণ সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। তাই লাইস বিন সা'দ তাঁর ফিকহ থেকে এ ধরণের প্রায় ৭০ টি বিষয় বের করেছেন। ইমাম শাফেয়ী (রাহঃ) এর অবস্থাও এ থেকে ভিন্ন নয়।" (নির্বাচিত রচনাবলী পৃঃ ২/১৯২-১৯৩)

এতটুকু উল্লেখ করে আহলে হাদীস নেতা ড. গালিব জনৈক আহলে হাদীসের বরাতে বলেন, 'আসলে ইমাম আবু হানিফা মুরসাল হাদীসকে যঈফ গণ্য করতেন না, যা সকলের বিরুদ্ধ মত। ইমাম মালিক ও শাফেয়ীর সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। তাঁরা জেন শুনে সহীহ হাদীসের বিরুদ্ধে কোনো ফতোয়া দেননি। লাইস সম্পর্কে ৭০ টি ফতোয়ার ব্যাপারে যে দাবী করা হয়েছে, সেটাও একেবারে ভিত্তিহীন। থাকলে দু' চারটে পেশ করা হোক।' উপরের আলোচনায় হাদীসের বর্ণনার উপরে ভরসা না করে মুজতাহিদ ইমামগণের রায়কে- যদি তা সহীহ হাদীস বিরোধীও হয়, তবুও একে সঠিক পথ বলা হয়েছে। (গালিব, তিনটি মতবাদ পৃঃ ৩৪-৩৫) 
ড. গালিব ইমাম সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (রাহঃ) এর বিভিন্ন লেখনি কাটছাঁট ও কনভার্ট করে এবং নিজের ইচ্ছামত বিকৃতি ব্যাখ্যা করে তাঁর উপর 'হাদীস অস্বীকার' করার মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন। এমনকি তিনি আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) সম্পর্কে বলেছেন, "তিনি একদূর পৌঁছে গেছেন যে, কোন কোন ক্ষেত্রে হাদীস অস্বীকারকারীদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। (হাদীছের প্রমাণিকতা, পৃঃ ৪১)

আমাদের জবাবঃ
আফসোসের বিষয় হল- অন্যান্য নিন্দুকের মত ড. গালিবও আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) এর গুরুত্বপূর্ণ লেখনি কেটে নিজের মনমত ব্যাখ্যা করে পাঠকদের ভুল ধারণা দিতে চেয়েছেন। তিনি শুধু এখানে এতটুকুই নয় বরং মওদুদী (রাহঃ) বিভিন্ন লেখা নিজের মনমত কাটছাঁট ও কনভার্টের মাধ্যমে বিকৃত অর্থ করে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকি তিনি তার 'হাদীছের প্রমাণিকতা' বইয়ের ৪১ পৃষ্ঠায় আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) সম্পর্কে বলেছেন, "তিনি একদূর পৌঁছে গেছেন যে, কোন কোন ক্ষেত্রে হাদীস অস্বীকারকারীদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। (নাউজুবিল্লাহ মিন জালিক)

অথচ ইমাম সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী (রাহঃ) এর লেখা থেকে পরের কয়েকটা লাইন তুলে দিলেই পাঠক বুঝতে পারবে ড. গালিবের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) পরের অংশে বলেন, "মায়াজাল্লাহ! এর অর্থ মোটেও এই নয় যে, ইমামগণ কোনো হাদীসকে সহীহ জেনেও তাকে অগ্রাহ্য করতেন। বরং প্রকৃত ব্যাপার এই ছিল যে, তাঁদের দৃষ্টিতে হাদীসের সত্যতার মাপকাঠি একমাত্র সনদ ছিল না বরং সনদ ছাড়াও তাঁরা تفقه বা অনুধাবন শক্তি দ্বারা হাদীসকে যাচাই-বাছাই করতেন এবং যে হাদীস প্রকৃত সত্যের নিকটবর্তী বলে তাঁদের মনে প্রতীতি জন্মাত মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিকোণ থেকে তা যতই মারজু হোক না কেন- তাকেই গ্রহণ করতেন।" (নির্বাচিত রচনাবলী পৃঃ ২/১৯৩)

