গোটা বিশ্বে মাওদুদীবাদ বলে কোনো মতবাদের অস্তিত্ব নেই বরং বিশ্ববাসীর কাছে আওলাদে রাসূল(স) সাইয়্যেদ আবুল আলা মাওদুদী (রহ) বিংশ শতাব্দীর সেরা মুজাদ্দিদ,মুফাসসীর,মুহাদ্দিছ,
ফকীহ ও সাহিত্যিক।
-ইসহাক আল মাদানী-
_____________________
বিংশ শতাব্দিতে ইসলামী জাগরণে মাওলানার কয়েকটি অবদান নিম্নে তুলে ধরা হলো:
এক:
বিংশ শতাব্দীর সেরা ফেতনা কাদিয়ানী ফেতনা এর বিরুদ্ধে বই লিখে ১৯৫৩ সালে ফাসীর রায়ে দন্ডিত হন।তিনি জীবনে তিন বার কারা ভোগ করেন। অনেকটি বছর কারারুদ্ধ ছিলেন।
দুই:
প্রায় দুশত অনবদ্য বই লিখে সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও পুঁজিবাদের বিষদাত উপড়ে দেন।
তিন:
বিশ্বে সাড়া জাগানো তাফহীমুল কুরআন তাফসীর গ্রন্থটি লিখে বিশ্ব মুসলিমকে
কুরআন কেন্দ্রিক জীবন গঠনে উদ্ধুদ্ধ করেন।
চার :
সীরতে সারওয়ারের আলম ( আর্দশ মানব) গ্রন্থটি লিখে প্রমান করিয়েছেন যে বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হলেন একমাত্র বিশ্বনবী বিশ্ব নেতা
হযরত মুহাম্মদ ( স:)।
পাচ:
খেলাফাত ও মুলকিয়াত গ্রন্থটি লিখে ইসলামী রাষ্ট্রের রুপরেখা তুলে ধরেন।
ছয়:
১৯৪১ সালে - তালিমাত ( শিক্ষাব্যবস্থা : ইসলামী দৃষ্টি কোন) বইটি রচনা করে শিক্ষাব্যবস্থার সঠিক চিত্র কি হবে তা তুলে ধরেন।
সাত:
১৯২৭ সালে আল জিহাদু ফিল ইসলাম গ্রন্থটি লিখে ইসলামের জিহাদ এবং জঙ্গিবাদের মধ্যে যে তফাৎ আছে তা তুলে ধরেন।
আট :
১৯৩৩ সালে ইসলামি তা্হযীব আওর উসকে উসুল ( ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা) বইটির রচনা করে সংস্কৃতি অংঙ্গনের সাথে জড়িতদের গাইড লাইন দেন।
নয় :
১৯৩৬ সালে সুদ ও আধুনিক ব্যাংকিং - বইটি লিখে সর্বপ্রথম ইসলামী ব্যাংকের রূপরেখা প্রনয়ণ করেন।
দশ :
তিনি - তাযকিয়া নফস (আত্মাশুদ্ধির ইসলামী পদ্ধতি) গ্রন্থটি লিখে ভূয়া পীর মুরীদির মূখোশ উন্মোচন করেন।
এগারো:
তিনি মাকামে সাহাবা (সাহাবায়ে কেরামের মর্যদা) - বইটি রচনা করে মুসলিম মিল্লাহ কে তাদের অনুসরণে জীবন যাপনে উদ্ধুদ্ধ করেন।
বারো:
মাওলানা ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে মরক্কোর রাবাত সম্মেলনে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম গঠনের পরামর্শ দেন।যার ফলশ্রুতিতে ১৯৬৯ সালে O.I.C গঠিত হয়।
তের :
মাওলানা হলেন মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা বাছাই কারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালনা কমিটি সভাপতি।
চৌদ্দ :
মাওলানা ছিলেন মক্কার রাবেতা আলমে ইসলামীর অজীবন সদস্য।
পনেরো :
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠানের আন্দোলন যখন জোরদার হয়েছিল তখন মাওলানা - মাসআলয়ে কাওমিয়াত ( ইসলামে জাতীয়তাবাদ) গ্রন্থটি লিখে প্রমাণ করে ছিলেন মুমিন মুমিনের ভাই। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান একই দেশের নাগরিক হলেও সে মুমিনের ভাই হতে পারে না।
ষোল:
মাওলানা ভারতবর্ষের সর্ব প্রাচীন ইসলামী দল -জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ (প্রতিষ্ঠাকাল ১৯১৯ ইং) এর দলীয় একমাএ মূখপাত্র আলজমিয়ত পএিকার সূদীর্ঘ আট বছর সম্পাদক ছিলেন।
