Recent Tube

কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিবাহের গুরুত্ব, ফজিলত, না করার পরিণতি এবং করণীয়-বর্জনীয় - ১ম ; --শামীম আজাদ।


কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিবাহের  গুরুত্ব, ফজিলত, ও না করার পরিণতি এবং করণীয়-বর্জনীয় । 
   

                            ১ম পর্ব

বিবাহের আরবী শব্দ (نكِحُو) "নিকাহ" এর শাব্দিক অর্থ হলো, একত্রিত হওয়া, সহবাস, নারী পুরুষ মিলিত হওয়া।

বিবাহ হচ্ছে এমন একটি চুক্তি, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ শারীরিকভাবে একে অপরের সাথে মিলিতহওয়া বৈধ হয়। অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ পরস্পরে নিজেদের দৈহিক ও প্রাসঙ্গিক চাহিদা পূরণের জন্য সমাজ ও ধর্ম স্বীকৃত বৈধ পন্থার নামই হচ্ছে বিবাহ। বিবাহ মহান আল্লাহ তা'আলা এক বিশেষ নেয়ামত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত। ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক। চারিত্রিক আত্মরক্ষার অনুপম হাতিয়ার। যুবক-যুবতীর চরিত্র গঠনের অন্যতম উপাদান। আদর্শ পরিবার গঠন, মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং মানসিক প্রশান্তি লাভের প্রধান উপকরণ হচ্ছে বিবাহ। যা প্রত্যেক মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। এ চাহিদা পূরণার্থেই ইসলামি শরীআত বিয়ের হুকুম আরোপ করেছে।

মানবজাতিকে লিভ-টুগেদারের মতো মহাঅভিশাপের হাত থেকে রক্ষা করতে বৈধভাবে যৌন চাহিদা পূরণের জন্যই মহান রাব্বুল আলামিন বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাপ্ত বয়স্ক ও সামর্থ্যবান হলে কালবিলম্ব না করে বিবাহ করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। বিয়ে শুধু জৈবিক চাহিদাই নয়, বরং একটি মহান ইবাদতও বটে। বিবাহ দ্বারা ইহ ও পরকালীন কল্যাণ সাধিত হয়। বিবাহ মানুষের জীবনকে পরিশীলিত, মার্জিত এবং পবিত্র করে তোলে। আদর্শ পরিবার গঠন, জৈবিক চাহিদা পূরণ, মানসিক প্রশান্তি ও মানব বংশ বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো বিবাহ।

ইসলাম বিবাহের মাধ্যমে বনি আদমের বংশের ধারাবাহিকতার সঙ্গে সঙ্গে সহিহ-শুদ্ধ তরিকায় বংশের বৃদ্ধি ঘটায়। এ বংশের মধ্যে যে কোন ধরনের বিচ্ছিন্নতাকে অপছন্দ করে।

আল্লাহ তা'আলা বলেন 
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاء بَشَرًا فَجَعَلَهُ نَسَبًا وَصِهْرًا وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا 
তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম।  
সূরা ফোরকানঃ ৫৪

বিবাহ ভ্রাতৃত্ব শিক্ষা দেয়ঃ

আল্লাহ তা'আলা সমস্ত মানুষকে মানব সৃষ্টির প্রক্রিয়া হিসেবে একজন মানব হযরত আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি করেছেন। একজন মানব থেকে সকল মানুষের সৃষ্টি এতে ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা পাওয়া যায়। এই ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমেই পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতায় উৎসাহিত হয়েই একে অন্যের অধিকারের প্রতি যত্নশীল হবে। থাকবে না ধনী-গরিবের ব্যবধান। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন, 

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيرًا وَنِسَاء وَاتَّقُواْ اللّهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامَ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا 
হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।  
সূরা নিসাঃ ১

চলবে..
----------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments