Recent Tube

বিতিকিচ্ছা- পর্ব-০২

রম্য রচনা-,
সাধূ সাবধানঃ
***********************
নুর মুহাম্মদ চৌধূরী (মুবিন).
দূর্ঘটনা, হত্যা, রাহাজানি,ইত্যাদি নানাপ্রকার অপমৃত্যু সহ দৃশ্যমান ও অদৃশ্য হাজারো সমস্যায় দিশেহারা আজ জাতি। দূর্মুখেরা বলে দুর্ঘটনা সহ এসবের বেশীরভাগ ঘটনাই নাকি পরিকল্পিত!! অর্থাৎ যার নেপথ্যে থাকে উপরতলায় বসে কলকাঠি নাড়ানোয় পারদর্শী একদল সূদক্ষ কারিগর। এতএব ভীতি আজ সর্বত্র বিরাজিত। যত্রতত্র কঁচিদের হাত কঁচলানো আর হম্বিতম্বি দর্শনে পৌঢ়রা আজ আপনা থেকেই আছে হোম কোয়ারান্টাইনে। বাঁশ থেকে নাকি কঁঞ্চি দঢ় হয়ে গেছে। সবাই জানে সমস্যার অনেকটাই কিন্তু এইখানে। রাষ্ট্রে আজ শিক্ষকের কদর নাই, নাই কোন সম্মান। বয়সের তাজিম নাই, সর্বত্র অবহেলা। লাঞ্চনা, বঞ্চনা, গঞ্জনা আর অনাদর নিয়ে সময় পার করতে হয় হাজারো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা বিজ্ঞজনদের। সর্বত্র রাজনীতিকরণ আর দলীয়করণের নিকৃষ্ট প্রয়াস দৃশ্যমান। এতএব অভিঙ্গতার বিশালাকার ঝুলি নিয়ে যারা সমাজে দিক নির্দেশনা দিত -তারা আজ পুরোদস্তুর উপেক্ষিত। শুধু কি তাই? ভয়ঙ্কর সত্য হল প্রতি নিয়তঃই দেশের কোন না কোন স্থানে প্রত্যক্ষ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন এইসব শিক্ষাগুরুরা। এ যেন পুরোদস্তুর একটা মগের মুল্লুক। 
     কোন গন্তব্যে যাচ্ছি আমরা- ভাবতে ভাবতে কপালের ঘাম মুছে নিয়ে বারান্দার গ্রীল ধরে দাঁড়ালেন করিমউল্লাহ। পত্রিকা আর পড়তে মন চাইছে না তার। সামনে একটি ছোট্ট খেলার মাঠ। মাঠের পরই বিশালাকার মহাসড়ক। যে কিনা শত বৎসরের ঘটনা প্রবাহেরর নীরব সাক্ষী হয়ে নিঃশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে। এরই মধ্যে ঘটে গেল দুটি যন্ত্র দানবের মুখোমুখি সংঘর্ষ। যেখানে আহত আছে, হয়তবা নিহতও থাকতে পারে। করিম উল্লাহ ভাবলেন, আহত নিহত যাই থাক -তা তো ঐ সব দরিদ্র, নিঃস পথচারীদেরই কপালে। কারণ ওরা ভাগ্যাহত। কমবক্তের মরণ পথে ঘাটেইতো হবে। বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি হল। মরলো কারা? শুধুই মরবে গরীব আলীরা। এখানে কোন উপর তলার কেউ মারা যাবে না। করিমউল্লাহ্ স্মৃতির পাতায় ভ্রমন শুরু করে দিয়েছেন। তিনি দেখতে পান দুর্ঘটনায় অক্কা পাওয়া দুই দুইজন অর্থমন্ত্রী সরকারে থাকাকালে দুর্ঘটনা তাদের পাশ ঘেষেও যায়নি। মরেছেন সাবেক হয়ে,অর্থাৎ বিরোধী দলীয় নেতা হয়ে। এখানে যে উপরতলার হাত নেই একথা মানতে চায় না অনেকেই। রানা প্লাজা ধ্বংস হল- কোন মন্ত্রী এম পির কিছুই হয়নি, যা হয়েছে গরীব আলীদের। দুই দেশে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শুরু হল, -মরল শুধু গরীব আলীরা। গণীদের কান ঘেষে যায় স্প্রীণ্টার, তবুও না দেয় তারে কিছুটা বুঝবার। ফুস্ করে মরে, আর ধূকে ধূকে বাঁচে যত গরীব আলীরাই। গণীদের ধার ঘেষে থুড়াই আদর দেবে এ সময়টুকু মড়কের নাই। মড়ক তো শুধুই গরীবদেরই কপালে। তবে এবারকার মড়ক বোধহয় শুধু গরীব আলীদের জন্য নয়। 
উপরতলায় দিচ্ছে হানা "দারুণ করোনা"। 
কেউ পায়নি ছাড়। কি সন্ত্রাসী কি বৈরাগী কি মন্ত্রী-মিনিষ্টার। কি রাষ্ট্রনায়ক কি নাগরিক ভেদ না করে সে। মরণ ছোবল দেয় করোনা সকল মঞ্জিলে। তবে দেখা যায় গরীব আলীরা খুব কমই কেয়ার করলো করোনাকে। বিদগ্ধ করিমউল্লাহ মাওলার দরবারে হাত উঠালেন, "হে  আল্লাহ এই অস্বাভাবিক জনবহুল জনপদে আপনি গরীব আলীদের প্রতি করুনা করুন। আর করোনাকে উড়িয়ে নিয়ে যান ইয়াজুজ - মাজুজের মুল্লুকে।" করিমউল্লাহ জানেন তার এ দোওয়া কবুল হবেনা। কারণ সৃষ্টিকর্তাকে পরামর্শ দেয়া সৃষ্টির কার্য নয়। করোনা তার দায়ীত্ব সম্পাদন করেই তবে বিদায় নেবে। যে দায়িত্ব তাকে দিয়েছেন স্বয়ং তার স্রষ্টা। সুতরাং....
"সাধু সাবধান"

Post a Comment

0 Comments