Recent Tube

কথিত আহলে হাদীসের দলিল প্রমাণসহ কতিপয় সহীহ ভ্রান্ত আকিদা: Tanzil Islam ইসলামি চিন্তাবিদ ও লেখক।

ইকামতে দ্বীনের বিরোধী শক্তি, তাগুতের সহীহ সেবক তথাকথিত ‘আহলে হাদীস‘ দলটির কতিপয় 'সহীহ ভ্রান্ত আকিদা' নিচে দলিল প্রমাণ সহ তুলে ধরা হল। যাতে সাধারণ মানুষ এদের সহীহ’র মোড়কে সহীহ
ধোকায় নিপতিত হয়ে দ্বীনের সাথে দুশমনি না করে। বিঃদ্রঃ এখানে যাদের রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে তারা সবাই আহলে হাদীসের বড় বড় শায়েখ ও ইমাম। 
.
    (ক) ঈমান ও কালিমা সম্পর্কে:
(১) প্রচলিত কালিমা তাইয়্যিবাহ তথা
لَا إلهَ إلَّا اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ 
ভুল। (মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মাযহাবীদের গুপ্তধন-৩৩)
(২) لَا إلهَ إلَّا اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ 
এটা মানুষের বানানো কথা। কুরআন হাদীসের কোথাও নেই। (মতিউর রহমান মাদানী https://youtu.be/vE9OrGPHLRg)
(৩) لَا إلهَ إلَّا اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ 
-এটা কোন পবিত্র বাক্য নয়।
(আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম, কালিমার মর্মকথা, পৃষ্ঠা-৩১৮)
(৪) সারা পৃথিবীর মানুষ কালিমা
 لَا إلهَ إلَّا اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ 
এর মধ্যে আল্লাহ ও মুহাম্মদকে এক করে আল্লাহ ও মুহাম্মদকে দুই ভাই বানিয়ে ফেলেছে। ( দআব্দুল্লাহ ফারুক বিন আব্দুর রহমান, ইসলামের মূলমন্ত্র কালিমা তায়্যেবাহ লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, পৃঃ ৯)
.
    (খ) মহান আল্লাহ তা'য়ালা সম্পর্কে:
(৫) আল্লাহ তা'য়ালা আরশে গিয়ে বসেন। (ড. গলীব, সোনামনিদের জ্ঞানকোষ, ১ম খন্ড পৃঃ ৩৬)
(৬) আল্লাহর (মানুষের মত) দুই হাত, দুই পা, দুই চোখ, চেহারা ইত্যাদি দৈহিক অঙ্গ-প্রতঙ্গ আছে এবং দেহ ও শরীর আছে। তাঁর দেহ ও শরীরগত অস্তিত্বের ওপর ইমান আনলে আল্লাহর প্রতি ইমান আনা হয়। (আব্দুর রাজ্জাক, কে বড় লাভবান, পৃঃ ১০; পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৯৩ দ্বিতীয় সংস্করণ: ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ মুদ্রিত) 
(৭) আল্লাহ তা'য়ালার 'চেহারাটুকু' ব্যতীত তাঁর দেহ ও দৈহিক সকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ ধ্বংসশীল।
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ. وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ.
'যমীনের উপর যা কিছু রয়েছে, সবই ধ্বংসশীল। এবং তোমার মহীয়ান ও দয়াবান রবের সত্তাই অবশিষ্ট থাকবে'।" (সূরা রহমান: ২৬-২৭) 
শায়েখ মুযাফফর এ অনুবাদের ভুল ধরেন এবং তীব্র সমালোচনা করে তিনি সহীহ অনুবাদ করেন এভাবে-
"ভূ-পৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র মহিমাময় ও মহানুভব অাপনার পালনকর্তার চেহারা ব্যতীত।"(মুযাফফর, ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা, পৃঃ৩৮) 
.
    (গ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে:
(৮) আল্লাহর রাসূল (সা:) মানুষকে যে সমস্ত আয়াত শিখিয়েছেন তা তিনি ভুলে যেতে পারেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলাবানী, পৃ-৩০)
(৯) রাসূল (সাঃ) শরীয়তের ক্ষেত্রে ভুল
করেছেন । (মুজাফফর বিন মুহসিন,
https://youtu.be/KsGp8H0H3y4)
(১০) নবীগণ নিষ্পাপ এটা সাধারণ বা ব্যপক নয়। (ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদীনাতি ওয়াল ইমারত, পৃ-১৮)
(১১) নবী রাসূলগণ বিভিন্ন ধরণের সগীরা গুনাহ ও আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়ে থাকেন। (আল ফাতাওয়াল কুয়্যেতিয়্যা লিল আলবানী, পৃ-২৯)
.
