Recent Tube

দুটি মাসআলা: নাপাক কাপড়ে ওজু করা এবং বাড়ির মধ্যে পুরুষদের হাফপ্যান্ট পরার বিধান।আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।



দুটি মাসআলা: নাপাক কাপড়ে ওজু করা এবং বাড়ির মধ্যে পুরুষদের হাফপ্যান্ট পরার বিধান
-----------------◄❖►-----------------
প্রশ্ন: ১. নাপাক কাপড় পরে ওজু করে নামাজ এর সময় পাক কাপড় পরলে কি ওজু থাকবে?
২. পুরুষ মানুষ কি বাসায় হাফপ্যান্ট পরলে গুনাহ হবে? অনেকে বলে মহিলারা ঘরে সতর খোলা রাখতে পারলে পুরুষদের রাখলেও সমস্যা নাই। এটা কি ঠিক?
-------------------------------------------------- 
উত্তর:

নিম্নে উপরোক্ত দুটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া হল: وبالله التوفيق

◉ মাসআলা-১: নাপাক কাপড়ে ওজু করা

ওজু করার সময় নাপাক কাপড় পরে থাকলে ওজুর কোন ক্ষতি হবে না। তবে সালাতের পূর্বে অবশ্যই তা পরিবর্তন করত: পবিত্র কাপড় পরিধান করতে হবে। কেননা সালাতের জন্য পবিত্রতা (শরীর, কাপড় ও সালাতের স্থান) পূর্ব শর্ত।

উল্লেখ্য যে, কাপড় পরিবর্তন করার কারণে ওজু ভঙ্গ হবে না- সতর খুলে গেলেও। অবশ্য যদি এ সময় লজ্জাস্থানে কাপড় বা কোন কিছুর আবরণ ছাড়া সরাসরি হাতের স্পর্শ লাগে তাহলে ওযু নষ্ট হয়ে যাবে এবং সালাতের পূর্বে পূণরায় ওজু করতে হবে। (এ বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও এটি অধিক বিশুদ্ধ মত)
কেননা মারুফ সূত্রে আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত:
إذا أفضى أحدكم بيده إلى ذكره ليس بينه وبينها شيء فليتوضأ
“যে ব্যক্তি তার লিঙ্গ স্পর্শ করবে, এমতাবস্থায় তার মাঝে ও লিঙ্গের মাঝে কোন পর্দা থাকে না সে যেন ওযু করে।” হাসান; দারাকুতনী (১/১৪৭), বাইহাক্বী (১/১৩৩) সিলসিলা আস-সহীহাহ (১২৩৫)।

আমর বিন শু‘আইব তার পিতা থেকে তার পিতা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
"من مس ذكره فليتوضأ وأيما امرأة مست فرضها فلتتوضأ
“যে ব্যক্তি তার লিঙ্গ স্পর্শ করবে, সে যেন ওযু করে এবং কোন মহিলা যদি তার লজ্জা স্থান স্পর্শ করে তাহলে সে যেন ওযু করে।” [সহীহ লিগায়রিহী; আহমাদ (২/২২৩), বাইহাক্বী (১/১৩২)।

-------------------------------------------------- 

◉ মাসআলা-২: বাড়ির মধ্যে পুরুষদের হাফপ্যান্ট পরা

বাড়িতে কেবল স্বামী-স্ত্রী থাকার সময় তারা যেরকম ইচ্ছা সে রকম পোশাক পরে থাকতে পারে। এতে শরিয়তে কোনো বাধা নেই। এমনকি এ সময় সতর খোলা থাকলেও আপত্তি নেই। কেননা আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের জন্য সম্পূর্ণ হালাল করেছেন এবং তাদের মাঝে কোন ধরণের পর্দা আবশ্যক করেনি।
সুতরাং ঘরে স্বামী অথবা স্ত্রী উভয়েই তাদের অভিরুচি অনুযায়ী যে কোনও পোশাক পরতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ
"তারা (স্ত্রীরা) তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরা তাদের জন্য পোশাক।" (সূরা বাকারা: ১৮৬)

❖ তাফসিরে কুরতুবিতে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে:

"পোশাক মূলত: কাপড়। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য পোশাক বলা হয়েছে এ জন্য যে, দেহের সাথে দেহের সংযোগ ঘটে, একে অপরের সাথে মিলিত হয় এবং পোশাকের মত একে অপরের সঙ্গে থাকে।" (সূরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতের ব্যাখ্যা, তাফসিরে কুরতুবী)

❖ এ ছাড়াও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:

ﻋَﻦْ ﺑَﻬْﺰِ ﺑْﻦِ ﺣَﻜِﻴﻢٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻋَﻮْﺭَﺍﺗُﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻧَﺄْﺗِﻰ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﺬَﺭُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﺣْﻔَﻆْ ﻋَﻮْﺭَﺗَﻚَ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﺯَﻭْﺟَﺘِﻚَ ﺃَﻭْ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﻳَﻤِﻴﻨُﻚَ
বাহয বিন হাকিম তার পিতা হ’তে তিনি তার দাদা হ’তে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের আবরণীয় অঙ্গসমূহ কার সামনে আবৃত রাখব এবং কার সামনে অনাবৃত করতে পারি?
তিনি বললেন: "তোমার স্ত্রী ও দাসী ব্যতীত সকলের সামনে তা আবৃত রাখ।"

তবে বুঝমান ছেলেমেয়ে, অন্যান্য মহিলা বা মাহরাম পুরুষ থাকলে তাদের সামনে অবশ্যই সতর ঢাকতে হবে এবং শালীন পোশাক পরে চলাফেরা করতে হবে।
আল্লাহু আলাম।
-----------------◄❖►-----------------
 উত্তর প্রদানে:
 আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
 জুবাইল, সৌদি আরব
#abdullahilhadi

Post a Comment

0 Comments