Recent Tube

স্বঘোষিত ও কথিত আহলে হাদিসের স্বরুপ জানতে হলে পড়তে হবে; ইবনে যুবাইর।

স্বঘোষিত ও কথিত আহলে হাদিসের স্বরুপ জানতে হলে পড়তে হবে। 

  তথাকথিত আহলে হাদিসের শায়খগণ ও তাদের অনুসারীরা ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী একযোগে ৫০০ বোমা ফাটিয়ে প্রচারপত্রে বলেছিল, তারা এ দেশে ‘আল্লাহর আইন’ বা শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায়।তখন জিহাদ করা ফরজ হলে এখন কেন নয় ? সেসময় কি তারা সরকারের অনুমতি নিয়ে একযোগে ৬৪ জেলায় বোমা ফাটিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল?

  হরকাতুল জিহাদের (হুজি-বি) জন্মের এক দশক পর ১৯৯৮ সালে জন্ম নেয় জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবি। দ্বিতীয় পর্যায়ের এই জঙ্গি সংগঠনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সালাফি মতাদর্শী উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে।
জেএমবি সাড়ে চার বছরে (সেপ্টেম্বর ২০০১ থেকে ডিসেম্বর ২০০৫) দেশে ২৬টি হামলা চালায়। এসব ঘটনায় ৭৩ জন নিহত এবং প্রায় ৮০০ জন আহত হন। একই সময়কালে হরকাতুল জিহাদও (হুজি-বি) বেশ কয়েকটি নাশকতামূলক হামলা চালায়। সব মিলিয়ে তখন দেশে এক ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।

পাকিস্তান-আফগানিস্তানকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হুজি ও জেএমবির মধ্যে ধর্মীয় মাজহাবগত পার্থক্য রয়েছে। হুজি সদস্যরা ছিলেন হানাফি মাজহাবের এবং দেওবন্দ ধারার কওমি মাদ্রাসা থেকে লেখাপড়া করা। আর জেএমবির সদস্যরা বেশির ভাগ এসেছেন মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে থাকা মাদ্রাসা থেকে এবং আহলে হাদিস ধারার মাদ্রাসা থেকে। জেএমবির নেতা-কর্মীরা সবাই এসেছেন আহলে হাদিস বা ‘লা মাজহাবি’ (মাজহাববিরোধী) ধারা থেকে। প্রতিষ্ঠাকালীন শীর্ষ নেতাদের একজন মো. ফারুক হোসেন ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ ছিলেন হানাফি মাজহাবের এবং সাবেক হুজি সদস্য। তিনি জেএমবিতে আসার আগে আহলে হাদিস মতাদর্শ গ্রহণ করেন।
আহলে হাদিস ধারাটি আগে ‘ওহাবি’ নামে বেশি পরিচিত ছিল। মধ্যপ্রাচ্যসহ বহির্বিশ্বে এরা সালাফি হিসেবে পরিচিত। ধারাটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হলেও মধ্যপ্রাচ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ। সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে সালাফি ধারার ‘জিহাদি’ সংগঠন প্রতিষ্ঠার ধারণা পান বা আগ্রহী হন জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত শায়খ আবদুর রহমান।

জেএমবির লক্ষ্য রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা। 
 তারা ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী একযোগে ৫০০ বোমা ফাটিয়ে প্রচারপত্রে বলেছিল, তারা এ দেশে ‘আল্লাহর আইন’ বা শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায়।

জেএমবিকে ‘হোমগ্রোন’ বা দেশজ সংগঠন বলা হলেও শুরু থেকেই এর প্রতিষ্ঠাতা শায়খ রহমানের লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের সহযোগিতা নিয়ে এ দেশে সশস্ত্র লড়াইয়ের ক্ষেত্র তৈরি করা। এর মধ্যে পাকিস্তান, ভারত ও যুক্তরাজ্যকেন্দ্রিক সালাফি মতাদর্শের একাধিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ স্থাপনও করেছিলেন। নিজে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন পাকিস্তানে জঙ্গিদের একটি আস্তানায়। গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় তিনি এর বিস্তারিত বিবরণ দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।

২০০৬ সালের ২ মার্চ গ্রেপ্তার হওয়ার পর 
বিশ্বজুড়ে জিহাদি কর্মকাণ্ড পরিব্যাপ্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশেও ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হিসেবে জিহাদকে বেছে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করি। পড়াশোনা শেষে বাংলাদেশে ফিরে এসে জামায়াতে ইসলামীর কার্যপদ্ধতি তথা গণতান্ত্রিক রাজনীতির সঙ্গে আমার নীতিগত পার্থক্যের কারণে আমি তাদের সঙ্গে একাত্ম হতে না পেরে আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশে ইসলামিক আইন কায়েমের জন্য আলাদা জিহাদি সংগঠন তৈরির পরিকল্পনা করি।’

