Recent Tube

ইস্তিস্কার সালাত তথা বৃষ্টির নামাযের বিস্তারিত বিবরণ; লুৎফুর রহমান ফরায়েজী।



 ইস্তিস্কার সালাত তথা বৃষ্টির নামাযের বিস্তারিত   বিবরণ:

প্রশ্ন:-
বৃষ্টি না হলে যে নামায পড়া হয়, যাকে আমরা ইস্তিস্কার নামায বলে থাকি। উক্ত নামায পড়ার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাই।

উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم

 যদি কোন এলাকায় বৃষ্টি না হয়, যার ফলে দুর্ভিক্ষ এমন কোন মহাবিপদের শংকা থাকে, তাহলে সেখানকার লোকজনদের জন্য জামাতের  সাথে ইস্তিস্কার নামায পড়া এবং দুআ করা মুস্তাহাব।

 নামাযে ইস্তিস্কার তরীকা

ঈদের নামাযের মতোই আজান ও ইকামত ব্যতীত দুই রাকাত নামায জামাতের সাথে ময়দানে আদায় করা। ঈদের জামাতের মতোই জোরে কিরাত পাঠ করবে। শুধু এতটুকু পার্থক্য যে, ইস্তিস্কার নামাযে অতিরিক্ত কোন তাকবীর নেই।

 দুই রাকাত নামায শেষ করার পর ঈদের মতোই জমিনে দাঁড়িয়ে দু’টি খুতবা প্রদান করবেন ইমাম সাহেব।

 খুতবা দেবার সময়  ইমাম সাহেব নিজের গায়ের চাদর, জামা ইত্যাদি উল্টে ফেলা সুন্নাত। পাল্টানোর পদ্ধতি হলো: উপরের অংশ নিচে, বা ডানের অংশ বামে, বামের অংশ ডানে, কিংবা জামার ভিতরের অংশ উপরে এবং উপরের অংশ ভিতরে নিয়ে যাওয়া। মোটকথা হলো, জামা উল্টে নেয়া সুন্নাত।

 খুতবা শেষে কিবলামুখী হয়ে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে দুআ করবেন। উপস্থিত সকলে উক্ত দুআয় আমীন বলবেন।

 দুআর সময় আম দুআর সময় যেভাবে হাত উঠানো হয়, ইস্তিস্কার দুআর সময় এর উল্টো করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সেটা হলো: হাতের তালু থাকবে জমিনের দিকে এবং পিঠ থাকবে আসমানের দিকে।

নামাযে ইস্তিস্কার কয়েকটি মুস্তাহাব

যখন ইস্তিস্কার প্রয়োজন হবে, তখন ইমাম সাহেব তিনদিন রোযা রাখার এবং তওবা ইস্তিগফার করার হুকুম দিবেন। তারপর চতুর্থ দিন নামাযে ইস্তিস্কা পড়বেন।

ইস্তিস্কার নামায পড়তে মুসল্লিরা পায়ে হেটে আসবে।

এদিন নতুন কাপড়ের বদলে পুরাতন বা ময়লা কিন্তু পবিত্র কাপড় পরিধান করে আসবে।

আল্লাহর দিকে তাওয়াজ্জুহ এবং খুশুখুজু ও বিনয় প্রকাশ করবে। অনুতপ্ত হয়ে মাথাকে ঝুঁকিয়ে রাখবে। অহেতুক কথাবার্তা এবং হাসি ঠাট্টা থেকে বিরত থাকবে।

প্রতিদিন নামাযের জন্য বের হবার আগে কিছু দান সদকা করবে।

সকলেই খাঁটি দিলে তওবা করবে এবং কারো উপর অন্যের কোন হক থাকলে তা আদায় করে দিবে।

সকল মুসলমানদের জন্য ক্ষমা ও মাগফিরাতের দুআ করবে।

নিজেদের মাঝে দুর্বল এবং বৃদ্ধ ও শিশুদের সবার আগে রাখবে। তাদের দ্বারাও দুআ করাবে।

ছোট শিশুদের মা থেকে আলাদা করে রাখবে। যেন একটি আল্লাহভীতির পরিবেশ তৈরী হয়।

১০
চতুষ্পদ জন্তুও নিজের সাথে ময়দানে নিয়ে আসা। যাতে করে আল্লাহ তাআলার রহমাত দ্রুত নেমে আসে।

১১
একদিন ইস্তিস্কার দ্বারা বৃষ্টি না হলে, লাগাতার তিনদিন ইস্তিস্কার নামায আদায় করা।

১২
ইস্তিস্কার জন্য এ দুআটি পড়া: اللهمَّ اسْقِنَا غيثًا مُغِيثًا مَرِيئًا مَرِيعًا غَدَقًا طَبَقًا ، عاجلًا غير رائثٍ ، نافعًا غيرَ ضارٍّ
[মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮০৯১]
ويخرجون أى إلى الصحراء كما فى الينابيع وهذا فى غير أهل المساجد الثلاثة (رد المحتار، زكريا-3/72)

بأن يصلى بهم ركعتين يجهر فيهما بالقراءة بلا أذان ولا إقامة، ثم يخطب بعدها قائما على الأرض…..والمشهور من الرواية عنهما أنه لا يكبر (أى الزوائد) (رد المحتار، زكريا-3/71، حلبى كبير-427)

عن انس بن مالك رضى الله عنه أن النبى صلى الله عليه وسلم استسقى فأشار بظهر كفيه إلى السماء (مسلم شريف، النسخة الهندية-1/293)

قال النووى: قال جماعة من أصحابنا وغيرهم السنة فى كل دعاء لرفع بلاء كالقحط ونحوه أن يرفع يديه ويجعل ظهر كفيه إلى السماء وإذا دعا بسوال شيئ وتحصيله جعل بطن كفيه إلى السماء واحتجوا بهذا الحديث، (شرح مسلم للنووى-1/293)

ثم السنة فى كل دعاء لسوال شيئ وتحصيله أن يجعل بطون كفيه نوح السماء ولرفغ بلاء كالقحط يجعل بطونهما إلى الأرض وذلك معنى قوله تعالى: “ويدعوننا رغبا ورهبا) (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-551) 

خلافا لمحمد فإنه يقول يقلب الإمام ردائه إذا مضى صدر من خطبته فإن كان مربعا جعل اعلاه أسفله وأسفله أعلاه وإن كان مدورا جعل الأيمن على الأيسر والأيسر على الأيمن، وإن كان قباء جعل البطانة خارجا والظهارة داخلا (حليه) وعن أبى يوسف رواياتان: واختار القدورى قول محمد لأنه عليه الصلاة والسلام فعل ذلك (نهر) وعليه والفتوى كما فى شرح درر البحار (رد المحتار، زكريا-3/71، حلبى كبير-429)

ويستحب للإمام أن يأمرهم بصيام ثلاثة أيام قبل الخروج وبالتوبة ثم يخرج بهم فى الرابع مشاة فى ثياب غسيلة أو مرقعة متذللين متواضعين خاشعين لله ناكسين رؤوسهم ويقدمون الصدقة فى كل يوم قبل خروجهم ويجدون التوبة ويستغفرون للمسلمين ويستسقين بالضعفة والشيوخ والعجائز والصبيان ويبعدون الأطفال عن أمهاتهم ويستحب إخراج الدواب (الدر المختار مع رد المحتار، زكريا-3/72، حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-550) 

واتفقوا على أن السنة الخروج إلى الاستسقاء ثلاثة أيام متتابعات (حلبى كبير-427، رد المحتار، زكريا-3/72)

والله اعلم بالصواب
------------------------- 
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

 প্রধান মুফতী: জামিয়াতুস সুন্নাহ লালবাগ, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
কপি করা

Post a Comment

0 Comments