Recent Tube

৫২৭১ টি গার্মেন্টসের ২ কোটি কর্মীকে মাত্র ১ ঘন্টা পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগান - জিয়াউল হক।

 
 ৫২৭১ টি গার্মেন্টসের ২ কোটি কর্মীকে মাত্র ১ ঘন্টা পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগান -
 


    মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী আজ (২৫ শে মার্চ, ২০২০)  জাতির উদ্দেশ্যে তেইশ মিনিট দীর্ঘ ভাষণ দিয়েছেন।  তিনি করোনা ভাইরাসের মহামারীকে যুদ্ধের সাথে তুলনা করেছেন।
 
     পুরো দেশ ইতোমধ্যেই লকডাউন। অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা,  স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীকেও মাঠে নামিয়েছে। দেরিতে হলেও স্বিদ্ধান্তগুলো সঠিক ও গুরুত্বপূর্ণ।

     তবে এখন পর্যন্ত  পর্যাপ্ত পরিমানে টেস্টিং কিট নেই, জেলাসমূহে, এমনকি, বিভাগীয় শহরগুলো এবং মেডিকেল কলেজগুলোতেও করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের মতো উপযুক্ত ল্যাব নেই, যার পরিণতি হবে মারাত্মক ও অকল্পনীয়।

     রোগের লক্ষণ দেখে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে মনে হলেও রক্তের ল্যাবরেটরি রিপোর্ট ছাড়া কাউকে চুড়ান্তভাবে উক্ত ভাইরাসে আক্রান্ত বলার সুযোগ নেই। ফলে  ভাইরাসটি ছড়াতেই থাকবে। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকমীরা আক্রান্ত হবেন এবং নিজ নিজ পরিবার ও সমাজে রোগটি ছড়াবেন।

     প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধের সম্মুখভাগে যারা রয়েছেন, অর্থাৎ ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের  কাছে পিপিই (সংক্রমণ থেকে নিজেদেও বাঁচিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত পোশাক; যেমন, মেডিকেল মাস্ক, গাউন, গগলস, ফেস শিল্ড, হেভি ডিউটি গ্লাভস ও বুট) নেই।

     পিপিই ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে গিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মধ্যে ইতোমধ্যেই রোগ সংক্রমিত হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে ওই হাসপাতালের নার্স, চিকিৎসকসহ কয়েকজন কর্মীকে। এমতাবস্থায় করোনার বিরুদ্ধে চলমান এ যুদ্ধে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে এক শোচনীয় ও  ভয়ংকর বিপর্যয়।

     এ যুদ্ধে সম্মিলিত, স¦মন্বিত ও ত্বরিৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানোর সময় যেমন তাদের প্রয়োজনীয় পোষাক, অস্ত্র, হেলমেট, কমব্যাট বুট ও যানবাহন দিয়ে নামানো হয়েছে, ঠিক তেমনি  ডাক্তার নার্স’সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীকেও পিপিই দিতে হবে অনতিবিলম্বে। তা না হলে এ বিপর্যয় রোধ করা সম্ভবপর হবে না কোনমতেই।

       দেশের প্রায় ৫২৭১ টি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির আনাচে কানাচে যে সব ঝুট কাপড় পড়ে রয়েছে, তা দিয়েই মাত্র একটি ঘন্টার মধ্যে দুই কোটি গার্মেন্টস কর্মীর দ্বারা কয়েক কোটি মাস্ক বানিয়ে নেয়া যায় (যদিও সেগুলো মেডিকেল মাস্ক নয়)। 

      মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে কয়েক লক্ষ এ্যপ্রোন ও প্রোটেক্টিভ গাউন বানিয়ে নেয়া যায়, যা দেশের ৫৩ হাজার ডাক্তার ও প্রায় ৫৫ হাজার নার্সসহ লাখখানেক স্বাস্থসেবাকর্মীর হাতে তুলে দেয়া সম্ভব। বিজেএমইএ-ও সরকারের সাথে  কাজ করতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে গ্লাভস, ফেস শিল্ড ও বুট আমদানি ছাড়া কোনপথ খোলা নেই।

     করোনা নামক অদৃশ্য এ শত্রুর সাথে এ যুদ্ধে সম্মুখসারীতে রয়েছেন এই ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীগণ। এই বাহিনীকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলতে হবে আঠারো কোটি লোকের স্বার্থেই। তারা বাঁচলেই আঠারো কোটি লোক বাঁচবো। তা না হলে এক অকল্পনীয় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে এ জাতির ভাগ্যে!
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা গীতিকার ও বিশ্লেষক।          

Post a Comment

0 Comments