রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাস্কর্য বা মূর্তি তৈরি করা নয় বরং তা ভেঙে নিশ্চিহ্ন করা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শঃ
---------------------------------
চতুর্থ খলিফা আলী (রাঃ) এর পুলিশ প্রধান আবুল হাইয়াজ হাইয়ান ইবনে হুসাইন বলেন, একদা খলিফা আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) আমাকে বললেন,
أَلاَ أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم ؟ أَنْ لاَ تَدَعَ صُورَةً إِلاَّ طَمَسْتَهَا، وَلاَ قَبْراً مُشْرَفاً إِلاَّ سَوَّيْتَهُ.
‘তোমাকে সে কাজের জন্য পাঠাব না কি, যে কাজের জন্য আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমাকে (সেনাপ্রধান করে) পাঠিয়েছিলেন? (তা হচ্ছে এই যে,) কোন প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য দেখলেই তা ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দেবে এবং কোন উঁচু কবর দেখলে তা ভেঙে সমান করে দেবে।’ (সহীহ মুসলিম হাঃ ৯৬৯, জামে তিরমিযী হাঃ ১০৪৯, সুনান নাসায়ী হাঃ ২০৩১, আবূ দাউদ হাঃ ৩১১৮, মুসনাদে আহমাদ হাঃ ৬৮৫, ৭৪৩, ১২৮৬)
মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কা'বা গৃহে প্রবেশ করলে বিভিন্ন মূর্তির সাথে সেখানে তিনি ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আ) এর ভাস্কর্যও দেখতে পান। যাঁদের হাতে ভাগ্য গণনার তীর ছিল। তা দেখে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন,
قاتلهم الله، والله ما استقسما ها قط-
"আল্লাহ ওদের ধ্বংস করুন! আল্লাহর কসম! এই নবীদ্বয় কখনোই তীর দ্বারা ভাগ্য গণনা করতেন না।" অতঃপর তিনি সকল ভাস্কর্য ও মূর্তি ভেঙে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নির্দেশ দেন। (রাহীকুল মাখতুম, পৃঃ ৪০৪)
হিন্দুস্থান বিজেতা সুলতান মাহমুদ (রাহঃ) কে সোমনাথ মন্দির না ভাঙার বিনিময়ে অটেল অর্থ ও মণিমুক্তা দিতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আমরা মূর্তি ভাঙা জাতি, মূর্তি বিক্রেতা নই।' অথচ আজ রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করে এসব নির্মাণ করছেন জনপ্রতিনিধিরা মুসলিমদের ট্যাক্সের পয়সা ব্যয় করে। আল্লাহর নিকট তারা কি জবাব দেবেন, তারাই ভাল জানেন!
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব শিরকি কর্মকাণ্ড অপসরণ করে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হলে, সবার আগে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে। নয়তো সেকুলার রাষ্ট্র দ্বারা মূর্তি তৈরি হবে কিন্তু ভাঙা যাবে না। তাই এই ধরণের শিরকের জন্য তারাও সমান ভাবে দায়ী যারা ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা করে। আর দেওবন্দী, ব্রেহলবী ও আহলে হাদীস সহ সেসব মুসলিমও এর দায় এড়াতে পারবে না, যারা মুসলিম ঐক্য গড়ে না তুলে ভূয়া অযুতে ঝগড়া করে দলে দলে বিভক্ত হয়ে মুসলিম উম্মাহকে দুর্বল করে।
আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ-
তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং পরস্পর ঝগড়া করো না, তাহলে তোমরা হিম্মত হারা হয়ে যাবে এবং তোমাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে। (আনফাল ৮/৪৬)
------------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ আলোচক গ্রন্থপ্রনেতা ও দাঈ।
0 Comments