Recent Tube

হিজাব ও নিকাব ফ্যাশন নাকি আদর্শ!!?? ------- ইফতেখার সিফাত




 
  হিজাব ও নিকাব ফ্যাশন নাকি আদর্শ!!??


  আজকাল বোনদের ভিতর হিজাব বা নিকাবের ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু হিজাব বা নিকাবের প্রকৃত উদ্দেশ্য সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এজন্য দেখা যায় হিজাব পরেও অনেক বোন নিত্য, গানবাদ্য, ফ্রি মিক্সিং, গাইরে মাহরাম ছেলের সাথে ট্যুর বা ঘুরাঘুরি ইত্যাদি হারাম কাজ দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে কোন প্রকার সংকোচবোধ ছাড়াই। কারণ হিজাব বা নিকাবকে আমরা এক টুকরো কাপড় কিংবা ফ্যাশন হিসেবে গ্রহণ করছি। কিন্তু আমরা ভুলে বসেছি, মাথায় ও মুখে এক পিচ কাপড় ফেলে রাখার নাম পর্দা নয়। পর্দা একটি আদর্শ ও লাইফস্টাইলকে ধারণ করে।

“আমরা অনেক সময় সতর আবৃত করার বিধানের সাথে আরও বেশ কিছু বিধানকে মিলিয়ে ফেলি । আর মিলিয়ে ফেলার এই ভাব থেকেই আমাদের মাঝে একটি ভয়াবহ চিন্তার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। সেটা হলো, সতর আবৃত করে সব করা যায়। কিন্তু আমরা ভুলে যাই সতর আবৃত করা পরিপূর্ণ পর্দা নয়। পর্দার বিধানের সাথে আরও অনেক বিধান জড়িত আছে। পুরো শরীর ও হাত-মুখ ঢাকা পৃথক একটি বিধান। ফ্রি-মিক্সিং, গাইরে মাহরাম পুরুষের সাথে নির্জনতা অবলম্বন, গান-বাদ্য, মডেলিং ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা পৃথক বিধান।

এজন্য যথারীতি সতর আবৃত করেও কোনো নারী গাইরে মাহরাম পুরুষের সাথে নির্জনতায় অবস্থান করতে পারবে না। কারণ সতর আবৃত করা ও নির্জনতা অবলম্বন না করা, দুটো পৃথক পৃথক বিধান। একটির জন্য অপরটি শিথিল হয়ে যাবে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো নারীর সাথে তার কোনো মাহরাম না থাকা অবস্থায় নির্জনতা অবলম্বন না করে। অন্য হাদিসে আছে, কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে নির্জনে অবস্থান করলে সেখানে শয়তান থাকে তৃতীয় পক্ষ। (অর্থাৎ শয়তান তখন তাদের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়)

এমনিভাবে যথারীতি সতর আবৃত করেও কোনো নারী গাইরে মাহরাম পুরুষদের সাথে কোনো অনুষ্ঠান ,সম্মেলন, কর্মক্ষেত্র কিংবা শ্রেণিকক্ষ ইত্যাদিতে পুরুষদের সাথে ইখতিলাত তথা ফ্রি-মিক্সিং করতে পারবে না। এটা তার জন্য বৈধ নয়; বরং এসব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের জন্য পৃথক ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে। মোটকথা সতর আবৃত করেও সব করা যায় না। সতর আবৃত করার কারণে শরিয়াহর অন্যান্য বিধানে শিথিলতা আসে না। সতর আবৃত করা পৃথক একটি বিধান, শালীনতাবিরোধী ও ফাহেশা কাজ না করা আরেকটি বিধান। এজন্য হিজাব পরে সব করা যায় এই মানসিকতা আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে।”

“মূলত ইসলামে হিজাব কিংবা পর্দার বিধান মাথায় এক টুকরো কাপড় ফেলে রাখার নাম নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করে। বর্তমানে মুসলিম নারীদের জনপ্রিয় একটি মনোভাব হলো, হিজাব পরে সব করা যায়। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। এজন্য দেখা যায়, হিজাব পরিধান করে কোন নারী মডেল হলে কিংবা শরিয়াহ কর্তৃক কোন সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলে আমরা এই কারণে আনন্দ প্রকাশ করছি যে, মেয়েটি হিজাব পড়েছে। এই বিষয়টি মাথায় রাখলে আমাদের জন্য সমাজে হিজাবের বাস্তবতা ও করণীয় সম্পর্কে অনেক বিষয়ই পরিষ্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”[১]

১) আধুনিক প্রাচ্যবাদের কবলে মুসলিম নারী সমাজ (প্রকাশিতব্য) বই থেকে গৃহীত।

Post a Comment

0 Comments