Recent Tube

আহলে হাদীসের বানোয়াট ও জাল সালাত; ইমাম সাহেব রুকুতে আর মুক্তাদি সিজদায় পড়ে আছেঃমুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।



আহলে হাদীসের বানোয়াট ও জাল সালাত; ইমাম সাহেব রুকুতে আর মুক্তাদি সিজদায় পড়ে আছেঃ
------------------------------------------------------------------
আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি পথভ্রষ্ট আহলে কুরআন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) শেখানো পদ্ধতি পরিত্যাগ করে ইসলাম বহির্ভূত বানোয়াট তরিকায় সালাত আদায় করে থাকে। এখন দেখছি আহলে হাদীসের লোকজনও রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর শেখানো পদ্ধতি বর্জন করে সুন্নাহ বহির্ভূত সম্পূর্ণ মনগড়া ও বানোয়াট পদ্ধতিতে সালাত আদায় করছে। ইমাম সিজদার পরিবর্তে রুকু করছেন আর মুক্তাদি সিজদা করছেন। অথচ তারা আমাদের সহীহ হাদীসের আলোকে সালাত আদায় করার সবক দেয়। এর চেয়ে হাস্যকর বিষয় আর কি হতে পারে?

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য (যারিয়াত ৫৬)। সালাত হল শ্রেষ্ঠ ও প্রধান ইবাদত। আর সালাতের অন্যতম প্রধান ‘রুকন’ হল সিজদা। সিজদা নষ্ট হলে সালাত বাতিল হয়। ‘সিজদা’ السجدة অর্থ চেহারা মাটিতে রাখা (وضع الجبهة على الأرض) পারিভাষিক অর্থ, আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে বিনম্রচিত্তে চেহারা মাটিতে রাখা’। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) রুকূ হতে উঠে ক্বওমার দোআ শেষে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে আল্লাহর নিকটে সিজদায় লুটিয়ে পড়তেন এবং সিজদার দোআ পাঠ করতেন। আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন, وَصَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي "তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে"। (সহীহ বুখারী হাঃ ৬৩১, ৬০০৮; মুসনাদে আহমদ হাঃ ২০০০৭; সুনান দারেমী হাঃ ১২৫৩)

নাক সহ কপাল, দু’হাত, দু’হাঁটু ও দু’পায়ের আংগুল সমূহের অগ্রভাগ সহ মোট ৭টি অঙ্গ মাটিতে লাগিয়ে সিজদা করতে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) নির্দেশ দিয়েছেন। (সহীহ বুখারী হাঃ ৮১২, সহীহ মুসলিম হাঃ ৪৯০, মিশকাত হাঃ ৮৮৭) যে ব্যক্তি রুকু সিজদা পূর্ণাঙ্গ ভাবে আদায় করে না রাসুলুল্লাহ (ﷺ) তাকে নিকৃষ্ট চোর বলে আখ্যায়িত করেছেন। (মুয়াত্তা মালিক হাঃ ৪০৩; দারেমী হাঃ ১৩৬৭; মিশকাত হাঃ ৮৮৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদীস রাসুলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "যে ব্যক্তি সিজদার সময় কপালের সাথে নাককে জমিনে মিলায় না তার সালাত হয় না।" (আলবানী, তাহকীক মিশকাত ১/৫২২)

সুতরাং ঈদের সালাতে ডা. গালীব ইমাম সেজে যে তরিকায় সালাত আদায় করেছেন, তা বাতিল। কারণ তিনি সিজদা না করে সিজদার পরিবর্তে রুকু করছেন আর তার মুসল্লীগণ সিজদা করছেন - এটা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর শেখানো সালাত নয়। এটি সম্পূর্ণ সুন্নাহ বহির্ভূত ডা. গালীবের বানোয়াট সালাত। কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, তিনি তো মাজুর! আমি বলব, মাজুর হলেও তাদের সালাত বাতিল। কারণ ইমামতি করার জন্য সুস্থ লোক থাকার পরও অসুস্থ ব্যক্তি বানোয়াট তরিকায় সালাত আদায় করলেই তা জায়েজ হবে না বরং তা বাতিল হবে।

উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, 
«مَنْ أحْدَثَ في أمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ، وفي رواية لمسلم: «مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيهِ أمرُنا فَهُوَ رَدٌّ».
‘‘যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে কোনো নতুন কিছু উদ্ভাবন করল যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’’ সহীহ মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করল, যাতে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।’’ (সহীহ বুখারী হাঃ ২৬৯৭, সহীহ মুসলিম হাঃ ১৭১৮, আবূ দাউদ হাঃ ৪৬০৬, ইবনু মাজাহ হাঃ ১৪, আহমাদ হাঃ ২৩৯২৯, ২৪৬০৪, ২৪৯৪৪, ২৫৫০২, ২৫৬৫৯, ২৫৬৫৯, ২৫৭৯৭)
------------------------- 
লেখক ঃ প্রবন্ধ লেখক কলামিস্ট ইতিহাস গবেষক শিক্ষক ও অনলাইন একটিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments