Recent Tube

বুকের উপর হাত বাধা সকল হাদীস দুর্বল (পর্ব ২) মুহাম্মাদ তানজিল ইসলাম।




 
বুকের উপর হাত বাধা সকল হাদীস দুর্বল (পর্ব ২)
হাদীস নং ০২:
হযরত হুলব রা. থেকে বর্ণিত:
  
       আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর হাত তাঁর বুকের উপর রাখতে দেখেছি। ইয়াহইয়া (ইবনে সাঈদ আল কাত্তান) এর বিবরণ দিয়েছেন: ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর।
তাহকীক:এই হাদীসে দুইজন বর্ণনাকারী আছেন যাদের উপর আপত্তি উঠানো যায়।
১.কাবীসাহ বিন হুলব মাকবুল(একক ভাবে দুর্বল তবে শাওয়াহেদের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য।)
তবে শাইখ যুবাঈর আলী যাঈ রহ তাকে হাসানুল হাদীস বানানোর চেষ্টা করেছেন।তাই প্রথমে সেটা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
তিনি লিখেছন,
১.ইমাম ইবনে হিব্বান শক্তিশালী বলেছেন। (কিতাবুছ ছিকাত, ৫/৩১৯, রাবী নং ৫০৩১)
২.ইমাম ইজলী তাকে ছিক্বাহ বলেছেন। (তারিখুছ ছিকাত, রাবী নং ১৫১২)  
৩.ইমাম তিরমিযী তার সুনানে তার হাদীসকে (হা/২৫২) হাসান বলেছেন। 
৪.ইমাম আবু দাউদ তার হাদীসের ব্যাপারে চুপ থেকেছেন।(সুনানে আবু দাউদ,৪/১৪৭,হা/৩৭৮৪)
৫.ইমাম বাগাভী তার বর্ণিত হাদীছকে হাসান বলেছেন। (বাগাভী, শারহুস সুন্নাহ, হা/৫৭০) ৬.ইমাম ইবনে আবদিল বার তার বর্ণিত হাদীছকে ছহীহ বলেছেন। (ইবনে আবদিল বার, আল-ইসতিআ’ব, হাদীস নং ২৭১০) 
৭.ইমাম নববী রহ তার বর্ণিত হাদীছের সানাদ কে সহীহ বলেছেন। (আল-মাজমূ’ শারহুল মুহাযযাব, ৩/৪৯০)
জবাব:প্রথমত,আমি বলব কাবীসা বিন হালবের তাওসীক প্রমাণিত শুধু ইবনে হিব্বান রহ ও ইমাম ইজলী রহ হতে।
দ্বিতীয়ত,কোন মুহাদ্দিস যদি কোন হাদীসকে সহীহ বা হাসান বলেন তাহলে এটা কি ওই হাদীসে বিদ্যমান সকল রাবীর তাওসীক বলে গণ্য হবে?
এর উত্তর দিয়েছেন,স্বয়ং যুবাইর আলী যাঈ রহ, তিনি বলেন,কোন রাবীর মুনফারিদ রেওয়াত কে সহীহ অথবা হাসান বলা হলে, ওই রাবীর জন্য এটা তাওসীক বলে গণ্য হবে।(নুরুল আইনাইন পৃ.৫২৬)
অর্থাৎ ইমাম তিরমিযি,ইমাম নববী,ইমাম ইবনে আব্দুল বার,ইমাম বাগাবী কাবিসা বিন হালব এর যে হাদীসকে সহীহ বা হাসান বলেছেন সেটা কি তার একক বর্ণনা?
প্রথমত হাদীসটি দেখে নিই,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন। তিনি ডান হাত দ্বারা বাম হাত চেপে ধরতেন।( তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং ২৫২;বাগাভী, শারহুস সুন্নাহ, হা/৫৭০;আল-ইসতিআ’ব,হাদীস ২৭১০;আল-মাজমূ’ শারহুল মুহাযযাব, ৩/৪৯০)
স্বাবাভিক ভাবে যে কেউ ই বুঝবে এটা কাবিসা বিন হুলবের একক বর্ণনা না,স্বয়ং যুবাইর আলী যাঈ রহ তার বইয়ে নামাযে "ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা" উপর আরো ৬ টি হাদীস বর্ণনা করেছেন,সুতরাং এটা কাবিসা বিন হুলবের একক বর্ণনা না তাই যে সকল মুহাদ্দিস এই হাদীসকে সহীহ বা হাসান বলেছেন তা দ্বারা কাবিসা বিন হুলবের তাওসীক প্রমাণিত হয় না।
ইমাম আবু দাউদ রহ যে হাদীসের ব্যাপারে চুপ ছিলেন সেই হাদীস ইমাম তিরমিযি রহ ও উল্লেখ করেছেন এবং হাদীস উল্লেখ করে লিখেন,
ওয়াহাব ইবনু জারীর বলেন, (অনুরূপ)শুবা সিমাক হতে, তিনি মুরাই ইবনু কাত্বারী হতে, তিনি আদী ইবনু হাতিম হতে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।(সুনানে তিরমিযি হা.নং ১৫৬৫)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে,এটাও কাবিসা এর একক বর্ণনা না,তাই এক্ষেত্রে আবু দাউদ হতেও তার তাওসীক প্রমাণিত না।
সুতরাং এটাই যর্থার্থ যে,ইমাম তিরমিযি,ইমাম আবু দাউদ,ইবনে আব্দুল বার,ইমাম নববী ও ইমাম বাগাবী থেকে কাবিসা বিন হালবের তাওসীক প্রমাণিত না।
মোট কথা শুধু ইবনে হিব্বান রহ ও ইমাম ইজলী রহ থেকেই কাবিসা বিন হুলবের তাওসীক প্রমাণিত।
১.ইমাম ইজলী রহ এর তাওসীকের জবাব:
আহলে হাদীসদের মতে ইমাম ইজলী রহ শৈথিল্যবাদী মুহাদ্দিস।যে সকল আহলে হাদীস আলেম তাকে শৈথল্যবাদী বলেছেন তাদের তালিকা:
1.শায়েখ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ (ইরওয়ালুল গালীল খ.৫,পৃ.২৮৯)
২.শায়েখ আব্দুর রহমান মুয়াল্লামি আল ইয়ামানি রহ (আনওয়ারুল কাশিফ খ.১,পৃ.১০৮) তিনি আরো বলেন,বিশেষ করে তাবেঈদের মধ্যে যিনি মাজহুল উনি তাদেরকেও সিকাহ বলেন।
৩.সালাফি আলেম আবু ইসহাক আসরি (নাসলুল বাব মাজমু'আ রিজালে হুওয়াইনি পৃ.৪৬,৩৯৩,৪০৮,৪৯৭)
৪.সালাফি আলেম শায়েখ মুকবিল ইবনে হাদী(আল দুররুর ফি মাসায়েল আল মুসতালাহ ওয়াল আছার পৃ.২০,৪৬,৪৭,১৮৭)তিনি আরো বলেন,মাম ইজলী রহ মাজহুলের তাওসীকে শৈথ্যল্যবাদী ছিলেন।(তাহকীক মুস্তাদারক আল হাকেম খ.১,পৃ.৫২৫)
৫.যাকারিয়া গোলাম কাদির পাকিস্তানি(তানকীহ আল কালাম পৃ.৩৪৫)
৬.সালাফি আলেম ড.কাসিম আল সাদ (ইমাম নাসাঈ রহ এর মানহাজের উপর লিখিত কিতাব পৃ.১৫২১)
৭.সালাফি আলেম ড. আকরাম জিয়া উমরি (আল বুহুসুন ফি তারিখে সুন্নাতি পৃ.১১৮)
৮.মুহাম্মদ নুয়াইম আল আরকাউসি (মুসনাদে আহমদ রিসালা খ.৬,পৃ.২৪৮)
৯.ইবরাহীম যাইবাক (মুসনাদে আহমদ রিসালা খ.৬,পৃ.২৪৮)
১০.মাওলানা আব্দুল রউদ সিন্ধু (আল কওল আল মাকবুল পৃ.২৭২)
১১.শায়েখ আবু আব্দুর রহমান (মাশহুর ওয়াকিয়াত কি হাকীকাত পৃ.৯২,৯৩)
১২.সালাফি আলেম ড. হাতিম শরীফ আল আওনি (ইযযাত আল বাহাশিয়া ফি উলুম সুন্নাহ পৃ.৬৮,৮৫)
১৩.শায়েখ আব্দুল আযিয বিন আব্দুল লতিফ (জাওয়াবাত জারহু ওয়াত তাদীল পৃ.৬৫)
১৪.আর আহলে হাদীস আলেম শায়েখ আব্দুল আলিম আব্দুল আযিম টিকায় লিখেন,
ইমাম ইজলী রহ সাদূক এবং তার নিচের স্তরের রাবীকে সিকাহ বলেন।
আর যে রাবী যঈফ বা মাতরুক তার ক্ষেত্রে শুধু যঈফ বলেন।
আর যে রাবী মাজহুল কিন্তু তার থেকে একজন হাদীস বর্ণনা করেন তাকে ও সিকাহ বিলেন।
(তাহকীক কিতাবু মারিফাত আল সিকাত খ.১,পৃ.১২৫-১২৭)
সুতরাং আহলে হাদীস ও সালাফী আলেমদের থেকে তিনটি বিষয় প্রমাণিত।
১.তিনি শৈথল্যবাদী।
২.তিনি মাজহুল তাবেঈদের সিকাহ বলেন।
৩.যে সকল মাজহুল থেকে একজন মাত্র বর্ণনা করেন তাদের ও সিকাহ বলেন।
আশা করি,এর পরে আরও আহলে হাদীসরা ইমাম ইজলী রহ এর কওল ব্যবহার করবেন না।

২.ইমাম ইবনে হিব্বান রহ এর তাওসীকের জবাব:
আহলে হাদীসদের মতে ইবনে হিব্বান রহ ও শৈথিল্যবাদী মুহাদ্দিস।যে সকল আহলে হাদীস আলেম তাকে শৈথল্যবাদী বলেছেন তাদের তালিকা:
১.শায়েখ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহ (ইরওয়ালুল গালীল খ.৩,পৃ.৩০৯)
২.শায়েখ আবু আব্দুর রহমান (মাশহুর ওয়াকিয়াত কি হাকীকাত পৃ.৬৫,৯২,৯৩,১১৯)
৩.গায়রে মুকাল্লিদ আলেম গাজি আযিয মুবারকপুরী (যঈফ হাদীসের মারিফাত এবং শরয়ী অবস্থা পৃ.৪৭)
৪.হাফিয মোহাম্মদ গোন্দালবি (খাইরুল কালাম পৃ.২৫২)
৫.মাওলানা আব্দুল রাদ সিন্ধু (আল কওল আল মাকবুল পৃ.২৭২)
৬.শায়েখ ইরশাদুল হক আছারী (জাওয়াবাত জারহু ওয়াত তাদীল পৃ.৬৫)
৭.আব্দুল মান্নান নূরপুরি (মাকালাতে নূরপুরি পৃ.৩৩০) 
সুতরাং দেখা যাচ্ছে,আহলে হাদীস আলেমদের দৃষ্টিতে ই ইমাম ইজলী রহ ও ইবনে হিব্বান রহ এর তাওসীক গ্রহনযোগ্য হবে না কাবিসা বিন হুলবেরক্ষেত্রে।
ইলযামী জবাবের ইলযামী জবাব:
আহলে হাদীসরা ইলযামী জবাব হিসেবে দুইটা বিষয় উল্লেখ করে
১.ইমাম বুখারী রহ কাবিসা বিন হুলব কে তার তারিখে উল্লেখ করেছেন এবং কোন জারাহ করেন নি।
২.ইবনে আবী হাতেম রহ তাকে আল জারহু ওয়াত তাদীলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু কোন জারাহ করেন নি।
ইলযামী জবাব:
প্রসিদ্ধ গায়রে মুকাল্লিদ আলেম আবু আব্দুর রহমান ফৌজি যার বই "মাশহুর ওয়াকিয়াত কি হাকীকাত" এর অনুবাদ করেছেন গায়রে মুকাল্লিদ আলেম সিদ্দিক রাজা এবং নযরে ছানী করেছেন যুবাইর আলী যাই রহ। তিনি বলেন,যাকে ইমাম বুখারী রহ তার তারিখে কাবীরে উল্লেখ করেন কিন্তু জারাহ বা তাদীল কিছুই করেন না সে মাজহুল।(৯২,১১৯,১২০) 
তিনি আরো বলেন,কোন রাবীকে কিতাবু আল জারহু ওয়াত তাদীলে উল্লেখ করে কোন তাওসীক বা জারাহ না নকল করলে সে মাজহুল।(পৃ.৬৫,৯২,৯৫,১১৬,১১৯)
সুতরাং আহলে হাদীসদের মূলনীতি মোতাবেক কাবিস বিন হুলব মাজহুল কারণ ইমাম বুখারী ও ইমাম আবু হাতিম কেউই তার কোন তাওসীক ও নকল করে নি,কোন জারাহ না।
এর বিপরীতে আলী ইবনুল মাদানী রহ ও ইমাম নাসাঈ রহ তাকে মাজহুল বলেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.৮,পৃ.৩১৪)
অভিযোগ:যুবাঈর আলী যাই বলেন,১.এই বর্ণনার কোন সনদ নেই এবং২.ইমাম আলী ইবনুল মাদানী এবং ইমাম নাসাঈ রহ এর বইয়ে এই ধরনের কোন কথা মওজুদ নেই।
জবাব:
প্রথমত,ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহ ইমাম মিজ্জি রহ হতে বর্ণনা করেন, 
আমরা এই বইয়ে যে সকল বর্ণনা সনদ ছাড়া বর্ণনা করেছি সেগুলো যদি সিগায়ে জযম (স্পষ্ট শব্দ দ্বারা) সহকারে হয় তাহলে ওই সনদের কোন সমস্যার কথা আমাদের জানা নেই।
আর ইবনে হাজার আসকালানী রহ কাবিসা বিন হুলবের জারাহ সিগায়ে জযম শব্দের মাধ্যমেই বর্ণনা করেছেন।
দ্বিতীয়ত,আলী ইবনুল মাদানী রহ ও নাসাঈ রহ এর বক্তব্য ইবনে হাজার আসকালানি রহ এর দৃষ্টিতে প্রমাণিত ছিল।কারন
১.ইয়য়াস ইবনে আল হারিস আল দাউসি হিজাযি যাকে ইবনে হিব্বান রহ শুধুমাত্র তার ছিকাতে উল্লেখ করেছেন এবং মাত্র একজন ছাত্র তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.১,রাবী নং ৭১২)কিন্ত হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে সাদূক বলেছেন।(তাকরীব রাবী নং ৫৮৪)
২.আইয়্যুব ইবনে ইবরাহীম আল সাকাফি যাকে ইবনে হিব্বান রহ শুধুমাত্র তার ছিকাতে উল্লেখ করেছেন এবং মাত্র একজন ছাত্র তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.১,রাবী নং ৭২৮) কিন্ত হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে সাদূক বলেছেন। (তাকরীব রাবী নং ৬০০)
৩.আইয়্যুব ইবনে বাশীর আল ইজলিযাকে ইবনে হিব্বান রহ শুধুমাত্র তার ছিকাতে উল্লেখ করেছেন এবং মাত্র একজন ছাত্র তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।ইমাম যাহাবী রহ তাকে আল কাশিফে মাজহুল বলেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.১,রাবী নং ৭৩১)কিন্ত হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে সাদূক বলেছেন। (তাকরীব রাবী নং ৬০৩)
৪.বিশর ইবনে কুররা যাকে ইবনে হিব্বান রহ শুধুমাত্র তার ছিকাতে উল্লেখ করেছেন কিন্তু ইবনে কাত্তান রহ তাকে মাজহুল বলেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.১,রাবী নং ৮৩৮)কিন্ত হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে সাদূক বলেছেন।(তাকরীব রাবী নং ৬৯৯)
৫.খালিফা ইবনে সাইদ যাকে ইবনে হিব্বান রহ শুধুমাত্র তার ছিকাতে উল্লেখ করেছেন এবং তিনি তিনজন সাহাবী থেকে রেওয়াত করেছেন কিন্তু মাত্র একজন ছাত্র তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (তাহযীবুত তাহযীব খ.১,রাবী নং ৩০৬)কিন্ত হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে সাদূক বলেছেন।(তাকরীর রাবী নং ১৭৪৫)
উপরোক্ত পাঁচজন রাবীর ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় লক্ষ্যনীয়
১.প্রতেক্যেই তাবেঈ।
২.ইবনে হিব্বান রহ ব্যতীত আর কেউ তাদের তাওসীক করে নি।
কিন্তু তারপরেও ইবনে হাজার আসকালানী রহ এদের প্রত্যেককে সাদূক বলেছেন।
কিন্তু কাবীস বিন হুলব যিনিও তাবেঈ এবং ইবনে হিব্বান রহ তো তাওসীক করছেনই পাশাপাশি ইমাম ইজলী রহ ও তার তাওসীক করেছেন কিন্ত তারপরেও ইবনে হাজার আসকালানী রহ তাকে মাকবুল বললেন,কেন সাদূক বললেন না?
এর একটা ই জবাব হতে পারে,তার দৃষ্টিতে নাসাঈ রহ ও আলী ইবনুল মাদানী রহ এর মন্তব্য প্রমাণিত ছিল বিধায় তিনি অন্যদের মতো এখানে কাবিসাকে সাদূক বলেন নি। তাই এক্ষেত্রে ইবনে হাজার আসকালানি রহ অবস্থানটি ই ভারসাম্যপূর্ণ।তিনি কাবিস কে মাকবুল বলেছেন আর এটাই সঠিক।
আর নাসাই রহ ও আলী ইবনুল মাদানী রহ এর বইয়ে কাবিসা বিন হালব সম্পর্কে কোন মন্তব্য না থাকা কোন সমস্যা না।বর্তমান সময়ের পাকিস্তানের বিখ্যাত আহলে হাদীস আলেম ইরশাদুল হক আল আছারী হাফি. (উপমহাদেশের প্রখ্যাত আহলে হাদীস আলেমদের মধ্যে অন্যতম যিনি সূরা ফাতিহা পড়ার মাসআলায় প্রায় ১০০০র ও বেশি পৃষ্ঠা সম্বলিত তাওযীহুল কালাম লিখেছেন) বলেন, আল্লামা মিজ্জী রহ হোক,আল্লামা ইবনুল জাওযি রহ হোক অথবা আল্লামা যাহাবি রহ হোক,তারা কেউ যদি আইম্মায়ে মুতাকাদ্দিমীন থেকে কোন জারাহ নকল করলে অথবা কারো তাওসীক নকল করলে যদি ওই কওল তাদের বইয়ে না পাওয়া যায় তাহলে বিনা কারণে এটা অস্বীকার করা উচিত না।এই অস্বীকার করার মানে হলো আমরা আল্লামা মিজ্জী রহ হতে বেশি জানি।এটা বদযানির নির্দশন।(আনওয়ারুল বদর পৃ.৩৩,ভূমিকা)
তাই আমরা আহলে হাদীসদের বলব,আগে নির্ধারন করুন,আপনাদের কোন শায়েখ ঠিক যুবাইর আলী যাই রহ না আছারী হাফি.।
যে সকল সালাফী বা আহলে হাদীস আলেম কাবিসা বিন হুলব কে মাজহুল বলেছেন তাদের তালিকা:
১.আমর আব্দুল মুনিম সালাফি (তাহসীল মা ফাত আল তাহদীস পৃ.৮৩)
২.আব্দুল আযিয বিন মারযুক আল তারিফি (সিফাতুস সালাতুন নবী পৃ.৮৮,৮৯)
৩.মুকবিল ইবনে ওয়াদী আল হাদী (রিয়ায আল জান্নাহ পৃ.১১৪)
৪.শাইখ শোয়াইব আর নাউত রহ (তাহকীক মুসানাদে আহমদ হা. নং ২১৯৬৭)
৫.ড. বাশার আওয়াদ আল মারুফ (তাহরীর তাকরীবুত তাহযীব রাবী নং ৫৫১৬)
৬.শায়েখ মাহের বিন ফাহাল সালাফি (আছারে ইলালুল হাদীস ফী ইখতিলাফে ফুকাহা খ.১,পৃ. ২৮০)  
(চলবে, পরবর্তী পর্বে সিমাক বিন হারব কে নিয়ে আলোচনা করা হবে)
--------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।         

Post a Comment

0 Comments