Recent Tube

আজ আমরা কোন পথেঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

        আজ আমরা কোন পথেঃ

   ইহুদী, খ্রিষ্টান, মুশরিক, মুনাফিকসহ দুনিয়ার সকল কাফেররা আদা জল খেয়ে কোমড়ে গামছা বেধে হাতে
হাত রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলাম আর মুসলিম কে দুনিয়া থেেক বিদায় করে
দেওয়ার জন্যে যখন ওঠেপরে লেগেছে,
তখনও এই মুসলিম জাতি নিজেদের মধ্যে দলাদলি আর ফতুওয়াবাজী করেই
যাচ্ছে। তারা এও জানে ইসলামের দুশমনরা ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত আনার সাহস পাচ্ছে আমাদের অনৈক্যের কারণে। অথচ মুসলিম ঐক্যের গুরত্ব দিয়ে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বলেনঃ


وَلَا تَكُونُوا۟ كَٱلَّذِينَ تَفَرَّقُوا۟ وَٱخْتَلَفُوا۟ مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ   ٱلْبَيِّنَٰتُۚ وَأُو۟لَٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ 

  তোমরা সেই লোকদের মত হয়ে যেয়ো না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন পৌঁছার পরে বিভক্ত হয়েছে ও মতভেদ করেছে এবং এ শ্রেণীর লোকেদের জন্য আছে মহা শাস্তি। 
সূরা ইমরানঃ১০৫

ﺷَﺮَﻉَ ﻟَﻜُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ﻣَﺎ ﻭَﺻَّﻰ ﺑِﻪِ ﻧُﻮﺣًﺎ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ
ﺃَﻭْﺣَﻴْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻭَﻣَﺎ ﻭَﺻَّﻴْﻨَﺎ ﺑِﻪِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻭَﻣُﻮﺳَﻰ
ﻭَﻋِﻴﺴَﻰ ﺃَﻥْ ﺃَﻗِﻴﻤُﻮﺍ ﺍﻟﺪِّﻳﻦَ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺘَﻔَﺮَّﻗُﻮﺍ ﻓِﻴﻪ


 তিনি তোমাদের জন্য
সেই দ্বীনই স্থির করেছেন, যার হুকুম
দিয়েছিলেন নূহকে এবং
(হেরাসূল!) যা আমি ওহীর মাধ্যমে
তোমার কাছে পাঠিয়েছি এবং
যার হুকুম দিয়েছিলাম ইবরাহীম,
মূসা ওঈসাকে; যে, কায়েম রাখ এই
দ্বীন এবং তাতে সৃষ্টি করো না বিভেদ।
সূরাতুশ শূরা(৪২) : ১৩।

ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺇِﺧْﻮَﺓٌ ﻓَﺄَﺻْﻠِﺤُﻮﺍ ﺑَﻴْﻦَ ﺃَﺧَﻮَﻳْﻜُﻢْ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ
ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮﻥَ ۞ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺨَﺮْ
ﻗَﻮْﻡٌ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻡٍ ﻋَﺴَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻧُﻮﺍ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﻧِﺴَﺎﺀٌ
ﻣِﻦْ ﻧِﺴَﺎﺀٍ ﻋَﺴَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻦَّ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻠْﻤِﺰُﻭﺍ
ﺃَﻧْﻔُﺴَﻜُﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻨَﺎﺑَﺰُﻭﺍ ﺑِﺎﻟْﺄَﻟْﻘَﺎﺏِ ﺑِﺌْﺴَﺎﻟِﺎﺳْﻢُ ﺍﻟْﻔُﺴُﻮﻕُ ﺑَﻌْﺪَ
ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺘُﺐْ ﻓَﺄُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤُﻮﻥَ ۞ ﻳَﺎ
ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺍﺟْﺘَﻨِﺒُﻮﺍ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻈَّﻦِّ ﺇِﻥَّ ﺑَﻌْﺾَ
ﺍﻟﻈَّﻦِّ ﺇِﺛْﻢٌ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺠَﺴَّﺴُﻮﺍ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻐْﺘَﺐْ ﺑَﻌْﻀُﻜُﻢْ ﺑَﻌْﻀًﺎ
ﺃَﻳُﺤِﺐُّ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻟَﺤْﻢَ ﺃَﺧِﻴﻪِ ﻣَﻴْﺘًﺎ ﻓَﻜَﺮِﻫْﺘُﻤُﻮﻩُ
ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﻮَّﺍﺏٌ ﺭَﺣِﻴﻢٌ ۞ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﺇِﻧَّﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺫَﻛَﺮٍ ﻭَﺃُﻧْﺜَﻰ ﻭَﺟَﻌَﻠْﻨَﺎﻛُﻢْ ﺷُﻌُﻮﺑًﺎ
ﻭَﻗَﺒَﺎﺋِﻞَ ﻟِﺘَﻌَﺎﺭَﻓُﻮﺍ ﺇِﻥَّ ﺃَﻛْﺮَﻣَﻜُﻢْ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﺗْﻘَﺎﻛُﻢْ ﺇِﻥَّ
ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠِﻴﻢٌ ﺧَﺒِﻴﺮٌ ۞ 


  ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করেদাও। আল্লাহকে ভয় কর, যাতে
তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও।


‘হে মুমিনগণ! কোনো পুরুষ যেন অপর পুরুষকে উপহাস না করে। সে (অর্থাৎ যাকে উপহাস করাহচ্ছে) তার চেয়ে উত্তম হতে পারে। এবং কোনো নারীও যেন অপর নারীকে উপহাস না করে। সে(অর্থাৎ যে
নারীকে উপহাস করা হচ্ছে) তার চেয়ে উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অন্যকে দোষারোপকরো না এবং একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেকো না। ঈমানের পর ফিসকের
নাম যুক্ত হওয়া কতমন্দ! যারা এসব থেকে বিরত হবে না তারাই জালেম।


‘হে মুমিনগণ! অনেক রকম অনুমান থেকে বেঁচে থাক। কোনো কোনো অনুমান গুনাহ। তোমরা কারো গোপন ত্রুটি অনুসন্ধান করবে
না এবং একে অন্যের গীবত করবে না। তোমাদের কেউ কি তার মৃতভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? এটা তো তোমরা ঘৃণা করে থাক। আল্লাহকে ভয় কর।
নিশ্চয়ই তিনি বড় তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।


‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে এবং তোমাদের মাঝে বিভিন্নসম্প্রদায় ও গোত্র বানিয়েছি। যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। নিশ্চিত জেনো, তোমাদের মধ্যেআল্লাহর কাছে সেই সর্বাপেক্ষা বেশি মর্যাদাবান, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি মুত্তাকী।
নিশ্চয়ইআল্লাহ সব কিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।’-সূরা হুজুরাত (৪৯) :১০-১৩।

   এই আয়াতগুলোতে মুমিনদের মাঝে
ভ্রাতৃত্বের চেতনা জাগ্রত করা
হয়েছে এবং মুমিনের
কাছেমুমিনের প্রাপ্য অধিকার
সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই
আয়াতগুলো থেকে প্রমাণ হয়,
ভ্রাতৃত্বের মানদন্ডশুধু ঈমান।
সুতরাং উল্লেখিত অধিকারগুলো
মুমিনমাত্রেরই প্রাপ্য তার মুমিন
ভাইয়ের কাছে।
ঈমানী ভ্রাতৃত্বের রয়েছে অনেক
দাবি। এ আয়াতে বিশেষভাবে
এমন কিছু দাবি উল্লেখ করা
হয়েছে,যেগুলো পূরণ না করার
কারণে সমাজে কলহ-বিবাদ সৃষ্টি
হয়। তেমনি কলহ-বিবাদ সৃষ্টি হলে
এইবিষয়গুলো আরো বেশি লঙ্ঘিত
হয়।

   অভিজ্ঞতায় দেখা যায়,
দ্বীনী-দুনিয়াবী মতভেদের
ক্ষেত্রে একেঅপরকে উপহাস ও
তাচ্ছিল্য করা, গীবত করা, মিথ্যা
অপবাদ দেওয়া, কুধারণা পোষণ করা,
কটুক্তিকরা, খারাপ নামে বা মন্দ
উপাধিতে ডাকা-এই সব বিষয়ের
চর্চা হতে থাকে। লোকেরা যেন
ভুলেইযায় যে, কুরআন মজীদে এ
বিষয়গুলোকে হারাম করা হয়েছে।
প্রত্যেকের আচরণ থেকে মনে
হয়,প্রতিপক্ষের ইজ্জত-আব্রু নষ্ট করা
হালাল! মতভেদের কারণে তার
কোনো ঈমানী অধিকার
অবশিষ্টনেই। 

    অথচ এ তো শুধু মুমিনের
হক নয়, সাধারণ অবস্থায়
মানুষমাত্রেরই হক। একজন মানুষ
অপরএকজন মানুষের কাছে এই
নিরাপত্তাটুকু পাওয়ার অধিকার
রাখে। এমনকি যদি সে মুসলিমও না
হয়।


    হায়! বিরোধ ও মতভেদের ক্ষেত্রে
যদি আমরা প্রতিপক্ষকে অন্তত একজন
মানুষ মনে করে তার গীবত-
শেকায়েত থেকে, মিথ্যা অপবাদ
দেওয়া থেকে, উপহাস-বিদ্রূপ করা
থেকে ও মন্দ নামে ডাকা
থেকেবিরত থাকতাম! আল্লাহর
রাসূলের সুন্নাহয় তো জীবজন্তু,
এমনকি জড় বস্ত্তরও হক ও অধিকার
বর্ণিতহয়েছে। তো মতভেদকারী
আর কিছু না হোক একজন প্রাণী তো
বটে!!

   তো দ্বীনী মতভেদের ক্ষেত্রে
যদি এইসব আচরণ করা হয় এবং এ
কারণে দ্বীনের পক্ষ হতেই
ঐ‘খাদিমে দ্বীনে’র নামের
সাথে ফাসিক উপাধি যুক্ত হয়
তাহলে তা দ্বীন ও শরীয়তের কেমন
খেদমত তাখুব সহজেই অনুমেয়।
আল্লাহ তাআলা আমাদের
হেফাযত করুন।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।         

Post a Comment

0 Comments