Recent Tube

ইসলামের দৃষ্টিতে পাশা, দাবা, তাস, লুডু, ক্যারাম খেলা বা জুয়া খেলা এবং দেখা।


 ইসলামের দৃষ্টিতে পাশা,দাবা,তা, লুডু, ক্যারাম খেলা বা জুয়া খেলা এবং দেখা। 
 -------------------------------------

   মানব জীবনের প্রতিটি স্তরেই ইসলাম শান্তির দিক নির্দেশনা দিয়েছে। তাই সমাজ অবক্ষয়ের এইসব ক্যান্সারকে ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে।

মহাগ্রন্থ আল কুরআনের বাণী 

وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاء وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَ.
لَوْ أَرَدْنَا أَن نَّتَّخِذَ لَهْوًا لَّاتَّخَذْنَاهُ مِن لَّدُنَّا إِن كُنَّا فَاعِلِينَ 
   আকাশ পৃথিবী এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, তা আমি ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।  আমি যদি ক্রীড়া উপকরণ সৃষ্টি করতে চাইতাম, তবে আমি আমার কাছে যা আছে তা দ্বারাই তা করতাম, যদি আমাকে করতে হত।
সূরা আম্বিয়াঃ ১৬-১৭

 সূরা মায়েদায় এরশাদ হয়েছে:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّـهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ

  “হে মুমিনগণ, যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয় । অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে করে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব তোমরা এখনো কি নিবৃত্ত হবে?" 
সূরা মায়েদাঃ ৯০-৯১

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا
   তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে,তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। 
সূরা বাকারাঃ ২১৯

 كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الْقِمَارِ فَهُوَ مِنَ الْمَيْسِرِ حَتَّى لَعِبِ الصِّبْيَانِ بِالْجَوْزِ.
  প্রত্যেক বাজি মাইছির তথা জুয়ার অন্তর্ভূক্ত এমনকি শিশুদের হারজিতের খেলাও জুয়ার অন্তর্ভূক্ত।
[তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/১১৬,
সূরা মায়িদাঃ ৯০-৯৩]

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ قَالَ: حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ الْمَلِكِ، عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: إِيَّاكُمْ وَهَاتَيْنِ الْكَعْبَتَيْنِ الْمَوْسُومَتَيْنِ اللَّتَيْنِ يُزْجَرَانِ زَجْرًا، فَإِنَّهُمَا مِنَ الْمَيْسِرِ

  আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

সাবধান! তোমরা এই চতুৰ্ভুজ টুকরায় পরিহার করো, যা নিক্ষেপ করা হয়। কারণ এই দু’টি জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। 
আহমাদ ৪২৬৩, আদাবুল মুফরাদ ১২৮২

 ◈ পাশা, দাবা, তাস, লুডু, ক্যারাম খেলার অর্থ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যাচরণ করা।

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ فَقَدْ عَصَى اللَّهَ وَرَسُولَهُ ‏"‏ ‏.‏

 আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

 তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবা বা পাশা খেলে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যাচরণ করে। 
 আবূ দাউদ ৪৯৩৮, আহমাদ ১৯০২৭, ১৯০৫৭, ১৯০৮৩, মুয়াত্তা’ মালিক ১৭৮৬। ইরওয়া’ ২৬৭০, সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৭৬২, আদাবুল মুফরাদ ১২৮১, ১২৮৪

حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ مُوسَى بْنِ مَيْسَرَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُولَهُ

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ أَبِي عَلْقَمَةَ عَنْ أُمِّهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ بَلَغَهَا أَنَّ أَهْلَ بَيْتٍ فِي دَارِهَا كَانُوا سُكَّانًا فِيهَا وَعِنْدَهُمْ نَرْدٌ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِمْ لَئِنْ لَمْ تُخْرِجُوهَا لَأُخْرِجَنَّكُمْ مِنْ دَارِي وَأَنْكَرَتْ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ

 আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবা খেলা খেললো, সে আল্লাহ্ ও আল্লাহ্‌র রাসূলের নাফরমানী করল (অবাধ্য হল)। [১] (আবু দাঊদ ৪৯৩৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৬২, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন [সহীহ আল জামে ৬৫২৯])
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত; তাঁর বাড়ির একটি ঘরে কিছুসংখ্যক লোক বাস করত। তিনি শুনেছেন যে, উহাদের নিকট শতরঞ্জ রয়েছে। অতঃপর তিনি তাদের নিকট বলে পাঠালেন, তোমরা উহা (শতরঞ্জ) দূর কর। অন্যথায় আমি তোমাদেরকে আমার ঘর হতে বাহির করে দিব। তিনি উহাকে অত্যন্ত খারাপ মনে করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

ফুটনোটঃ
[১] শতরঞ্জ বলতে শুধু ছক্কা খেলাকেই বোঝায় না, বরং আমাদের দেশে প্রচলিত দাবা খেলা, তাস খেলা, বাঘ-গুটি খেলা ইত্যাদি সমস্তই এর অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত খেলার মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে শত্র“তাও পয়দা হয়। এতে মত্ত হয়ে আল্লাহকে ভুলে যায়, নামায কাযা হয়ে যায় এবং আরও নানা রকমের পাপাচারে লিপ্ত হয়। এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি শতরঞ্জ খেলেছে সে নিজের হস্তকে শূকরের গোশত ও রক্তে রঞ্জিত করেছে। এই জন্য আলেমগণ একে হারাম বলেছেন। ইমাম আবূ হানীফা (র), ইমাম মালিক (র) ও আহমাদ ইবনু হাম্বল (র) এই জাতীয় খেলাকে সম্পূর্ণরূপে হারাম বলেছেন। ইমাম শাফিয়ী (র) বলেন যে, যদি এই খেলার কারণে আল্লাহর কোন ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় কিংবা ইহা অভ্যাসে পরিণত হয়, তা হলে ইহা হারাম, অন্যথায় মাকরূহ তান্যীহ। 
মুয়াত্তা ইমাম মালিকঃ ১৭২৮

◈ পাশা, দাবা, তাস, লুডু, ক্যারাম খেলার জন্য আহ্বান করা একটি কাফফারা যোগ্য অপরাধ:
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «مَنْ حَلَفَ فَقَالَ في حَلِفِهِ : بِاللاَّتِ وَالعُزَّى، فَلْيَقُلْ : لاَ إِلٰهَ إلاَّ اللهُ، وَمَنْ قَالَ لِصَاحِبهِ : تَعَالَ أُقَامِرْكَ فَلْيَتَصَدَّقْ» .متفق عليه

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি কসম ক’রে বলে, ‘লাত ও উয্-যার কসম’, সে যেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গীকে বলে, ‘এস তোমার সাথে জুয়া খেলি’, সে যেন সাদকাহ করে।’’
বুখারী ৪৮৬০, ৬১০৭, ৬৩০১, ৬৬৫০, মুসলিম ১৬৪৭, তিরমিযী ১৫৪৫, নাসায়ী ৩৭৭৫, আবূ দাউদ ৩২৪৭, ইবনু মাজাহ ২০৯৬, আহমাদ ৮০২৫, রিয়াদুস সালেহিন ১৮১৬

◈ পাশা, দাবা, লুডু, ক্যারাম খেলা ও বসে খেলা দেখা শুকরের গোশত খাওয়া এবং রক্তে হাত রক্তাক্ত করার অন্তর্ভুক্ত:

حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ مُوسَى بْنِ مَيْسَرَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِنْدٍ عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُولَهُ

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ أَبِي عَلْقَمَةَ عَنْ أُمِّهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ بَلَغَهَا أَنَّ أَهْلَ بَيْتٍ فِي دَارِهَا كَانُوا سُكَّانًا فِيهَا وَعِنْدَهُمْ نَرْدٌ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِمْ لَئِنْ لَمْ تُخْرِجُوهَا لَأُخْرِجَنَّكُمْ مِنْ دَارِي وَأَنْكَرَتْ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ

আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দাবা খেলা খেললো, সে আল্লাহ্ ও আল্লাহ্‌র রাসূলের নাফরমানী করল (অবাধ্য হল)। [১] (হাসান, আবূ দাঊদ ৪৯৩৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৬২, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন [সহীহ আল জামে ৬৫২৯])

নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত; তাঁর বাড়ির একটি ঘরে কিছুসংখ্যক লোক বাস করত। তিনি শুনেছেন যে, উহাদের নিকট শতরঞ্জ রয়েছে। অতঃপর তিনি তাদের নিকট বলে পাঠালেন, তোমরা উহা (শতরঞ্জ) দূর কর। অন্যথায় আমি তোমাদেরকে আমার ঘর হতে বাহির করে দিব। তিনি উহাকে অত্যন্ত খারাপ মনে করেছেন। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

ফুটনোটঃ
[১] শতরঞ্জ বলতে শুধু ছক্কা খেলাকেই বোঝায় না, বরং আমাদের দেশে প্রচলিত দাবা খেলা, তাস খেলা, বাঘ-গুটি খেলা ইত্যাদি সমস্তই এর অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত খেলার মাধ্যমে পরস্পরের মধ্যে শত্র“তাও পয়দা হয়। এতে মত্ত হয়ে আল্লাহকে ভুলে যায়, নামায কাযা হয়ে যায় এবং আরও নানা রকমের পাপাচারে লিপ্ত হয়। এক হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি শতরঞ্জ খেলেছে সে নিজের হস্তকে শূকরের গোশত ও রক্তে রঞ্জিত করেছে। এই জন্য আলেমগণ একে হারাম বলেছেন। ইমাম আবূ হানীফা (র), ইমাম মালিক (র) ও আহমাদ ইবনু হাম্বল (র) এই জাতীয় খেলাকে সম্পূর্ণরূপে হারাম বলেছেন। ইমাম শাফিয়ী (র) বলেন যে, যদি এই খেলার কারণে আল্লাহর কোন ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় কিংবা ইহা অভ্যাসে পরিণত হয়, তা হলে ইহা হারাম, অন্যথায় মাকরূহ তান্যীহ। 
মুয়াত্তা ইমাম মালিকঃ ১৭২৮

حَدَّثَنَا عِصَامٌ قَالَ: حَدَّثَنَا حَرِيزٌ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ سُمَيْرٍ الْأَلَهَانِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، وَكَانَ بِجَمْعٍ مِنَ الْمَجَامِعِ، فَبَلَغَهُ أَنَّ أَقْوَامًا يَلْعَبُونَ بِالْكُوبَةِ، فَقَامَ غَضْبَانَ يَنْهَى عَنْهَا أَشَدَّ النَّهْيِ، ثُمَّ قَالَ: أَلَا إِنَّ اللَّاعِبَ بِهَا لَيَأْكُلُ ثَمَرَهَا، كَآكِلِ لَحْمِ الْخِنْزِيرِ، وَمُتَوَضِّئٍ بِالدَّمِ. يَعْنِي بِالْكُوبَةِ: النَّرْدَ

ফাদালা ইবনে উবাইদ (র) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি কোন এক মজলিসে বসা ছিলেন। তখন তিনি জানতে পারলেন যে, কতক লোক দাবা খেলায় মত্ত আছে। তিনি ক্রোধান্বিত অবস্থায় তৎক্ষণাৎ উঠে গিয়ে তাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন, অতঃপর বললেন, সাবধান! যারা পাশা খেলে এবং তার ফল (উপার্জন) খায় তারা শূকরের গোশত ভক্ষণকারী এবং রক্ত দিয়ে উযুকারীর সমতুল্য।
আদাবুল মুফরাদঃ ৭৯৩

حَدَّثَنَا ابْنُ الصَّبَّاحِ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ زَكَرِيَّا، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ الْحَنَفِيِّ هُوَ الطَّنَافِسِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَعْلَى أَبُو مُرَّةَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ فِي الَّذِي يَلْعَبُ بِالنَّرْدِ قِمَارًا: كَالَّذِي يَأْكُلُ لَحْمَ الْخِنْزِيرِ، وَالَّذِي يَلْعَبُ بِهِ مِنْ غَيْرِ الْقِمَارِ كَالَّذِي يَغْمِسُ يَدَهُ فِي دَمِ خِنْزِيرٍ، وَالَّذِي يَجْلِسُ عِنْدَهَا يَنْظُرُ إِلَيْهَا كَالَّذِي يَنْظُرُ إِلَى لَحْمِ الْخِنْزِيرِ

ইয়ালা ইবনে মুররা (র) থেকে বর্ণিতঃ:

আমি আবু হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি বাজি ধরে দাবা খেলে সে শূকরের গোশত ভক্ষণকারীর সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি বাজি না ধরে দাবা খেলে সে শুকরের রক্তে হাত রঞ্জিতকারীর সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি তাদের সাথে বসে তাদের খেলা দেখে সে শুকরের গোশতের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যক্তির সমতুল্য।
আদাবুল মুফরাদ ১২৮৮

حَدَّثَنَا ابْنُ الصَّبَّاحِ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ زَكَرِيَّا، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ الْحَنَفِيِّ هُوَ الطَّنَافِسِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَعْلَى أَبُو مُرَّةَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ فِي الَّذِي يَلْعَبُ بِالنَّرْدِ قِمَارًا: كَالَّذِي يَأْكُلُ لَحْمَ الْخِنْزِيرِ، وَالَّذِي يَلْعَبُ بِهِ مِنْ غَيْرِ الْقِمَارِ كَالَّذِي يَغْمِسُ يَدَهُ فِي دَمِ خِنْزِيرٍ، وَالَّذِي يَجْلِسُ عِنْدَهَا يَنْظُرُ إِلَيْهَا كَالَّذِي يَنْظُرُ إِلَى لَحْمِ الْخِنْزِيرِ
ইয়ালা ইবনে মুররা (র) থেকে বর্ণিতঃ:

আমি আবু হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি বাজি ধরে দাবা খেলে সে শূকরের গোশত ভক্ষণকারীর সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি বাজি না ধরে দাবা খেলে সে শূকরের রক্তে হাত রঞ্জিতকারীর সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি তাদের সাথে বসে তাদের খেলা দেখে সে শূকরের গোশতের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যক্তির সমতুল্য।
আদাবুল মুফরাদঃ ১২৮৮

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدَشِيرِ فَكَأَنَّمَا غَمَسَ يَدَهُ فِي لَحْمِ خِنْزِيرٍ وَدَمِهِ ‏"‏ ‏.‏

বুরায়দাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি দাবা বা পাশা খেললো, সে যেন শুকরের গোশত ও রক্তের মধ্যে হাত ডুবিয়ে দিলো।  
মুসলিম ২২৬০, আবূ দাউদ ৪৯৩৯, আহমাদ ২২৪৭০, ২২৫১৬, ২২৫৪৭। ইরওয়া’ ৮/২৮৬, সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৭৬৩, আদাবুল মুফরাদ ১২৮৩

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عُمَرَ قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ حَبِيبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: اللَّاعِبُ بِالْفُصَّيْنِ قِمَارًا كَآكِلِ لَحْمِ الْخِنْزِيرِ، وَاللَّاعِبُ بِهِمَا غَيْرَ قِمَارٍ كَالْغَامِسِ يَدَهُ فِي دَمِ خِنْزِيرٍ

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

বাজি ধরে দুটি গুটি দ্বারা জুয়া খেলায়
অংশগ্রহণকারী শুকরের গোশত ভক্ষণকারীর সমতুল্য এবং বাজিবিহীন খেলায় অংশগ্রহণকারী শুকরের রক্তে হাত ডুবানো ব্যক্তিতুল্য।
আদাবুল মুফরাদ ১২৮৯

حَدَّثَنَا الْأُوَيْسِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: الْمَيْسِرُ: الْقِمَارُ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

