Recent Tube

জেনে নিন গোসল সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল(গোসল সংক্রান্ত যে সকল বিষয় প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জানা জরুরি)।



জেনে নিন গোসল সংক্রান্ত মাসআলা-মাসায়েল
(গোসল সংক্রান্ত যে সকল বিষয় প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জানা জরুরি)।

 ---------------------------------
 গোসল ফরয (আবশ্যক) হওয়ার কারণ সমূহ:

 নিম্ন লিখিত কারণগুলোর যে কোন একটির মাধ্যমে গোসল ফরয (আবশ্যক) হয়:
১) স্বপ্নদোষ বা অন্য কোন কারণে (ঘুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায়-পুরুষ বা মহিলার) বীর্যপাত হওয়া। (বুখারী ও মুসলিম)
২) পুরুষ ও মহিলার লজ্জাস্থান পরস্পর মিলিত হলেই উভয়ের উপর গোসল ফরজ হয়- বীর্যপাত হোক বা না হোক। (আহমাদ, মুসলিম)
৩) মহিলাদের হায়েজ ও নেফাস তথা মাসিক ঋতুস্রাব বা সন্তান প্রসবোত্তর স্রাব বন্ধ হলে গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা ফরয। ।  (সূরা বাকারা: ২২২)
৪) যুদ্ধ ময়দানের শহীদ ব্যতীত মৃত মুসলিম ব্যক্তিকে গোসল দেয়া জীবিতদের উপর ফরয।
৫) ইহুদী বা খৃষ্টান বা যে কোন কাফের ইসলাম গ্রহণ করলে তার উপর গোসল ফরয না কি মুস্তাহাব- এ বিষয়ে মহামতি ইমামদের মাঝে দ্বিমত রয়েছে।  ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের অভিমত হল, কোন কাফের ইসলামে প্রবেশ করলে তার জন্য গোসল করা ফরয। পক্ষান্তরে জুমহুর (অধিকাংশ) ইমাম তথা  ইমাম আবু হানিফা, মালেক ও শাফেঈ প্রমূখের অভিমত হল, ইসলাম গ্রহণের পর গোসল করা মুস্তাহাব; ওয়াজিব নয় এবং এটি অধিক নির্ভরযোগ্য মত।

★★★ গোসলের পদ্ধতি:
প্রথমে নিয়ত করবে, অতঃপর বিসমিল্লাহ বলে দু’হাত কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করবে। লজ্জা স্থানে পানি ঢেলে উহা পরিষ্কার করবে। অতঃপর পূর্ণরূপে ওযু করবে। মাথায় পানি ঢেলে আঙ্গুল চালিয়ে চুল খিলাল করবে। যখন বুঝবে যে, চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছে গেছে তখন মাথায় তিন বার পানি ঢালবে এবং সমস্ত শরীরে পানি ঢালবে। এ ক্ষেত্রে ডান পার্শ্ব থেকে কাজ আরম্ভ করবে। 
মা আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোসলের পদ্ধতি এভাবেই এসেছে। (বুখারী ও মুসলিম)

★★★ গোসলের ফরয তিনটি। যথা:
১. নিয়ত করা।
২. কুলি করা ও নাকের ভিতরে পানি পৌঁছানো।
৩. সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করা 

★★★ যে সকল ক্ষেত্রে গোসল আবশ্যক নয় বরং মুস্তাহাব:

১) জুম’আর দিন গোসল করা। (সহীহ মুসলিম)
২) ঈদের দিন গোসল করা।
৩) হজ্জ বা উমরাহ্‌র জন্য ইহরামের পূর্বে গোসল করা। (জামে তিরমিযী, সুনানে দারাকুত্বনী)
৪) হজ্জ বা উমরা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইহরামের পূর্বে গোসল করা। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
৫) সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্দেশ্যে গোসল করা।
৬) ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু বা যে কোন কাফের ইসলাম গ্রহণ করলে তার উপর গোসল মুস্তাহাব (অধিক নির্ভরযোগ্য মতানুসারে)

★★★ গোসলের ক্ষেত্রে কতিপয় ত্রুটি:

১) চুলের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানোর ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়া।
উল্লেখ্য যে, মহিলার জন্য চুলের ঝুঁটি খোলার প্রয়োজন নেই। তবে প্রতিটি চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছানো আবশ্যক। (মুসলিম)
২) শরীরের প্রতিটি অংশে পানি দিয়ে তা ভালোভাবে ভেজানোর ব্যাপারে অলসতা করা।
৩) গোসলে পানি অপচয় করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাত্র এক সা’ তথা প্রায় তিন লিটার পানি দ্বারা গোসল করতেন।
৪) সবার সামনে হয়ে বেপর্দা হয়ে গোসল করা।

★★★ গোসল ফরয হয়েছে এমন নাপাক ব্যক্তির উপর যে সব কাজ করা হারাম:

১) সালাত আদায় করা।
২) কা’বা ঘরের তওয়াফ করা।
৩) কুরআন স্পর্শ করা (অধিক বিশুদ্ধ মতানুসারে)।
৪) কুরআন তিলাওয়াত করা (আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)
৫) মসজিদে অবস্থান করা। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ্‌)
গোসল ফরয অবস্থায় উপরোক্ত কাজগুলো ছাড়া আর কোন কিছুই হারাম নয়। যেমন, ঘুমানো, রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া, গৃরস্থালীর কাজ..ইত্যাদি
---------------------------------------------------------
 উৎস: জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইড্ন্সে সেন্টারের পাঠ্যপুস্তক ফিকহ (লেভের-১) থেকে
অনুবাদক: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
সম্পদনা ও পরিমার্জনা: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব। 

Post a Comment

0 Comments