Recent Tube

আসুন আউজুবিল্লাহ পড়ে আল্লাহর আশ্রয় খুঁজি-; জিয়াউল হক।




আসুন আউজুবিল্লাহ পড়ে আল্লাহর আশ্রয় খুঁজি-;
   --------------------------------- 

      একটি বিশেষ ইসলামি দলকে জনগণের কাছে অপ্রিয় করতে, সেই দলটি যে কতোটা  খারাপ ও বর্জনীয় সে কথাটা জনমনে প্রতিষ্ঠা করতে কোন কোন ইসলামি বক্তা, দেশব্যাপী সুপরিচিত ইসলামি ব্যক্তিত্বকেও অত্যন্ত চটকদার বক্তব্য প্রদান করতে দেখি। মাঠে ময়দানে তারা প্রকাশে এমনসব বক্তব্য দেন যা, ইসলামি শিক্ষা ও আদর্শ তো বটেই, এমনকি, তথাকথিত সেকুল্যার বা ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের বিচারেও অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত অমার্জনীয় বর্ণবাদী, উস্কানিমূলক ও গোষ্ঠীবিদ্বেষ জাতীয় অপরাধও বটে। 

     তবে সে সব অপরাধের কোন বিচার আমাদের সমাজে হয় না, কারণ, এ ধরনের বিদ্বেষগুলো ছড়ানো হয়ে থাকে ধর্মের আবরণে, ইসলামের নামে, ইসলামকে রক্ষার ঘোষণা দিয়ে। ইসলামপ্রিয় সাধারণে মানুষ এবং বৃহত্তর সমাজ তা অবলীলায় মেনে নেয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা হলো বিদ্যমান সোস্যাল সাইকোলোজি বা গণমনস্ত।  

      নাড়ির টান:
 এরকম বক্তব্যের ধারবাহিকতায় তথাকথিত জনপ্রিয় কোন কোন বুজুর্গ বলে বসেন; শয়তানের সাথেও ঐক্য করা গেলেও কোন কোন ইসলামি দল ও গোষ্ঠীর সাথে নাকি কোন মতেই ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব নয়।  মুসলিম পরিচয়ে, ইসলামি লেবাস পরে, মুখে আল্লাহ রাসুল আর কুরআনের বাণী জপতে জপতে এমন কথা অত্যন্ত মারাত্মক। অথচ আল্লাহর ঘোষণা হলো;
 'যে আল্লাহকে পরিত্যাগ করে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নিশ্চয় সে প্রকাশ্যে ক্ষতিতে পতিত হয়। (সূরা নিসা : ১২৯)। 
আবার বলা হয়েছে;
'যে কেউ তার সঙ্গে বন্ধুত্ব গ্রহণ করবে শয়তান তাকে পথভ্রষ্ট করবে এবং তাকে পরিচালিত করবে প্রজ্বলিত আগুনের শাস্তির দিকে' (সূরা হজ্জ : ৪)।
     শয়তান হলো মানবসমাজের প্রকাশ্য শত্রু। যে কোন মানুষের জন্যই সে শত্রু। আল্লাহ নিজেই বলেছেন; 'হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হও; আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ' (সুরা বাকারা: ২০৮)।
    খোদ আল্লাহ পাক হতে নির্ধারিত করে দেয়া এই প্রকাশ্য শত্রুর সাথে সখ্যতা করতে চাওয়া বা তাকে সম্ভবপর বলে মনে করা ব্যক্তির নৈতিক অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় চিন্তা করে দেখেছেন কখনও? নাড়ির টান বলে কথা কি না!

    আমাদের করণীয়:
নির্দেশ দেবার পরেও আদম (আ.)-কে  সেজদা না করায় আল্লাহতায়ালা শয়তানকে বিতাড়িত ঘোষণা করে বলেন; তুই এখান থেকে বেরিয়ে যা, কারণ তুই বিতাড়িত; (সূরা হিজর : ৩৪)। আল্লাহ কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে শয়তান বলেছিল; হে আমার রব। আপনি যে আমাকে বিপথগামী করলেন তজ্জন্য আমি পৃথিবীতে মানুষের জন্য পাপ কাজ শোভনীয় করে তুলব এবং আমি তাদের সবাইকে বিপথগামী করব, তবে আপনার একনিষ্ঠ বান্দা ব্যতীত। (সূরা হিজর : ৩৯-৪০)। সে আরও বলেছিল; ' আমি অবশ্যই আপনার সরলপথে মানুষের জন্য ওতপেতে বসে থাকব।' (সূরা আরাফ: ১৬)।
 
      শয়তান তার ওয়াদা পালন করতে বিশ্বের ঘরে ঘরে, আনাচে কানাচে, প্রতিটি কোণায় কোণায় ওতপেতে বসে আছে। সিনেমা হল, মদের পানশালায় কিংবা জুয়ার আসরেই কেবল নয়, সে তো থাকে হুজুরের দরবারে কিংবা আল্লামার আলখেল্লার মধ্যেও, ওয়াজের মঞ্চে, এমনকি, পীরের জলসাতেও। কাজেই যখন দেখবেন কোন শয়তান তা তিনি যতো বড় বুজুর্গের বেশই ধারণ করুন না কেন, স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত মানুষের প্রকাশ্য শত্রু শয়তানের সাথে ঐক্য সম্ভব বলে বলছেন, তখন অযথা রাগ করবেন না। আল্লাহর শুকর করুন যে, ইসলামি লেবাসের মধ্যে বাস করা শয়তানের পরিচয়টা আল্লাহ পাক আপনাকে অতি সহজেই চিনিয়ে দিয়েছেন।  

      তাই  কোন হিংসা নয়, কোন অশোভন রুঢ় কথাও নয়, কেবলমাত্র আল কুরআনের কাছেই ফিরে আসুন। আল্লাহ পাক কুরআনের পাতায় স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন; 'যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।' (সূরা হা-মীম সেজদা: ৩৬)।

  অতএব আউজুবিল্লাহ পড়ুন ও আল্লাহর আশ্রয়ে থাকুন।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা গীতিকার ইতিহাস বিশ্লেষক ও কলামিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments