Recent Tube

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যগতভাবে প্রাণির ছবি অংকন করার বিধান: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।


স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যগতভাবে প্রাণির ছবি অংকন করার বিধান:
-------------------------
প্রশ্ন:
জেনারেল লাইনে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদেরকে চিত্রাঙ্কন করতে হয়। যেমন: হাতি, ঘোড়া, হরিণ, পাখি, মাছ, হাঁস, গ্রামের মেয়ে ইত্যাদি। এটা বাধ্যতা মূলক করতে হয়। না আঁকলে মার্ক দিবে না।  এ ক্ষেত্রে কি বাচ্চাদের গুনাহ হবে না কি যারা বাধ্য করেছে তাদের গুনাহ হবে?
------------------------- 
উত্তর:
ইসলামে প্রাণীর ছবি অংকন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং কঠিন গুনাহ। সুতরাং কোন মুসলিম শিক্ষকের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এভাবে প্রাণীর ছবি অংকন করতে বাধ্য করা জায়েজ নেই। যে শিক্ষক এই নির্দেশ দিবে সে গুনাগার হবে। অবশ্য যদি প্রাণীর ছবি অংকন করা হয় কিন্তু মুখাবয়ব তথা চোখ মুখ নাক ইত্যাদি অংকন না করা হয় তাতে কোনও আপত্তি নেই। 
সুতরাং আপনার সন্তান যদি মুখমণ্ডল ছাড়া ছবি আঁকে তাহলে কোন সমস্যা নেই। যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব ছবি অংকন করতে বাধ্য করা হয় সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সন্তানদেরকে পড়তে দেওয়া ঠিক না। আমার জানামতে কোন ইসলামি প্রতিষ্ঠানে প্রাণির ছবি অংকন করতে বাধ্য করা হয় না। সুতরাং যথাসম্ভব ইসলামি প্রতিষ্ঠানে সন্তানদেরকে পড়তে দেওয়া উচিত-যেখানে শিক্ষার্থীদেরকে হারাম কাজে বাধ্য করা হয় না।
এ জাতীয় আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়,
ইসলামে একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ও জীবজন্তুর ছবি তোলা বা অংকন করা হারাম। এ ব্যাপারে বহু হাদিসে কিয়ামতের দিন কঠোরতম শাস্তির হুমকি এসেছে। তাই সর্বাবস্থায় আমাদের কর্তব্য, আল্লাহ ও আখিরাতের শাস্তিকে ভয় করে আল্লাহর নাফরমানি থেকে দূরে থাকা। আর শিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষকের জন্য আবশ্যক হল, মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে এমন কোনও নির্দেশ না দেওয়া যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হোন।
সুতরাং শিক্ষকগণ তাদের শিক্ষার্থীদেরকে কোনও প্রাণীর ছবি আঁকতে দিবেন না। বরং ছবি আঁকার স্কিল ডেভলোপ করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিভিন্ন ফুল, ফল, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও নানা জড়পদার্থের ছবি অংকন করতে দিতে পারে। আর প্রাণীর ছবি অংকন করা জরুরি হলে, মুখাবয়ব ছাড়া পুরো শরীরের ছবি অংকন করা যেতে পারে। অথবা এমনভাবে ছবি আঁকবে যে, তার মুখমণ্ডল অন্য দিকে ঘুরানো আছে বা কোনও কিছুর আড়ালে আছে, যেন তা দৃশ্যমান না হয়।
যাহোক, যদি কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদেরকে শরিয়ত বিরুদ্ধ কোনও কিছু করতে বাধ্য করতে চায় তাহলে আমাদের কর্তব্য, এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের সন্তানদেরকে না পড়ানো। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে যদি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া আবশ্যক হয়ে পড়ে আর এমন ছবি অংকন না করলে শিক্ষার্থী ফেল করার বা নাম্বার কম পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে বাধ্যগত অবস্থায় তা করা যাবে। কিন্তু শিক্ষক বা কর্তৃপক্ষ এমন হারাম নির্দেশ দেওয়ার জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত করুন। আমিন।
আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন রাহ. কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, আপনি আগের ফতোয়া বলেছিলেন যে, শিক্ষার্থী যদি এ সমস্যায় পতিত হয় যে, তাকে আবশ্যিকভাবে ছবি আঁকতে হবে। তাহলে সে মাথা বিহীন প্রাণির এমন ছবি আঁকবে। কিন্তু মাথা সহ ছবি অংকন না করলে সে অকৃতকার্য হবে। কী করণীয়?
তিনি উত্তরে বলেন,
إذا كان هذا فقد يكون الطالب مضطراً لهذا الشيء ، ويكون الإثم على من أمره وكلفه بذلك ، ولكني آمل من المسؤولين ألا يصل بهم الأمر إلى هذا الحد ، فيضطروا عباد الله إلى معصية الله‏.‏
“শিক্ষার্থী যদি এই জিনিসটি করতে (প্রাণীর ছবি আঁকতে) বাধ্য হয় তাহলে যে তাকে আদেশ করেছে বা বাধ্য করেছে সে গুনাহগার হবে। কিন্তু আমি দায়িত্বশীলদের কাছে আশা করব যে, বিষয়টি যেন এতদূর পর্যায়ে না যায় যে, তারা আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহর নাফরমানি করতে বাধ্য করবে।” [al-eman]
-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
#abdullahilhadi

Post a Comment

0 Comments