Recent Tube

আমরা সেই সে জাতি ১ম খন্ড। ৷ আবুল আসাদ

  
    বড় লাভের ব্যবসা করলে, সুহাইব। 

 নবুওয়াতের তখন একদম শিশুকাল। নবুওয়াতের বাতি জ্বলছে। জ্বলছে মক্কার ছোট গণ্ডির মধ্যে। জাহিলিয়াতের অন্ধকার এ আলোক শিখাকে গলাটিপে মারার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় রত। কিন্তু নবুওয়াতের আলোক শিখা যে আলোক শিশুদের তৈরি করেছে, তারা জগত জোড়া সহনশীলতা নিয়ে নীরবে আত্মরক্ষা করে চলেছে। এ ধরনেরই এক আলোক-শিশু হযরত সুহাইব (রা)। অত্যাচারের স্টিম রোলার চলছে তাঁর উপর। চরম সহনশীলতার প্রতীক সুহাইব সব অত্যাচার, সব নির্যাতন সয়ে যাচ্ছেন নীরবে। আল্লাহর এ সৈনিকদের উপর এ অমানুষিক নির্যাতন কেমন করে কত দিন আর সয়ে যাবেন মহানবী (সা)। তাঁর প্রাণ কেঁদে উঠল। সকলের মত সুহাইবকেও মহানবী (সা) একদিন মক্কা থেকে হিজরাত করার নির্দেশ দিলেন। নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গেই সুহাইব সিদ্ধান্ত নিলেন হিজরাতের। মহানবীর (সা) নির্দেশের কাছে, ইসলামের জন্য ত্যাগ স্বীকারের কাছে স্বদেশের মায়া, স্বীয় সহায় সম্পদের মায়া মুহূর্তে উবে গেল। কাউকে কিছু না বলে একদিন হিজরতের উদ্দ্যেশে বের হলেন সুহাইব। সাথে পরিধানের পোশাকটুকুও আত্মরক্ষার জন্য কিছু অস্ত্র ছাড়া আর কিছুই নেই। সুহাইবের এ যাত্রা ধরা পরে গেল কুরাইশ চরদের চোখে। সংবাদ পেয়ে ছুটে এল একদল কুরাইশ। তারা সুহাইবকে জোর করে ধরে নিয়ে যেতে চায় মক্কায়।সুহাইব মক্কার বাইরে গিয়ে দল পাকাবে, মুসলমানদের দল ভারি করবে কুরাইশরা তা হতে দেবে কেন? কিন্তু সুহাইব একাই রুখে

 দাঁড়েলেন কুরাইশ দলটির বিরুদ্ধে। বললেন, “তোমরা জান, আমি তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ তীরন্দাজ। আমার হাতে একটি তীর থাকা পর্যন্ত তোমরা কেউ আমাকে স্পর্শ করতে পারবেনা। তীর ফুরিয়ে গেলে তরবারি আছে। তররবারি ভেঙ্গে গেলে কিংবা হাতছারা হলে তারপর তোমরা আমাকে যা খুশি করতে পার। এত কিছুর চেয়ে বরং ভালো, তোমরা মক্কায় আমার যা কিছু মাল-সম্পদ আছে সব নিয়ে নাও, আর আমি চলে যাই।” কুরাইশদল অর্থের সন্ধান পেয়ে সুহাইবকে ধরার বিপদপূর্ণ ঝুকি না নেয়াই যুক্তিযুক্ত মনে করল। তারা পথ ধরল মক্কার আর সব বিসর্জন দিয়ে, মাতৃভূমির মায়া কাটিয়ে রিক্ত-নিঃস্ব সুহাইব অনিশ্চিতের পথে পাড়ি জমালেন। এদের সম্পর্কেই আল কুরআন বলছেঃ “এমনও লোক আছে যারা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নিজের জীবনটাকে কিনে নেয়, আল্লাহ নিজের বান্দাদের উপর সর্বদাই দয়াশীল।”

মহানবীর (সা) হিজরতের পর মদীনার সন্নিকটবর্তী পল্লীর একটি দিন। নবীর (সা) সাথে সাক্ষাত ঘটল সুহাইবের। নবী তাঁকে কাছে ডেকে বললেন, “বড় লাভের ব্যবসাই করলে, সুহাইব।”

সুহাইবকে উঁচু মর্যাদা দিতো সকলেই। হযরত উমার (রা) তাঁর মূমুর্ষ অবস্থায় আছিয়ত করেছিলেন তাঁর জানাযায় নামায যেন সুহাইবের দ্বারা পড়ান হয়।

Post a Comment

0 Comments