জেএমবি প্রতিষ্ঠার আগে শায়খ আবদুর রহমান ১৯৯৫ সালে হরকাতুল জিহাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। জবানবন্দিতে তাঁর ভাষ্য ছিল এমন—‘প্রাথমিকভাবে আমার হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ধর্মীয় মতাদর্শগত, বিশেষত মাজহাবি পার্থক্যের কারণে আমি হরকাতুল জিহাদ সংগঠনের সঙ্গে কাজ করার প্রাথমিক চিন্তাধারা থেকে সরে এসে নিজস্ব দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিই।’

সংগঠন তৈরির প্রস্তুতিপর্বে শায়খ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ভারতের জঙ্গিনেতা আবদুল করিম টুন্ডার সঙ্গে। শায়খ রহমানের ভাষ্য অনুযায়ী, তখন ঢাকার যাত্রাবাড়ী আহলে হাদিস মতাদর্শের বড় মাদ্রাসার পাশে একটি ছাত্র মেসকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করতেন পাকিস্তানের ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার নেতা টুন্ডা। ১৯৯৭ সালের শেষের দিকে টুন্ডার ব্যবস্থাপনায় বিমানযোগে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে যান শায়খ রহমান। এরপর তাঁকে লাহোরে অবস্থিত মার্কাজ আদ-দাওয়া ওয়াল ইরশাদের (পাকিস্তানের একটি আহলে হাদিস সংগঠন এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার মাতৃসংগঠন) প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যান টুন্ডা। সেখান থেকে পরে মুজাফফরাবাদে গিয়ে লস্কর-ই-তাইয়েবার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ২০ দিন অস্ত্র, বিস্ফোরক, রণকৌশল ও গোপনীয়তা রক্ষার কৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনিসংগঠন তৈরি: জবানবন্দিতে শায়খ রহমান বলেছেন, ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাসে জেএমবি প্রতিষ্ঠা করেন আবদুর রহমান। ২০০২ সালের প্রথম দিকে আবার পাকিস্তানে যান তিনি। সেখানে লস্কর-ই-তাইয়েবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুস সালাম ভাট্টিসহ অন্যান্য নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন তাঁদের জেএমবির গঠনতন্ত্র, লক্ষ্য ও কর্মসূচিসংবলিত আরবিতে লেখা চার পৃষ্ঠার একটি লিখিত পুস্তিকা দেন শায়খ রহমান। ওই পুস্তিকায় বাংলাদেশে কেন কিতাল বা জিহাদ প্রয়োজন, তার কারণ উল্লেখ করা হয়। কারণগুলো হলো ১. বাংলাদেশে ইসলামি হুকুমত কায়েম নেই, ২. ভারতের আগ্রাসী মনোভাব, ৩. বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভারতের তৎপরতা, ৪. সারা দেশে বিভিন্ন পশ্চিমা মিশনারির ইসলামবিরোধী কর্মকান্ড।(Epromalo 05 Aghast 2016) |

চারদলীয় জোট সরকারকে বেকায়দা ফেলতে আসাদুল্লাহ আল গালিবদের ছিল যত অপতৎপরতা।
সেসময় হঠাৎ করেই ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের নামে শুরু করেন নিরীহ মানুষের জীবন আর রক্ত নিয়ে হোলি খেলা।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে পাল্টে যায় দৃশ্যপট।আবার হঠাৎ করেই সেজে গেলেন দরবেশ।
চার দলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় মুফতি আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম (বাংলা ভাই)-এর নেতৃত্বে জামাআতুল মুজহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি)-এর আর্বিভাব হয়েছিল। ওই এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি নির্মূলের নামে তারা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল। জেএমবির আমির আব্দুর রহমান এবং বাংলাভাইও ছিলেন আহলে হাদিস মতাদর্শী। আর সে সময় আসাদুল্লাহ গালিব ছিলেন আহলে হাদিসের আমির। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জেএমবি দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে ৫০০ বোমা ফাটিয়ে দেশে ইসলামি শাসন কায়েমের হুমকি দিলে তৎকালীন সরকার দেশ- বিদেশে সমালোচনা ও চাপের মুখে পড়ে আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাইসহ অন্যান্য সহযোগিদের গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে বিচারে তাদের ফাঁসি হয়।
ড গালিগকে জোট সরকারের আমলে পুলিশ গ্রেফতার করল , মুক্তি দিল আওয়ামী লীগ।
দরবেশ খ্যাত সালামান এফ রহমান এখন আহলে হাদিসের উপদেষ্টা।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments