Recent Tube

বিতিকিচ্ছা-৬৭ নুর মুহাম্মদ চৌধূরী (মুবিন)





 


    
                       বিতি কিচ্ছা;
                                পর্ব-৬৭;

চাই উদ্যোক্তা :

      এই মুলুকে উচ্ছশিক্ষিতরা সবাই শুধু শুধুই চাকরী বুঝে। আর লেখাপড়ায় যারা আগাতে পারে নাই বেশ্- তারাই শুধু ব্যবসা খোজে । বাধ্য হয়েই এদের প্রায় সকলেই হয় উদ্যোক্তা। অনেক অনুসন্ধান করে দেখলাম এটাই আজকের বাস্তবতা। কিন্তু উচ্ছশিক্ষিতদের কলমবাজীর মহড়ায় উদ্যোক্তারা হতে হয় নাজেহাল। পরোপকারী শিক্ষা বিবর্জিত এ সমাজের  এটাই নেপথ্য হাল। উদ্যোক্তা হবার কোন খায়েশ নেই বেশীরভাগ উচ্ছশিক্ষ্তদের। কারণ বিনা ঝুঁকিতে ও বিনা বিনিয়োগে উদ্যোক্তাদের মাথায় লবন রেখে বরই খেতে খেতেই গোছানো যায় আখের। তবে কোন দু:খে অগাধ ঝামেলা মাথায় নিয়ে মরতে যাবে বলো। কেনইবা এতো পাটিগণিত কিবা জ্যামিতি ঘাটাতে হলো?

       সেই দিন বুজি আর আসবে না ভবে, যবে মানুষকে মানুষ ভেবে তার উপর আস্থা স্থাপন করে এদিক -সেদিক চোখ ফেলার সুযোগ নেয়া যাবে। ইদানীং কিন্তু চোখের পলক পড়ার অপেক্ষায় থাকতে হয় না বিশারদ কলমবাজদের। গল্পে গল্পেই নিমিষেই পগারপার হয়ে যায় খদ্দের। অসম্ভব ধরণের পটু কেরানি মশাই স্কুল জীবন থেকেই হেন স্বপ্নে বিভোর রয়, যেন বড় হলে কিভাবে কোন মক্কেলকে ঘায়েল করতে হয়। 

          কিন্তু উচ্ছ শিক্ষিত সুশীল সৎ শিল্প উদ্যোগ্তার অভাবে আমাদের সমুহ বিনিয়োগে বেশীরভাগই অভ্যন্তরীন বানিজ্য প্রাধান্য পেয়ে আসছে।আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাজার প্রতিষ্ঠার কোন গরজই নাই তাদের কাছে।ফলে কুটি কুটি টাকায় মেগা শপ্ তৈরী, মিষ্টান্নের চেইন শপ ইত্যাদি ছাড়া ভিন্ন কিছুই মাথায় আসে না। বড় বড় বিনিয়োগতারীরা যদি এমন সব নিম্নমানের চিন্তায় মাথা মারেন , তবে ক্ষুদ্র পুঁজিওয়ালারা আর করবেটা কি? আমি আশ্চর্য্য হয়ে ভাবি , যে কিনা একটা ভারী শিল্প দাঁড় করাবার সকল প্রকার সংগতি রাখে , সে কিনা মুদির দোকানের চেইন শপ করে দিব্বি আয়েশ করতে প্রবৃত্ত হয়। আর প্রতিটি শহরের মোড়ে মোড়ে শাখা প্রশাখা বিস্তার করে শিল্পপতির ধাঁচ ধরে। ওগুলো আবার শিল্প নাকি? যতসব ফাঁকিবাজি আর ফটকাবাজি কায় কারবার। 

         আমার মতে এদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে যে গার্মেন্টস্ শিল্প , এটাও কোন বৃহৎ শিল্প নয় । এক হাজার দর্জি আর এক হাজার সেলাই মেশিন একসাথে থাকলে যা হয় - মুলত: তা -একই জাতীয় কয়েকটি কুটির শিল্পের একত্রীকরণ ছাড়া আর কি? যারা পন্য উৎপাদনের মুল মুনাফাটা আয় করে অল্প মূল্যে শ্রমিক জোগাড় করে। প্রকারন্তরে তাদের বিলাসিতা আর দৌড়-ঝাঁপ  ঐ শ্রমিক মেরে।

        আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বানিজ্য বিস্তারে চাই অভিজ্ঞতায় সম্বৃদ্ধ উচ্ছ মানের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত উদ্যোক্তা। যারা তাদের মেধা দিয়ে দেশে বসেই বৈদেশিক রেমিটেন্স আহরন করবে। তজ্জন্য চাই পর্যাপ্ত সরকারী পৃষ্টপোষকতা, চাই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, উৎসাহ উদ্দীপনা প্রদান। কিন্তু কোন দিক থেকেই যদি না থাকে কোন যোগান, তবে পুঁজিপতিরা খাটাবে কেন মাথা , শুধুই বানাবে দোকান। দেখতে দেখতে সারা দেশটাই আজ সয়লাব শুধু দোকান আর দোকানে। আর চাকরীর বাজারটাতো কলমবাজদের কৌশলের কাছে মাথা নত করে মুখ খুবড়ে পড়ে আছে সেই কবে।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল, প্রবন্ধ লেখক ফার্মাসিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments