Recent Tube

ইকামতে দ্বীন ও নবীদের শানে কতিপয় পীর ও শায়খদের কুফুরী আকিদাঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।





 ইকামতে দ্বীন ও নবীদের শানে কতিপয় পীর ও শায়খদের কুফুরী আকিদাঃ
--------------------------------- 
 মহান আল্লাহ বলেন;
شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَنْ يُنِيبُ-
 "তিনি তোমাদের জন্য দ্বীন বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; যে বিষয়ে তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর আমি তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি এবং ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হল, তোমরা দ্বীন কায়েম করবে এবং এতে বিচ্ছিন্ন হবে না। তুমি মুশরিকদেরকে যেদিকে আহবান করছ তা তাদের কাছে কঠিন মনে হয়; আল্লাহ যাকে চান তার দিকে নিয়ে আসেন। আর যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি  হিদায়াত দান করেন।" (সূরা শুরাঃ ৪২/১৩)

    এখানে পাঁচ জন নবীর নাম উল্লেখ করা 'দ্বীন কায়েম' এর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য এ নয় যে, শুধু এই পাঁচজন নবীকেই দ্বীন কায়েমের আদেশ করা হয়েছিলো। বরং একথা বলে দেয়াই এর উদ্দেশ্য যে, পৃথিবীতে যত নবী-রাসূলই আগমন করেছেন তাঁরা সবাই একই নির্দেশ পেয়েছেন। নমুনা হিসেবে এমন পাঁচজন মহান নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে যাঁদের মাধ্যমে দুনিয়ার মানুষ সুবিখ্যাত আসমানী শরীয়তসমূহ লাভ করেছে। এ থেকে জানা যায় যে, নবী-রাসূলদের প্রধান মিশন ছিল 'ইকামতে দ্বীন' তথা দ্বীন কায়েম করা। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে প্রেরণের প্রধান উদ্দেশ্যেও ছিল সকল বাতিল দ্বীনের উপর আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী করা। (সূরা তাওবা :৯/৩৩; ফাতাহ :৪৮/২৮; সফ :৬১/০৯)

     সূরা শুরাঃ ৪২/১৩ আয়াতকে কেন্দ্র করে দরবারী পীর ও শায়খগণ মুসলিম সমাজে সবক দিচ্ছেন যে, ইকামতে দ্বীন মানে ইকামতে তাওহীদ, তথা তওহীদ কায়েম করা; পূর্ণাঙ্গ ইসলাম বা ইসলামের বিধি-বিধান কায়েম করা নয়। এটি একটি সহীহ কুফুরী আকিদা। কেননা, দ্বীন মানে তাওহীদ নয় বরং জীবনবিধান। আর আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন তথা জীবনবিধান হচ্ছে ইসলাম (সূরা আলি ইমরানঃ ৩/১৯; মুসনাদে আহমদ হাঃ১৮০৬৩; আবু দাউদ হাঃ ৪৭৫৩; মিশকাত হাঃ ১৩১)। আবার পবিত্র কুরআনে দ্বীন বলতে আল্লাহর আইনকে বুঝানো হয়েছে (সূরা নূরঃ২৪/০২)।
 
  অতএব, দ্বীন কায়েম বলতে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম তথা ইসলামের সকল বিধান ও আইন প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শুধু তাওহীদ কায়েম নয়। তাওহীদ ঈমানের একটি রুকুন মাত্র, পূর্ণাঙ্গ ঈমানও নয়। আর ঈমান ইসলামের একটি রুকুন, পূর্ণাঙ্গ ইসলাম নয়। সুতরাং যারা দ্বীন কায়েম বলতে তাওহীদ কায়েম বলে ফতোয়া প্রসব করছে এবং আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার কাজকে 'ক্ষমতা দখল' বলে ব্যঙ্গ করছে তারা ঈমানের অন্যান্য রুকন ও ইসলামের অন্যান্য সকল বিধান অস্বীকারকারী বলে গণ্য হবে। যা একটি ঈমান বিধ্বংসী সহীহ কুফুরী আকিদা।

   শুরাঃ৪২/১৩ নং আয়াতকে কেন্দ্র করে আরো একটি বড় কুফুরী আকিদা প্রচার করা হয় যে, দ্বীন কায়েম মানে যদি আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে বলতে হবে দু' একজন নবী ব্যতীত কোনো নবীই ইকামতে দ্বীনের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। এমনকি যে আয়াতে দ্বীন কায়েমের নির্দেশ দানে যে পাঁচ জন নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেসব নবীদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ছাড়া কোনো নবীই ইসলামী রাষ্ট্র বা খিলাফাত কায়েম করতে পারেননি (নাউযুবিল্লাহ)। এ ক্ষেত্রে এসে আমার অনেক ইকামতে দ্বীনের কর্মী সমর্থক ভাইয়েরাও বিচলিত হয়ে তাদের যুক্তি মেনে নেন। অথচ এটিও কুরআন সুন্নাহ বিরোধীতা ভয়ঙ্কর কুফুরী আকিদা। 

      আমি ধারাবাহিক ভাবে কুরআন সুন্নাহর আলোকে অত্র আয়াতে বর্ণিত পাঁচ জন নবীর খিলাফাত ও ইকামতে দ্বীনের দায়িত্ব পালনের সফলতার উপর দলিল ভিত্তিক পোস্ট করব, ইনশাল্লাহ। তার সাথে প্রমাণ করব, নবীদের শানে যে আকিদা পেশ হয় করা হয়, তা কুরআন বিরোধী কুফুরী আকিদা।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা আলোচক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments