আমি যদি এই দোআটি না পড়তাম তবে ই*হু*দীরা জাদু করে আমাকে গাধা বানিয়ে ফেলত”
----------------◄❖►----------------
প্রশ্ন:
কা’ব বিন আহবার রহ. বলেছেন, “আমি যদি এই দোআটি না পড়তাম তবে ই*হু*দীরা তাদের জাদু দ্বারা আমাকে গাধা বানিয়ে ফেলত” এই হাদিসটা কি সহিহ?
উত্তর:
কাকা ইবনে হাকিম রহ. বলেন, কা’ব আল আহবার আমাকে বলেছেন, “একটি দোয়া যদি আমি না পড়তাম তাহলে ই*হু*দিরা আমাকে [জাদুর মাধ্যমে] গাধা বানিয়ে ফেলত।” তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, সেটি কোন দোয়া? তখন তিনি এ দোয়াটির কথা বললেন:
" أَعُوذُ بِوَجْهِ اللهِ الْعَظِيمِ الَّذِي لَيْسَ شَيْءٌ أَعْظَمَ مِنْهُ، وَبِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ الَّتِي لاَ يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلاَ فَاجِرٌ، وَبِأَسْمَاءِ اللهِ الْحُسْنَى كُلِّهَا، مَا عَلِمْتُ مِنْهَا وَمَا لَمْ أَعْلَمُ، مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَبَرَأَ وَذَرَأَ "
বাংলা উচ্চারণ :
আউযুবি ওয়াজহিল্লাযী লাইসা শাইয়ুন আ’যামা মিনহু
ওয়া বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতিল লাতি লা ইউজাভিযুহুন্না বাররুন ওয়া লা ফাজিরুন। ওয়াবি আসমা-ইল্লাহিল হুসনা কুল্লাহা মা আলিমতু মিনহা ওয়া মা লাম আ’লামু
মিন শাররি মা খলাকা ওয়া বারাআ ওয়া জারাআ।
বাংলা অর্থ :
“আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি সুমহান আল্লাহর সত্তার ওসিলায় যার থেকে বড় ও মহান আর কোনও সত্তা নেই, আল্লাহর সেসব পূর্ণাঙ্গ বাক্যের ওসিলায় যেগুলোকে অতিক্রম করে যেতে পারে না কোনও ভালো-খারাপ কেউই এবং আমার জানা-অজানা আল্লাহর সকল সুন্দর সুন্দর নামের ওসিলায়- ঐ সব জিনিসের অনিষ্ট থেকে যা তিনি সৃষ্টি করেছেন এবং ছড়িয়ে দিয়েছেন।”
(ইমাম মালিক সূত্রে এটি ইমাম বায়হাকীর আল আসমা ওয়াস সিফাত গ্রন্থে বর্ণিত হা/৬৭৬)
👉বিশ্লেষণ:
এখানে নিন্মোক্ত বিষয়গুলো লক্ষণীয়:
- উক্ত দুআটি মারফু সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক শিখানো দুআ নয়।
- এটি কোন সাহাবী কর্তৃক পঠিত কোন দুআ নয়।
- বরং এটি একজন তাবেঈর দুআ। কেননা, কাব আল আহবার সাহাবী নন বরং তাবেঈ। তিনি একজন ইহুদী পণ্ডিত ছিলেন। পরে ইসলাম কবুল করেন।
- এ দুআটি অর্থগতভাবে খু্ব সুন্দর। এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তারপরও এটি সকাল-সন্ধার দুআ হিসেবে অথবা জিন, বদনজর ও যাদু প্রতিরোধের দুয়া হিসেবে আমলযোগ্য নয়। অনুরূপভাবে নিয়ম করে সব সময় তা পড়াও ঠিক নয়। কেননা, আমরা কেবল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক শিখানো দুআ ও জিকিরগুলো নিয়মিত পাঠ করতে নির্দেশিত।
তবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম থেকে প্রায় অনুরূপ একটি দুয়া সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেটি পড়লে উপরের দুআটির আর দরকার থাকে না।
দুআটি হল:
أَعُوذُ بِوَجْهِ اللَّهِ الْكَرِيمِ وَبِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ اللَّاتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَشَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا وَشَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ وَشَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمِنْ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمِنْ طَوَارِقِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ.
উচ্চারণ :
আউযুবি ওয়াজহিল্লাহিল কারিম ওয়া বি কালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাতিল্লাতি লা ইউজাভিযু হুন্না বাররুন ওয়ালা ফাজিরুন।
মিন শাররি মা ইয়ানযিলু মিনাস সামায়ে ওয়া শাররি মা ইয়া’রিজু ফিহা।
ওয়া শাররি মা জারা ফিল আরদি ওয়া শাররি মা ইয়াখরুজু মিনহা।
ওয়া মিন ফিতানিল লাইলি ওয়ান নাহার।
ওয়া মিন ত্বওয়ারিক্বিল লাইলি ওয়ান নাহার।
ইল্লা ত্বা-রিক্বান ইয়াত্বরুক্বু বি খাইরিন ইয়া রহমান।
অর্থ :
“আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আল্লাহর সুমহান সত্তা এবং আল্লাহর ঐ সব পূর্ণাঙ্গ বাক্যের অসিলায় যেগুলোকে অতিক্রম করে যেতে পারে না ভালো-মন্দ কেউই ঐ সব বস্তুর ক্ষতি থেকে যা আকাশ থেকে নেমে আসে এবং ঐ সব জিনিসের ক্ষতি থেকে যা আকাশে উঠে যায়
এবং ঐ সব জিনিসের ক্ষতি থেকে যা জমিনে সৃষ্টি হয় এবং এমন জিনিসের ক্ষতি থেকে যা জমিন থেকে বেরিয়ে আসে।
আরও আশ্রয় প্রার্থনা করছি, দিন-রাতের ফেতনা (বিপর্যয়) থেকে এবং রাত ও দিনে যে সব জিনিস আসে সেগুলোর অনিষ্ট থেকে- তবে যা কল্যাণ বয়ে আনে তা ছাড়া, হে দয়াময়।”
(মুসনাদ আহমদ হা/ ১৫৪৬১, ইবনে আবী শায়বা, হা/২৩৬০১ সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব লিল আলবানী, ২/১৬০২)
কোনও ব্যক্তি যদি রাতে ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, অনিদ্রায় ভোগে বা শয়তানের ষড়যন্ত্র ও ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করে তাহলে এ দুআটি পাঠ করলে আল্লাহ তাকে শয়তানের ষড়যন্ত্র ও ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন। (ইবনুস সুন্নী-আমালুল ইয়ামি ওয়াল লাইল, পৃষ্ঠা নং ৫৩০-আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত)
এ দুআটি পড়ে যাদুগ্রস্থ, জিন আক্রান্ত, বদনজর বা অন্যান্য অসুখের ক্ষেত্রে রুকিয়া বা ঝাড়ফুঁক করা যায়।
তবে এটি সকাল-সন্ধ্যার জিকিরের অন্তর্ভুক্ত নয়।
আল্লাহু আলাম
----------------◄❖►----------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
#abdullahilhadi
0 Comments