দাবা খেলাও জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। (আবু উবায়দ, ইবনে জারীর, আবু হাতিম, শাওকানীর ফাতহুল কাদীর)
আদাবুল মুফরাদ ১২৭২

উল্লেখ্য যে আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: “দাবা এবং লুডু খেলা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত (ইবনে আবি শাইবা)

حَدَّثَنَا الْأُوَيْسِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: الْمَيْسِرُ: الْقِمَارُ

ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

দাবা খেলাও জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। (আবু উবায়দ, ইবনে জারীর, আবু হাতিম, শাওকানীর ফাতহুল কাদীর)
আদাবুল মুফরাদ ১২৭২

❑ সাহাবীগণের দৃষ্টিতে পাশা, দাবা, লুডু, ক্যারাম খেলাঃ

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ: حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا وَجَدَ أَحَدًا مِنْ أَهْلِهِ يَلْعَبُ بِالنَّرْدِ ضَرَبَهُ، وَكَسَرَهَا

নাফে (র) থেকে বর্ণিতঃ:

আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) তার পরিবারের কাউকে দাবা খেলায় লিপ্ত দেখতে পেলে তাকে প্রহার করতেন এবং দাবার সরঞ্জাম ভেঙ্গে ফেলতেন। 
মুয়াত্তা মালিক ১৭২৯, আদাবুল মুফরাদ ১২৮৫

حَدَّثَنَا عِصَامٌ قَالَ: حَدَّثَنَا حَرِيزٌ، عَنْ سَلْمَانَ بْنِ سُمَيْرٍ الْأَلَهَانِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، وَكَانَ بِجَمْعٍ مِنَ الْمَجَامِعِ، فَبَلَغَهُ أَنَّ أَقْوَامًا يَلْعَبُونَ بِالْكُوبَةِ، فَقَامَ غَضْبَانَ يَنْهَى عَنْهَا أَشَدَّ النَّهْيِ، ثُمَّ قَالَ: أَلَا إِنَّ اللَّاعِبَ بِهَا لَيَأْكُلُ ثَمَرَهَا، كَآكِلِ لَحْمِ الْخِنْزِيرِ، وَمُتَوَضِّئٍ بِالدَّمِ. يَعْنِي بِالْكُوبَةِ: النَّرْدَ

ফাদালা ইবনে উবাইদ (র) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি কোন এক মজলিসে বসা ছিলেন। তখন তিনি জানতে পারলেন যে, কতক লোক দাবা খেলায় মত্ত আছে। তিনি ক্রোধান্বিত অবস্থায় তৎক্ষণাৎ উঠে গিয়ে তাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন, অতঃপর বললেন, সাবধান! যারা পাশা খেলে এবং তার ফল (উপার্জন) খায় তারা শূকরের গোশত ভক্ষণকারী এবং রক্ত দিয়ে উযুকারীর সমতুল্য।
আদাবুল মুফরাদঃ ৭৯৩

ওসমান (রাযিয়াল্লাহু আনহুর) শাসনামলে তিনি মিম্বরে আরোহণ করে ঘোষণা করলে যে হে মানব মণ্ডলী কারো ঘরে যদি জুয়ার সরঞ্জাম থাকে সেযেন তা বাহিরে বের করে ভেঙ্গে ফেলে। (বাইহাকী ১০খণ্ড, ২১৫ পৃষ্ঠা)

আলী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) ঘর থেকে বের হয়ে কাওকে জুয়া খেলতে দেখলে তাকে সকাল থেকে নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দি করে রাখতেন।(আদাবুল মুফরাদ-১২৬৮)

عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ مَرَّ عَلَى قَوْمٍ يَلْعَبُونَ الشِّطْرَنْجَ فَقَالَ: مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ؟ لَأَنْ يَمَسَّ جَمْرًا حَتَّى يُطْفَأَ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمَسَّهَا.
হযরত আলী রা. একবার দাবা খেলায় রত কিছু মানুষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের কে বললেন, এই মুর্তিগুলো কী, যাদের সামনে তোমরা বসে আছো? এগুলো স্পর্শ করার চেয়ে জলন্ত অঙ্গার নির্বাপিত হওয়া পর্যন্ত তাতে হাতে রেখে দেওয়া ভাল। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ১০/২১২

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে দাবা খেলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,
هُوَ شَرٌّ مِنَ النَّرْدِ
সেটা ‘নারদ’ (চতুর্ভুজ গুটি দিয়ে খেলা) থেকে নিকৃষ্ট।
(প্রাগুক্ত)

◈ যেসকল লোকেরা পাশা, দাবা, তাস, লুডু, ক্যারাম খেলে তাদেরকে সালাম দেওয়া নিষেধ

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ الْحَكَمِ الْقَاضِي قَالَ: أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَلِيدِ الْوَصَّافِيُّ، عَنِ الْفُضَيْلِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كَانَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ إِذَا خَرَجَ مِنْ بَابِ الْقَصْرِ، فَرَأَى أَصْحَابَ النَّرْدِ انْطَلَقَ بِهِمْ فَعَقَلَهُمْ مِنْ غُدْوَةٍ إِلَى اللَّيْلِ، فَمِنْهُمْ مَنْ يُعْقَلُ إِلَى نِصْفِ النَّهَارِ. قَالَ: وَكَانَ الَّذِي يُعْقَلُ إِلَى اللَّيْلِ هُمُ الَّذِينَ يُعَامِلُونَ بِالْوَرِقِ، وَكَانَ الَّذِي يُعْقَلُ إِلَى نِصْفِ النَّهَارِ الَّذِينَ يَلْهُونَ بِهَا، وَكَانَ يَأْمُرُ أَنْ لَا يُسَلِّمُوا عَلَيْهِمْ

ফুদাইল ইবনে মুসলিম (র) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আলী (রাঃ) বাবুল কাসর থেকে বের হলে তিনি দাবা খেলোয়াড়দের দেখতে পান। তিনি তাদের নিকট গিয়ে তাদেরকে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আটক রাখেন। তাদের মধ্যে কতককে তিনি দুপুর পর্যন্ত আটক রাখেন। রাবী বলেন, যারা অর্থের আদান-প্রদানের ভিত্তিতে খেলেছিল, তিনি তাদের রাত পর্যন্ত আটক রাখেন, আর যারা এমনি খেলেছিল তাদেরকে দুপুর পর্যন্ত আটক রাখেন। তিনি নির্দেশ দিতেন, লোকজন যেন তাদেরকে সালাম না দেয়।
আদাবুল মুফরাদ ১২৮০

❑ বাঁচার উপায়:

◉ আল্লাহভীরুতা:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। 
সূরা আলে ইমরানঃ ১০২ 

 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামী কালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর,
আল্লাহ তা’আলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন।
সূরা আল হাশরঃ ১৮ 

মানুষের মাঝে যখন আল্লাহ ভীরুতা আসবে তখন সে সর্বপ্রকার অন্যায় এবং অপরাধ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে।

◉ সময়কে কাজে লাগানো:

وَأَنفِقُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَلاَ تُلْقُواْ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوَاْ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন। 
সূরা বাকারাঃ ১৯৫

অবসর সময়কে কোন না কোন কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। কেন না অবসর সময়ে শয়তান মানুষকে বিপথগামী করা চেষ্টা করে। তাই এসময়টাকে কোন না কোন ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করতে হবে।

◉ দায়িত্বশীলদের সজাগ দৃষ্টি: 

আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন:

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: « كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ: الإمَامُ رَاعٍ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ في أهلِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ في بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالخَادِمُ رَاعٍ في مال سيِّدِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ » متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের দায়িত্বশীলা, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল, সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’’
বুখারী ২৫৫৮, ৮৯৩, ২৪০৯, ২৫৫৪, ২৭৫১, ৫১৮৮, ৫২০০, ৭১৩৮, মুসলিম ১৮২৯, তিরমিযী ১৭০৫, আবূ দাউদ ২৯২৮, আহমাদ ৪৪৮১, ৫১৪৮, ৫৮৩৫, ৫৮৬৭, ৫৯৯০, রিয়াদুস সলেহিনঃ ৬৫৮

