Recent Tube

খিলাফতে রাশেদা’র পর মুসলমানদের শাসন ব্যবস্থা ‘খিলাফত’ নামে অভিহিত করা হলেও তা প্রকৃত ‘খিলাফত’ ছিল না। ইবনে যুবাইর।

 
 খিলাফতে রাশেদা’র পর মুসলমানদের শাসন ব্যবস্থা খিলাফত’ নামে অভিহিত করা হলেও তা প্রকৃতখিলাফতছিল না। 

    মুসলমানের শাসন চললেও ইসলামের শাসন চলেনি। ইসলামী শাসনের জরুরী শর্তাবলী সে শাসনে ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।

এবার এখানে ওমর ইবনে আবদুল আজিজের যুগের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন।

 "এ যুগটা ছিল খেলাফতে রাশেদারই পরিশিষ্ট। এটা ছিল একটা তীব্র আলোকচ্ছটা যা গোটা পথকে আলোকিত করে তুলেছিল। অবৈধভাবে আত্মসাৎকৃত শাসন ক্ষমতাকে তার আসল মালিক মুসলিম জাতির নিকট ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে তিনি তার খেলাফত যুগের উদ্বোধন করেন। কেননা ইসলামের দৃষ্টিতে সরকার গঠনের একমাত্র বৈধ পন্থা হচ্ছে এই যে, মুসলিম জাতি নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় শাসক নির্বাচিত করবে, সামরিক শক্তি দ্বারা কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রে নয়। তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলেনঃ

     ‘‘ভাই সব! আমাকে আমার নিজের এবং জাতির মতামত ছাড়াই এ কঠিন দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। আমার আনুগত্যের যে বোঝা তোমাদের ওপর চেপে রয়েছে তা আমি নিজেই দূরে নিক্ষেপ করছি। তোমরা নিজেরাই কাউকে নির্বাচন কর।’’

     জনতা চিৎকার করে বলে উঠলো, ‘‘আমিরুল মু’মিনীন! আমরা আপনাকেই নির্বাচন করছি। আপনার নেতৃত্বের ওপর আমরা পূর্ণ আস্থাশীল।’’

    এভাবে তিনি শাসক নির্বাচনের আসল পদ্ধতিকে পুনরুজ্জীবিত করলেন। কেননা জাতির সম্মতি ও পরামর্শ ব্যতিত কেউ শাসক নিযুক্ত হতে পারে না।

    অতঃপর তিনি জনতাকে লক্ষ্য করে বলেন,

‘‘বন্ধুগণ! আমার আগে কিছু সংখ্যক শাসক অতিবাহিত হয়ে গেছে। তারা ছিল জালেম। তোমরা কেবল তাদের জুলুম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাদেরকে সহযোগিতা দিয়েছ। মনে রেখ! স্রষ্টার না-ফরমানী করে সৃষ্টির আনুগত্য করা যায় না। যে ব্যক্তি নিজে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে তার আনুগত্য স্বীকার করা অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু যে আল্লাহ্‌র না-ফরমানী করে তার আনুগত্য স্বীকার করা উচিত নয়। যতক্ষণ আমি তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করবো ততক্ষণ তোমরাও আমার নির্দেশ মেনে চলবে। কিন্তু আমি যদি আল্লাহর না-ফরমানী করি তাহলে আমার নির্দেশ পালন করা তোমাদের জন্য জরুরী নয়।’’(ইসলামের স্বর্ণযুগে সামাজিক ন্যায়নীতি;লেখকঃ সাইয়েদ কুতুব শহীদ)।

     অবস্হা আজ এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে,প্রতিদিন একেকেটি ইসলামী দল তৈরি হচ্ছে।প্রতিটি দলের দাওয়াত ভিন্ন কায়দায়।কারও দাওয়াত মসজিদে সীমাবদ্ধ ,কারো আবার  খানকায়,কারও ইসলাম মাদরসাতে আবার কারও পীর ব্যবসায়।

     একেকটি দলের নেতা একেকটি বুজর্গ। তাদের নিকট তাওহিদের অর্থাৎ আল্লাহ এক,তাঁর কোনো শরিক নেই" এ কথার দাওয়াত নেই।নেই রিসালাত তথা নবি-রাসুলের কাজ বা দায়িত্ব সম্পর্কে কোন কথা।আল্লাহ তাগুতকে বর্জন করতে বলেছেন।অথচ,দিনে রাতে ওই সব বুজর্গ তাগুতকে আষ্টেপিষ্ঠে আঁকড়ে ধরে নিজেদেরকে শায়খ,মুফতি,মুহাদ্দিস বলে জাহির করছেন।কিন্তু তাদের সমালোচনা করা যাবে না।এতে হবে মহা পাপ।

     অথচ,ইসলামের চার খলিফা ও ওমর ইবনে আবদুল আজিজ-তাঁদের প্রত্যেকের-ই বক্তব্য ছিল,"যতক্ষণ আমি তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করবো ততক্ষণ তোমরাও আমার নির্দেশ মেনে চলবে। কিন্তু আমি যদি আল্লাহর না-ফরমানী করি তাহলে আমার নির্দেশ পালন করা তোমাদের জন্য জরুরী নয়।’’
--------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments