Recent Tube

আল্লামা মওদুদী রাহঃ এর দৃষ্টিতে তারাবীহর রাকাআত সংখ্যা, মুযাফফর বিন মুহসিনের অভিযোগ, আমাদের জবাবঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

-----------------------------------------
 তারাবীহর রাকাআত সম্পর্কে আল্লামা মওদুদী রাহঃ এর দৃষ্টিভঙ্গি:
.
হযরত সায়িব বিন ইয়াযীদ (রা) বলেনঃ 
كَانُوا يَقُومُونَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ فِى شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً.
সাহাবীগণ হযরত উমার রা.-এর যামানায় রমাযান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ’র নামায আদায় করতেন।
(ইমাম বাইহাকী, সুনানুল কুবরা, হাঃ৪২৮৮)
.
    সায়িব বিন ইয়াযীদ (রা) এর সূত্রে বর্ণিত বাইহাকীর এই হাদীসকে আল্লামা মওদুদী রাহঃ 'অত্যন্ত সহীহ' বলেছেন। 
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ৩য় খন্ড, পৃঃ ২৮৫)
.
 আল্লামা মওদুদী রাহঃ আরো বলেন,
"হযরত উমার (রা) যে তারাবীহ বিশ রাকাআত নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন তা প্রায় অকাট্য ভাবে প্রমাণিত। সাহাবীগণ তা কবুল করে নিয়েছিলেন। তারপরও খলিফা সাহাবীগণ এরই উপর আমল করেন। ইমাম তিরমিজী রাহঃ বলেন,

وَأَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَىْ مَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَغَيْرِهِمَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِشْرِينَ رَكْعَةً ‏.

অধিকাংশ আহলে ইলম সেই নিয়মই মেনে চলেন, যা হযরত উমার (রা), আলী (রা) এবং অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম থেকে বর্ণিত অর্থাৎ বিশ রাকাআত।"
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ৩য় খন্ড, পৃঃ ২৮৪)
.

 মুযাফফর বিন মুহসিনের মিথ্যে অভিযোগঃ 
মুযাফফর সাব বলেন, 
"এখানে তার (আল্লামা মওদুদী রাহঃ এর) মাযহাবপ্রতি ফুটে উঠেছে। সহীহ হাদীসকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মানসিকতা তার ছিল না। বরং যঈফ ও জাল হাদীস দ্বারা ২০ রাকাআত প্রমাণ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। ওমর (রা) এর যুগের কথিত ২০ রাকাআত তারাবীহ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'অত্যন্ত সহীহ সনদ'। 'সত্যের অপলাপ মিথ্যার জয়' এই বাস্তবতাই তার বক্তব্যে ফুটে প্রমাণিত হয়েছে।"
(ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃঃ ১৬২)
.
আমাদের জবাবঃ
সম্মানিত বন্ধুগণ! কার বক্তব্যে 'সত্যের অপলাপ মিথ্যার জয়' এই বাস্তবতা ফুটে উঠেছে, সহীহ হাদীসকে কারা অগ্রাধিকার দিতে পারে না, ২০ রাকাআতের তারাবীহর হাদীস জাল যঈফ না সহীহ, তার প্রমাণ এখনই হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ!
.
খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত উমার রা. কর্তৃক কায়েমকৃত সাহাবা (রা.) যুগের তারাবীহর রাকাআত সংখ্যা:
.
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ أنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ:كَانُوا يَقُومُونَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً، وَإِنْ كَانُوا لَيَقْرَءُونَ بِالْمِئِينَ مِنَ الْقُرْآنِ.
.
   হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ রা. বলেন, তাঁরা হযরত উমার রা.-এর যামানায় রমযান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ’র নামায আদায় করতেন। আর তাঁরা কুরআন থেকে দুইশত আয়াতবিশিষ্ট সূরা তিলাওয়াত করতেন। 
(ইমাম আলী ইবনুল জাআদ, মুসনাদ, হাঃ২৮২৫)
.
 হাদীসটি সহীহ। এ কিতাবের লেখক ইমাম আলী বিন জাআদ রহ. ইমাম বুখারীর উস্তাদ। আর তাঁর উপরের রাবীগণ সকলেই বুখারী-মুসলিমের রাবী। সুতরাং হাদীসটি নিঃসন্দেহ সহীহ। 

وَقَدْ أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ : الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ فَنْجُوَيْهِ الدِّينَوَرِىُّ بِالدَّامِغَانِ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ السُّنِّىُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ الْبَغَوِىُّ حَدَّثَنَا عَلِىُّ بْنُ الْجَعْدِ أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِى ذِئْبٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ قَالَ : كَانُوا يَقُومُونَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ فِى شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِينَ رَكْعَةً قَالَ وَكَانُوا يَقْرَءُونَ بِالْمِئِين وَكَانُوا يَتَوَكَّئُونَ عَلَى عُصِيِّهِمْ فِى عَهْدِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ مِنْ شِدَّةِ الْقِيَامِ.
.
হযরত ইয়াযীদ বিন খুছইফা রহ. হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণনা করেন: তাঁরা হযরত উমার রা.-এর যামানায় রমাযান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ’র নামায আদায় করতেন। রাবী বলেন: তাঁরা দুইশত আয়াত তিলাওয়াত করতেন। 
(ইমাম বাইহাকী, সুনানুল কুবরা, হাঃ৪২৮৮)
.
  হাদীসটি সহীহ। হুসাইন বিন মুহাম্মাদ, আহমাদ বিন মুহাম্মাদ ও আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ ব্যতীত এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই বুখারী-মুসলিমের রাবী। আর উক্ত তিনজন রাবীই উঁচু মাপের মুহাদ্দিস এবং বিশিষ্ট ইমাম।
.
  ইবনে শিরওয়াইহ রহ.-এর বরাত দিয়ে ইমাম জাহাবী রহ. হুসাইন বিন মুহাম্মাদকে ثقة “নির্ভরযোগ্য” বলেছেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা: তবকা- ২২, রাবী নম্বর- ২২৪) আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন ইসহাক রহ. হাফেজে হাদীস। তাঁর পরিচয় দিতে গিয়ে ইমাম জাহাবী রহ. বলেন: الإِمَامُ الحَافِظُ الثِّقَةُ الرحَّال “তিনি ইমাম, হাফেজ, নির্ভরযোগ্য”। (সিয়ারু আলামিন নুবালা: তবকা- ২০, রাবী নম্বর- ১৭৮) আল্লামা খলীলী বলেন: حافظ عارف ثقة “তিনি হাফেজ, দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য”। (ছিকাতু মিম্মাল লাম ইয়াকা’ ফিল কুতুবিস সিত্তাহ: ১৮৭) আর আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল আযীয আল বাগাবী রহ. হলেন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস, ফকীহ ও মুফাসসির ইমাম বাগাবী রহ.। তাঁর পরিচয় দিতে গিয়ে ইমাম জাহাবী রহ. বলেন: الحَافِظُ، الإِمَامُ، الحُجَّةُ، “হাফেজ, ইমাম, হুজ্জাত”। (সিয়ারু আলামিন নুবালা: তবকা- ১৭, রাবী নম্বর- ২৪৭) আর ইমাম বাগাবীর ওপরের রাবীগণ সবাই-ই বুখারী-মুসলিমের প্রসিদ্ধ ثقةٌ “নির্ভরযোগ্য” রাবী। সুতরাং হাদীসটির সনদ অত্যন্ত উঁচু মানের সহীহ। এ কারণে  متقدمينতথা পূর্ববর্তী মুহাদ্দিসগণের মধ্যে কেউই এ হাদীসের সনদের ওপর কোন আপত্তি তোলেননি। আর পরবর্তীদের মধ্যে বহু সংখ্যাক মুহাদ্দিস হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ রা. থেকে বর্ণিত ২০ রাকাত তারাবীহ’র এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। যেমন-
.
 এক. ইমাম নববী রহ.। তিনি বলেন: وَاحْتَجَّ أَصْحَابُنَا بِمَا رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ وَغَيْرُهُ بِالْإِسْنَادِ الصَّحِيحِ عَنْ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ الصَّحَابِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ “আমাদের সাথীগণ (২০ রাকাত তারাবীহ’র পক্ষে) সেসব হাদীস দ্বারা দলীল প্রদান করেন যা ইমাম বাইহাকী এবং অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ সায়েব বিন ইয়াযীদ রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন”। (শরহুল মুহাজ্জাব: ৩/৫২৭, খুলাছাতুল আহকাম: হাদীস নম্বর- ১৯৬১)
.
দুই. আল্লামা ওয়ালিউদ্দীন ইরাকী রহ.। তিনি বলেন: وَفِي سُنَنِ الْبَيْهَقِيّ بِإِسْنَادٍ صَحِيحٍ عَنْ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ “সুনানুল কুবরা লিলবাইহাকীতে হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ থেকে সহীহ সনদে (২০ রাকাত তারাবীহ’র কথা) বর্ণিত আছে”। (শরহুত তাকরীব: তারাবীহ’র রাকাত শিরোনামে)
.
তিন. আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহ.। তিনি বলেন: رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ بِإِسْنَاد صَحِيح عَن السَّائِب بن يزِيد الصَّحَابِيّ، “ইমাম বাইহাকী রহ. হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ রা. থেকে সহীহ সনদে (২০ রাকাত তারাবীহ’র কথা) বর্ণনা করেছেন”। (উমদাতুল কারী: রাতের নামায অধ্যায়)
.
চার. আল্লামা শিহাবুদ্দীন কসতলানী রহ.। তিনি বলেন: وفي سنن البيهقي بإسناد صحيح كما قال ابن العراقي في شرح التقريب عن السائب بن يزيد رضي الله عنه قال: كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب في شهر رمضان بعشرين ركعة.  “সুনানুল কুবরা লিলবাইহাকীতে হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত উমার রা.-এর যুগে রমাযান মাসে তাঁরা ২০ রাকাত (তারাবীহ) পড়তেন। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন আল্লামা ইরাকীও তাঁর শরহুত তাকরীব নামক কিতাবে। (ইরশাদুস সারী: তারাবীহ অধ্যায়)
.
পাঁচ. আরবের বিশিষ্ট শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আদ দুআইশ রহ.। তিনি বলেন: وهذا إسناد رجاله ثقات “এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই নির্ভরযোগ্য। (তাম্বীহুল কারী লি তাকবিয়াতি মা জ’আফাহুল আলবানী: ৩২ নম্বর হাদীসের আলোচনায়)
.
ছয়. প্রসিদ্ধ তাবেঈ হযরত ইয়াহইয়া সাঈদ আল আনসারী রাহঃ বলেন: 
أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَمَرَ رَجُلًا يُصَلِّي بِهِمْ عِشْرِينَ رَكْعَةً
হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব রা. এক ব্যক্তিকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাদেরকে ২০ রাকাত নামায পড়াতে। (ইবনে আবী শাইবা: ৭৭৬৪)
.
সাত. বিখ্যাত তাবেঈ ইয়াযীদ বিন রুমান রাহঃ বলেন: 
كَانَ النَّاسُ يَقُومُونَ فِي زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، فِي رَمَضَانَ، بِثَلاَثٍ وَعِشْرِينَ رَكْعَةً

হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব রা.-এর যুগে মানুষ বিশ রাকাত নামায আদায় করতেন।
(মুওয়াত্তা মালেক: কিয়ামে রমাযান অধ্যায়, হা:২৫১)
.
আট. ইমাম তিরমিজী রাহঃ বলেন,

وَأَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَىْ مَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَغَيْرِهِمَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِشْرِينَ رَكْعَةً ‏.وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ ‏.‏ وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَهَكَذَا أَدْرَكْتُ بِبَلَدِنَا بِمَكَّةَ يُصَلُّونَ عِشْرِينَ رَكْعَةً ‏.‏ (ذكره ابو عيسى الترمذى بعد ما روى حديث ابى ذر ورقمه -۸۰٤)
.
  হযরত উমার ও আলী রা. প্রমুখ সাহাবার বর্ণনা অনুযায়ী অধিকাংশ আলিমের অভিমত হলো তারাবীহ’র নামায ২০ রাকাত। হযরত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারক ও ইমাম শাফিঈ রহ.-এর অভিমতও এটাই। ইমাম শাফিঈ রহ. বলেন: আমাদের মক্কা নগরীতে এমনই ২০ রাকাত নামায আদায় করতে দেখেছি”। 
(তিরমিজী: ৮০৪ নম্বর হাদীসের আলোচনায়) 
.
নয়. ইমাম ইবনে আব্দুল বার রাহঃ  লিখেছেন,

وهو الصحيح عن أبي بن كعب من غير خلاف من الصحابة

অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবীই হযরত উবাই ইবনে কাব রা. থেকে বিশুদ্ধরূপে প্রমাণিত। সাহাবীগণের এক্ষেত্রে কোন দ্বিমত ছিল না। 
(আল ইসতিযকার , ৫ম খন্ড

, পৃঃ ১৫৭)
.
দশ. ইমাম ইবনে কুদামা রাহঃ আল মুগনী গ্রন্থে বিশ রাকাতকে দলিল দ্বারা সুপ্রমাণিত করে বলেছেন,

ما فعله عمر وأجمع عليه الصحابة في عصره أولى بالاتباع

অর্থাৎ উমর রা. যা করেছেন এবং তাঁর আমলে সাহাবীগণ যে বিষয়ে একমত হয়েছেন সেটাই অনুসরণের অধিক উপযুক্ত। 
(আল-মুগনী ২য় খন্ড, পৃঃ ৬০৪)
.
এগার. শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহঃ বলেন,
إنه قد ثبت أن ابي بن كعب كان يقوم بالناس عشرين ركعة في قيام رمضان و يوتر بثلاث، فرأي كثير من العلماء أن ذلك هو السنة، لأنه أقامه بين المهاجرين ولأنصار . ولم ينكره منكر-
"এটা অবশ্যই প্রমাণিত যে, উবাই বিন কা'ব (রা) রমযানের তারাবীহ লোকদের নিয়ে ২০ রাকাআত পড়তেন এবং ৩ রাকাআত বিতর পড়তেন। তাই অসংখ্য আলেম এই সিদ্ধান্ততে পৌঁছেছেন যে, এটিই সুন্নাত। উবাই ইবনে কা'ব (রা) মুহাজির ও আনসার সাহাবাগণের মধ্যে বিশ রাকাআত পড়িয়েছেন। আর কোন একজনও তাতে আপত্তি করেননি।"
(ইবনে তাইমিয়া, মাজমুয়াতুল ফাতাওয়া ২৩/১১২-১১৩)
.
বার. একইভাবে সউদী আরবের প্রথম ও প্রধান মুফতী শায়খ মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম বলেন,

وذهب أكثر أهل العلم كالإمام أحمد والشافعي وأبي حنيفة إلى أن صلاة التراويح عشرون ركعة لأن عمر لما جمع الناس على أبي بن كعب صلى بهم عشرين ركعة وكان هذا بمحضر من الصحابة فيكون كالإجماع. (الفتاوى والرسائل)

অধিকাংশ আলেম, যেমন ইমাম আহমদ শাফেঈ ও আবু হানীফার মত হলো, তারাবীহ ২০ রাকআত। কেননা উমর রা. যখন লোকদেরকে উবাই ইবনে কাবের অধীনে একত্রিত করলেন, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে ২০ রাকআত পড়েছিলেন। আর এটা হয়েছিল সাহাবীগণের উপস্থিতিতেই। ফলে তা ইজমা বা ঐকমত্যের মতোই হয়ে গিয়েছিল। 
(আল ফাতাওয়া ওয়ার রাসাইল, ২/২৪৪)
.
 সুতরাং আল্লামা মওদুদী রাহঃ এর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ মুযাফফর সাব করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এটা তার জালিয়াতি। আল্লামা মওদুদী রাহঃ ঠিকই সহীহ হাদীসকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু আহলে হাদীসের তথাকথিত শায়খরাই সহীহ হাদীসকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন না। তাই তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলে সহীহ হাদীসকেও তারা জাল যঈফ বলতে দ্বিধাবোধ করে না। আবার মতের পক্ষে গেলে জাল যঈফ হাদীসও সহীহ বলে চালিয়ে দেয়। আর তাদের অন্ধ মুকাল্লিদগণ সেটা সহীহ মনে করে গিলে ফেলে।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।        

Post a Comment

0 Comments