Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৭২ ---নুর মুহাম্মদ চৌধূরী(মুবিন)



 





                       
                            বিতি কিচ্ছা,
                                     পর্ব-৭২;

হালে জংল্যাণ্ডের হাল
-------------------------------

      পাঠান পাড়ার পাঠারা পুরো জংল্যাণ্ডে তথা পূর্ব ও পশ্চিমে অর্থাৎ মাশরিক ও মাগরীব জুড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্টা করতে চায়। তবে মাশরীকের বাসিন্দারা তা মেনে নিতে নারাজ। কারণ তারা সংখ্যায় বেশী, এবং তাদের মধ্যে রয়েছে নেতৃত্বের যথেষ্ট উপযুক্ত ও বাগ্নী নেতা "জননেতা মহিষবর"। মহিষবরের বাগ্নীতার বদৌলতে পুরো মাশরীকে যখন ঐক্যের মজবুত ভিত্তি রচিত হলো, পাঠারা তখন মাশরীকে অর্থাৎ পূর্বজংয়ে নিপীড়নের মাত্রা একধাপ বাড়িয়ে দিল। এটা অবশ্য তাবৎ শাষক শ্রেণীর একটা নীতি যে , তারা ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে প্রতিপক্ষকে আদর ভালবাসা দিয়ে জয় করার পরিবর্তে চালিয়ে যায় শাষনের নামে শোষন ও নির্যাতন। এতএব মাশরীকের বাসিন্দারা জননেতা মহিষবরের নেতৃত্বে স্বাধীকার চাইলো। কিন্তু মাথামোটা মহিষবর পুরো জংল্যাণ্ডে একক কর্তৃত্বের মেণ্ডেট লাভ করায় শুধুমাত্র মাশরীক নিয়ে তুষ্ট থাকতে তার মন সায় দিচ্ছিল না। এতএব পূর্বজংবাসীর আশা ও ভালবাসার তোয়াক্কা না করে জংল্যাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দুতে স্বীয় ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় তৎপর হলেন তিনি।

      এদিকে মহিষবরের অনুসঙ্গীরা আয়েশী ক্ষমতা লাভের মোহে আবিষ্ট হয়ে যে অংক কষে আসছিল , তা ছিল নিছক বাস্তবতা বিবর্জিত । কারণ মাগরিবের পাঠাদের মধ্যে জংল্যাণ্ডবাসীর মেণ্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মানসিকতা মোটেই বর্তমান ছিল না। এতএব দেখা গেল জংল্যাণ্ডের কেন্দ্র ভূমিতে মহিষবর কার্যত: অবরুদ্ধ । আর মাশরীকে বেড়ে গেল কেন্দ্রের জুলুম নির্যাতন । মহিষবরের আয়েশী অনুসঙ্গীরা এইসব নির্যাতনের মোকাবিলার হিম্মত না দেখিয়ে এক দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নিল আপন সীমানা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্যে । সেখানে গিয়েই তারা উন্নত মানের বিদেশী মদ আর তাসের নেশায় মত্ত হয়ে রইল। বলা যায় "মত্ত করে রাখা হল"। কিন্তু স্বাধীনচেতা মুক্তিকামী সিংহ ও বাঘেরা তথা পূর্বজংবাসীরা ইস্পাতসম প্রতিরোধ বুহ্য রচনা করে মাগরেবী জংল্যাণ্ডবাসীদেরে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল। কিন্তু মাশরেকী জংল্যাণ্ডবাসীদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক দুষ্ট প্রকৃতির ধূর্ত কাক, শকুন ও শেয়ালরা আপন জ্ঞ্যাতি গোষ্টীর স্বার্থের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে মাগরেবীদের দালালী তথা গোলামী করতে শুরু করল। এরা সুস্পষ্ট গোলামীর মধ্যে থেকেও স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করছে বলে ঢেঁকুর তুললো। মূলত: আসলেই এরা সাম্রাজ্যবাদের গোলাম বনে গেল। বাহ্যত: এই গোলামীর জিঞ্জির গলে ধারণ করার পরও তারা বে-মালুম ভূলে থাকলো তৎসংশ্লিষ্ট লাঞ্চনা ও অপমানের খড়গ্। মূলত: এরা বিদেশী মদের নেশায় মত্ত থাকল, অথবা ওদেরে মদমত্ত করে রাখা হল। জাত-মাতাল এই সব ডাকাতদের হাতে সর্বদাই লাঞ্চিত, নিগৃহিত হতে থেকেছে দুনিয়ার তাবৎ মুক্তিকামির দল , তাদের সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি। কিন্তু এই মুক্তিকামি পূর্বজংবাসীরাই প্রায় অর্ধশতাব্দী কাল পূর্বে জীবন বাজি রেখে করেছিল যুদ্ধ, আর স্বাধীন করেছিল মাশরেকী জংল্যাণ্ড। 