মাদখালী ধর্মাবলম্বী আরেক শায়েখ মতিউর রহমান মাদানী বলেছেন, আল্লামা মওদুদী (রাহঃ) নাকি কাল্পনিক উসুল তৈরি করেছেন। অথচ তিনি যা বলেছেন, তা শতভাগ নির্ভুল। মুজতাহিদ ইমাম তথা ফকীহগণ যে হাদীসের মর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞান রাখেন, এ কথা ইমাম তিরমিযী (রাহঃ) এর মত বিখ্যাত মুহাদ্দিসও বলেছেন। তিনি একটি হাদীসের আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন,
وَكَذَلِكَ قَالَ الْفُقَهَاءُ وَهُمْ أَعْلَمُ بِمَعَانِي الْحَدِيثِ-
ফকীহগণ এরূপ কথা বলেছেন, আর তাঁরাই হাদীসের মর্ম সম্পর্কে অধিক জ্ঞান রাখেন। (জামে তিরমিযী হাঃ ৯৯০)

হাদীস ও ফিকাহ শাস্ত্রের একজন সাধারণ ছাত্রও জানে যে, সনদ সহীহ হলেই মুজতাহিদ ইমামগণ সাথে সাথেই সেই সহীহ হাদীসের উপর আমল করার অনুমতি দেননা। অনেক সময় ইমামগণ জেনে বুঝেই বিশেষ কোনো ফিকহি কারণে মতনের উপর আপত্তি তুলে সহীহ হাদীসের উপর আমল না করে ফিকহি ব্যাখ্যা প্রদান করে হাদীসটি ত্যাগ করেন। আবার তাঁরা ফিকহি অনুধাবন শক্তি দ্বারা হাদীসকে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত সত্যের নিকটবর্তী বলে প্রমাণিত হলে মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিকোণ থেকে তা যতই দুর্বল হোক না কেন- তাকেই গ্রহণ করতেন। (দেখুনঃ ইমাম সাখাবী, ফাতহুল মুগীছ শরহে আলফিয়াতিল হাদীস: ২৪৯-২৫০; আল্লামা ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী, ২/২৩৩; আল্লামা ইবনে রজব হাম্বলী, ইমাম নববী, শারহুল মুহাজ্জাব, ১/১০৪; রিসালাতুন ফিল খুরুজি আনিল মাযাহিবিল আরবায়া, পৃঃ ২২; আল্লামা ইবনে হামদান, সিফাতুল ফতোয়া, পৃঃ ৩৮; আল্লামা ইবনে কাইয়ুম, আল-ফুরূসিয়্যাহ ১/১৮৬; আল্লামা ইবনুল হুমাম, ফাতহুল ক্বাদীর ৩/১৪৩)

♥ ইমাম সাখাবী (রহঃ) লিখেন,
وكل حديث رأيته يخالفه العقول او يناقص الأصول فاعلم أنه موضوع، فلا يتكلف اعتباره اى لا تعتبر رواته ولا تنظر فى جرههم او يكون مما يدفعه الحس والمشاهدة او مباينا لنص الكتاب او السنة المتواترة او الاجماع القطعى حيث لا يقبل شيء من ذالك التاويل. 
প্রত্যেক এমন হাদীস যা স্বাভাবিক বুদ্ধি-বিবেচনার বিপরীত হয় এবং শরয়ী মূলনীতির খেলাফ হয় সে হাদীসের ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে জেনে রাখুন এটি ভিত্তিহীন। সুতরাং এমন বর্ণনা গণনায় ধরা হবে না। অর্থাৎ বর্ণনাটির রাবীদের কোন হিসেবে ধরা হবে না। তার গ্রহণবর্জন বিষয়ক আলোচনারও প্রয়োজন নেই।দ্বিতীয়ত যে বর্ণনাগুলো স্বাভাবিক জ্ঞান বিবেচনার এবং বাহ্য-সত্যের বিপরীত পাওয়া যাবে এবং কুরআন ও হাদীসের মুতাওয়াতির বর্ণনার উল্টো হবে এবং অকাট্য ইজমার বিরোধী হবে এমন সুরতেও উক্ত বর্ণনা গ্রহণীয় হবে না। (ইমাম সাখাবী, ফাতহুল মুগীছ শরহে আলফিয়াতিল হাদীস: ২৪৯-২৫০)

♥ মুহক্কিক ইবনুল হুমাম (রাহঃ) ফাতহুল ক্বদীরে বলেন,
وَمِمَّا يُصَحِّحُ الْحَدِيثَ أَيْضًا عَمَلُ الْعُلَمَاءِ عَلَى وَفْقِهِ وَقَالَ مَالِكٌ شُهْرَةُ الْحَدِيثِ بِالْمَدِينَةِ تُغْنِي عَنْ صِحَّةِ سَنَدِهِ.
“কোন হাদীসের স্বপক্ষে উলামায়ে কেরামের আমল হাদীসটিকে সহীহ সাব্যস্ত করার একটি কারণ। আর ইমাম মালেক (রাহঃ) বলেন কোন হাদীস মদীনাতে প্রসিদ্ধ হওয়া তার সনদ সহীহ হওয়াকে বেনিয়াজ করে দেয়”। (ফাতহুল ক্বাদীর ৩/১৪৩)

♥ ইমাম নববী (রাহঃ) বলেন,
وإنما اشترطوا ماذكرنا لأن الشافعي رحمه الله ترك العمل بطاهر أحاديث كثيراة رآها وعلمها لكن قام الدليل عنده علي طعن فيها أو نسخها وأ تخصيصها أو تاويلها أو نحو ذلك-
"কোন হাদীস ত্রুটিযুক্ত, রহিত, বিশেষ ক্ষেত্রে সুনির্ধারিত অথবা হাদীসটির ব্যাখ্যা সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ার শর্তসাপেক্ষে ইমাম শাফেয়ী (রাহঃ) অনেক সহীহ হাদীসের উপর আমল করেননি অথচ তিনি এসব হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং অন্যদের শিক্ষা দিয়েছেন। আর এর জন্য তাঁর নিকট সুনির্ধারণ দলিল ছিল।" (শারহুল মুহাজ্জাব, ১/১০৪)

♥ ইমাম ইবনুল কাইয়ুম (রহ.) বলেন, 
وقد علم أن صحة الإسناد شرط من شروط صحة الحديث وليست موجبة لصحة الحديث، فإن الحديث الصحيح إنما يصح بمجموع أمور.
"জানা আছে যে, 'সনদ' সহীহ হওয়াটা হাদীস সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত; কিন্তু সনদ সহীহ হওয়াটা হাদীসের (মতন/বক্তব্য) 'সহীহ' হওয়াকে আবশ্যক করে না। (অর্থাৎ সনদ সহীহ হলেই হাদীসের 'মতন' বা বিষয়বস্তু সহীহ হয়ে যাবে-ব্যাপারটা এমন না)। বরং অনেকগুলো বিষয়ের সমষ্টির ওপর ভিত্তি করেই একটা হাদীস সহীহ হয়।" (আল-ফুরূসিয়্যাহ ১/১৮৬)।

♥ হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রাহঃ) বলেন,
“কোন হাদীস কবূল হওয়ার গুনাবলীর মধ্য হতে একটি হল হাদীসের বিষয়বস্তুর উপর উলামায়ে কেরাম আমলের ব্যপারে একমত হবেন। এমন হাদীসকে কবূল করা হবে এমনকি তার উপর আমল করা ওয়াজিব। আয়িম্মায়ে উছুলের একটি জামাআত এমনটি বলেছেন। তার উদাহরণ সমূহের মধ্য থেকে হল, ইমাম শাফেয়ী (রাহঃ) এর বক্তব্য নাপাকী পানিতে প্রবেশের দ্বারা নাপাক হওয়ার ব্যপারে যখন পানির স্বাদ বা গন্ধ বা রং পরিবর্তন হয়ে যায়, তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে এমন সূত্রে বর্ণিত যা মুহাদ্দিসীনগণ (সহীহ) সাব্যস্ত করেন না। অথচ এটাই সকলের মত। উলামাদের এ বিষয়ে কোন মতবিরোধ আমার জানা নেই“। (আল ইফসা আলা নুকাতি ইবনুস সালাহ)

