Recent Tube

দুরুদ পাঠের ফজিলত :

    
                  দুরুদ পাঠের ফজিলত :

মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার উপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করবেন।”
(মুসলিম, মিশকাত ৯২১ নং)।

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর আ’স (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার দরুন তার উপর দশটি রহমত (করুণা) অবতীর্ণ করবেন।
(মুসলিম: ৩৮৪, তিরমিযী: ৩৬১৪, নাসায়ী ৬৭৮, আবূ দাউদ: ৫২৩, আহমাদ: ৬৫৩২)।

অন্য এক বর্ণনায় আছে,
“---এবং তার ১০টি পাপ মোচন হবে ও সে ১০টি মর্যাদায় উন্নীত হবে।”
(নাসাঈ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৫৫০,
মিশকাত ৯২২নং)।

*জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পড়ার কারণ*

প্রশ্ন:  জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পড়তে বলা হয়। এর কারণ কি?

উত্তর:
 শুক্রবারে আমাদের যে সব করণীয় রয়েছে তন্মধ্যে রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি অধিক পরিমানে দুরুদ পাঠ করা। এর কারণ বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত হাদীসটিতে:
আউস বিন আউস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: 
إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ ، فِيهِ خُلِقَ آدَمُ عَلَيْهِ السَّلَام ، وَفِيهِ قُبِضَ ، وَفِيهِ النَّفْخَةُ ، وَفِيهِ الصَّعْقَةُ ، فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنْ الصَّلَاةِ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلاتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرَمْتَ -أَيْ يَقُولُونَ قَدْ بَلِيتَ- قَالَ : إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ حَرَّمَ عَلَى الأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمْ السَّلام
 “তোমাদের দিন সমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাকে মৃত্যু দেওয়া হয়েছে, এই দিনে সিংগায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং মহা বিপর্যয়ও (ক্বিয়ামত) ঘটবে এই দিনেই। তাই এই দিনে তোমরা বেশি বেশি আমার উপর দরুদ পাঠ করবে; কেননা তোমাদের দরুদ আমার উপর পেশ করা হয় জুমার দিনে।
 সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলে, হে  আল্লাহর রাসূল, আপনি কবরে গলে শেষ হওয়ার পরেও  কিভাবে আপনার উপর দরুদ পেশ  করা হয়? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা মাটির জন্য নবীদের দেহ ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন।  ” 
(আবু দাউদ,নাসাঈ,ইবনু মাজা প্রমুখের বরাতে সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব,মিশকাত আলবানী হা:নং১৩৬১)
উক্ত হাদীস থেকে আমরা জানতে পারলাম, রাসূল সা. এর প্রতি অধিক পরিমানে দুরুদ পাঠের নির্দেশ দেয়ার কারণ হল, জুমার দিনটি নানা দিক থেকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এবং গুরুত্ববহ আর সে দিন আমাদের দরুদগুলো প্রিয় নবী সা. এর কবরে তার নিকট পেশ করা হয়ে থাকে। আল্লাহু আলাম।
শাইখ আব্দুল্লাহীল হাদী

◾▪ দরুদপাঠ হচ্ছে নবীর উপর সালাম পেশ করা।আর দরুদ গুলো হচ্ছে-
কয়েকটি সহীহ দুরুদ মুখস্থ করুন
দুরুদ ফারসী শব্দ, যার অর্থ হচ্ছেঃ আল্লাহ তাআ’লার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য রহমত, বারাকাত ও শান্তির জন্য দুয়া করা। অনেকে সব সময় পড়ার মতো কিছু ‘সহীহ দুরুদ’ জানতে চান। নীচে কয়েকটি সহীহ দুরুদ আরবী, বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ বর্ণনা করছি। উল্লেখ্য, আমি এখানে বা অন্য লেখাগুলোতে উচ্চারণের ক্ষেত্রে নিজস্ব নিয়ম অনুসরণ করি। মনে রাখবেন, আরবীর বাংলা উচ্চারণ দেখে কখনোই ক্বুরআনের আয়াত, দুয়া বা দুরুদ শুদ্ধভাবে পড়া যায় না। সেইজন্য আপনারা সব সময়েই আরবী থেকে দেখে পড়বেন। শুধুমাত্র কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে বাংলা উচ্চারণের সাহায্য নেবেন। কিন্তু শুধুমাত্র বাংলা উচ্চারণ দেখে মুখস্থ করবেন না। 

🔵(১) দুরুদে ইব্রাহীমঃ সর্বোত্তম দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহীম,যা আমরা সবাই সালাতে পাঠ করে থাকি। অনেকে প্রচলিত কিছু ওযীফার বইয়ে লিখিত বানোয়াট দুরুদ (যেমন দুরুদের হাজারী, দুরুদে লাখী, দুরুদে নারিয়া, দুরুদে আকবর ইত্যাদি) এইগুলো পড়েন আর এইগুলোর মিথ্যা ফযীলতের কথা শুনে মনে করেন, দুরুদে ইব্রাহীম পড়লে বুঝি কম সওয়াব হয়। সেইজন্যে তাঁরা দুরুদে ইব্রাহীম বাদ দিয়ে প্রচলিত ওযীফার বইয়ে লিখা বানোয়াট ও বিদআ;তী দুরুদ পড়েন। অথচ, আপনি দুরুদে ইব্রাহীম পড়ে যে সওয়াব ও ফযীলত পাবেন, অন্য কোন দুরুদ পড়ে তার সমান সওয়াব ও ফযীলত পাবেন না।

