Recent Tube

মুসলিমদের পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, তর্ক-বির্তক পরিহার করা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআ'লার বানী ও রাসূল সাঃ-এর বাণী। শামীম আজাদ।



মুসলিমদের পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, তর্ক-বির্তক পরিহার করা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআ'লার বানী রাসূল সাঃ-এর বাণী।

وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পর ঝগড়া করবে না, তাহলে তোমরা সাহস হারাবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। আর তোমরা ধৈর্যধারণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। 
সূরা আল-আনফালঃ ৪৬

পরস্পর বিরোধিতার ফলে অন্তরগুলি বিভক্ত হয়ে যায়ঃ 
 রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন;
وَلاَ تَخْتَلِفُوا فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ
তোমরা পরস্পরের বিরোধিতা করো না; তাহলে তোমাদের অন্তরগুলি বিভক্ত হয়ে যাবে। (সহিহ মুসলিম: ৮৫৮ সূনান আত-তিরমিজী: ২২৬)

 অন্যত্র রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন;
وَلاَ تَخْتَلِفُوا، فَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمُ اخْتَلَفُوا فَهَلَكُوا
তোমরা মতবিরোধ বা পরস্পরের বিরোধিতা করো না; কেননা, তোমাদের পূর্ববর্তীগণ মতবিরোধের কারণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। (সহীহুল বুখারী: ৩৪৭৬, ২৪১০)

    মহান আল্লাহ এই উম্মতকে আমভাবে তর্ক করতে অনুমতি দেননি। বিধর্মীদের সাথে তর্ক করতে হলে সৌজন্যের সাথে করতে হবে। আল্লাহ বলেন;
وَلَا تُجَادِلُوا أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِلَّا الَّذِينَ ظَلَمُوا مِنْهُمْ ۖ وَقُولُوا آمَنَّا بِالَّذِي أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَأُنْزِلَ إِلَيْكُمْ وَإِلَٰهُنَا وَإِلَٰهُكُمْ وَاحِدٌ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবদের সাথে বিতর্ক করবে না। তবে তাদের সাথে করতে পার, যারা তাদের মধ্যে যুলুম করেছে। আর তোমরা বল, ‘আমাদের প্রতি এবং তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে, তাতে আমরা ঈমান এনেছি। আর আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ তো এক। আর আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী’। 
সূরা আল-আনকাবুতঃ ৪৬

     কিতাবীদের সাথে উত্তম পন্থায় তর্ক-বির্তক কর। উদাহরণত: কঠোর কথাবার্তার জওয়াব নম্র ভাষায়, ক্রোধের জওয়াব সহনশীলতার সাথে এবং মূর্খতাসূলভ হট্টগোলের জওয়াব গাম্ভীর্যপূর্ণ কথাবার্তার মাধ্যমে দাও। বিতর্ক ও আলাপ-আলোচনা উপযুক্ত যুক্তি-প্রমাণ সহকারে, ভদ্র ও শালীন ভাষায় এবং বুঝবার ও বুঝাবার ভাবধারায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে করতে হবে। এর ফলে যার সাথে আলোচনা হয় তার চিন্তার সংশোধন হবে। একজন দাঈকে চিন্তা করা উচিত, তিনি শ্রোতার হৃদয় দুয়ার উম্মুক্ত করে সত্যকথা তার মধ্যে বসিয়ে দেবেন এবং তাকে সঠিক পথে আনবেন। কিতাবীদের সাথে বিতর্ক-আলোচনা করার ব্যাপারে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এটা কেবলমাত্র বিশেষভাবে কিতাবীদের জন্য নয়। মুশরিকদের সাথেও তর্কের ব্যাপারে অনুরূপ নির্দেশ আছে। বরং দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে এটি সাধারণ নির্দেশ।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন;
ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنْ ضَلَّ عَنْ سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে দাওয়াত দাও হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে বির্তক কর সদ্ভাবে; নিশ্চয় তোমার রব, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়েছে, সে সম্বন্ধে বেশী জানেন এবং কারা সৎপথে আছে তাও তিনি খুব ভালভাবেই জানেন। 
সূরা আন্-নাহলঃ ১২৫

   উক্ত আয়াতে দাওয়াত দেয়ার মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ, তা হবে হিকমত, সদুপদেশ ও নম্রতার উপর ভিত্তিশীল এবং আলোচনার সময় সদ্ভাব বজায় রাখা, কঠোরতা পরিহার করা ও নম্রতার পথ অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।           

Post a Comment

0 Comments