জুমার রাতে ‘হা-মীম দুখান’পাঠের ফযিলত সংক্রান্ত হাদিস সহিহ নয়।
------------ ◈◉◈------------
প্রশ্ন❓
জুমার রাতে সূরা দুখান পড়ার হাদিসটি কি সহিহ?
উত্তর:
জুমার রাতে সূরা দুখান পড়ার ব্যাপারে যে সব হাদিস পাওয়া যায় সেগুলোর কোনওটাই সহিহ নয়। নিম্নে এ প্রসঙ্গে দুটি হাদিস হাদিস উল্লেখ পূর্বক বিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণের অভিমত পেশ করা হল:
◈ ১ম হাদিস:
مَن قرأ ( حم الدُّخَانَ ) في ليلةِ الْجُمُعَةِ غُفِرَ له
"যে ব্যক্তি জুমার রাতে হা-মীম দুখান পাঠ করবে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।" [তিরমিযি]
মুহাদ্দিসদের তাহকিক অনুযায়ী এ হাদিসটি সহিহ নয়
এ হাদিসটিকে শাইখ আলবানি রহ. ضعيف جداً "খুবই দুর্বল" হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। [সূত্র: যঈফুল জামে, হা/৫৭৬৭] এ ছাড়াও ইবনুল জাওয়াযি, ইবনুল আরাবি, সুয়ুতি, আব্দুর রহমান মোবারক পূরী মুহাদ্দিসগণ এটিকে দুর্বল বলেছেন।
উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে মুহাদ্দিসদের অভিমত নিম্নরূপ:
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال رسول الله صلى الله عليه وسلم :
( ن قرأ " حم " الدخان في ليلة الجمعة غُفر له)
رواه الترمذي (2889) من طريق هشام أبي المقدام ، عن الحسن ، عن أبي هريرة به .
ثم قال الترمذي : هذا حديث لا نعرفه إلا من هذا الوجه ، وهشام أبو المقدام يضعف ، ولم يسمع الحسن من أبي هريرة ، هكذا قال أيوب ، ويونس بن عبيد ، وعلي بن زيد .
إذن فللحديث علتان :
1-أبو المقدام هشام بن زياد : اتفقت كلمة المحدثين على تضعيفه ، حتى قال ابن حبان : " يروى الموضوعات عن الثقات ، لا يجوز الاحتجاج به ". انظر: " تهذيب التهذيب " (11/39).
2-الانقطاع بين الحسن وأبي هريرة .
لذلك ضعفه ابن الجوزي في " الموضوعات " (1/ 247)، وابن العربي في " عارضة الأحوذي " (6/35)، والألباني في " ضعيف الترمذي ".
◈ ২য় হাদিস: এ বিষয়ে আরেকটি হাদিসের রয়েছে। তা হল,
مَن قرأ ( حم الدُّخَانَ ) في ليلةٍ ، أَصْبَحَ يَسْتَغْفِرُ له سبعونَ أَلْفَ مَلَكٍ
روي التِّرْمِذِي ثُمَّ قَالَ: غَرِيبٌ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ هَذَا الْوَجْهِ، وعمَر بْنُ أَبِي خَثْعَمٍ يُضَعَّفُ. قَالَ الْبُخَارِيُّ: مُنْكَرُ الْحَدِيثِ
"যে ব্যক্তি রাতে 'হা-মীম দুখান' পাঠ করবে। সত্তর হাজার ফেরেশতা সকাল পর্যন্ত তার ক্ষমার জন্য দুআ করবে।" [তিরমিযি]
শাইখ আলবানি রাহ. হাদিসটিকে موضوع ‘বানোয়াট’ বলে চিহ্নিত করেছেন। [সূত্র: যাঈফুল জামে, হা/৫৭৬৬]
মোটকথা, সূরা দুখান পাঠের ফযিলতে কোনও সহিহ হাদিস নেই। তবে জুমার রাতে সূরা কাহফ পড়ার হাদিসটি অধিক বিশুদ্ধ মতে সহিহ। সুতরাং সূরা দুখান পাঠের জাল বা জইফ হাদিস বাদ দিয়ে সূরা কাহফ পড়ার হাদিসের প্রতি আমল করা যেতে পারে।
আর আমাদের কর্তব্য, সবসময় বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত আমলগুলোর প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা। তৎসঙ্গে অধিক পরিমাণে কুরআনুল কারিম তিলাওয়াত করা এবং তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ জেনে তদনুযায়ী জীবন গঠন করা। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।
https://m.facebook.com/235040300248856/posts/1333826617036880/
আরও পড়ুন পড়ুন:
প্রশ্ন: শুক্রবারে সূরা কাহফ পাঠ এবং এর দশ আয়াত মুখস্থ করার ফযিলত কি?
https://m.facebook.com/Guidance2TheRightPath/posts/668285730257642
আল্লাহু আলাম।
------------ ◈◉◈------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি।
লিসান্স, মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
#abdullahilhadi
0 Comments