সতেরো:
মাওলানার জীবনী নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ এর অধিক গবেষক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেছেন। বাংলাদেশের ডঃ মুতিউল ইসলাম (রিয়াদ ভার্সিটি) তাদের একজন।
আঠারো :
বিংশ শতাব্দিতে ইসলামী রেনেসায় তার অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭৯ সালে সর্বপ্রথম এককভাবে বাদশাহ ফয়ছল পুরস্কার লাভ করেন।
উনিশ :
তিনি ১৯৪১ সালে জামায়াতে ইসলামী গঠন করেন। যার শাখা প্রশাখা বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকায় রয়েছে। মাও লানা জীবিত অবস্থায় -আমীর পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে ইসলামী নেতাদের জন্য এক বিরল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেন।
বিশ:
মাওলানার সাথে পাকিস্তানের গ্র্যান্ড মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ:) এর গভীর সম্পর্ক ছিল। মাওলানা লাহোর থেকে করাচী আসলে মুফতী সাহেবের বাসায় মেহমান হতেন।
একুশ:
মাওলানার জানাযায় ১৯৭৯ সালে লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে দশ লক্ষের অধিক লোকের সমাগম হয়। তৎকালে পাকিস্তানের ইতিহাসে এটা ছিল সর্ববৃহৎ জানাযা।
বাইশ:
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক, কাবা শরীফের তৎকালীন প্রধান ইমাম ও খতীব শায়েখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন সুবায়েল (রহ) বিশ্বনন্দিত ইসলামী স্কলার আল্লামা ইউসুফ কারযাভী (রহ) জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সীমান্ত প্রদেশের তৎকালীন মূখ্যমন্রী মুফতি মাহমুদ (রহ) সহ দেশ বিদেশের অগনিত ইসলামী স্কলার ও রাষ্ট্রদূতরা জানাযায় অংশ নেন।
তেইশ :
এ ক্ষনজন্মা দ্বায়ী ইলাল্লাহ ১৯৭০ সালে
ঢাকার পল্টন ময়দানে ভাষন দিতে
এসেছিলেন কিন্তু তাগুতী শক্তির প্রচন্ড
বাধার সম্মুখীন হয়ে বক্তৃতার মঞ্চে আসতে
পারেন নি।
আমি ইসহাক আল মাদানী, এম.পি অধ্যক্ষ ফরীদ উদ্দীন চৌধুরী, ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক , ইস্ট লন্ডন মসজিদের সাবেক ইমাম ও খতীব হযরত হাফেজ মাওলানা আবু সাঈদ চৌধুরী সহ আমরা অনেকে তেজগাঁও বিমানবন্দরে মাওলানার সং ক্ষিপ্ত বক্তৃতা এবং ঢাকার ইডেন হোটেলে এক ঘন্টার অধিক সময় মাওলানার হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতা শুনি।
~~ আলহামদুলিল্লাহ ~~
আল্লাহ মাওলানার ভুলত্রুটি গুলো হ্মমা করে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করুন। আমীন।।।
মাওদুদীবাদ এর জন্মদাতা সহজ সরল
ইতিহাস অজ্ঞ মৌলভীদের আল্লাহ হেদায়েত দিন। সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রণ করা থেকে আল্লাহ তাদেরকে বিরত রাখুন। সূর্যের আলোকে মুখের ফুৎকার দিয়ে নিভিয়ে দেয়া যায় না এ মহা সত্যটি বুঝার তাদের তৌফিক দিন। " আমীন"
------------------------------------------------
লিখক: লিসান্ত (ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট)
১৯৮৩ ইং l
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
0 Comments