যারা সমাজের অভিভাবক তারা স্বীয় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা।

❑ উপসংহার:

আল্লাহ তাআ'লা পবিত্র কুরআনে বলেন-

الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَهْوًا وَلَعِبًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيٰوةُ الدُّنْيَا ۚ فَالْيَوْمَ نَنسٰىهُمْ كَمَا نَسُوا لِقَآءَ يَوْمِهِمْ هٰذَا وَمَا كَانُوا بِـَٔايٰتِنَا يَجْحَدُونَ

যারা নিজেদের দ্বীনকে খেলা ও কৌতুকের ব্যাপার বানিয়ে নিয়েছিল এবং দুনিয়ার জীবন যাদেরকে প্রতারণায় নিমজ্জিত করেছিল।” আল্লাহ‌ বলেন, “আজ আমিও তাদেরকে ঠিক তেমনিভাবে ভুলে যাবো যেভাবে তারা এ দিনটির মুখোমুখী হওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল এবং আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিল।”
সূরা আরাফঃ ৫১

وَذَرِ الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَهُمْ لَعِبًا وَلَهْوًا وَغَرَّتْهُمُ الْحَيٰوةُ الدُّنْيَا ۚ وَذَكِّرْ بِهِۦٓ أَن تُبْسَلَ نَفْسٌۢ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللَّهِ وَلِىٌّ وَلَا شَفِيعٌ وَإِن تَعْدِلْ كُلَّ عَدْلٍ لَّا يُؤْخَذْ مِنْهَآ ۗ أُولٰٓئِكَ الَّذِينَ أُبْسِلُوا بِمَا كَسَبُوا ۖ لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌۢ بِمَا كَانُوا يَكْفُرُونَ
যারা নিজেদের দ্বীনকে খেল-তামাশায় পরিণত করেছে এবং দুনিয়ার জীবন যাদেরকে প্রতারণায় নিক্ষেপ করেছে তাদেরকে পরিত্যাগ করো। তবে এ কুরআন শুনিয়ে উপদেশ দিতে ও সতর্ক করতে থাকো, যাতে কোন ব্যক্তি নিজের কর্মকাণ্ডের দরুন ধ্বংসের শিকার না হয়, যখন আল্লাহর হাত থেকে তাকে বাঁচাবার জন্য কোন রক্ষাকারী, সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না, আর যদি সে সম্ভাব্য সকল জিনিসের বিনিময়ে নিষ্কৃতি লাভ করতে চায় তাহলে তাও গৃহীত হবে না। কারণ, এ ধরনের লোকেরা তো নিজেরাই নিজেদের কৃতকর্মের ফলে ধরা পড়ে যাবে। নিজেদের সত্য অস্বীকৃতির বিনিময়ে তারা পান করার জন্য পাবে ফুটন্ত পানি আর ভোগ করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
সূরা আনআমঃ ৭০

وَإِذَا رَأَوْا تِجٰرَةً أَوْ لَهْوًا انفَضُّوٓا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَآئِمًا ۚ قُلْ مَا عِندَ اللَّهِ خَيْرٌ مِّنَ اللَّهْوِ وَمِنَ التِّجٰرَةِ ۚ وَاللَّهُ خَيْرُ الرّٰزِقِينَ

আর যে সময় তারা ব্যবসায় ও খেল তামাশার উপকরণ দেখলো তখন তারা তোমাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে সেদিকে দৌড়ে গেল। তাদের বলো, আল্লাহর কাছে যা আছে তা খেল-তামাশা ও ব্যবসায়ের চেয়ে উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।
সূরা জুম'আঃ ১১

এই পৃথিবী আমাদের ক্ষণস্থায়ী ঠিকানা। তাই আমাদের উচিত আমাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা তথা পরকালকে অগ্রাধিকার দেয়া এবং পাপের পরিণতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে নিজেকে সর্বপ্রকার পাপ থেকে বিরত রাখার জন্য চেষ্টা করা।
----------------------------------------------------------

Post a Comment

0 Comments