  (ঘ) খোলাফায়ে রাশেদীন সম্পর্কে:
(১২) জুমার খুতবায় খোলাফায়ে রাশেদার নাম নেয়া বিদয়াত। (হাদিয়াতুল মাহদী, পৃঃ ১১০) 
(১৩) খোলাফায়ে রাশেদীন অর্থাৎ হযরত আবু বকর, হযরত উমর, হযরত উসমান এবং হযরত আলী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) উনারা শরীয়তের খেলাফ হুকুম জারি করতেন।” (তানবীরুল আফা-ক, পৃঃ ১০৭)
(১৪) আবু বকরের তরিকায় সালাত আদায় করলে সালাত কবুল হবে না। ওমরের তরিকায় সালাত আদায় করলে সালাত আদায় হবে না ওসমানের তরিকায় সালাত আদায় করলে সালাত হবে না। আলীর তরিকায় সালাত আদায় করলে সালাত আদায় হবে না। (শাইখ মুজাফফর বিন মুহসিন)
(১৫) খলিফা হযরত উমর কুরআনের হুকুম পরিবর্তন করে ফেলেছেন।” (তানবীরুল
আফা-ক, পৃঃ ৪৯৮-৪৯৯)
.
     (ঙ) সাহাবাগণ (রাঃ) সম্পর্কে:
(১৬) সাহাবাগণ (রা) এর বুঝ নির্ভরযোগ্য নয়। (নবাব সিদ্দীক হাসান খান, আর রাওজাতুল নাদীয়া-পৃ.১/১৫৪)
(১৭) সাহাবাগণের (রা.) কথা দলীল স্বরূপ পেশ করা যাবে না। (নবাব সিদ্দীক হাসান খান, আর রাওজাতুল নাদীয়া-পৃ.১/১৪১)
(১৮) সাহাবীদের কথা প্রমাণযোগ্য নয়। ( মিয়া নজীর হুসাইন দেহলবী, ফাতাওয়ায়ে নজীরিয়া- পৃ.১/৩৪০)
(১৯) আহলে হাদীসের শায়খ ওহিদুজ্জামান বলেন,
আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮٓﺍ۟ ﺇِﻥ ﺟَﺎٓﺀَﻛُﻢْ ﻓَﺎﺳِﻖٌۢ ﺑِﻨَﺒَﺈٍ ﻓَﺘَﺒَﻴَّﻨُﻮٓﺍ۟ .
"হে মু’মিনগণ! কোন ফাসিক ব্যক্তি যদি তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে, তাহলে তার সত্যতা যাচাই করে নাও।" (সূরা হুজুরাতঃ ৬)
আয়াতটি ওলীদ ইবনে ওকরা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় কিছু সাহাবী ফাসিক ছিলেন। যেমন, ওলীদ। এভাবে হযরত মুয়াবিয়া, আমর ইবনে আস, মুগিরা ইবনে শুবা, সামুরা ইবনে জুন্দুব ফাসিক ছিলেন।
(নুজুলুল আবরার, ৩য় খন্ড, পৃঃ ৯৪)
(২০) শায়েখ ওহিদুজ্জামান হাইদ্রাবাদী তার কিতাবে লেখেন,
ﻭﻳﺴﺘﺤﺐ ﺍﻟﺘﺮﺿﻲ ﻟﻠﺼﺤﺎﺑﻪ ﻏﻴﺮ ﺍﺑﻲ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻭﻣﻌﺎﻭﻳﺖ ﻭﻋﻤﺮﻭ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺎﺹ ﻭﻣﻐﻴﺮﺓ ﺑﻦ ﺷﻌﺒﺔ ﻭ ﺳﻤﺮﺓ ﺑﻦ ﺟﻨﺪﺏ .
সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলা মুস্তাহাব। তবে আবূ সুফিয়ান, মুয়াবিয়া, আমর ইবনে আস, মুগীরা ইবনে শুবা, সামিরা ইবনে জুনদুব এর নামের শেষে রাযিয়াল্লাহু আনহু বলা মুস্তাহাব নয়।
(কানযুল হাকায়েক মিন ফিকহি খাইরিল খালায়েক, পৃঃ ২৩৪)
(২১) সাহাবীদের মধ্যে আমর বিন আস, ওয়ালিদ বিন মুগীরা, মুআবিয়া বিন আবু সুফিয়ান, মুগীরা বিন শু’বাহ, সামুরা বিন জুন্দুব, এরা সকলেই ফাসেক ছিল। এদের নামের সাথে রাদিয়াল্লাহু আনহু বলা হারাম। (আবু বকর গাজিপুরী, মাসায়েলে গাইরে মুকাল্লিদীন, পৃ-৬০)
.
     (চ) পবিত্র কুরআন সম্পর্কে:
(২২) কুরআনে সমস্যা আছে। (সালমান এফ রহমান, হাজার হাজার আহলে হাদীসের কেউ এ কথার প্রতিবাদ না করে বরং সকলেই আনন্দচিত্তে তা গ্রহণ করে; আহলে হাদীস সম্মেলন, ২০১৭)
(২৩) অপবিত্র তথা নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা জায়েজ। (দলীলুত ত্বলিব, পৃঃ ৫২)
  . 
  (ছ) হাদীস ও মুহাদ্দিস সম্পর্কে:
(২৪) শায়েখ নাসিরুদ্দীন আলবানী বলেন,
আমি সহীহুল বুখারীর হাদীস সমূহকে যে, যয়ীফ আখ্যায়িত করেছি এটি এমন বাস্তবতা যা স্বীকার করতেই হবে। তা অস্বীকারের কোন সুযোগ নেই।...(এর কিছু পর তিনি বলেন;) আমার হাদীস গবেষণার মাঝে বুখারী মুসলিমের কিছু হাদীস যয়ীফ (দুর্বল হাদীস) ধরা পড়েছে। (ফাতাওয়া শাইখ আলবানী, পৃঃ ৫২৪-৫২৬, মাকতাবুত তুরাস আল ইসলামী, মিশর)
(২৫) ইমাম বুখারী (রহঃ) কুফরী মতবাদ প্রচার করেছেন। (ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং)
(২৬) শায়খ নাসীরুদ্দিন আলবানী ইমাম বুখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছেন। (ফাতাওয়া শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং)
 . 
 (জ) ইকামতে দ্বীন সম্পর্কে:
(২৭) তওহীদ ব্যতীত রিসালাত, আখিরাত, সালাত, যাকাত, সাওম, হজ্জ, জিহাদ, ফৌজদারি দণ্ডবিধান সহ ইসলামের সকল বিধান অস্বীকার করে আহলে হাদীসের শায়খগণ বলেন, 'ইকামতে দ্বীন মানে ইকামতে তওহীদ'। যারা ইকামতে দ্বীন বলতে ইসলামের সকল বিধান সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা বুঝায়, আহলে হাদীসগণ তাদের তিব্র বিরোধীতা করেন। (ড. গালীব, ইক্বামতে দ্বীন পথ ও পদ্ধতি, পৃঃ ১১; জিহাদ ও ক্বিতাল, পৃঃ ৭১; মুযাফফর, ভ্রান্তির বেড়াজাল ইক্বামতে দ্বীন, পৃঃ ১৯২)
(২৮) ইসলাম মানুষের স্বভাব ধর্ম। তা কখনো রাষ্ট্র ক্ষমতার সঙ্গে শর্তযুক্ত নয়। (ড. গালীব, আহলে হাদীস আন্দোলন কি ও কেন, পৃঃ ৫৩)
(২৯) কুরআন (সূরা তাওবাঃ৯/৩৩, ফাতাহঃ৪৮/২৮, সফঃ৬১/৯) অস্বীকার করে তারা বলেন, সকল বাতিল দ্বীনের উপর দ্বীনে হক তথা আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী করার উদ্দেশ্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রেরিত হননি। নবী প্রেরণের উদ্দেশ্য ছিল আখিরাত ভোলা মানুষকে আখিরাতে সাফল্য লাভের পথ দেখানো। (ড. গালীব, জিহাদ ও ক্বিতাল, পৃঃ ৭৩)। প্রশ্ন হল- নবীগণ কি তাগুতের দাসত্ব করাকে আখিরাতের সাফল্য বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন? 
(৩০) কোন নবী-রাসূল একদিনের জন্যেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেননি। নাউযুবিল্লাহ! (ড. গালীব, ইক্বামতে দ্বীন পথ ও পদ্ধতি, পৃঃ ১৩; মুযাফফর, ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃঃ ২১০) এটি কুরআন ও হাদীস বিরোধী কুফুরী কথা। (সূরা নিসাঃ ৪/৫৪; সূরা নূরঃ ২৪/৫৫; সহীহ বুখারী, হাঃ ৩৪৫৫; সহীহ মুসলিম হাঃ ১৮৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাঃ ৭৯০০, ৭৯৪৭; ইবনে মাজাহ হাঃ ২৮৭১; ফাতহুল বারী ৬/৪৯৫, ৮/১১০, ১০/৫৭৭)
(৩১) খেলাফাত প্রদান করা সম্পূর্ণ আল্লাহর দায়িত্ব। যারা খেলাফাত কায়েমের চেষ্টা করে তারা আল্লাহর দায়িত্ব গ্রহণ করে (আল্লাহর দায়িত্ব নিয়ে টানাটানি করে)। (ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন, পৃঃ ২১২) সন্তান প্রদান করাও তো সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তাই বলে বিয়ে করা এবং স্ত্রী সহবাস করার দায়িত্বও কি....।  (নাউযুবিল্লাহ)
(৩২) (জালিম, ফাসিক, কাফির) কোনো সরকারকে অপসরণ করা শরীয়তে আদৌও জায়েয নেই। (আব্দুর রাজ্জাক, কে বড় লাভবান, পৃঃ ১৯০)
(৩৩) মুসলিম হোক বা কাফির হোক প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ইসলামের নীতি নয়। (ড. গালীব, জিহাদ ও ক্বিতাল, পৃঃ ৪২ ও ৯২) তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও খোলাফায়ে রাশেদীন প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন কাফির সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কুফুরী নীতি পালন করেছেন? 
(৩৪) পবিত্র কুরআনের বানী -
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ.
"বিধান একমাত্র আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘তাঁকে ছাড়া আর কারো ইবাদাত (দাসত্ব) করো না।" (সূরা ইউসূফ: ১২/৪০) এ আয়াত সম্পর্কে আহলে হাদীস আন্দোলনের আমীর ড. গালীব বলেন, "এর অর্থ কখনোই রাষ্ট্রীয় বিধান নয়, যা পরিষ্কার ভাবে 'হুকমে আক্বলীর' অন্তর্ভুক্ত। এটির অর্থ 'হুকমে শরঈ'ও নয়।" (ড. গালীব, তিনটি মতবাদ, পৃঃ ২৭) অর্থাৎ রাষ্ট্রে আল্লাহর বিধান কার্যকর করা হারাম, আর এটি 'হুকমে শরঈ'ও নয়। সকল তাগুতের দাসত্ব বর্জন করে আল্লাহর (ইবাদত) দাসত্ব করা শরীয়ত হুকুমও নয়। (নাউযুবিল্লাহ)
.
(ঝ) মাযহাব ও তাকলিদ সম্পর্কে:
(৩৫) সালাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হলেন আল্লাহ তায়ালা। (ফাতাওয়াল আলবানী ফিল মদানাতী ওয়াল ইমারাত, পৃ- ১৮)
(৩৬) একমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত (মাযহাব) দল আহলে হাদীস আন্দোলন। (ড. গালীব, জিহাদ ক্বিতাল, পৃঃ ৯৪; আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, https://youtu.be/KLUCGXdwPQg)
(৩৭) আহলে হাদীসের সালাফি মাযহাব ব্যতীত অন্য কোন মাযহাবের তাকলীদ করা শিরক, আর মুকাল্লিদরা মুশরিক। (আহলে হাদীসের শায়খ মাসউদ সাহেবের লেখা বইয়ের কামাল আহমাদের অনূদিত সালাফী পাবলিকেশন্স ঢাকা থেকে মুদ্রিত “মাযহাব ও তাকলীদ” নামক বইয়ে তাকলীদকে একাধিক স্থানে শিরক এবং মুকাল্লিদকে মুশরিক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম নামক এক আহলে হাদীসের লেখা মাযহাবীদের গুপ্তধন নামক বইয়েও একই বক্তব্য স্থান পেয়েছে যে, তাকলীদ করা শিরক।)
.
    (ঞ) তাহারাত বা পবিত্রতা সম্পর্কে:
(৩৮) সমস্ত জানোয়ার তথা জন্তুর পেশাব পবিত্র।” (সিদ্দিক হাসান খান, বুদূরুল আহিল্লাহ, পৃঃ ১৪-১৫)
(৩৯) এক বালতি গরুর পেশাবে চাদর ভিজিয়ে সালাত আদায় করবেন, সালাত সহীহ হবে। (আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ)
.
  (ট) সালাত বা নামায সম্পর্কে:
(৪০) নামাযে কারও গোপনাঙ্গ যদি সকলের সামনে খোলা থাকে, তাহলে তার নামায নষ্ট হবে না। (নুরুল হাসান খান, আরফুল জাদী, পৃ.২২)
(৪১) মহিলারা একাকী নামাযের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় নামায আদায় করতে পারবে। মহিলা যদি অন্যান্য মহিলাদের
সাথে সকলেই উলঙ্গ অবস্থায় নামায আদায় করে, তবে তাদের নামায বিশুদ্ধ হবে। স্বামী-স্ত্রী দু'জনে যদি উলঙ্গ হয়ে নামায আদায় করে তবে নামায বিশুদ্ধ হবে। মহিলা যদি তার পিতা, ছেলে, ভাই, চাচা, মামু সকলের সামনে উলঙ্গ অবস্থায় নামায আদায় করে, তবুও নামায বিশুদ্ধ হবে। (নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান, বুদুরুল আহিল্যা, পৃ.৩৯)
(৪২) সাথে কাপড় থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ উলঙ্গ হয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার নামায বিশুদ্ধ হবে। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.১. পৃ.৫২)
(৪৩) সালাত তথা নামাযের জন্য কাপড় পাক হওয়া জুরুরি নয়।” (দলীলুত ত্বালিব, পৃঃ ২৬৪)
(৪৪) মহিলারা পুরুষের ইমামতী করতে পারবে। (আবু বকর গাজিপুরী, মাসায়েলে গাইরে মুকাল্লিদীন, পৃঃ ৩০৯) 
(৪৫) মহিলাও মুয়াজ্জিন হতে পারবে।” (হাদিয়াতুল মাহদী, পৃঃ ২৩)
(৪৬) কাফের ব্যক্তির ইমামতিতে মুসলমানের নামায সহীহ হয়ে যাবে। এমনকি কাফের ব্যক্তি যদি বলেও আমি কাফের তবুও নামায হয়ে যাবে। (আবু বকর গাজিপুরী, মাসায়েলে গাইরে মুকাল্লিদীন পৃঃ ৩৮২) 
.
         (ঠ) সালাম ও কুরবানি সম্পর্কে:
(৪৭) (প্রসাব, পায়খানা) যে অবস্থায় থাকুন না কেন আপনি সালাম দিতে বাধ্য, সালাম দিতেই হবে এটাই শরিয়ত। আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, https://youtu.be/15znTZxJKKM)
(৪৮) এক বকরীতে ১০০ মানুষের পক্ষ থেকে কুরবানি হতে পারে।” ( সিদ্দিক হাসান খান, বুদূরুল আহিল্লাহ, পৃঃ ৩৯১)
.
     (ড) পর্দা ও যিনা সম্পর্কে:
(৪৯) আহলে হাদীস আলেম জনাব নুরুল হাসান খান লিখেছেন," মা, বোন, মেয়ে ও
মাহরাম মহিলাদের গুপ্তাঙ্গ ছাড়া সমস্ত শরীর দেখা বৈধ। (নুরুল হাসান খান, আরফুল জাদী, পৃ.৫২)
(৫০) প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের মেয়ে, বোন বা পুত্রবধুকে দিয়ে নিজের রান মালিশ করাতে পারবে। এবং প্রয়োজনে নিজের পুরুষাঙ্গে হাত দেয়াতে পারবে। (মিয়া নজীর হুসাইন দেহলবী, ফতোওয়ায়ে নজীরিয়া, খ.৩, পৃ.১৭৬)
(৫১) কেউ যদি তার মায়ের সাথে যিনা করে, যিনাকারী বালেগ বা নাবালেগ হোক, ছেলের পিতার জন্য তার মা হারাম হবে না। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.২, পৃ.২৮)
(৫২) কোন মহিলা যদি তিনজন লোকের সাথে সঙ্গম করে এবং এদের সঙ্গম থেকে বাচ্চা জন্ম নেয়, তাহলে উক্ত তিনজনের মাঝে লটারি করা হবে। যার নাম উঠবে বাচ্চা সে পাবে। যে বাচ্চা নিবে সে অপর দুইজনকে দুই তৃতীয়াংশ দিয়ত বা পন দিয়ে দিবে। (নুজুলুল আবরার, খ.২, পৃ.৭৫)
.
          (ঢ) বিবাহ সম্পর্কে:
(৫৩) মুতয়া বিবাহের বৈধতা কুরআনের অকাট্য আয়াত দ্বারা প্রমাণিত। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.২, পৃ.৩৩)
(৫৪) চারজন স্ত্রী রাখার কোন সীমাবদ্ধতা নেই। বরং যত ইচ্চা তত স্ত্রী রাখতে পারবে। (সিদ্দিক হাসান খান, জফরুল আমানী, পৃ. ১২১)
(৫৫) পুরুষ একই সময় যত ইচ্ছে বিয়ে করতেপারবে। (যফরুল কাযী, পৃঃ ১৪১ ও উরুফুল জাবী, পৃঃ ১১৫)
.
      (ণ) সঙ্গম পদ্ধতি সম্পর্কে
(৫৬) রানে সঙ্গম করা এবং স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করা জায়েয। বরং এটি হাদীস দ্বারা
প্রমাণিত। (সিদ্দিক হাসান খান, বুদুরুল আহিল্যা, পৃ.১৭৫)
(৫৭) স্ত্রীদের মলদ্বারে সঙ্গম করতে চাইলে স্ত্রীদের জন্য নিষেধ করা জায়েজ নয়। (ওহিদুজ্জামান, হাদইয়াতুল মাহদী, খ.১, পৃ.১১৮)
(৫৮) গুহ্যদ্বারে সঙ্গমের কারণে গোসলও ফরজ হয় না। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.১, পৃ. ২২)
(৫৯) কেউ যদি নিজের পুরুষাঙ্গ নিজের মলদ্বারে প্রবেশ করায়, তাহলে গোসল ওয়াজিব হবে না। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.১, পৃ.২২) 
.
    (ত) দুধ ও বীর্য পান সম্পর্কে:
(৬০) স্ত্রীর স্তন চুষা এবং দুধ খাওয়াতে কোনো অসুবিধা নেই। (আকরামুজ্জান, আব্দুর রাজ্জাক)
(৬১) পুরুষকে নিজের স্তনের দুধ পান করানো জায়েজ। যদিও উক্ত পর-পুরুষ দাড়ি বিশিষ্ট হোক। এর দ্বারা তাদের একজনের জন্য আরেকজনকে দেখা বৈধ হয়ে যাবে। (ওহিদুজ্জামান, নুজুলুল আবরার, খ.২, পৃ.৭৭)
(৬২) বীর্য পবিত্র। একটি ফতোয়া অনুযায়ী বীর্য খাওয়া বৈধ। (আবুল হাসান মুহিউদ্দীন, ফিকহে মুহাম্মাদী, খ.১, পৃ.২৬)
.
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা! সহীহ হাদীসের মোড়কে তাগুতের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কথিত আহলে হাদীসদের এরকম হাজারো উল্টাপাল্টা ভ্রান্ত ও কুফুরী আকিদা রয়েছে। যা সুস্পষ্টভাবে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। এখন প্রশ্ন হল, ইকামতে দ্বীন বিদ্বেষী এ নতুন ফিরকার অনুসারীরা এবং যারা এদের দলে যোগ দেবে তাদের সকলের তওহীদী আকিদা কি সত্যিই সহীহ? না কি তাদের তাওহীদ শিরক ও কুফর মিশ্রিত? যারা ভুল বুঝে ইকামতে দ্বীনের বিরোধী ফিরকায় যোগ দিয়েছেন, তাদের আহবান জানায় এ ভ্রান্ত ও গোমড়া পথ থেকে ফিরে আসুন- ইকামতে দ্বীনের পথে। আল্লাহ তায়ালা এ আখেরী যামানায় এ জাতীয় দ্বীন বিরোধী ফিরকাগুলো হতে আমাদের রক্ষা করুন। আমিন!

Post a Comment

0 Comments