Recent Tube

সুফীদের শরীয়তের অন্যতম একটি উৎস হল স্বপ্ন:

সুফীদের শরীয়তের অন্যতম একটি উৎস হল স্বপ্ন:       
~~~~~~                            
★স্বপ্ন হচ্ছে সুফীদের আমল ও আকিদার অন্যতম একটি উৎস। এই মূলনিতির নির্ভরযোগ্য করে তারা সমাজে বহু বিদাতি আমল চালু করছে।তারা ধারণা করে স্বপ্নের মাধ্যমে তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে অথবা নবী( সা:) এর কাছ থেকে কিংবা তাদের কোন মৃত বা জীবিত অলী ও শায়েখের কাছ থেকে শরীয়তের হুকুম- আহকাম প্রাপ্ত হওয়ার ধারণা করে থাকে।                
      ৷ ~~~~~      
    ★যেমন ফাজায়েল আমল কিতাবের দরূদ অধ্যায় ৯৭নং পৃষ্টায় স্বপ্নে পাওয়া একটি আমলের কাহনী বর্ণিত আছে।                    
                     
★ "রওজুল ফায়েক গ্রন্থে এই ভাবে আরও একটি ঘটনা বর্ণিত আছে যে জনৈক মেয়েলোকের ছেলে বহুত বড় পাপী ছিল।মা ছেলেকে খুব নছীহত করিত কিন্তু ছেলে কিছুতেই মানিত না।অবশেষে ছেলে মারা গেল।ছেলে বিনা তওবায় মারা যাওয়াতে তাহার মা অনেক বেছি পেরেশান হইয়া গেল, মেয়ে লোকটি একদিন ছেলেকে স্বপ্নে দেখিতে পাইল যে সে আযাবে গ্রেপ্তার আছে।মা আরও পেরেশান হইয়া গেল। কিছুদিন পর মা আবার ছেলেকে খাবে দেখিতে পাইল যে,সে খুব আনন্দে এবং খুশিতে আছে।মা অবাক হইয়া তাহার অবস্থা জিজ্ঞাসা করিল।ছেলে বলিল, মা! আমাদের এই কবরস্থানের নিকট দিয়া একজন বহুত বড় পাপী যাইতেছিল।কবরসমূহ দেখিয়া হটাৎ তাহার খুব অনুতাপ হইল এবং নিজের অবস্থার উপর খুব কান্নাকাটি করিল ও সরল অন্তকরণে তওবা করিল এবং কিছু কোরআন শরীফ আর বিশবার দরূদ শরীফ পাঠ করিয়া কবরবাসীর উপর ছওয়াব বখছিছ করিয়া দিল।উহা হইতে যতটুক আমার ভাগে পড়িয়াছে তাহার উছিলায় আমি এই অবস্থায় পৌঁছিয়াছি। হে আমার মা!হুজুরে পাক(ছ:)- এর উপর দরুদ পাঠ করা অন্তরের নুর। গোণাহের কাফফারা।জীবিত এবং মৃত সকলের জন্যই উহা রহমত স্বরূপ।       

  ★ কবর যিয়ারতে গিয়ে কুরআন মাজীদ বা তার কোন অংশ পাঠ করা বিধেয় নয়। বিধেয় হলে মহানবী (সাঃ) তা করে যেতেন। পক্ষান্তরে মা আয়েশা (রাঃ) যখন মহানবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন যে, কবর যিয়ারত করলে আমি কি বলব?” তখন মহানবী (সাঃ) তাকে দুআ শিক্ষা দিলেন; কুরআনের কোন আয়াত পড়ার কথা শিক্ষা দিলেন না। (দেখুন, মুসলিম ৯৭ ৪নং প্রমুখ।)

    কবরস্থানে কুরআন পড়া যে বৈধ নয় সে কথা নবী (সাঃ) এর নিম্নের বাণীও নির্দেশ করে; তিনি বলেন, “তোমরা তোমাদের গৃহকে কবরস্থান করে রেখো না। (সুতরাং তোমরা গৃহে কুরআন পাঠ কর।” (মুসলিম ৭৮০, তিরমিযী ২৮৭৭নং, আহমাদ ২/২৮৪}

     কবর যিয়ারত করতে গিয়ে মওতাদের জন্য (একাকী) হাত তুলে দুআ করা বিধেয়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাত্রে নবী (সাঃ) বাড়ি হতে বের হয়ে গেলেন। তিনি কোথায় গেলেন তা দেখার জন্য আমি (দাসী) বারীরাহকে তার পশ্চাতে পাঠালাম। বারীরাহ দেখল, তিনি বাকী’তে গিয়ে নিচের দিকে দাঁড়িয়ে হাত তুললেন। অতঃপর ফিরে এলেন। বারীরাহ আমাকে সে খবর দিল। সকালে নবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, রাত্রে আপনি কোথায় বের হয়েছিলেন?’ বললেন, “বাকী’তে গিয়ে সেখানকার কবরবাসীর জন্য দুআ করতে যেতে আমি আদিষ্ট হয়েছিলাম।” (আহমাদ ৬/৯২, মালেক ১/২৩৯-২৪০)

  মুসলিম শরীফ প্রভৃতির এক বর্ণনায় আছে যে, তিনি নিজে তাঁর পশ্চাতে গিয়ে দেখলেন, বাকী’তে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে দন্ডায়মান থাকলেন। অতঃপর তিন বার হাত তুললেন। (মুসলিম ৯৭৪নং)

 অবশ্য মওতার জন্য দুআ করার সময় কবরসমূহকে সম্মুখ করা বৈধ নয়। বরং কেবলাহ মুখেই দুআ করতে হবে। কারণ মহানবী (সাঃ) কবরের দিকে মুখ করে নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম, মিশকাত ১৬৯৮নং)

আর দুআ হল নামাযের মগজ ও মূল বস্তু। অতএব দুআরও নির্দেশ নামাযের মতই। নবী (সাঃ) বলেন, “দুআই হল ইবাদত।” (আবু দাউদ ১৪৭৯, তিরমিযী ৩৩৭২, ইবনে মাযাহ ৩৮ ২৮, আহমাদ ৪/২৬৭) কিছু কুরআন ও দরূদ পাঠ করিয়া কবরবাসীর উপর বখছিয়া দেওয়া বিদাত।বিদাতের পরিণাম জাহান্নাম।
পরিশেষে আল্লাহ আমাদেরকে বিদাআতের সকল প্রকার অন্ধকার থেকে দূরে সরিয়ে সুন্নাহর আলোক সজ্জিত পথ প্রদর্শন করুন।আমিন।                             ~~~~~~ 
স্বপ্নের ব্যাপারে সঠিক কথা হচ্ছে, নবীগণের স্বপ্নই কেবল অহি এবং তার মাধ্যমে প্রাপ্ত বিধান অনুসরণ যোগ্য। কিন্তু সাধারণ মোমিণদের স্বপ্নের ব্যাপারে কথা হচ্ছে, তা দ্বারা শরীয়তের কোন বিধান সাবস্থ হবে না। স্বপ্নকে দ্বীনের কোন মাসায়েলেই দলিলের মর্যদা দেয়নি। ইসলামি শরীয়তের প্রধান উৎস হল কুরআন ও সহি হাদিস এবং এরই আলোকে ইজমা ও কিয়াস।                            
                       ~~~~ 
আবূ কাতাদা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে, আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন স্বপ্ন দেখল আর এতে কোন কিছু অপছন্দ হয়, তখন সে যেন তার বামদিকে থু থু নিক্ষেপ করে এবং শয়তান (-এর কারসাজি) থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে, (তাহলে) তা তার কোন ক্ষতি করবে না। আর কারো কাছে ঐ স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করবে না। আর যদি কোন ভাল স্বপ্ন দেখে, তা হলে (সুসংবাদ প্রাপ্তিতে) খুশি হবে। আর যাকে সে মহব্বত করে, এমন লোক ছাড়া কারো কাছে ব্যক্ত করবে না।( সহি মুসলিম,ইফা, হা: ৫৭৯৫)   ~~                                   ★অন্য হাদিসে আছে
"স্বপ্ন তিন (প্রকার), ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক প্রকার) স্বপ্ন শয়তানের থেকে দুর্ভাবনা সৃষ্টি করে। আর (এক প্রকার) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং চিন্তা-ভাবনা করে), তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা সে অপসন্দ করে, তা হলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সালাত আদায় করে আর মানুষের কাছে সে কথা প্রকাশ নাকরে।( সহি মুসলিম ইফা হা: ৫৭০৮)"      ~~~~               
★ এই দুটি হাদিসের আলোকে স্বপ্নের বিষয়টি সুস্পষ্ট যে ভাল স্বপ্ন সুসংবাদ মাত্র। কোন দলিল নয়। যাই হোক, রাসুল( সা:) আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন:

تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللّٰهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ

আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বিষয় রেখে যাচ্ছি, যতদিন তা আকড়ে ধরে থাকবে ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না। সে দু’টি বিষয় হল, আল্লাহ তা‘আলার কিতাব কুরআন ও তাঁর নাবীর সুন্নাত (হাদীস)। (মুয়াত্তা মালিক হা:৩৩৩৮, হাকীস, সহি হা: ২৯১)
তিনি একথা বলেননি যে তোমরা স্বপ্নযোগে আমার পক্ষ থেকে যা লাভ করবে,সে মোতাবেক আমল করবে, তিনি একথাও বলেননি যে, স্বপ্নের দ্বারা কুরআন- হাদিস গ্রহণ বা বর্জন করবে, তিনি একথাও বলেননি যে, স্বপ্নের ভিত্তিতে নতুন নতুন কথা বা আমল দ্বীন ইসলামে দাখিল করবে।                   ~~~~    ~~                 
★তাছাড়া আল্লাহ কুরআন ও হাদিসকে বিনা শর্তে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আমির/ আলেম/ শায়েখদের শর্ত সাপেক্ষে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন: " 
হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও- যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।"( সুরা নিসা আয়াত ৫৯). 
★ এ আয়াতে আল্লাহ কুরআন ও হাদিসকে বিনা শর্তে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর আমির/ আলেম/ শায়েখদের শর্ত সাপেক্ষে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন কারণ তাদের মাঝে মতবিরোধের সৃষ্টি হতে পারে। আর তখন তারা আবার কুরআন ও হাদিসের দিকে ফিরে আসবে। আর কার স্বপ্নকে শরীয়তের দলিল মনে করলে প্রতিদিন শরীয়ত পরিবর্তন হবে। অথচ ইসলামী শরীয়তে আর কখনও কোন পরিবর্তন,সংযোজন, বিয়োজন হবে না। এটাই একমাত্র চুড়ান্ত ও সর্বশেষ বিধান। আল্লাহ বলেন:            " আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে।"( সুরা মায়িদা আয়াত ৩)

Post a Comment

0 Comments