♥ ইমাম সাখাবী (রহঃ) ফাতহুল মুগীছে বলেন,
إذا تلقت الأمة الضعيف بالقبول يعمل به على الصحيح حتى أنه ينزل منزلة المتواتر في أنه ينسخ المقطوع به ولهذا قال الشافعي رحمه الله في حديث لا وصية لوارث إنه لا يثبته أهل الحديث ولكن العامة تلقته بالقبول وعملوا به. 
“উম্মত যখন কোন যঈফ হাদীসকে কবূলের দৃষ্টিতে গ্রহণ করে তখন তার উপর আমল করা হবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী। এমনকি তা মুতাওয়াতের এর পর্যায়ে পৌছে যায়। ফলে তা অটাক্যভাবে প্রমাণীত কোন বিষয়কেও রহিত করে দেয়। এজন্যই ইমাম শাফেয়ী (রাহঃ)  “ওয়ারিসের জন্য কোন ওসিয়ত নেই” এই হাদীসের ব্যপারে বলেছেন মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসটি সহীহ সনদে মেনে নেননি। তবে উম্মত তা গ্রহণ করেছে এবং তার উপর আমল করেছে।“ (হাফেয সাখাবী, ফাতহুল মুগীছ, পৃষ্ঠা ১২০)

♥ আল্লামা সুয়ূতী (রাহঃ) বলেন-
قال ابن عبد البر في الاستذكار : لما حكى عن الترمذي أن البخاري صحح حديث البحر : « هو الطهور ماؤه » ، وأهل الحديث لا يصححون مثل إسناده . لكن الحديث عندي صحيح ؛ لأن العلماء تلقوه بالقبول.
“ইবনু আব্দিল বার তার ইস্তেযকার নামক কিতাবে যখন তিরমিযী (রাহঃ) এর এই বক্তব্য বর্ণনা করেন, ইমাম বুখারী সুমুদ্রের হাদীসকে সহীহ বলেছেন “তার পানি পবিত্র” অথচ মুহাদ্দিসীনগণ এ ধরনের সনদকে সহীহ বলেন না ’ তখন বলেন তবে হাদীসটি আমার নিকট সহীহ কেননা উলামায়ে কেরাম তা কবূলের দৃষ্টিতে গ্রহণ করেছেন”। (আল্লামা সুয়ূতী, তাদরীবুল রাবী, পৃষ্ঠা ২৫)

♥ অন্যত্র আল্লামা সুয়ুতী (রাহঃ) বলেন,
يحكم للحديث بالصحة إذا تلقاه الناس بالقبول وإن لم يكن له إسناد صحيح.
”যখন মানুষ কোন হাদীসকে কবূলের দৃষ্টি কোন থেকে গ্রহণ করে তখন উক্ত হাদীসকে সহীহ হওয়ার ফয়সালা দেওয়া হয়। যদিও তার কোন সহীহ সনদ না থেকে থাকে”। (তাদরীবুর বারী, পৃষ্ঠা ২৪)

♥ হাদীসের উসূল সম্পর্কে যার সামান্য জ্ঞান আছে সেও জানে যে, 'সনদ সহীহ হলেই মতন সহীহ হওয়া শর্ত নয়'। মতন নিয়ে প্রশ্ন তুললে কেউ হাদীস সন্দেহবাদী বা অস্বীকারকারী হয়ে যায় না। আল্লামা ইবনে আব্দুল বার (রাহঃ) একটা সহীহ হাদীসের সমালোচনা করে বলেন,
ﺣﺪﻳﺚ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻭﻫﻢ ﻭﻏﻠﻂ ﻭﺃﻧﻪ ﻻ ﻳﺼﺢ ﻣﻌﻨﺎﻩ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺍﺳﻨﺎﺩﻩ ﺻﺤﻴﺤﺎ-
"ইবনে ওমরের বর্ণিত হাদীস উদ্ভট কল্পনা প্রসূত ও ভ্রান্ত। এর বক্তব্য সঠিক নয় যদিও তার সনদ সহীহ।" (আল ইস্তিয়াব: ৩/১১১৬)

এ রকম অনেক হাদীস পাওয়া যায় যেগুলো মুজতাহিদ ইমামগণের নিকট সনদের দিক থেকে সহীহ রূপে স্বীকৃত কিন্তু হাদীসের বিষয় বস্তু, অকাট্য উক্তি কিংবা ফিকহী জ্ঞানের বিরোধী হওয়ার কারণে মুজতাহিদ ইমামগণ সেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসকে সহীহ হাদীসের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। আগামী পর্বে আমরা এ সংক্রান্ত কতিপয় হাদীস পেশ করব, ইনশাআল্লাহ।

Post a Comment

0 Comments