Recent Tube

খেলাফত ও রাজতন্ত্র -১ সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী

    
               খেলাফত ও রাজতন্ত্র 
                        ১ম পর্ব,


অনুবাদঃ গোলাম সোবহান সিদ্দিকী

খেলাফত সম্পর্কে খোলাফায়ে রাশেদীন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর সাহাবীদের সবর্সম্মত মত এই ছিল যে, খেলাফত একটা নির্বাচন ভিত্তিক পদ্ধতি। মুসলমানদের পারস্পারিক পরামর্শ এবং তাদের স্বাধীন মতামত প্রকাশের মাধ্যমেই তা কায়েম করতে হবে। বংশানুক্রমিক বা বল প্রয়োগের দ্বারা ক্ষমতায় অধিষ্টিত কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব তাঁদের মতে খেলাফত নয় বরং তা বাদশাহী-রাজতন্ত্র। খেলাফত এবং রাজতন্ত্রের যে স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ধারণা সাহাবায়ে কেরামগণ পোষণ করতেন, হযরত আবু মূসা আশআরী (রাঃ) তা ব্যক্ত করেন নিন্মোক্ত ভাষায়ঃ

‍‌”এমারত (অর্থাৎ খেলাফত) হচ্ছে তাই, যা প্রতিষ্ঠা করতে পরামর্শ নেয়া হয়েছে, আর তরবারীর জোরে যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা হচ্ছে বাদশাহী বা রাজতন্ত্র।”

প্রথম অধ্যায়ঃ

কুরআনের রাজনৈতিক শিক্ষা

একঃ বিশ্ব-প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা,

বিশ্ব-প্রকৃতি সম্পর্কে কুরআনের মৌলিক চিন্তাধারার উপরই রাজনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠিত। কুরআনের রাজনৈতিক মতবাদ সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে হলে তা অবশ্যই সামনে রাখতে হবে। রাজনৈতিক দর্শনের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব-প্রকৃতি সম্পর্কে কুরআনের চিন্তাধারা পর্যালোচনা করলে নিন্মোক্ত ধারাগুলো আমাদের চোখের সামনের ভেসে ওঠেঃ

(ক) সমগ্র বিশ্ব-জাহান, মানুষ এবং বিশ্ব-জাহানে যে বস্তুরাজি দ্বারা উপকৃত হয়, আল্লাহ তায়ালা সে সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা।

وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ بِالْحَقِّ
– এবং তিনিই আসমান যমীনকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন।
সূরা আনআমঃ ৭৩

قُلِ اللّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
– বল, আল্লাহ সকল বস্তুর সষ্টা, আর তিনিই একক, মহা-প্রতাপশালী।
সূরা রাদঃ ১৬

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالاً كَثِيرًا وَنِسَاء
– লোক সকল! তোমাদের সে রবকে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে এক আত্মা থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া, আর এতদোভয় থেকে তিনি অসংখ্য নারী-পুরুষ ছড়িয়ে দিয়েছেন।  আন-নিসাঃ ১

هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعاً
– তিনিই সেই সত্বা, যিনি তোমাদের জন্য যমীনের সমূদয় বস্তু সৃষ্টি করেছেন।
সূরা বাকারাঃ ২৯

هَلْ مِنْ خَالِقٍ غَيْرُ اللَّهِ يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالْأَرْضِ
– আল্লাহ ছাড়া এমন কোন স্রষ্টা আছে কি, যে আসমান-যমীন থেকে তোমাদেরকে রিয্ক (জীবিকা) দান করে?- আল-ফাতিরঃ ৩
------------------------------------------------  

-তোমরা কি ভেবে দেখেছো? তোমরা যে শুত্রপাত করো তা থেকে শিশু তোমরা জন্ম দাও, না আমি তার জন্মদাতা? …. তোমরা কি চিন্তা করেছো? এই যে তোমরা বীজ বপন করো, তা তোমরা উৎপাদন করো, না আমি তার উৎপাদক? ……… তোমরা কি চিন্তা করেছো? তোমরা যে পানি পান করো, মেঘমালা থেকে তোমরা তা বর্ষণ করো, না আমি তার বর্ষণকারী? ……. তোমরা কি চিন্তা করে দেখেছো? তোমরা যে আগুন জ্বালো, তার বৃক্ষ তোমরা সৃষ্টি করেছো? না আমিই তার স্রষ্টা? – আল-ওয়াকিয়াঃ ৫৮-৭২

لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمَا تَحْتَ الثَّرَى
    আসমান-যমীন, এতদোভয়ের মধ্যস্থল এবং মাটির গভীর তলদেশে যা কিছু আছে, সমস্তই তাঁর।-ত্বা-হাঃ৬