    অপরদিকে অসৎপ্রবন সাম্রাজ্যবাদের গোলামরা, যাদের রম্দ্রে রন্দ্রে দালালীর নেশা, তারা স্বভাবতই যোগ দিয়েছিল দালাল বাহিনীতে। গড়ে তুলেছিল রাজকাক, আস্ শকুন ও আল-শেয়াল বাহিনী। যুদ্ধ চলাকালীন এই সময়ে হেন অপকর্ম নাই -যা তারা করে নাই। চুরি, ডাকাতি, গুম, খুন, ধর্ষন, অপহরণ ইত্যাদি-কি করে নাই এরা? আজও এইসব রাজকাক, আস-শকুন, আল-শেয়াল বাহিনীর সদস্যরা বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সমুহ অ্পকর্ম। তবে সাইনবোর্ডে লিখা ভিন্ন নাম, যেমন:- মহীষলীগ, যুব মহীষলীগ, ছাত্র মহীষ ইত্যাদী। 

      বলা বাহুল্য মাশরেকী জংল্যাণ্ড সবেমাত্র অর্ধশত বৎসর পাড়ি দিয়েছে। এখনও শতবর্ষী লাখ লাখ সূশীল জংল্যাণ্ডবাসী তৎকালীন যুদ্ধের প্রত্যক্ষ্ সাক্ষী হিসাবে বর্তমান আছে। শুধু তা ই নয়, ষাটোর্ধ এমন কুটি কুটি জংল্যাণ্ডবাসী ইতিহাসের চাক্ষুষ সাক্ষী হিসাবে আজও বিদ্যমান । সুতরাং চ্যালেঞ্জ করেই বলা যায় ,তৎকালীন পাঠার দালাল খ্যাত জংল্যাণ্ডের দোসরদের একটিও আজ কথিত মহিষলীগের বাহিরে পাওয়া যাবে না। ওরা ত্রিশ লক্ষ মুক্তিকামী পূর্বজংবাসীকে হত্যা করেছে । পূর্বজংয়ে দুই লক্ষ আওরতের ইজ্জত লুন্ঠনকারী এই রাজকাক, আস্-শকুন, আল-শেয়াল  বাহীনির অভ্যাসের বদল ঘটায়নি আজও। বলা যায় বংশানুক্রমিক আজ তাদের উত্তরসূরীরা পুরোদস্তুর সক্রিয়। তাইতো যেখানে সংখ্যালঘুদের জমি দখল, সেখানেই মহিষলীগ, যেখানে ছিনতাই- সেখানেই যুব মহিষলীগ, যেখানেই ধর্ষন সেখানেই ছাত্রমহিষ। 

     বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সাহস আছে কার? কেননা বিগত ১৯/১২/২০১৯ সালে প্রকাশিত রাজকাকের তালিকা। যা প্রকাশিত হয়েছে পূর্বজংয়ে মহিষলীগ সরকারের সময়েই। মান্যবর মহিষবর আজ প্রয়াত। ক্ষমতাসীন তৎপত্নী মহিষী। খোলা হয়েছে স্বাধীকার আন্দোলন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। যার তত্বাবধানে রক্ষিত বিগত জংল্যাণ্ডের অর্ধ্বশতাব্দীর নথিপত্র ঘেটে সংগ্রহ করা হয় রাজকাকের তালিকা। যাকে বলা হয়েছে প্রথম পর্যায়ে প্রকাশিত রাজকাকের তালিকা। এই তালিকায় ১০৭৮৯ জন রাজকাকের নাম প্রকাশিত হয়েছে। দেখা যায় এই তালিকায় প্রকাশিত অংকের নব্বই শতাংশ রাজকাকই ক্ষমতাসীন মহিষলীগের রাজনীতির সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। 

     আসলে দুষ্টচক্র বলতে একটা শব্দ আছে না? দুষ্ট লোকদের দুষ্টামী তাদের বংশানুক্রমিক সহজাত প্রবৃত্তি। এই রাজকাকের বংশধরদের মধ্যে আজও তাদের সেই বংশধারার দুষ্ট প্রকৃতি চক্রকারে আবর্তিত হচ্ছে। এই সব রাজকাকরা স্বাধীকার লাভের পরপরই মুলত: মহিষলীগের হাল ধরে। আজও প্রকৃত কোন মুক্তিসেনা পরিবারের সাথে দুষ্ট মহিষলীগের নেতৃস্থানীয় কোন পরিবার বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনেও সমর্থ হয় নাই। কারণ দুষ্টদের সখ্যতা দুষ্টের সাথেই সাজে।

       স্বদেশপ্রেম বলতে কোন কিছুই এদের অভিধানে নাই। শুধু আছে ভনিতা তথা ভণ্ডামী। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় থাকার পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত করতেই ওরা বেশী তৎপর। তাইতো প্রতিবেশী জংলায় তথাকার ক্ষমতাসীন সরকারের এম.পি. চুত্রানিয়ান মাগী সংবাদ সম্মেলন করে বলতে পারলো, "পূর্ব জংয়ে তাদের শাষণ প্রতিষ্ঠা করা হবে" । আর এতে দেশদ্রোহী তাবেদার সরকার বাহাদুর মুখে কলুপ এটে বসে থাকলো, কোন ধরণের প্রতিবাদ জানানোর প্রয়োজন তারা মনে করেনি। জংল্যাণ্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পার্শ্ববর্তী দেশে মুর্খমন্ত্রী বলে সম্বোধন করলেও তিনি মুখ টিপে হাসতে পারলেন , এর চেয়ে বেশী কিছুর প্রয়োজন তিনি মনে করেন নি
-----------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments