Recent Tube

ভাবনার বিষয়: হাদীসে বর্ণিত জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী সম্প্রদায়- আহলে হাদীস কি নাঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

       হাদীস সম্প্রদায় এমন একটি ফিরকা যারা নিজেদের ছাড়া পৃথিবীর সকল মুসলিমকে জাহান্নামী বলে মনে করে। তাদের দাবী একমাত্র তারাই নাজাতপ্রাপ্ত দল। তাদের বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতি ও লিখনীর মাধ্যমে প্রকাশ্যে তারা এ দাবী করে থাকে। কিন্তু ভাবনার বিষয় হলো- একমাত্র আহলে হাদীসই কি নাজাতপ্রাপ্ত দল? না কি (হাদীসে বর্ণিত) জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী ফিরকা? 
     হুযাইফা ইবনু ইয়ামান (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
ْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا. 
জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কিছু স্বভাবের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। (সহীহ বুখারী হাঃ ৭০৮৪)
.
     আহলে হাদীসের অন্যতম বিরাট শায়েখ, তাগুতপন্থী দরবারী আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ যিনি প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন, "অতএব কথাটি আপনি আবারও বিবেচনা করে ভেবে দেখুন। পৃথিবীতে কোন বিদ্যান কোন ইসলামী দলকে মুক্তিপ্রাপ্ত দল বলে কলমে উল্লেখ করেছে- এটা আমার ভাঙাচুরা বিদ্যায় জানা নেই; শুধুমাত্র একটিই দলকে মুক্তিপ্রাপ্ত দল বলে উল্লেখ করেছেন। যেই দলের নাম আহলুল হাদীস।" এই মুক্তিপ্রাপ্ত(?) দলের গডফাদার দরবারী আলেমগঙ মানুষকে আল্লাহর বিধান বর্জন করে তাগুতের কুফুরী ও জুলুমের শাসন মেনে চলতে আহ্বান করে; যারা আল্লাহর বিধান বর্জন করে তাগুতী বিধান দ্বারা রাষ্ট্র শাসন করে তাদের পূর্ণ আনুগত্যের দাওয়াত দেয়। যেমন- দরবারী আলেম স্বয়ং আব্দুর রাজ্জাক নিজেই বলেন,
   "অত্যাচারী শাসকের পূর্ণ আনুগত্য করতে হবে। তার আনুগত্য হতে হাত গুটানো যাবে না। তাকে অপসরণ করার কোন চেষ্টা করা যাবে না।" (কে বড় লাভবান, পৃঃ ১৯১)
.
     অত্যাচারী তথা জালিম শাসকের পরিচয় তুলে ধরে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ.
আর আল্লাহ যা (বিধানসরূপ) নাযিল করেছেন, তার মাধ্যমে যারা শাসন ফয়সালা করবে না, তারাই জালিম। (সূরা মায়িদাঃ৫/৪৫)
.
       অত্যাচারী তথা জালিম শাসকের ভয়ংকর পরিণতির কথা উল্লেখ রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন,
ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪٍ ﺍﺳْﺘَﺮْﻋَﺎﻩُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺭَﻋِﻴَّﺔً، ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺤُﻄْﻬَﺎ ﺑِﻨَﺼِﻴْﺤَﺔٍ، ﺇِﻻَّ ﻟَﻢْ ﻳَﺠِﺪْ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ .
"কোন বান্দাকে যদি আল্লাহ জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণ কামনার সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, (বরং অত্যাচার করে) তাহ’লে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।" (সহীহ বুখারী হাঃ ৭১৫০; সহীহ মুসলিম হাঃ ১৪২)
.
    জালিম শাসকের আনুগত্যের বিধান:
অাল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ أَوْلِيَاءَ ثُمَّ لَا تُنْصَرُونَ.
"আর যারা জুলুম করেছে (জালিম) তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথায় (জাহান্নামের) আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।" (সূরা হুদঃ১১/১১৩)
[এ আয়াতটি শুধু কাফিরদের জন্য নয়; বরং সবার ক্ষেত্রেই ব্যাপক। (দেখুন, ইবনে তাইমিয়া, মাজমু ফাতাওয়া: ১৩/২০৩; মিনহাজুস সুন্নাহ: ৬/১১৭)]
.
       জালিম শাসকের পূর্ণ আনুগত্য করা তো দূরের কথা, এখানে তাদের প্রতি সামান্যতম ঝোঁকা বা আকৃষ্ট হওয়া এবং তাদের প্রতি আস্থা বা সম্মতি জ্ঞাপন করাও হারাম করা হয়েছে। যার চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম। অতএব কথাটি আপনারা বারংবার ভেবে দেখুন- জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী সম্প্রদায় আহলে হাদীস কি না? 
  আমরা জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী আহলে হাদীস সম্পাদনায়ের ফিতনা থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাচ্ছি।
-----------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ, গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা। 

Post a Comment

0 Comments