(খ) তাঁর সৃষ্টি এ বিশ্বের মালিক, পালক, নিয়ন্ত্রক, এবং পরিচালকও আল্লাহ তায়ালা-ইঃ

وَلَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ كُلٌّ لَّهُ قَانِتُونَ
-আসমান-যমীনে যা কিছু আছে, সব কিছুই তাঁর। সব কিছুই তাঁর ফরমানের অনুগত।
সূরা রুমঃ ২৬

وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ تَبَارَكَ اللّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
-চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারকা তিনি সৃষ্টি করেছেন, সবই তাঁর নির্দেশে নিয়ন্ত্রিত। সাবধান! সৃজন এবং কর্তৃত্ব তাঁরই। আল্লাহ সারা জাহানের মালিক-পরওয়ারদেগার, একান্ত বরকতের অধিকারী।
সূরা আরাফঃ ৫৪

يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاء إِلَى الْأَرْضِ
-আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত দুনিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালনা তিনিই করেন।
সূরা সাজদাঃ ৫

(গ) এ বিশ্ব-জগতে সার্বভৌমত্ব (Sovereignty) একমাত্র আল্লাহ তায়ালার, আর কারো তা নেই, হতেও পারে না। সার্বভৌমত্বে তাঁর অংশীদার হওয়ার অধিকারও নেই কারোঃ

أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ
-তুমি কি জাননা যে, আসমান-যমীনের রাজত্ব আল্লাহর?
সূরা বাকারাঃ ১০৭

وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ 
-এবং রাজত্বে তাঁর কোন শরীক নেই। -আল-ফোরকানঃ২

لَهُ الْحَمْدُ فِي الْأُولَى وَالْآخِرَةِ وَلَهُ الْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
-দুনিয়া-আখেরাতের সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য; হুকুম দেয়ার ইখতিয়ার কেবল তাঁরই আছে। তোমরা তাঁর নিকটেই ফিরে যাবে।
সূরা কাসাসঃ ৭০

إِنِ الْحُكْمُ إِلاَّ لِلّهِ
  আল্লাহ ছাড়া আর কারো ফায়সালার ইখতিয়ার নেই।
সূরা আনআমঃ ৫৭

مَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
-তিনি ছাড়া বান্দাদের আর কোন ওলী-পৃষ্ঠপোষক নেই। আপন নির্দেশে তিনি কাউকে শরীক করেন না। 
সূরা আল-কাহাফঃ ২৬

يَقُولُونَ هَل لَّنَا مِنَ الأَمْرِ مِن شَيْءٍ قُلْ إِنَّ الأَمْرَ كُلَّهُ لِلَّهِ
-তারা বলে, আমাদের ইখতিয়ারের মধ্যে কিছু আছে কি? বল, ইখতিয়ার সর্বতোভাবে আল্লারই। 
সূরা আলে-ইমরানঃ ১৫৪

لِلَّهِ الْأَمْرُ مِن قَبْلُ وَمِن بَعْدُ
-ইখতিয়ার আল্লারই হাতে-শুরুতেও এবং শেষেও। 
সূরা আর-রুমঃ ৪

لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَإِلَى اللَّهِ تُرْجَعُ الأمُورُ
-আসমান যমীনের বাদশাহী তাঁরই। সমূদয় ব্যাপার তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়।
সূরা আল-হাদীদঃ ৫

أَفَمَن يَخْلُقُ كَمَن لاَّ يَخْلُقُ أَفَلا تَذَكَّرُونَ
-যে পয়দা করে, সে কি তার মতো হতে পারে, যে পয়দা করে না? তোমরা কি চিন্তা করো না?
সূরা আন-নাহালঃ ১৭

أَمْ جَعَلُواْ لِلّهِ شُرَكَاء خَلَقُواْ كَخَلْقِهِ فَتَشَابَهَ الْخَلْقُ عَلَيْهِمْ
-তারা কি আল্লাহর জন্য এমন কিছু শরীক বানিয়েছে, যারা আল্লাহর মতো কিছু সৃষ্টি করেছে? যাতে সৃষ্টির ব্যাপারটি তাদের কাছে সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছে।
সূরা আর-রাআ’দঃ ১৬

-বল, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তোমরা (রব হিসেবে) ডাকো, তোমাদের সে সব কল্পিত শরীকদেরকে তোমরা কি কখনো দেখেছো? আমাকে দেখাো, যমীনে তারা কী সৃষ্টি করেছে? অথবা আসমানে তাদের কোন অংশ আছে? …….. মূলত আল্লাহ-ই আসমান যমীনকে বিচ্যুতি থেকে আটকে রেখেছেন। আর যদি তা বিচ্যুত হতে থকে তাহলে তিনি ব্যতীত এমন কেউ নেই, যে তাকে সামলে রাখতে পারে।
সূরা ফাতেরঃ ৪০-৪১

(ঘ) সার্বভৌমত্বের সকল গুণ-বৈশিষ্ট্য, সকল ক্ষমতা-ইখতিয়ার কেবলমাত্র আল্লার সত্তাতেই কেন্দ্রীভূত। এ বিশ্ব-চরাচরে অন্য কেউ এমন গুণ-বৈশিষ্ট্য এবং ক্ষমতা-ইখতিয়ারের অধিকারী আদৌ নেই। তিনি সকলের ওপর পরাক্রমশালী, তিনি সব কিছুই জানেন, ত্রুটি-বিচ্যুতি মুক্ত তিনি। সকলের নেগাহবান, রক্ষক। সকলের নিরাপত্তা বিধায়ক। চিরঞ্জীব, সদাজাগ্রত, সকল বস্তু-নিচয়ের ওপর ক্ষমতাবান। সকল ক্ষমতা ইখতিয়ার তাঁর হাতে নিবদ্ধ। সমুদয় বস্তু ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় তাঁরই ফরমানের অনুগত। কল্যাণ-অকল্যাণ সবকিছুই তাঁর ইখতিয়ারভুক্ত। তিনি ব্যতীত এবং তাঁর অনুমতি ব্যতীত কেউ কারো ক্ষতি করতে পারে না; পারে না কোন উপকার করতে। তাঁর অনুমতি ছাড়া কেউ তাঁর সামনে সুপারিশ পর্যন্ত করতে পারে না। তিনি যাকে চান, পাকড়াও করেন, যাকে খুশী ক্ষমা করেন। তাঁর নির্দেশের ওপর পুনরুক্তি করতে পারেন এমন কেউ নেই। তাঁকে কারো সামনে জবাবদিহি করতে হয় না, কৈফিয়ত দিতে হয় না। সকলেই তাঁর সামনে জবাবদিহি করতে বাধ্য। তাঁর নির্দেশ কার্যকর হয়েই থাকে। তাঁর নির্দেশ রদ করতে পারে এমন ক্ষমতা কারুর নেই। সার্বভৌমত্বের এ সকল গুণ-বৈশিষ্ট্য কেবল আল্লার জন্য নির্দিষ্ট। এতে কেউই তাঁর শরীক-অংশীদার নেইঃ

وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ وَهُوَ الْحَكِيمُ الْخَبِيرُ
-তিনিই তো তাঁর বান্দাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতার অধিকারী-কর্তৃত্বের মালিক। তিনি মহাজ্ঞানী, সকল বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত। 
সূরা আল-আনআমঃ ১৮

عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ
-প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল বিষযের জ্ঞাতা মহান, বিপুল মর্যাদার অধিকারী। 
সূরা রাআ’দঃ ৯

الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ
-রাজ্যাধিপতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি মুক্ত। ভুল ভ্রান্তি মুক্ত, শান্তি-নিরাপত্তা দাতা, হেফাজতকারী, প্রতাপশালী, শক্তিবলে নির্দেশ জারিকারী, বিপুল মহিমার অধিকারী, মহত্বের মালিক।
সূরা হাশরঃ ২৩

الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ
-তিনি চিরঞ্জীব, আপন ক্ষমতাবলে উদ্ভুত। নিদ্রা-তন্দ্রা কিছুই তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান-যমীনে যা কিছু আছে, সবই তাঁর। তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর সামনে সুপারিশ করতে পারে, এমন কে আছে? যা কিছু মানুষের সামনে আছে, তাও তিনি জানেন; আর যেসব বিষয় তাদের নিকট প্রচ্ছন্ন তাও তিনি পরিজ্ঞাত। 
সূরা আল-বাকারাঃ ২৫৫

تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
-সকল বরকত-মহিমা সে মহান সত্তার, বাদশাহী যাঁর হাতে। তিনি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। 
সূরা আল-মূলকঃ ১

بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
-সমুদয় বস্তুর ইখতিয়ার তাঁর হাতে। তোমাদেরকে তাঁর নিকটেই ফিরে যেতে হবে।
সূরা ইয়াসিনঃ ৮৩

وَلَهُ أَسْلَمَ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا
-আসমান-যমীনে বসবাসকারী সকলেই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় তাঁরই নির্দেশের অনুগত।
সূরা আলে ইমরানঃ ৮৩

وَلاَ يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ إِنَّ الْعِزَّةَ لِلّهِ جَمِيعًا هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
-সকল ক্ষমতা তাঁরই হাতে ন্যাস্ত। তিনি সব কিছু শোনেন, জানেন। 
সূরা ইউনুসঃ ৬৫

