Recent Tube

কুরআন হাদিসের আলোকে বিবাহের গুরুত্ব--৪; --শামীম আজাদ।

        কুরআন হাদিসের   
        আলোকে বিবাহের   
        গুরুত্ব ফজিলত  না  
       করার পরিনতি এবং 
        করণীয়-বর্জনীয় । 
                                পর্ব-৪র্থ;
---------------------------------

ইসলামে বৈরাগ্যবাদে স্থান নেই। তাই মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত বিবাহ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মুসলমান হতে পারেনা।

বিবাহ করা সকল নবীদের সুন্নাত। 
আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجاً وَذُرِّيَّةً 
‘তোমার পূর্বে আমরা অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম’।
সূরা রা‘দঃ ৩৮

বিবাহে উৎসাহ দান 

بَاب الْحَثِّ عَلَى التَّزْوِيجِ أَخْبَرَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ أَبِي الْمُغَلِّسِ عَنْ أَبِي نَجِيحٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ قَدَرَ عَلَى أَنْ يَنْكِحَ فَلَمْ يَنْكِحْ فَلَيْسَ مِنَّا 
আবী নাজীহ রাহি: হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি বিবাহ করার সামর্থ থাকা সত্ত্বেও বিবাহ করেনা, সে আমাদের দলভূক্ত নয়।”
সুনান আদ-দারেমী ২২০৩

রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রীদের নিকট আগত তিন ব্যক্তির এক ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করার স্বার্থে বিবাহ না করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাদীসে এসেছে 
 
وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ - رضي الله عنه - أَنَّ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ، فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِىْ فَلَيْسَ مِنِّىْ
 আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আমি নারীদেরকে বিবাহ করি (সুতরাং বিবাহ করা আমার সুন্নাত)। অতএব যে আমার সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার দলভুক্ত নয়’।
বুখারী ৫০৬৩, মুসলিম ১৪০১, নাসায়ী ৩২১৩, আহমাদ ১৩১২২, ১৩৩১৬

হাদিসে এসেছে- 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
إذَا تَزَوَّجَ العَبدُ فَقَد استَكمَلَ نِصْفَ الدِّين فَلْيَتَّقِ اللهَ في النِّصف البَاقي.
‘‘ বান্দা যখন বিবাহ করে, তখন সে তার অর্ধেক ঈমান (দ্বীন) পূর্ণ করে। অতএব বাকী অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’’
আল-জামিউস সাগীর ওয়া যিয়াদাতুহ ৬১৪৮

‘ইসলামে বৈরাগ্যতা নেই এবং বৈরাগ্য জীবনযাপন করাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন। 

حديث سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، قَالَ رَدَّ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَلَى عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُونٍ التَّبتُّلَ، وَلَوْ أَذِنَ لَهُ لاَخْتَصَيْنَا

সা‘দ ইব্‌নু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উসমান ইব্‌নু মাজ‘উনকে শাদী থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি তাকে অনুমতি দিলে, আমরাও খাসি হয়ে যেতাম। (বুখারী পর্ব ৬৭/৮ হাঃ ৫০৭৪, মুসলিম পর্ব ১৬  হাঃ ১৪০২)

عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَيْسَ مَعَنَا نِسَاءٌ فَقُلْنَا أَلَا نَخْتَصِيْ فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ فَرَخَّصَ لَنَا بَعْدَ ذَلِكَ أَنْ نَتَزَوَّجَ الْمَرْأَةَ بِالثَّوْبِ ثُمَّ قَرَأَ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُحَرِّمُوْا طَيِّبٰتِ مَآ أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ}.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেছেন যে, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে যুদ্ধে বের হতাম, তখন আমাদের সঙ্গে স্ত্রীগণ থাকত না, তখন আমরা বলতাম আমরা কি খাসি হয়ে যাব না? তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করলেন এবং কাপড়ের বিনিময়ে হলেও মহিলাদেরকে বিয়ে করার অর্থাৎ নিকাহে মুত‘আর অনুমতি দিলেন এবং পাঠ করলেনঃ 
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُحَرِّمُوا طَيِّبَاتِ مَا أَحَلَّ اللهُ لَكُمْ
[৫০৭১, ৫০৭৫; মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৪, আহমাদ ৪১১৩] (আ.প্র. ৪২৫৪, ই.ফা. ৪২৫৭)
ফুটনোটঃ
[১] প্রকাশ থাকে যে, মুতআ বিবাহ খায়বারের যুদ্ধে চিরতরে হারাম করা হয়েছে।
বুখারী ৪৬১৫

বিবাহ মানুষকে স্বাবলম্বী ও সম্পদশালী করে তুলেঃ

বিবাহের ক্ষেত্রে একজন পুরুষের জন্য আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া খুব জরুরী। কারণ বিয়ে সম্পর্কিত খরচ এবং বিয়ে পরবর্তী যত সাংসারিক ব্যয়ভার বহন করতে হবে তার সব কিছুই স্বামীর দায়িত্ব। এজন্য অনেক পুরুষই বিয়ের উপযুক্ত বয়স হওয়া সত্বেও সত্ত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে চায় না বা বিয়ে করতে পারেনা। আর এসব কারণে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বিয়েও করতে বলেছেন এবং পাশাপাশি আর্থিক স্বাবলম্বী করে দেওয়ারও প্রতিশ্রতিও  দিয়েছেন।
وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ. وَلْيَسْتَعْفِفِ الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ نِكَاحًا حَتَّى يُغْنِيَهُمْ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ
 “তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে স্বচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিবাহে সমর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।” 
সূরা নূরঃ ৩২-৩৩

অর্থাৎ যাদের বিয়ের সময় হয়েছে কিন্তু বিয়ে করছে না শুধু আর্থিক সমস্যার কারণে যদি তারা ন্যায়পরায়ণ হয় তাহলে মহান আল্লাহ তাদেরকে স্বচ্ছল করে দিবেন, কারণ  তিনি বিরাট প্রাচুর্যের মালিক।

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ ثَلاَثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللَّهِ عَوْنُهُمُ الْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُكَاتَبُ الَّذِي يُرِيدُ الأَدَاءَ وَالنَّاكِحُ الَّذِي يُرِيدُ الْعَفَافَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা তিন প্রকার মানুষকে সাহায্য করা নিজের কর্তব্য হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদকারী, মুকাতাব গোলাম- যে চুক্তির অর্থ পরিশোধের ইচ্ছা করে এবং বিবাহে আগ্রহী লোক- যে বিয়ের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করতে চায়।
জামে' আত-তিরমিজি ১৬৫৫

ইনশাআল্লাহ চলবে...।
---------------------------------------------- 
লেখকঃ  ইসলামিক আর্টিকেল  লেখক  ও  অনলাইন  এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments