Recent Tube

ইসলাম থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থা কে আলাদা করা কুফুরী এবং আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো আল্লাহদ্রোহীঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

ইসলাম থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থা কে আলাদা করা কুফুরী এবং আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানো আল্লাহদ্রোহীঃ
-----------------------------------------------------
 ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুলুল্লাহ (ﷺ) প্রদর্শিত এমন একটি দ্বীন তথা জীবন বিধান যেখানে রয়েছে উপাসনা আরাধনা মত ধর্মীয় বিধান; আখলাক, নৈতিক ও চারিত্রিক সংশোধনের ন্যায় ব্যক্তিগত বিধান; উত্তরাধিকার, বিয়ে, তালাক ও পারিবারিক বিধান; মুয়ামালাত ও মুয়াশারাতের ন্যায় সামাজিক বিধান; সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত এবং জিযিয়া, ফাই, গণিমত ও যাকাত ভিত্তিক অর্থনৈতিক বিধান, তাগুতী শাসনব্যবস্থা উৎখাত করে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় বিধান এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালা। তাই ইসলাম থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের সাথে ইসলামের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। মুসলিম উম্মাহ পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ও শরীয়তের অধিকারী। যাতে বড় একটি অংশ রয়েছে রাজ্য-শাসন বিষয়ক। উম্মার নেতৃত্ব ও পরিচালনা যাদের উপর ন্যস্ত তাদের ফরজ দায়িত্ব ইসলামী বিধান মোতাবেক দেশ পরিচালনা করা, রাষ্ট্রীয়ভাবে সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, আমর বিল মা'রূফ, নাহি আনিল মুনকার, ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, খিলাফত আলা মিনহাজুন নুবুয়্যাহ (নবাবী আদর্শ অনুযায়ী জমিনে খিলাফত পরিচালনা করা) এর দায়িত্ব পালন করা, ইসলামী হদ, কিসাস ও তাযীর (দন্ডবিধি) কায়েম করা, জি-হা-দের দায়িত্ব পালন করা, রাষ্ট্র পরিচালনা (আইন-বিচার নির্বাহি) এর ক্ষেত্রে নতুন পুরাতন সকল জাহেলিয়াতের বিধি-বিধান এবং সকল তাগুতি শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে ইসলামী বিধি বিধান কার্যকর করা। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, 
وَأَنِ احْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ وَاحْذَرْهُمْ أَنْ يَفْتِنُوكَ عَنْ بَعْضِ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ إِلَيْكَ ۖ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَاعْلَمْ أَنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ أَنْ يُصِيبَهُمْ بِبَعْضِ ذُنُوبِهِمْ ۗ وَإِنَّ كَثِيرًا مِنَ النَّاسِ لَفَاسِقُونَ. أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ.
আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা (রাষ্ট্র) পরিচালনা করো এবং তাদের প্রবৃত্তির (অর্থাৎ মানব রচিত মতবাদের) অনুসরণ করো না। আর তাদের থেকে সতর্ক থাক যে, আল্লাহ যা (বিধান স্বরূপ) অবতীর্ণ করেছেন, তার কিছু থেকে তারা তোমাকে বিচ্যুত করবে। অতঃপর যদি তারা (আল্লাহর বিধান থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে জেনে রাখ যে, আল্লাহ তো কেবল তাদেরকে তাদের কিছু পাপের কারণেই (জাহান্নামের) আযাব দিতে চান। আর মানুষের অনেকেই ফাসিক। তারা কি জাহিলিয়্যাতের বিধান চায়, আর নিশ্চিত বিশ্বাসী কওমের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক উত্তম? (সূরা মায়িদা ৫/৪৯-৫০)

 সুতরাং মুমিন ব্যক্তির নিকট আল্লাহর বিধানের চেয়ে কোনো বিধান উত্তম হতে পারে না। যারা আল্লাহর বিধানের উপর অন্য কোনো বিধানকে অগ্রাধিকার দেয়, তারা মুমিন হতে পারে না। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, 
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ.
আর যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তার মাধ্যমে ফয়সালা করে না, তারাই কাফির। (সূরা মায়িদা ০৫/৪৪)

 শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহঃ) বলেন, 
لا ريب أن من لم يعتقد وجوب الحكم بما أنزل الله على رسوله فهو كافر. 
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ্‌ তাঁর রাসুল (ﷺ) এর উপর যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করাকে যে ব্যক্তি ওয়াজিব মনে করে না, সে কাফির। (মিনহাজুস সুন্নাহ, পৃঃ ৪৯)

 কারণ উপাসনা-আরাধনা তথা ধর্মীয় জীবনসহ ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক, এক কথায় জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ তা'য়ালাকে একমাত্র হাকাম বা বিধানদাতা বলে বিশ্বাস করা তাওহীদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর উলুহিয়্যাতের দাবী যে, বান্দা তাঁর হুকুমের আনুগত্য করে একমাত্র তাঁরই দাসত্ব করবে। আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي أَنْزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلًا.
(বল) আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিধানদাতা মানব? অথচ তিনিই তোমাদের নিকট বিস্তারিত কিতাব নাযিল করেছেন। (সূরা আন'আমঃ ৬/১১৪)

 কোনো মুসলিম যেমন আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বিধানদাতা হিসাবে মেনে নিতে পারে না, একই ভাবে আল্লাহর আইনের বিপরীতে অন্য কারো আইনও মেনে চলতে পারে না। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা মুসলিমদের উপর ফরজ। আর এটি সাধারণ কোনো ফরজ নয় বরং তাওহীদের অংশ। যে তাওহীদের প্রতি ঈমান আনায়ন করা মানুষের জন্য সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় ফরজ। শায়খ ইবনে উসাইমীন রাহঃ বলেনঃ "আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা একদিক থেকে তা তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহর সাথে সম্পৃক্ত, অপরদিকে তা তাওহীদুল উলুহিয়্যাহর সাথে সম্পৃক্ত। আল্লাহকে একমাত্র আইনদাতা হিসাবে না মানলে তাওহীদুর রুবুবিয়্যাতে শিরক করা হয়। অপরদিকে আল্লাহ্‌র আইনকে না মেনে অন্য কারো আইনে বিচার-ফয়সালা করলে তাতে তাওহীদুল উলুহিয়াতে শিরক করা হয়। অনুরূপভাবে, আল্লাহর আইন ছাড়া অন্য কোন আইনের বিচার-ফয়সালা মনে-প্রাণে মেনে নেয়াও তাওহীদুল উলুহিয়াতে শিরক করা হয়। সুতরাং এ থেকে একথা স্পষ্ট হয় যে, আইনদাতা হিসেবে আল্লাহকে মেনে নেয়া এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা তাওহীদের অংশ।" (মাজমু ফাতাওয়া ২/১৪০-১৪৪ ও রাসাইলে ইবন উসাইমীন ৬/১৫৮-১৬২)

 আল্লাহর নাফরমানী মূলক যত কাজ রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে হয়, তা নির্মুল করে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাষ্ট্র ক্ষমতা অপরিহার্য। এ জন্যই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
ان الله ليزع بالسلطان ما لا يزع بالقران. لابن الأثير (٤/ ٨٣) رقم (٢٠٧١)، وابن كثير في «تفسيره» (٥/ ١١١)، والماوردي في «تفسيره» (٤/ ١٩٩)، وابن تيمية في «مجموع الفتاوى» (١١/ ٤١٦)، وعنه ابن القيم في «الطرق الحكمية» (٢/ ٦٨٣)، والنويري في «نهاية الأرب» (٣/ ٦)، وابن كثير في «البداية والنهاية» (٢/ ٣٠١)، وغيرهم كثير. 
"আল্লাহ তা'আলা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবলে এমন কিছুর উচ্ছেদ ঘটান, যা কুরআনের মাধ্যমে সেগুলো উচ্ছেদ ঘটান না।" 
অর্থাৎ কুরআনের সতর্কবাণী অধিকাংশ লোকের উপরই প্রভাব বিস্তার করে না। কিন্তু ভয় এবং প্রহরের আঘাত অনেকেই প্রভাবিত করে। কারণ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রভাব মারাত্মক। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যদি কোন অন্যায় কাজকে প্রতিহত করতে চায় তাহলে তা সহজেই এটা সম্ভব হবে, ওয়াজ-নসীহত ও বক্তৃতার মাধ্যমে তা ঐ ভাবে সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে ওয়াজ-নসীহতের কোন প্রভাবই লক্ষ্য করা যায় না। এজন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি ইসলামের বিধান পালন করার উদ্যোগ নেয়া হয় এবং এ কাজে মানুষকে বাধ্য করা হয় তবে সকলেই ইসলামের বিধান পালনে অভ্যস্ত হবে। (শারহু সুনানে আবু দাউদ লিশ শায়েখ আব্দুল মুহসিন, খন্ড ২৩, পৃঃ ৪৫৭; তাফসীরুল কুরআন বিল কুরআন, পৃঃ ২২০)

তাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইমাম তথা ন্যায়পরায়ণ ও আল্লাহর অনুগত শাসক নিযুক্ত করা মুসলিম উম্মাহর উপর ফরয। এর কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম শানকীতি বলেন,
ولان الله تعالي قد يزع بالسلطان ما لا يزعه بالقران. كما قال الله: لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنْزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ ۖ وَأَنْزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَنْ يَنْصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ ۚ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ- فيه اشارة الي اعمال السيف عند الاباء بعد اقامة الحجة-
"কেননা ইমামের নেতৃত্বে (শরীয়তের) এমন কিছু কাজ করা সম্ভব যা কুরআন দ্বারা সম্ভব হয় না। যেমন আল্লাহ তা'য়ালা ইরশাদ করেনঃ "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও ন্যায়ের মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরো নাযিল করেছি লোহা, তাতে প্রচন্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। আর যাতে আল্লাহ জেনে নিতে পারেন, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। অবশ্যই আল্লাহ মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।" (সূরা হাদীদ ২৫) এই আয়াতে ইঙ্গিত আছে যে, যদি (আল্লাহর বিধানের পক্ষে) দলিল প্রমাণ কায়েম করার পরেও কাজ না হয় তাহলে তরবারি কাজে লাগাতে হবে।" (তাফসীরে আদওয়াউল বায়ান ১/২৩)

 হযরত আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, 
 "لَتُنْقَضَنَّ عُرَى الْإِسْلَامِ عُرْوَةً عُرْوَةً، فَكُلَّمَا انْتَقَضَتْ عُرْوَةٌ تَشَبَّثَ النَّاسُ بِالَّتِي تَلِيهَا، وَأَوَّلُهُنَّ نَقْضًا الْحُكْمُ وَآخِرُهُنَّ الصَّلَاةُ" 
ইসলামের ভিত্তিগুলো এক এক করে ভেঙ্গে পড়বে। যখনই একটি খুটি ভাঙ্গবে, তখনই লোকেরা পরের খুটিকে ধরে ফেলবে। তারমধ্যে সর্বপ্রথম যেটি ভাঙ্গা হবে, যেটি হচ্ছে শাসনব্যবস্থা। আর সর্বশেষটি হচ্ছে নামাজ। (মুসনাদে আহমদ হাঃ ২২১৬০, ২১৬৫৬; মু'জামুল কাবীর হাঃ ৭৪৮৬; জামেউস সাগীর হাঃ ৭২১৪)

 সুতরাং উক্ত হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, মানুষেরা সর্বপ্রথম যে বিষয়টিকে ছেড়ে দেবে, সেটি হচ্ছে ইসলামী শাসনব্যবস্থা। আর শাসনব্যবস্থা হচ্ছে ইসলামের এমন একটি খুটি বা মূল ভিত্তি, যা ভেঙ্গে পড়েছে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখছি। 

 আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
الْإِسْلَامُ وَالسُّلْطَانُ أَخَوَانِ تَوْأَمٌ، لَا يَصْلُحُ وَاحِدٌ مِنْهُمَا إِلَّا بِصَاحِبِهِ، فَالْإِسْلَامُ أُسُّ وَالسُّلْطَانِ حَارِسٌ، وَمَا لَا أُسَّ لَهُ مُنْهَدِمٌ، وَمَا لَا حَارِسَ لَهُ ضَائِعٌ. 
ইসলাম ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দুই সহোদর ভাইয়ের ন্যায়। তাদের একজন অপরজনকে ছাড়া সংশোধন ও পরিপূর্ণ হতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইসলাম হচ্ছে কোন অট্টালিকার ভিত। আর রাষ্ট্রশক্তি তার পাহারাদার। যে অট্টলিকার ভিত নেই তা যেমন পড়ে যেতে বাধ্য, তেমনি যার পাহারাদার বা রক্ষক নেই তাও ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য। (ইমাম দাইলামী, আল ফিরদাউস ১/১১৭; ইমাম সুয়ূতী, জামউল জাওয়ামি হাঃ ১০১২২; কানযুল উম্মাল হাঃ ১৪১৬১৩)

 ইসলামের পাহারাদার 'ইসলামী রাষ্ট্রশক্তি' না থাকার কারণে ইসলাম আজ ধসে পড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ যে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর আইন ও শাসন প্রয়োগ নেই, সেখানে আমরে বিল মা’রুফ, নাহি আনিল মুনকার ও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর হক আদায় করা, জালিমদের জুলুম প্রতিহত করে ইনসাফ কায়েম করা, ইসলামের হেফাজত এবং সর্বপরি আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব। শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহঃ) এ বিষয়ে ইঙ্গিত করে বলেছেনঃ
ان ولاية امر الناس اعظم واجبات الدين بل لاقيام للدين الا بها ولان الله تعالي اوجب الامر بالمعروف و النهي عن المنكر ولايتم ذلك الا بقوة وإمارة ونصرة المظلوم وكذلك ساءر ما اوجبه من الجهاد والعدل واقامة الحدود لا تتم الا بالقوة والامارة.
"জনগণের যাবতীয় ব্যাপার সুসম্পন্ন করা তথা শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা দ্বীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য বিষয় বরং শাসন ব্যবস্থা (রাষ্ট্র ক্ষমতা) এমন এক অপরিহার্যতা যা ছাড়া দ্বীন প্রতিষ্ঠা হতেই পারে না। কেননা আল্লাহ তা'য়ালা আমর বিল মা’রুফ তথা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও নাহি আনিল মুনকার তথা অন্যায়ের প্রতিরোধ এবং মজলুমদের সাহায্য করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। এ ওয়াজিব পালন রাষ্ট্র ও শাসন ব্যবস্থা ছাড়া সম্ভব নয়। এ ভাবে তিনি জি-হা-দ, ইনসাফ ও আইন-শাসন প্রভৃতি যেসব কাজ ওয়াজিব করে দিয়েছেন তা রাষ্ট্র ক্ষমতা ও শাসন-ব্যবস্থা ছাড়া কিছুতেই হতে পারে না।" (আস-সিয়াসাতুশ শরইয়্যাহ, শরীয়াহর নীতি, পৃষ্ঠাঃ ১৬১-১৬২)

 সুতরাং যারা রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বিরোধিতা করে তারা মূলত দ্বীন ইসলামের দুশমন, আল্লাহদ্রোহী। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট শুনেছি। তিনি বলেন,
مَنْ حَالَتْ شَفَاعَتُهُ دُونَ حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ فَقَدْ ضَادَّ اللَّهَ.
 যে ব্যক্তির সুপারিশ (বক্তব্য/সমর্থন/ভোট) আল্লাহ তা'য়ালার আইনসমূহের মধ্যে কোন আইন জারী করার বিষয়ে বাধা হয়ে যায় সে আল্লাহদ্রোহী। (আবু দাউদ হাঃ ৩৫৯৭; মুসনাদে আহমদ হাঃ ৫৩৬২)

 তাই আসুন! জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে ইসলামী গঠন করে রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে মুসলিম হিসেবে ফরজ দায়িত্ব পালন করি। মহান আল্লাহ তা'য়ালা আমাদেরকে ইকামাতে দ্বীনের জন্য কবুল করুন। (আমিন!)

Post a Comment

0 Comments