قُلْ فَمَن يَمْلِكُ لَكُم مِّنَ اللَّهِ شَيْئًا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا
-বল, আল্লাহ যদি তোমাদের ক্ষতি করতে চান, তাহলে তা থেকে তোমাদেরকে সামান্য পরিমাণ বাঁচাবার ক্ষমতা কার আছে? অথবা তিনি যদি তোমাদের উপকার করতে চান (তা হলে কে তাকেঁ বাধা দিতে পারে?)।
সূরা আল-ফাতহঃ ১১

وَإِن يَمْسَسْكَ اللّهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ وَإِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلاَ رَآدَّ لِفَضْلِهِ يُصَيبُ بِهِ مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
-আল্লাহ যদি তোমাদের ক্ষতি করেন, তবে তিনি ছাড়া আর কেউ তা দূর করার নেই। আর তিনি যদি তোমাদের মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহ ফিরিয়ে দেয়ার কেউ নেই। নিজের বান্দাদের মধ্যে থেকে তিনি যাকে চান, অনুগ্রহ করেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
সূরা ইউনুসঃ ১০৭

وَإِن تُبْدُواْ مَا فِي أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ اللّهُ فَيَغْفِرُ لِمَن يَشَاء وَيُعَذِّبُ مَن يَشَاء وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
-তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর বা গোপন রাখ, আল্লাহ তার হিসাব নেবেন; অতঃপর যাকে ইচ্ছা মাফ করেন, যাকে খুশী শাস্তি দেন। আল্লাহ সকল বিষয়ে ক্ষমতা বান। সূরা বাকারাঃ ২৮৪

أَبْصِرْ بِهِ وَأَسْمِعْ مَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ أَحَدًا
তিনি পূর্ণমানের শ্রোতা ও দ্রষ্টা। তিনি ছাড়া বান্দাদের কোন ওলী-পৃষ্ঠপোষক নেই। তিনি স্বীয় নির্দেশে কাউকে শরীক করেন না।
সূরা আল-কাহাফঃ ২৬

قُلْ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ اللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا
-বল, কেউ আমাকে আল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। তিনি ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়স্থলও পেতে পারি না। 
সূরা আল-জ্বিনঃ ২২

وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ
-তিনি আশ্রয় দান করেন, তাঁর মুকাবিলায় কোনো আশ্রয় দেয়া যায় না। 
সুরা মুমিনুনঃ ৮৮

إِنَّهُ هُوَ يُبْدِئُ وَيُعِيدُ. وَهُوَ الْغَفُورُ الْوَدُودُ. ذُو الْعَرْشِ الْمَجِيدُ. فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيدُ
-তিনিই সুচনা করেন, তিনিই পুনরুত্থান করেন। তিনি ক্ষমা, মার্জনাকারী। তিনি ভালবাসেন। রাজ্য-সিংহাসনের মালিক, মহান তিনি। তিনি যা ইচ্ছা তা করেন। 
সূরা আল-বুরুজঃ ১৩-১৬

وَاللّهُ يَحْكُمُ لاَ مُعَقِّبَ لِحُكْمِهِ
-নিঃসন্দেহে আল্লাহ ফায়সলা করেন। তাঁর ফায়সলা পূনর্বিবেচনা করার কেউ নেই। 
সূরা আর-রাআদঃ ৪১

لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ
-তিনি যা কিছু করেন, তার জন্য তাঁকে কারো সামনে জবাবদিহি করতে হয় না। অন্য সকলকেই তাঁর সামনে জবাবদিহি করতে হয়। 
সূরা আল-আম্বিয়াঃ ২৩

ا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَلَن تَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا
-তাঁর ফরমান পরিবর্তন করার কেউ নেই। তাঁর মুকাবিলায় তুমি কোন আশ্রয়স্থল পাবে না। 
সূরা আল-কাহাফঃ ২৭

أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ
-আল্লাহ কি সব শাসনকর্তার বড় শাসনকর্তা নন? 
সূরা আত-তীনঃ ৮

قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزُّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
-বল, হে খোদা! রাজ্যাধিপতি! যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান করো; আর যার কাছ থেকে খুশী, রাজ্য ছিনিয়ে নাও। যাকে খুশী সম্মান দাও, যাকে খুশী অপমান কর। সকল কল্যাণ তোমার ইখতিয়ারাধীন। তুমি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। 
সূরা আলে-ইমরানঃ ২৬

إِنَّ الأَرْضَ لِلّهِ يُورِثُهَا مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ
-বস্তুত যমীন আল্লার। আপন বান্দাদের মধ্য হতে যাকে চান, তাঁর উত্তরাধিকারী করেন। 
সূরা আল-আরাফঃ ১২৮

চলবে........

Post a Comment

0 Comments