 দুরুদে ইব্রাহীম হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আ-লি মুহা’ম্মাদ, কামা সল্লাইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হা’মীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদ, কামা বা-রাকতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রাহীম। ইন্নাকা হা’মীদুম মাজীদ। 
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করুন, যেমন আপনি ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারের প্রতি বরকত দান করুন, যেমন আপনি ইব্রাহিম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি বরকত দান করেছিলেন, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান। 
উৎসঃ সহীহ বুখারীঃ ৩৩৭০, সহীহ মুসলিম।

🔵(২) দুরুদে ইব্রাহীমঃ দুরুদে ইব্রাহীম সহীহ হাদীসে বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত হয়েছে। এখানে প্রথমে যেইভাবে দেওয়া হয়েছে, এই বর্ণনা সবচাইতে বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া নীচের এই দুরুদটি সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। আপনারা সালাতের ভেতরে বা বাহিরে, যেকোন সময়ে এটা পড়তে পারেন।
اللهم صل على محمد وعلى آل محمد وبارك على محمد وعلى آل محمد كما صليت وباركت على إبراهيم وآل إبراهيم إنك حميد مجيد

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আ-লি মুহা’ম্মাদ, ওয়া বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদ, কামা সল্লাইতা ওয়া বারাকতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হা’মীদুম মাজীদ। 
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করুন এবং বরকত দান করুন, যেমনিভাবে আপনি ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি শান্তি ও বরকত দান করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।
উৎসঃ সুনানে আন-নাসায়ীঃ ৫৯/১৬৪, আত-তাহাবী। আবু সাঈদ ইবনুল আ’রাবী রহি’মাহুল্লাহ তাঁর “আল-মু’জাম” গ্রন্থে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন। ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহি’মাহুল্লাহ এই দুরুদটিকে তাঁর “জালাউল আফহাম” গ্রন্থে সহীহ বলেছেন। এছাড়াও আল্লামাহ নাসির উদ্দীন আলবানী রহি’মাহুল্লাহ তাঁর রচিত “নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি” গ্রন্থে এই দুরুদটি বর্ণনা করেছেন এবং একে সহীহ বলেছেন। 
উপরের দুরুদ দুইটি আপনারা সালাতের ভেতরে বা বাহিরে যেকোন সময়ে পড়তে পারবেন। 

◾নীচে আমি ছোট আরো কয়েকটি দুরুদ উল্লেখ করছি, যেইগুলো সালাতে পড়া যাবেনা, কিন্তু সালাতের বাহিরে সংক্ষিপ্ত দুরুদ হিসেবে এটা পড়া যাবে।

🔵(৩) ছোট দুরুদ-সাহাবী উকবা ইবনু আমির রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে এসে বসল এবং বলল, “ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। কিন্তু আমরা আপনার উপর কিভাবে ‘সালাত’ তথা দরূদ পাঠ করব?

আমাদেরকে তা বলে দিন।” তখন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম (কিছুক্ষণ) চুপ থাকলেন, এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করতো, তাহলে অনেক ভাল হত! তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমরা আমার উপর সালাত (দুরুদ) পাঠ

 করার জন্য বলোঃ 

اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَبىّ الأُمِيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ.
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লি আ’লা মুহা’ম্মাদিনিন-নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলি মুহা’ম্মাদিন কামা সল্লাইতা আ’লা ইবরাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীম, ইন্নাকা হা’মীদুম-মাজীদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি নিরক্ষর নবী মুহা’ম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে রহমত

নবী মুহা’ম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর এমনভাবে রহমত প্রেরণ কর, যেমনভাবে করেছ ইব্রাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় তুমি মহান এবং প্রশংসিত।
উৎসঃ ইসমাঈল কাযীঃ হাদীস নং ৫৯, হাদীসটি হাসান।

🔵(৪) ছোট দুরুদ-যায়েদ ইবনু খারিজাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু বলেন, “আমি নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে (দুয়া ও দুরুদের ব্যাপারে) প্রশ্ন করলাম। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমরা আমার উপর সালাত (দরূদ) পড় এবং অনেক বেশী দুয়া করার জন্য চেষ্টা কর। (আমার জন্য দুরুদ পড়ার জন্য তোমরা) এইভাবে বলোঃ
 
الَّلهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ .
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সল্লি আ’লা মুহা’ম্মাদিওঁ-ওয়া আ’লা আলি মু’হাম্মাদ। 
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুহা’ম্মদ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ কর। 
উৎসঃ সুনানে নাসায়ীঃ হাদীস নং-১২২৫, হাদীসটি সহীহ।

🔵(৫) ছোট দুরুদ - ৩
اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ। 
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন।

🔵(৬) ছোট দুরুদ - ৪
সবচাইতে ছোট যেই দুরুদ পড়া যায়ঃ
صلى الله عليه وسلم
উচ্চারণঃ সল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম। 
অর্থঃ আল্লাহ তাঁর (মুহা’ম্মদের) প্রতি সালাত (দয়া) ও সালাম (শান্তি) বর্ষণ করুন। 

দুরুদ কখনো পড়তে হয়?

🔵(৭) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি সকাল বেলা আমার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবে এবং বিকাল বেলা দশবার দরুদ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন সে আমার সুপারিশ দ্বারা সৌভাগ্যবান হবে।” ইমাম তাবরানী হাদীসটি দুইটি সনদে সংকলন করেছেন, যার একটি সনদ হাসান। মাজমাউ’য যাওয়ায়েদঃ ১০/১২০, সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১/২৭৩।
__________________
“ওযীফা নামক বেদাতী কিতাবের ধোঁকা”
সাবধান! মিথ্যাবাদী, বিদাতী হুজুদের লেখা ওযীফার অনেক বইয়ে বানোয়াট দুয়া, দুরুদ ও মিথ্যা ফযীলতের ধোঁকা দেওয়া আছে !!
‘পাঞ্জেগানা ওযীফা’, ‘নূরানী ওয়াযেফ শরীফ’, ‘ওযীফা’ ইত্যাদি নামে বাজারে প্রচলিত ওযীফার বইগুলোতে অনেক বানোয়াট ও জাল দুয়া ও দুরুদ ও ফযীলতের কথা লেখা আছে। এইগুলোর ৭০-৮০% জাল, মিথ্যা ও বানোয়াট !!

বেদাতী দুয়া ও দুরুদের মাঝে সরাসরি শিরকী ও কুফুরী কথাও দেয়া আছে, যেইগুলো বিপদ-আপদ অথবা রোগ থেকে মুক্ত হওয়ার আশায় মানুষ সওয়াবের নিয়তে সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করছে। নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক!!

কয়েকটি দুয়া যেইগুলোর কোন দলিল নেই,
> আহাদ নামা,
> দুয়ায়ে গাঞ্জুল আরশ,
> হাফতে হাইকল,
> হিজবুল বাহার্ ইত্যাদি।
এইগুলো কুরানের বিভিন্ন আয়াত অথবা মানুষের বানানো দুয়া একত্রিত করে দুয়ার মতো বানানো হয়েছে, যা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) করেন নি। এইভাবে কুরানের আয়াত উল্টা পাল্টা করে তেলাওয়াত করাটা বেদাত। কারণ ইবাদত নিজের মনমতো করার সুযোগ নাই। ইবাদত ঠিক সেইভাবেই করতে হবে, যেইভাবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। এই দুয়াগুলোর যে উপকার ও ফযীলতের কথা বলা আছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আল্লাহ এই সমস্ত জাহেল হুজুর-মাওলানাদের উচিৎ বিচার করুন, যারা মিথ্যা কথা বলে বেদাত চালু করেছে।

কয়েকটি দুরুদ যেইগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট,
> দুরুদে হাজারী,
> দুরুদে নারিয়া,
> দুরুদে মাহী,
> দুরুদ তাজ,
> দুরুদে আকবার,
> দুরুদে লাখী,
> দুরুদে তুনাজ্জিনা ইত্যাদি।
এইগুলো মানুষের বানানো বিদাতী দুরুদ। এইগুলো পড়লে কোনো সওয়াব নেই, উল্টা বেদাত করার কারণে গুনাহ হবে। দুরুদের মাঝে শ্রেষ্ঠ দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহিম, যেটা আমরা নামাযে পড়ি। দুরুদ বেশি বেশি করে পড়ুন, একবার দুরুদ পড়লে আল্লাহ তাআলা ১০ বার রহম করেন। কিন্তু ভুয়া মানুষের বানানো বেদাতী দুরুদ পড়বেন না।

বিশেষ করে মা বোনেরা ওযীফার বই থেকে বেদাতী এই দুয়াগুলো বেশি খুব বেশি পড়ে থাকেন। আপনারা এই সমস্ত বেদাতী হুজুরদের লেখা ওযীফার বই পড়বেন না।

সহীহ ও সুন্নতী দুয়া, দুরুদ জানার জন্য হিসনুল মুসলিম বইটি কিনুন। আরো বেশি জানতে হলে রিয়াদুস সালেহীন বইয়ের দুয়া ও যিকির অধ্যায় দেখুন। এছাড়া আব্দুল হামীদ মাদানীরলেখা ‘সহীহ দুয়া ও ঝাড়ফুক শিক্ষা’ বইটা কিনুন। এই বইটা খুবই ভালো, সম্ভব হলে অবশ্যই কিনবেন, অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন।
সবাই শেয়ার করুন, মানুষকে বেদাত থেকে সতর্ক করুন।

শাইখ আব্দুল্লাহ হাদী বিন আব্দুল জলীল।

★সিরাতাল মুস্তাকিম

Post a Comment

0 Comments