Recent Tube

এখন মুসলমানদের নেতৃত্বের বদলে প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষা অর্জনের স্পৃহা গড়ে তোলাটাই জরুরি কাজ।' --ইবনে যুবাইর।

  
 
 এখন মুসলমানদের নেতৃত্বের বদলে প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষা অর্জনের স্পৃহা গড়ে তোলাটাই জরুরি কাজ।' 


       আমরা এখন স্কুল বানামু,স্কুল'- মামুনুল হক তার সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যে কথাগুলো বলেছিলেন।তখন তার কথাগুলোকে কেবল মাত্র কথার কথা বলে মনে হয়েছিল।অপ্রাসঙ্গিক কথা বার্তা তারা প্রায় বলে মনের সাধ ঝাল মিটিয়ে থাকেন।সে কারণে তাদের সব কথা গুরুত্বসহকারে সব সময় সচেতন মানুষ গ্রহণ করে না।এমনো দেখা গেছে,বাতাস অনুকূল মনে করে সকালে এক কথা বলে কঠিন হুঙ্কার দিলেন,বিকালে প্রতিকূল বাতাস দেখে আবার পুরো সুর বদলিয়ে নিতে সময় দেন না-মন্দ নয়!!

বিগত ১৮ জানুয়ারি ২০২১-২২ সালের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ঘোষণাকালে ভারতের মুসলিম সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি আল্লামা আরশাদ মাদানি বলেন,'ভারতের মুসলমানরা শিক্ষায় দলিতদেরও পেছনে রয়েছে।'
  
তিনি অভিযোগ করে বলেন,'ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলো মুসলমানদের একটি সুনির্ধারিত পলিসির আওতায় শিক্ষাঙ্গন থেকে বাইরে রেখেছে।'
পাঠক,অভিযোগটি নিতান্তই হাস্যকর।কাফিররা মুসলিমদের বন্ধু ছিল কবে?তবুও তারা তাদেরকেই বন্ধুরুপে গ্রহণ করেছেন।অবিভক্ত ভারতের পক্ষে দেওবন্দীদের অতীত ভূমিকা দেখুন?তারা হিন্দু মুসলিম,বৌদ্ধ,খ্রীষ্টান, জৌণ সকলকেই এক জাতি হিসাবে ফতুয়া প্রদান করে অবিভক্ত ভারতের পক্ষে জনমত গঠন করেন।
কিন্তু মাওলানা মওদূদী(রহ)-এই সর্বনাশা নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেন এবং কুরআন হাদিসের আলোকে এ কথা বোঝাতে সক্ষম হোন যে,অমুসলিম আর মুসলিম কখনো এক জাতি নয়,হতে পারে না।তিনি মুসলিমদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্রের কথা মুসলিম জাতির সামনে জোরালোভাবে তুলে ধরেন।অবিভক্ত ভারতের বিপক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্য মাওলানা মওদূদী(রহ.)-এর হয়ে যায় আকিদা খারাপ।দেওবন্দী আলেমদের সাথে মাওলানার বিরোধের গোড়ারপত্তন এখান থেকেই।

আল্লামা মাদানি আরো বলেন,'দেশজুড়ে এখন যে ধরণের ধর্মীয় ও আদর্শিক যুদ্ধের সূচনা হয়েছে, তার মোকাবেলা কোনো অস্ত্র বা প্রযুক্তির মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। বরং এই যুদ্ধ জয়ের একমাত্র উপায় নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করে এমনভাবে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা যে, তারা নিজেদের জ্ঞান এবং প্রতিভার অস্ত্র দিয়ে এই আদর্শিক যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়। যাতে তারা সাফল্যের সেই গন্তব্যসমূহে পৌঁছাতে পারে। 
যেখান পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে আমাদের পৌঁছানো কঠিন থেকে কঠিন করে তোলা হয়েছে।'

পাঠক, লক্ষ্য  করুন,পোশাক পরিচ্ছদ, মসজিদ,মাদরাসার গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ ইসলামকে আজ হটাৎ কেন ওনাদের নিকট অচেনা মনে লাগল এবং মাওলানা মওদূদী(রহ.)- ১৫ শত বছর পূর্বের যে ইসলামের কথা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে দেওবন্দী ও কৌমি গোষ্ঠীর একমাত্র বিরোধীতার লক্ষবস্তুতে পরিনত হল আজ সেই ১৫ শত বছর পূর্বের ইসলামের শূণ্যতা হটাৎ কেন অনুভব করতে লাগলেন?
দেওবন্দী ও কৌমিরা যদি মাওলনা মওদূদী(রহ.)-এর মতই ইসলামে রাজনীতির গন্ধ খুঁজেন এবং ইসলামকে পরিপূর্ণ দ্বীন বলে স্বীকার করে নিয়ে একই পথে হাঁটতে চান তাহলে তাদের এত দিনের অরাজনৈতিক মসজিদ,মাদরাসা ভিত্তিক ইসলামের কি হবে?
তারা তাদের মসজিদ মাদরাসা ভিত্তিক ইসলামের শিক্ষা দিক্ষা নিয়ে আত্ন-অহংকারের দাপটে মানুষকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এসেছেন, সেই অহংকার আজ ধুলোর সাথে মিশে গেল না?

এরপর তিনি জোর দিয়ে বলেন, এখন সময় এসেছে; মুসলমানদের পেটে পাথর বেঁধে হলেও তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার। আমাদের এমন সব স্কুল ও কলেজের ভীষণ প্রয়োজন, যেখানে আমাদের ধর্মীয় পরিচয়সহ আমাদের সন্তানরা কোনো বাঁধা বা বৈষম্য ছাড়া উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে পারে। অবস্থা বিবেচনায় এখন মুসলমানদের নেতৃত্বের বদলে প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষা অর্জনের স্পৃহা গড়ে তোলাটাই জরুরি কাজ।'

   শেষে এসে মাদানি সাহেব ইসলামকে নিয়ে আবার মসজিদ মাদরাসার মধ্যে জোর করে শিকল বদ্ধ করতে চেয়েছেন। যেটা তার এই কথার মধ্য দিয়ে পরিস্কার হয়েছে যে,'অবস্থা বিবেচনায় এখন মুসলমানদের নেতৃত্বের বদলে প্রজন্মের মধ্যে শিক্ষা অর্জনের স্পৃহা গড়ে তোলাটাই জরুরি কাজ।' অর্থাৎ,উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হও,কিন্তু নেতৃত্বে যাবার দরকার নেই।  
এই হল মামুনুল হকের, 'স্কুল বানামু,স্কুল'-এর শানে নুযুল।একেই বলে যেই লাউ সেই কদু।
-------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments