Recent Tube

কুরআন ও হাদীসের আলোকে মৃত অলি-আউলিয়ার কবর পূজা এবং কথিত মাজার ব্যবসা? শামীম আজাদ।

কুরআন ও হাদীসের আলোকে মৃত অলি-আউলিয়ার কবর পূজা এবং কথিত মাজার ব্যবসা? 
  ===============

   মৃত অলি-আউলিয়া মানুষের অভাব পূরণ করেন, বিপদাপদ দূর করেন, তাঁদের অসীলায় সাহায্য প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করা যাবে ইত্যাকার কথা বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, 
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ 
তোমার প্রভু চূড়ান্ত ফয়ছালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না। 
সূরা বনী ইসরাঈলঃ ২৩

  অনুরূপভাবে শাফাআতের নিমিত্তে কিংবা বালা-মুছীবত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মৃত নবী-ওলী প্রমুখের নিকট দোআ করাও শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, 
أَمَّنْ يُّجِيْبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوْءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَاءَ الْأَرْضِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللهِ
বল তো কে নিঃসহায়ের আহবানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে আহবান জানায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর পৃথিবীতে তোমাদেরকে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোন ইলাহ আছে? 
সূরা নামলঃ ৬২

মৃত ব্যক্তিরা যে কবরে শুনতে পায় না, কেহ তাদেরকে কিছু শুনাতে পারে না এটা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন। তিনি নবীকে সম্বোধন করে বলেছেন:

إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتَى وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَاءَ. 
নিশ্চয় তুমি মৃতকে শোনাতে পারবে না, আর তুমি বধিরকে আহবান শোনাতে পারবে না। 
সূরা নামলঃ ৮০

যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন মৃতকে কিছু শোনাতে পারেন না, তখন সাধারণ মানুষ কিভাবে এ অসাধ্য সাধন করতে পারে? কাজেই আমরা মৃতদের কবরে যেয়ে যা কিছু বলি, যা কিছু প্রার্থনা করি তা তারা কিছুই শুনতে পায় না। যখন তারা শুনতেই পায় না, তখন তারা প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা কিভাবে কবুল করবে? কিভাবে তাদের হাজত-আকাংখা পূরণ করবে?

আল্লাহ তাআলা ব্যতীত যা কিছুর উপাসনা করা হয়, তা সবই বাতিল। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَلَا تَدْعُ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَإِنْ فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِنَ الظَّالِمِينَ ﴿106﴾ وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهِ يُصِيبُ بِهِ مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ ﴿107﴾ 
আর আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুকে ডেকো না, যা তোমার উপকার করতে পারে না এবং তোমার ক্ষতিও করতে পারে না। অতএব তুমি যদি কর, তাহলে নিশ্চয় তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন ক্ষতি পৌঁছান, তবে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই। আর তিনি যদি তোমার কল্যাণ চান, তবে তাঁর অনুগ্রহের কোন প্রতিরোধকারী নেই। তিনি তার বান্দাদের যাকে ইচ্ছা তাকে তা দেন। আর তিনি পরম ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু (সূরা ইউনূসঃ ১০৬-১০৭)

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট বুঝা গেল আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ডাকা হয়, যাদের কাছে দুআ-প্রার্থনা করা হয় তা সবই বাতিল। আরো স্পষ্ট হল যে, এগুলো কাউকে উপকার করতে পারে না বা ক্ষতি করতে পারে না।

অনেকেই উঠতে, বসতে, বিপদাপদে পীর-মুরশিদ, অলি-আউলিয়া, নবী-রাসূল ইত্যাকার মহাজনদের নাম নেয়া অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছে। যখনই তারা কোন বিপদে বা সংকটে পড়ে তখনই বলে ইয়া মুহাম্মাদ, ইয়া আলী, ইয়া হুসাইন, ইয়া বাদাভী, ইয়া জীলানী, ইয়া শাযেলী, ইয়া রিফাঈ। কেউ যদি ডাকে আইদারুসকে তো অন্যজন ডাকে মা যায়নাবকে, আরেকজন ডাকে ইবনু উলওয়ানকে। অথচ আল্লাহ বলেন, 
إِنَّ الَّذِيْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ عِبَادٌ أَمْثَالُكُمْ 
আল্লাহ ব্যতীত আর যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদেরই মত দাস । 
সূরা আরাফঃ ১৯৪

وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُهُمْ وَلَا يَضُرُّهُمْ وَكَانَ الْكَافِرُ عَلَى رَبِّهِ ظَهِيرًا 
তারা ইবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর, যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। কাফের তো তার পালনকর্তার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী। 
সূরা ফোরকানঃ ৫৫

দেখা গেল তারা এ অসীলা গ্রহণের কারণেই শিরকে লিপ্ত হয়ে পড়লো। আর এ শিরকের বিরুদ্ধে তাওহীদের দাওয়াতের জন্যই আল্লাহ তাআলা রাসূলগণকে পাঠালেন যুগে যুগে, প্রতিটি জনপদে। এ সকল দেব-দেবীর কাছে যেমন প্রার্থনামূলক দুআ করা শিরক তেমনি সাহায্য প্রার্থনা করে দুআ করাও শিরক।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

قُلِ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُمْ مِنْ دُونِهِ فَلَا يَمْلِكُونَ كَشْفَ الضُّرِّ عَنْكُمْ وَلَا تَحْوِيلًا. (الإسراء : 56)

বল, তাদেরকে ডাক, আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকে (উপাস্য) মনে কর। তারা তো তোমাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার ও পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে না। 
সূরা ইসরাঃ ৫৬

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:

قُلِ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَمَا لَهُمْ فِيهِمَا مِنْ شِرْكٍ وَمَا لَهُ مِنْهُمْ مِنْ ظَهِيرٍ ﴿22﴾ وَلَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهُ إِلَّا لِمَنْ أَذِنَ لَهُ. (سبأ : 22-23)

বল, তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে করতে তাদেরকে আহবান কর। তারা আসমানসমূহ ও যমীনের মধ্যে অণু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়। আর এ দুয়ের মধ্যে তাদের কোন অংশীদারিত্ব নেই এবং তাদের মধ্য থেকে কেউ তাঁর সাহায্যকারীও নয়। আর আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া তাঁর কাছে কোন সুপারিশ কোন কাজে আসবে না। 
সূরা সাবাঃ ২২-২৩
 
কিছু কবরপূজারী আছে যারা কবরকে তাওয়াফ করে, কবরগাত্র চুম্বন করে, কবরে হাত বুলায়, লাল শালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি তাদের গা-গতরে মাখে, কবরকে সিজদা করে, উহার সামনে মিনতিভরে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে। সুস্থতা কামনা করে, সন্তান চায় অথবা প্রয়োজনাদি পূরণ কামনা করে। অনেক সময় কবরে শায়িত ব্যক্তিকে ডেকে বলে, বাবা হুযূর, আমি আপনার হুযূরে অনেক দূর থেকে হাযির হয়েছি। কাজেই আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না। অথচ আল্লাহ বলেন, 
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُوْ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَنْ لاَّ يَسْتَجِيْبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُوْنَ
তাদের থেকে অধিকতর দিকভ্রান্ত আর কে আছে, যারা আল্লাহ ব্যতীত এমন সব উপাস্যকে ডাকে যারা ক্বিয়ামত পর্যন্তও তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। অধিকন্তু তারা ওদের ডাকাডাকি সম্বন্ধে কোন খবর রাখে না। 
সূরা আহক্বাফঃ ৫

নবী কারীম সাঃ স্পষ্টভাবে বলেছেন : মৃত ব্যক্তি নিজের কোন উপকার করতে পারে না।
 তিনি বলেছেন :

وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: « إِذَا مَاتَ الإنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاثٍ: صَدَقةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘যখন কোন মানুষ মারা যায়, তখন তার কর্ম বন্ধ হয়ে যায় । কিন্তু তিনটি জিনিস নয়; 
(১) সাদকা জারিয়াহ (এমন দান যা থেকে মানুষ অব্যাহতভাবে উপকৃত হয়ে থাকে)।
(২) যে বিদ্যা দ্বারা উপকার পাওয়া যায় অথবা 
(৩) সৎ সন্তান যে তার জন্য দুআ করে ।’’
মুসলিম ১৬৩১, তিরমিযী ১৩৭৬, নাসায়ী ৩৬৫১, আবূ দাঊদ ২৮৮০,৩৫৪০, আহমাদ ৮৬২৭, দারেমী ৫৫৯, রিয়াদুস সলেহিনঃ ৯৫৬, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ২০৩

হাদীসটির মাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানা গেল মৃত ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তিদের দুআ, ক্ষমা প্রার্থনার ফলে উপকার পেতে পারে। কিন্তু জীবিত ব্যক্তিরা মৃতদের থেকে এরূপ কিছু আশা করতে পারেনা।

রাসূলুল্লাহ [সা.] বলেছেন, 
مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللهِ نِدًّا دَخَلَ النَّارَ
যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তার নিকট দোআ প্রার্থনা করে, আর ঐ অবস্থায় মারা যায় সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। 
বুখারী হা/৪৪৯৭

কবরপূজারীরা অনেকেই কবরের পাশে মাথা মুন্ডন করে।[আমাদের দেশে শিশুদের মাথার চুল মাযারের নামে মানত করার নিয়ম চালু আছে। নির্দিষ্ট দিনে মাযারে গিয়ে এই চুল মুন্ডন করা হয়, যা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।] তারা অনেকে মাযার যিয়ারতের নিয়মাবলী নামের বই সাথে রাখে। এসব মাযার বলতে তারা ওলী-আউলিয়া বা সাধু-সন্তুদের কবরকে বুঝিয়ে থাকে। অনেকের আবার বিশ্বাস, ওলী-আউলিয়াগণ সৃষ্টিজগতের উপর প্রভাব খাটিয়ে থাকেন, তাঁরা ক্ষতিও করেন; উপকারও করেন। 
অথচ আল্লাহ বলেন, 
وَإِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ وَإِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلاَ رَآدَّ لِفَضْلِهِ- 
আর যদি আপনার প্রতিপালক আপনাকে কোন অমঙ্গলের স্পর্শে আনেন, তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ উহার বিমোচক নেই। আর যদি তিনি আপনার কোন মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহকে তিনি ব্যতীত রুখবারও কেউ নেই।
সূরা ইউনুসঃ ১০৭

একইভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মানত করাও শিরক। মাযার ও দরগার নামে মোমবাতি, আগরবাতি মানত করে অনেকেই এরূপ শিরকে জড়িয়ে পড়ছে। 

১. স্বীয় কবরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান করাকে নিষিদ্ধ করে আল্লাহর নবী ইরশাদ করেন-‎
عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن ‏صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044)‏‎ ‎
‎“তোমরা স্বীয় ঘরকে কবর বানিয়োনা। (অর্থাৎ কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তেলাওয়াত ও যিকির ‎ইত্যাদি বিহীন করনা।) এবং আমার কবরে উৎসব করোনা।(অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন ‎আসরের আয়োজন করনা। তবে হ্যাঁ আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন ‎তোমাদের দুরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।(আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতারা পৌঁছিয়ে দেন।)” 
সুনানে ‎আবু দাউদঃ ২০৪৪/৪০

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- রাসূলে সাঃ নিজ রওযা মুবারকে উৎসব (উরস) পালন করতে বারণ ‎করেছেন। তাহলে অন্য কে আর এমন আছে যার কবরে তা বৈধ হবে?‎
হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন-‎
قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد ‏الشيخ ويأكلون ويشربون وربما يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله ‏‏(عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)‏
‎“এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা দিনে (উরসের নামে) ‎ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে-আজ পীর সাহেবের জন্ম বার্ষিকী (মৃত্যু বার্ষিকী), সেখানে তারা ‎পানাহারেরও আয়োজন করে, আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই শরীয়ত পরিপন্থী ও ‎গর্হিত কাজ। এ সব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। (আউনুল মা’বুদ-৬/২৩)‎

২. কবরের সামনে বাতি প্রজ্জ্বলন করাকে হারাম সাব্যস্ত করে রাসূলে কারীম সাঃ ইরশাদ করেন-‎
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ زَائِرَاتِ الْقُبُورِ وَالْمُتَّخِذِينَ عَلَيْهَا الْمَسَاجِدَ وَالسُّرُجَ. رَوَاهُ أَبُوْ دَاوٗدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِـيُِّ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিসম্পাত করেছেন ঐ সকল স্ত্রী লোককে যারা (ঘন ঘন) ক্ববর যিয়ারত করতে যায় এবং ঐ সকল লোককেও অভিশাপ দিয়েছেন যারা কবরের উপর মাসজিদ নির্মাণ করে বা তাতে বাতি জ্বালায়।  
আবূ দাঊদ ৩২৩৬, তিরমিযী ৩২০, নাসায়ী ২০৪৩, য‘ঈফ আত্ তারগীব ২০৭৫, তামামুল মিন্নাহ ২৯৮, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ৭৪০

উক্ত হাদিসে সুষ্পষ্ট কবরে বাতি প্রজ্জ্বলনকারীর উপর আল্লাহ তায়ালার অভিশম্পাত করেছেন আল্লাহর নবী ‎সাঃ।

৩. আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত বা কুরবানী করা যায়না। কারণ মান্নত ও কুরবানী হচ্ছে ইবাদত। আর ‎ইবাদত আল্লাহ ছাড়া কারা জন্য করা জায়েজ নয়। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ ‎করেন-‎
قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163) ‏‏(سورة الأنعام-162-163)‏
‎“আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক ‎আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমি তা-ই করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম ‎আনুগত্যশীল। 
সূরা আনআমঃ ১৬২-১৬৩

সূরা কাউসারে মহান রাব্বুর আলামীন বলেন-
‏ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ (2)‏‎
(অতএব আপনার পালনকর্তার ‎উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন। 
সূরা কাউসারঃ ২

সুতরাং পীরের নামে ও মাযারের নামে মান্নত করা কি শিরকী কর্ম নয়?‎

৪. আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদা করা সুষ্পষ্ট হারাম। কুরআনের অসংখ্য আয়াত ও হাদিসে ‎নববী দ্বারা যা দিবালোকের ন্যয় পরিস্কার। একথা মনে হয় অন্ধ পীর ও মাজারপূজারী ছাড়া ‎সকল মুসলমানরাই জানে।

لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ

“তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চন্দ্রকেও না; আল্লাহকে সিজদা করো, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তারই ইবাদত করো”।
সূরা ফুসসিলাতঃ ৩৭

উল্লেখিত কুরআন ও হাদিসের বিবরণ মোতাবিক কবর ও মূর্তিপূজার সাযুজ্যতার মাধ্যমে ‎আমরা সহজেই অনুমান করে নিতে পারি আমাদের দেশের ভন্ড মাজারপূজারী ও ‎কবরপূজারীরা কি পরিমাণ শিরকী কর্মকান্ডে লিপ্ত।

