Recent Tube

কোন মহিলা কি তার পছন্দের পুরুষকে নিজেই বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে? আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।


 



 প্রশ্ন:- 
কোন মহিলা কি তার পছন্দের পুরুষকে নিজেই বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে?


  উত্তর :- 
যদি কোন নারীর কোন পুরুষের দ্বীনদারিত্ব, চরিত্র মাধুরী, ইসলামী জ্ঞান, নম্রতা-ভদ্রতা ইত্যাদি ভালো গুণ-বৈশিষ্টের কারণে ভালো লাগে তাহলে নিজের পক্ষ থেকে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে তা মোটেও দোষণীয় নয়। এ মর্মে সহীহ বুখারীতে হাদীস এসেছে:
عن ثَابِت الْبُنَانِيِّ قَالَ : كُنْتُ عِنْدَ أَنَسٍ ، وَعِنْدَهُ ابْنَةٌ لَهُ ، قَالَ أَنَسٌ : جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَعْرِضُ عَلَيْهِ نَفْسَهَا ، قَالَتْ : يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَكَ بِي حَاجَةٌ ؟ 
فَقَالَتْ بِنْتُ أَنَسٍ : مَا أَقَلَّ حَيَاءَهَا ، وَا سَوْأَتَاهْ ! وَا سَوْأَتَاهْ ! قَالَ : هِيَ خَيْرٌ مِنْكِ ، رَغِبَتْ فِي النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا .
رواه البخاري ( 4828 ) 
সাবিত আল বুনানী বলেন, আমি আনাস রা. এর নিকট অবস্থান করছিলাম। আর কাছেই অবস্থান করছিলেন তার মেয়ে। ইত্যবসরে রাসূল সা. এর নিকট এক মহিলা এসে তার নিকট বিয়ের উদ্দেশ্যে নিজেকে পেশ করলেন। বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কি আমাকে বিয়ে করার প্রয়োজন মনে করেন?
একথা শুনে, আনাস রা. এর মেয়ে বললেন, কী বেহায়া! কী নোংরামী!!

    আনাস রা. তখন তাকে বললেন: এই মহিলাটি তোমার চেয়ে ভালো। কেননা সে নবী সা. এর প্রতি আগ্রহী হয়ে বিয়ের জন্য নিজেকে উপস্থাপন করেছে।
(সহীহ বুখারী, হা/ ৪৮২৮)
ইমাম বুখারী রা. সহীহ বুখারীতে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন এভাবে:
باب " عرض المرأة نفسَها على الرجل الصالح " 
“অনুচ্ছেদ: কোন সৎ ব্যক্তির নিকট মহিলার (বিয়ের জন্য) নিজেকে পেশ করা।”

     সুতরাং একজন মহিলা ইচ্ছেে করলে সরাসরি কোন পুরুষের নিকট তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারে অথবা নিজের পিতা বা অভিভাবককে পছন্দের কোন পুরুষকে বিয়ের জন্যও বলতে পারে। 
এ মর্মে সূরা কাসাস এর নিম্নোক্ত আয়াতগুলো দ্রষ্টব্য।

     সেখানে বর্ণিত হয়েছে, কুপ থেকে পানি আনতে আসা দুটি মেয়ের একজন তার বাবাকে ইঙ্গিত দিয়েছেন মূসা আলাইহিস সালামের  সাথে তার বিয়ে দেয়ার জন্য। আল্লাহ বলেন:
الَتْ إِحْدَاهُمَا يَا أَبَتِ اسْتَأْجِرْهُ ۖ إِنَّ خَيْرَ مَنِ اسْتَأْجَرْتَ الْقَوِيُّ الْأَمِينُ ﴿٢٦﴾ قَالَ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُنكِحَكَ إِحْدَى ابْنَتَيَّ هَاتَيْنِ عَلَىٰ أَن تَأْجُرَنِي ثَمَانِيَ حِجَجٍ ۖ فَإِنْ أَتْمَمْتَ عَشْرًا فَمِنْ عِندِكَ ۖ وَمَا أُرِيدُ أَنْ أَشُقَّ عَلَيْكَ ۚ سَتَجِدُنِي إِن شَاءَ اللَّـهُ مِنَ الصَّالِحِينَ ﴿٢٧﴾
 “অতঃপর বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার প্রদান করেন। অতঃপর মূসা যখন তাঁর কাছে গেলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন, তখন তিনি বললেন, ভয় করো না, তুমি জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।  বালিকাদ্বয়ের একজন বলল পিতাঃ তাকে চাকর নিযুক্ত করুন। কেননা, আপনার চাকর হিসেবে সে-ই উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত। পিতা মূসাকে বললেন, আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিবাহে দিতে চাই এই শর্তে যে, তুমি আট বছর আমার চাকুরী করবে, যদি তুমি দশ বছর পূর্ণ কর, তা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আল্লাহ চাহেন তো তুমি আমাকে সৎকর্মপরায়ণ পাবে। ( সূরা কাসাস, ২৫, ২৬ ও ২৭ নং আয়াত)
(islamqa.info থেকে সংক্ষেপায়িত)

   তাফসীর সহ বিস্তারিত ঘটনা পড়ুন সূরা কাসাস এর ২৩ থেকে ২৭ নং আয়াত পর্যন্ত।

    বিশেষভাবে লক্ষণীয়, কোন ছেলেকে বা ছেলে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার নামে তার সাথে গোপনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়া জায়েয নেই। আর পরিচয়ের নামে গোপনে তার সাথে একান্ত জরুরি ছাড়া কথা-বার্তা বৈধ নয়। বরং ফিতনা থেকে বেঁচে কোন ছেলেকে পছন্দ হলে সরাসরি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে বা নিজের অভিভাবক অথবা বাবা-মার নিকট উক্ত ছেলের  দ্বীন, চরিত্র, জ্ঞান, ভদ্রতা ইত্যাদি গুণাবলীতে আকৃষ্ট হয়ে তার সাথে বিবাহের আগ্রহের ব্যাপারে ইঙ্গিতে বা সরাসরি কথা বলা যেতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে এতে কোন বাধা নেই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহু আলাম।
---------------------
উত্তর প্রদানে ;
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব, দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

Post a Comment

0 Comments