আরবের মুশরিকদের শিরক কি ছিল?‎

মহান রাব্বুর আলামীন বলেন
‏ قُلْ مَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ أَمَّن يَمْلِكُ السَّمْعَ والأَبْصَارَ وَمَن يُخْرِجُ الْحَيَّ ‏مِنَ ‏
الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ الأَمْرَ فَسَيَقُولُونَ اللَّهُ فَقُلْ أَفَلاَ تَتَّقُونَ (سورة يونس-31)‏
‎“হে পয়গম্বর! আপনি মুশকদেরকে জিজ্ঞেস করুন যে, বল তো কে তোমাদেরকে আসমান জমিন থেকে ‎রুযী দেন? এবং কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের ‎করেন এবং কে মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তারা ‎পরিস্কার বলবে যে, মহান আল্লাহ।
সূরা ইউনুসঃ ৩১

আল্লাহ তায়ালাই মূল ক্ষমতার অধিকারী একথা আরবের মুশরিকরাও বিশ্বাস করতো, তারপরও তারা ‎কাফের কেন?‎

এই সূরার প্রথমাংশে মহান রাব্বুল আলামীন এ প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে-‎
وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلاء شُفَعَاؤُنَا عِندَ اللَّهِ قُلْ أَتُنَبِّئُونَ اللَّهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ ‏وَلاَ فِي الأَرْضِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ (18)‏
আর তার (মুশরেকরা) আল্লাহ ভিন্ন এমন কতিপয়ের ইবাদত করে, যারা তাদের কোন অপকারও করতে ‎পারেনা এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারেনা, ও তারা বলে-এরা হল আল্লাহ তায়ালার কাছে ‎আমাদের সুপারিশকারী। (হে রাসূল!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ তায়ালাকে এমন বিষয়ের ‎সংবাদ দিচ্ছ যা আছে বলে তিনি (নিজেও) জানেন না, না আসমানে না জমিনে! তিনি তাদের শিরকী ‎কার্যকলাপ হতে পবিত্র ও অনেক ঊর্দ্ধে। সূরা ইউনুসঃ ১৮

ইসলাম কবরের পবিত্রতা রক্ষা ও মৃত্যুকে স্মরণ ও মৃত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাত কামনা বৈধ মনে করে। তবে কবরে সিজদাহ, মানত, স্পর্শ করে বরকত হাছিল, চুমুদান, প্রদীপ জ্বালান, প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্মান প্রদর্শন প্রভৃতিকে ইসলাম শির্কের অংশ মনে করে। কবর সম্পর্কে ইসলামের বাণী অত্যন্ত পরিস্কার। বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: نَهَى رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم أَن يُجَصَّصَ القَبْرُ، وَأَنْ يُقْعَدَ عَلَيْهِ، وَأَنْ يُبْنَى عَلَيْهِ . رواه مسلم

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর পাকা করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ইমারত নির্মাণ করতে বারণ করেছেন।’
মুসলিম ৯৭০, তিরমিযী ১০৫২, নাসায়ী ২০২৭-২০২৯, আবূ দাউদ ৩২২৫, ইবনু মাজাহ ১৫৬২, ১৫৬৩, আহমাদ ১৩৭৩৫, ১৪১৫৫, ১৪২৩৭, ১৪৮৬, রিয়াদুস সলেহিনঃ ১৭৭৬

অন্য বর্ণনায় এসেছে:

أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَقَ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَفْصٌ، عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، وَأَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ قَالَ: «نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُبْنَى عَلَى الْقَبْرِ، أَوْ يُزَادَ عَلَيْهِ، أَوْ يُجَصَّصَ» زَادَ سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى: «أَوْ يُكْتَبَ عَلَيْهِ»

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবরে পাকা ঘর নির্মাণ, কবরকে বর্ধিতকরণ এবং চুনকাম করা থেকে নিষেধ করেছেন। সুলায়মান ইব্‌ন মূসা (রহঃ)-এর বর্ণনায় একথাটি অতিরিক্ত রয়েছে, “তিনি কবরের উপর লেখা থেকেও নিষেধ করেছেন।”
সুনানে আন-নাসায়ীঃ ২০২৭

এ বিষয়ে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

মূলত: এর কারণ হচ্ছে, যিনি কবরের মধ্যে রয়েছেন, তাকে যেন কেউ ইবাদত না করে, সে পথ বন্ধকরণ। যেমন কুরতুবী (রহ.) বলেছেন:

وكل ذلك لقطع الذر يعة المؤدية إلى عبادة من فيها
এ সবকিছু এ জন্য যে, কবরে যিনি রয়েছেন, যাতে তিনি ইবাদতের মাধ্যমে না হন তার দরজা বন্ধ করা।
শাঈখ, সুলাইমান ইবন আব্দিল্লাহ ইবন আব্দিল ওয়াহহাব, তায়সীবুল আযীযিল হাদীস ফি শারহি কিতাবিত তাওহীদ, আল-মাকতাবুল ইসলামী, বায়রূপত ও দামিশক, ৩য় মুদ্রণ, ১৩৯৭ হি।

কবরবাসীর কাছেও কোনো কিছু চাওয়া যেন আজ অনেকটা আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ হিসাবে পরিণত হতে যাচ্ছে। এটিও পরিষ্কার শির্ক, এ থেকে মুসলিমদের মুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কবর গাঁথা, কবরবাসীকে সম্মান দেখানোর লক্ষ্যে কবরে বাতি দান, পুষ্পমাল্য অর্পণ পার্থিব বিচারেও পাগলামী ছাড়া কিছু নয়। এর সামান্য কিছুও কি অস্থি মজ্জা বিলুপ্ত এই মৃতব্যক্তি উপভোগ করতে পারে? কক্ষণো নয়। এইসব কর্মকাণ্ড মূলত মৃতব্যক্তির প্রতি এমন অতিরঞ্জিত সম্মান প্রদর্শনের জন্য হয়ে থাকে, যা ইসলাম কক্ষণো অনুমোদন করে না। এ ধরনের অকুণ্ঠ ভালবাসা মিশ্রিত সম্মান শুধু মহান আল্লাহই পেতে পারেন, যা মূলত তাকে ছাড়া অন্য কাউকে নিবেদন করা শির্কেরই নামান্তর। খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ, শাহাজালাল, খান জাহান আলী, বায়েজীদ বোস্তামী প্রমুখ আল্লাহর অলীদের কবরকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পূজার বস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। এ সমস্ত জায়গায় যাওয়াকে মানুষ পুণ্যের কাজ মনে করে। এদেশের কবরস্থানে পাকা কবরের সংখ্য বেশি। এ দেশের পথে ঘাটে পীর, সুফী ও অলীদের অদ্ভুত অদ্ভুত নাম যেমন: বদনা শাহ, ডাল চাল শাহ, শেয়াল শাহ, মিসকিন শাহ প্রভৃতি নামে গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার মাজার। এগুলো মূলত: এ দেশের মানুষদের শির্কে নিমজ্জিত হওয়ার পথকে আরো উন্মুক্ত করেছে।

নেককার ও বুজুর্গ ব্যক্তিদের কবরের ব্যাপারে সীমা লংঘন করলে তা তাকে মূর্তি পূজা তথা গাইরুল্লাহর ইবাদতে পরিণত করে

১। ইমাম মালেক র. মুয়াত্তায় বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করেছেন।

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُمَّ لَا تَجْعَلْ قَبْرِي وَثَنًا يُعْبَدُ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى قَوْمٍ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ.

আতা ইবনু ইয়াসার (র) থেকে বর্ণিতঃ:

রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে আল্লাহ! আমার কবরকে পূজা মূর্তি বানাইও না। সে সম্প্রদায়ের উপর আল্লাহর ক্ষোভ প্রবল হয়েছে, যে সম্প্রদায় তাদের নবীগণের কবরকে মসজিদ বা সিজদার জায়গা বানিয়ে নিয়েছে। 
মুয়াত্তা ইমাম মালিকঃ ৪০২

২। ইবনে জারীর সুফিয়ান হতে, তিনি মানসূর হতে এবং তিনি মুজাহিদ হতে أفرأيتم اللات والعزى এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘‘লাত’’ এমন একজন নেককার লোক ছেলেন, যিনি হজ্জ যাত্রীদেরকে ‘‘ছাতু’’ খাওয়াতেন। তরপর যখন তিনি মৃত্যু বরণ করলেন, তখন লোকেরা তার কবরে ইতেকাফ করতে লাগলো।

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে আবুল জাওযা একই কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘‘লাত’’ হাজীদেরকে ‘‘ছাতু’’ খাওয়াতেন। ইবনে আববাস থেকে বর্ণিত আছে,
 لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (رواه أهل السنن)

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর যিয়ারত কারিনী (মহিলা) দেরকে এবং যারা কবরকে মসজিদে পরিণত করে আর (কবরে) বাতি জ্বালায় তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন। [আহলুস সুনান’ এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]

এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়,

১। أوثان (মূর্তি ও প্রতিমা) এর তাফসীর।

২। ‘‘ইবাদত’’ এর তাফসীর।

৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা সংঘটিত হওয়ার আশংকা করেছেন একমাত্র তা থেকেই আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়েছেন।

৪। নবীদের কবরকে মসজিদ বানানোর বিষয়টিকে মূর্তি পূজার সাথে সম্পৃক্ত করেছেন।

৫। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কঠিন গযব নাযিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

৬। এটি এ অধ্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সর্ববৃহৎ মূর্তি ‘‘লাতের’’ ইবাদতের সূচনা কিভাবে হয়েছে তা জানা গেলো।

৭। ‘‘লাত’’ নামক মূর্তির স্থানটি মূলতঃ একজন নেককার লোকের কবর।

৮। ‘‘লাত’’ প্রকৃতপক্ষে কবরস্থ ব্যক্তির নাম। মূর্তির নামকরণের রহস্য ও উল্লেখ করা হয়েছে।

৯। কবর জিয়ারত কারিনী (মহিলা) দের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিসম্পাত।

১০। যারা কবরে বাতি জ্বালায় তাদের প্রতি ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিসাপ।

আল্লাহ ছাড়া কারো জন্য সেজদা করার নিষিদ্ধতা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদীস দেখা যেতে পারে-

হযরত মুআজ বিন জাবাল রাঃ থেতে বর্ণিত। তিনি সিরিয়া গেলে সেখানকার খৃষ্টান অধিবাসী কর্তৃক পোপ ও পাদ্রীদেরকে সেজদা করতে দেখলেন। হযরত মুআজ রাঃ বলেন, আমি তাদেরকে বললামঃ তোমরা কেন এমন কর? তারা উত্তরে বলল, এটাতো আমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অভিবাদন [ভক্তি ও সম্মান প্রকাশের মাধ্যম] ছিল। আমি [মুআজ] বললাম, তাহলে আমরা স্বীয় নবীকে এর প্রকারের ভক্তি প্রকাশের অধিক অধিকার রাখি। [সিরিয়া হতে প্রত্যাবর্তনের পর হযরত মুআজ রাঃ রাসূল সাঃ এর নিকট তাঁকে সেজদা করার অনুমতি চাইলে] তিনি ইরশাদ করেন, এরা [খৃষ্টানরা] স্বীয় নবীদের উপর মিথ্যারোপ করছে [যে তাদের অভিবাদন সেজদা ছিল।]। যেমন ওরা নিজেদের আসমানী কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাদের মনগড়া অভিবাদনের চাইতে অতি উত্তম অভিবাদন সালাম আমাদের দান করেছেন। {মুসনাদে আহমাদঃ ১৯৪০৪, আলমুজামুল কাবীরঃ ৭২৯৪, মুস্তাদরাক আলাস সাহিহাইনঃ ৭৩২৫}

دَّثَنِي جُنْدَبٌ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ أَنْ يَمُوتَ بِخَمْسٍ، وَهُوَ يَقُولُ: ……أَلَا وَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانُوا يَتَّخِذُونَ قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ وَصَالِحِيهِمْ مَسَاجِدَ، أَلَا فَلَا تَتَّخِذُوا الْقُبُورَ مَسَاجِدَ، إِنِّي أَنْهَاكُمْ عَنْ ذَلِكَ

হযরত জুনদুব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ মৃত্যুর পূর্বে পাচটি বিষয় বলেছিলেন, [এর মাঝে]…… বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী কত উম্মত স্বীয় নবী ও বুজুর্গদের কবরকে সেজদার স্থান বানিয়েছে। সাবধান! তোমরা কবরকে সেজদার স্থান বানিও না। আমি তোমাদের তা হতে বারণ করছি। 
সহীহ মুসলিমঃ ৫৩২

عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ؛ أَنَّ [ص:241] رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْ قَبْرِي وَثَناً يُعْبَدُ. اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى قَوْمٍ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ

হযরত আতা বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, হে আল্লাহ! আমার কবরকে প্রতিমার ন্যায় ইবাদতের বস্তু বানিও না। আল্লাহর গজব সেসব লোকের উপর কঠোর আকার ধারণ করেছে, যারা তাদের নবীদের কবরকে সেজদার স্থল বানিয়েছে। 
মুয়াত্তা মালিকঃ ৫৭০, মুসনাদে আহমাদঃ ৭৩৫৮

এসব হাদীসসহ আরো অনেক হাদীস প্রমাণ করে আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে বা কারো কবরের সামনে সেজদা দেয়া সুষ্পষ্ট কুফরী ও শিরকী কাজ। তাই এসব থেকে বিরত থাকা প্রতিটি মুসলমানের জন্য আবশ্যক।

উঁচু কবর ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে 

أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي الْهَيَّاجِ، قَالَ: قَالَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَلَا أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، «لَا تَدَعَنَّ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَهُ، وَلَا صُورَةً فِي بَيْتٍ إِلَّا طَمَسْتَهَا»

আবূল হায়য়াজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আলী (রাঃ) বলেছিলেন, আমি কি তোমাকে সে কাজে পাঠাব না যে কাজে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে পাঠিয়েছিলেন। তুমি উঁচু কবরকে সমতল না করে ছাড়বে না এবং ঘরের কোন (প্রাণীর) ছবিকে বিনষ্ট না করে ছাড়বে না।
সুনানে আন-নাসায়ীঃ ২০৩১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ أَبِي هَيَّاجٍ الأَسَدِيِّ، قَالَ بَعَثَنِي عَلِيٌّ قَالَ لِي أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ لاَ أَدَعَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلاَّ سَوَّيْتُهُ وَلاَ تِمْثَالاً إِلاَّ طَمَسْتُهُ ‏.‏

আবুল হাইয়ায আল-আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, একদা ‘আলী (রাঃ) আমাকে পাঠালেন এবং বললেন, আমি কি তোমাকে এমন কাজে প্রেরণ করবো যে কাজে আমাকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠিয়েছিলেন? তা হলোঃ আমি যেন কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমতল করা ব্যতীত এবং কোন মূর্তি দেখলে চূর্ণ-বির্চূন না করে নিভৃত না হই।
সুনানে আবু দাউদঃ ৩২১৮

وَعَنْ أبي الهَيَّاجِ حَيَّانَ بِن حُصَيْنٍ، قَالَ: قَالَ لِيْ عَليُّ بنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عنه: أَلاَ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ أَنْ لاَ تَدَعَ صُورَةً إِلاَّ طَمَسْتَهَا، وَلاَ قَبْراً مُشْرَفاً إِلاَّ سَوَّيْتَهُ. رواه مسلم

আবুল হাইয়াজ হাইয়ান ইবনে হুসাইন থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, একদা আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) আমাকে বললেন, ‘তোমাকে সে কাজের জন্য পাঠাব না কি, যে কাজের জন্য আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়েছিলেন? (তা হচ্ছে এই যে,) কোন (প্রাণীর) ছবি বা মূর্তি দেখলেই তা নিশ্চিহ্ন ক’রে দেবে এবং কোন উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে।’
মুসলিম ৯৬৯, তিরমিযী ১০৪৯, নাসায়ী ২০৩১, আবূ দাউদ ৩১১৮, আহমাদ ৬৮৫, ৭৪৩, ৮৯১, ১০৬৭, ১১৭৪, ১১৭৯, ১২৪৩, ১২৮৬, রিয়াদুস সলেহিনঃ ১৬৯৬

তাই যদি কেউ কোনো নবী, ফেরেস্তা, ওলী, জ্বীন পরীকে, কবরকে, পশু প্রাণিকে, নিশাণাকে, কোন পবিত্র বস্তুকে, পীরকে সিজদা করে, রুকু করে, তার জন্য সাওম রাখে, হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে নৈকট্য প্রার্থনা করে, তার নামে ছরি দাড় করায়, ফেরার সময় উল্টোভাবে ফিরে, কবরকে চুম্বন করে, কবরে বাতি জ্বালায়, কবর জিয়ারতের জন্য দূরান্ত থেকে আসে, কবরে আলোর ব্যবস্থা করে, কবরে গিলাফ দ্বারা আবৃত করে, কবরের উপর চাদর টাঙ্গিয়ে দেয়, সামিয়ানা টাঙ্গায়, কবরের চৌকাঠে চুম্বন করে, কবরে সমাধিস্থ বুজুর্গ ব্যক্তির নিকটে হাত তুলে কিছু প্রার্থনা করে, কবরের খেদমত করে, কবরের পার্শ্ববর্তী গাছপালাকে সম্মান করে, কবরকে তাওয়াফ করে, কবরকে হাত বুলায়, লালশালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি গায়ে মাখে, তার সামনে মিনতী করে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে, সুস্থতা কামনা করে ও সন্তান চায়। মোটকথা এ ধরণের কাজ করলে নিঃসন্দেহে সে শিরক করলো। এসব শিরক হওয়া সত্বেও আমাদের সমাজে এর সবগুলোই ব্যাপকভাবে চালু রয়েছে।

“খলীফা ওমর (রাঃ)-এর সময় তাকে সংবাদ দেয়া হলো যে, কতিপয় মানুষ ঐ বৃক্ষের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করে যে বৃক্ষের নিচে সাহাবীগণ নবী করীম (সাঃ)-এর হাতে বায়’আত করেছিলেন। অতঃপর তিনি [ওমর (রাঃ)] সাথে সাথে ঐ বৃক্ষকে কেটে ফেলার নির্দেশ দিলেন” (ফাতহুল বারী, ৭/৪৪৮)।

কিন্তু বর্তমানে আমরা সংস্কৃতির নামে, আধুনিকতার নামে অহরহ শিরক করে চলেছি। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও শহীদ দিবস আসলে আমরা শহীদ মিনারে ও স্মৃতিসৌধে গিয়ে ফুলের মালা দেই, নীরবে এক মিনিট দু’ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকি, শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই। প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীদেরকে শিরক শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। অথচ সবচেয়ে বড় গুনাহ ও শিরক থেকে বেঁচে থাকার যথার্থ শিক্ষা দেয়াই উচিৎ ছিলো দেশের তরুণ প্রজন্মকে। আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা মন্দিরে মূর্তিকে সামনে রেখে পূজা অর্চনা করে, সিজদা করে। আর অন্যদিকে মুসলিমরা পীর বুজুর্গদের মাটির নিচে দাফন করে কবর সামনে রেখে একই কায়দায় পূজা করে তথা সিজদা করে, মানত করে, দোয়া করে, সম্মান প্রদর্শন করে, পুষ্পস্তবক অর্পণ, নানা কায়দায় প্রার্থনা, নীরবতা পালনসহ কতকিছু যার শেষ নেই বললেই চলে। এসব কিছুর মধ্যে মূলতঃ মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। বরং মূর্তিপূজা, কবর বা মাজার পূজা ও শহীদ মিনার পূজা একই সুত্রে গাঁথা। স্রেফ কিছু নিয়ম নীতির পার্থক্য মাত্র। এছাড়াও ভক্তিভাজন পীর বা নেতা নেত্রীর ছবিতে ফুলের মালা দেয়া, চিত্রের পাদদেশে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করা, নীরবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা, ভাস্কর্যের নামে শিক্ষাঙ্গণ ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে মূর্তি স্থাপন করা ও তাকে সম্মান দেখানো মূর্তিপূজার শামিল, যা শিরক। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানে না। তাই কেউ যদি মনে করে পীর সাহেব, হুজুরে কেওলা গায়েব জানেন তাহলে তা শিরক হবে। জ্যোতিষী বা গণকের নিকটে যাওয়া বা তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করা, তাকে হাত দেখানোও শিরক। আবার অনেকে রোগমুক্তি, সন্তানলাভ, মুশকিলে আসান, মামলা মোকদ্দমায় জয়লাভ, পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা কিংবা নানাবিধ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য দরগা মাজারে দান খয়রাত, গরু ছাগল, টাকা পয়সা, চাল, মিষ্টি, হাঁস মুরগী, শিরনিসহ বিভিন্ন প্রকার জিনিস দিয়ে থাকেন। এ সবগুলো শিরকের অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে কোনো পশুপাখি যবেহ করা শিরক। আবার আমরা আল্লাহ ব্যতীত অনেক কিছুর নামে শপথ বা কসম করি সেগুলোও শিরক। যেমন আমরা অনেক সময় মাটি, দানা, চোখ, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, সন্তানের মাথায় হাত রেখে, পেটের সন্তানের সহ আরো অনেক কিছুর শপথ করি, যা শিরকের পর্যায়ভুক্ত। যদি শপথ করতেই হয় তাহলে সরাসরি আল্লাহর নামে শপথ করতে হবে। সৃষ্টি তার স্রষ্টার নামে শপথ করবে, সৃষ্টির নামে নয়। আমরা অনেক সময় বালা মুসিবত দূর করার জন্য রিং, তাগা, কালো সূতা ও তাবীজ ব্যবহার করি যা শিরক। (তিরমিজী; মিশকাত, ৪৫৫৬)। স্বামী স্ত্রীর, দুই বন্ধু বা বান্ধবী তথা দু’জন ব্যক্তির মাঝে সুসম্পর্ক গড়ার জন্য যাবতীয় তাবীজ বা ঝাড়ফুঁক জাতীয় যেসব কৌশল অবলম্বন করা হয় তার সবগুলোই শিরক। আমরা অনেকে প্রভাতে দোকান খোলার পর প্রথম খরিদ্দারকে বাকি দিতে চাইনা অমঙ্গলের আশঙ্কায়। এরূপ ধারণা করাও শিরক। অমুক দিন অমুক গাছ বা বাঁশ কাটা যাবে না, ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখলে এই ক্ষতি হয়, এজাতীয় বিশ্বাস শিরকের শামিল। আবার অনেক সময় সন্তানের নাম না বুঝে আব্দুন নবী তথা নবীর বান্দা, নুরুন্নবী তথা নবীর নূর, গোলাম রাসুল তথা রাসুলের গোলাম বা এরূপ নাম রেখে থাকি এসবও শিরকের অন্তর্ভূক্ত। মোটকথা মাজারকেন্দ্রীক পীর ফকীর গণক, তাবীজ কবজ ইত্যাদি যেসকল কার্যক্রম রয়েছে তার সবই শিরক। আবার শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মূর্তিসম্বলিত ভাস্কর্য, বিভিন্ন দিবস পালনকেন্দ্রীক যসব কার্য সম্পাদিত হয় এর অধিকাংশের সাথেই শিরক জড়িত। আজকে সারাবিশ্বে ‘দিবস’ পালনের যে প্রতিযোগীতা চলছে তার সাথে ইসলামি জীবন ব্যবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। এভাবে শিরক ও শিরক সম্পর্কিত কার্যাবলী আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তা ভয়াবহ। এভাবে আমরা জ্ঞাতে অজ্ঞাতে প্রতিনিয়ত নির্দ্বিধায় শিরক করে নিজেদেরকে জাহান্নামের খোরাক বানাচ্ছি। তাই আমাদের সকলকে শিরক সম্পর্কে সর্বাধিক সচেতন হতে হবে।

তাই আমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য হল, আমাদের সকল ইবাদত-বন্দেগী, দুআ-প্রার্থনা নির্ভেজালভাবে একমাত্র এক আল্লাহ তাআলার জন্য নিবেদন করা। তিনি যা করতে বলেছেন আমরা তাই করবো। নিজেরা কিছু উদ্ভাবন করবো না। তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের যেভাবে প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন আমরা সেভাবেই প্রার্থনা করবো। তিনি যেভাবে অসীলা গ্রহণ অনুমোদন করেছেন, আমরা সেভাবে অসীলা গ্রহণ করবো। এর ব্যতিক্রম হলে আমরা ইসলাম থেকে দূরে চলে যাবো। কাজেই সর্বক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য হবে কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণ করা। যদি আমরা এভাবে চলতে পারি তবে দুনিয়াতে কল্যাণ আর আখেরাতে চিরন্তন সুখ ও সফলতা লাভ করতে পারবো। অন্যথা, উভয় জগতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে শিরক থেকে হেফাজত করুন।

Post a Comment

0 Comments