Recent Tube

আল্লাহ তা'য়ালা ও রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে মারাক্তক ঠাট্টা ও কুফরী কথা দেখুনঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

আল্লাহ তা'য়ালা ও রাসূলুল্লাহ (সা) এর সাথে মারাক্তক ঠাট্টা ও কুফরী কথা দেখুনঃ 

  দেওবন্দী ফেরকার অন্তর্ভুক্ত, স্বঘোষিত হকের ডিলার  চরমনাই পীর বলেনঃ 

   "যদি স্ত্রীর গায়ে হাত দিলে শরীর শরীর গরম হইয়া ওঠে, তবে মাশুকের হাকিকী আল্লাহ পাকের নামে কেন তাছির থাকিবে না? হ্যাঁ, যদি কেউ খোজা হয়, তবে তাহার স্ত্রীর শরীরে হাত দিলে কখনও তাহার মধ্যে এশক-মহাব্বত পয়দা হইবে না, এমনি ভাবে যাহাদের দেল মরা, তাহাদের আল্লাহ পাকের নামে কোন তাছির হইবে না। বন্ধগণ! নিজের স্ত্রীর সঙ্গে মিলিবার সময় যদি উত্তেজনার সৃষ্টি হইতে পারে, তবে মাবুদের সঙ্গে রূহ মিলিতে কেন উত্তেজনার সৃষ্টি হইবে না?" (নাউযূবিল্লাহ!) 
(ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ৬৯)
.
   আল্লাহ তা'য়ালা সম্পর্কে কত বড় কুফরী কথা দেখুন! নিজের স্ত্রীর সাথে আল্লাহকে তুলনা করা হচ্ছে! অথচ পবিত্র কুরআন বলছেঃ
.
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ 
.
 আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। (সূরাঃ ইখলাসঃ৪) 
.
   চরমনাই লাফাঝাপা, নাচানাচি ও চিৎকার করে জিকির করা যুক্তি পেশ করতে গিয়ে বলেন, নিজের স্ত্রীর সঙ্গে মিলিবার সময় যদি উত্তেজনার সৃষ্ট হতে পারে, তবে আল্লাহর সাথে মিলিতে কেন উত্তেজনার সৃষ্টি হবে না! নাউযূবিল্লাহ! নিজের স্ত্রীর সাথে তারা যে ভাবে মিলন দেয়, সেভাবে কি আল্লাহর সাথেও মিলন দেয়? নাউযূবিল্লাহ!
চরমনাই আরো বলেন, হ্যাঁ! যদি কেউ খোজা হয়, তবে তাহার স্ত্রীর শরীরে হাত দিলে কখনও তাহার মধ্য এরকম উত্তেজনার তাছির হবে না! এই কথা বলে চরমনাই রাসূলুল্লাহ (সা) সহ সকল সাহাবা (রা), তাবেঈগণ (রাহঃ) কে খোজার অপবাদ দিলেন! কারণ রাসূলুল্লাহ (সা) ও সাহাবা (রা) তাবেঈ (রাহঃ) আল্লাহ কে আহবান ও জিকির করার সময় এ রকম লাফাঝাপা, হাক-ডাক করেন নি।
.
 কিভাবে জিকির করতে হবে সে বিষয়ে আল্লাহ তা'য়ালা নিজেই বলেনঃ 
.
وَٱذْكُر رَّبَّكَ فِى نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ ٱلْجَهْرِ مِنَ ٱلْقَوْلِ بِٱلْغُدُوِّ وَٱلْءَاصَالِ وَلَا تَكُن مِّنَ ٱلْغَٰفِلِينَ 
.
আর তুমি নিজ মনে আপন রবকে স্মরণ (জিকির) কর সকাল-সন্ধ্যায় অনুনয়-বিনয় ও ভীতি সহকারে এবং অনুচ্চ স্বরে। আর গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। (সূরা আ'রাফঃ২০৪) 
.

ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
.
তোমাদের রবকে বিনয়ের সাথে ও নীরবে ডাকো। তিনি সীমালংঘনকারীকে পছন্দ করেন না। (সূরা আ’রাফ: ৫৫)
.
     কুরআনের আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর জিকির করা ও আহবান করার আদব নীরবে, লাফাঝাপা করে হাক-ডাক মেরে নয়। এরপরও এ আয়াতের অধীনে নির্ভরযোগ্য কিছু তাফসীরের উদ্বৃতি পেশ করা হলো।
.
حَدَّثَنِي الْقَاسِمُ قَالَ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ قَالَ، حَدَّثَنِيْ حَجَّاجٌ، عَنْ اِبْن جُرَيْجِ، عَنْ عَطَاءِ الْخُرَاسَانِيْ، عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ:"إنَّه لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ فِي الدُّعَاءِ وَلَا فِيْ غَيْرِه قَالَ إبْنُ جُرَيْجٍ: إنَّ مِنَ الدُّعَاِء إعْتِدَاءً، يُكْرَهُ رَفْعُ الصَّوْتِ وَالنِّداءُ وَالصِّيَاحُ بِالدُّعَاءِ، وَيُؤمَرُ بِالتَّضَرُّعِ وَالْاِسْتِكَانَةِ.
.
   হযরত আতা আল খুরাসানী রহ. সূরা আ’রাফের ৫৫ নম্বর আয়াতের অধীনে إنه لا يحب المعتدين আয়াতাংশের তাফসীরে হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন: তিনি (আল্লাহ ) দুআ বা দুআর বাইরে কোন স্থানেই সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। হাদীসটির একজন বর্ণনাকারী হযরত ইবনে জুরাইজ রহ. বলেন: নিশ্চয় আল্লাহকে আহবান করার মধ্যে সীমালঙ্ঘন রয়েছে। আহবানের ক্ষেত্রে চিৎকার করা, হাক-ডাক করা ও উচ্চস্বরে দুআ করা বা জিকির করা মাকরুহ। তাই তিনি দুআর সময় বিনয় ও নম্রতার নির্দেশ দিতেন। (তাফসীরে তাবারী: ১৪৭৮১, পৃষ্ঠা: ১২/৪৮৭)
.

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ رضى الله عنه قَالَ لَمَّا غَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ أَوْ قَالَ لَمَّا تَوَجَّهَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَشْرَفَ النَّاسُ عَلَى وَادٍ، فَرَفَعُوا أَصْوَاتَهُمْ بِالتَّكْبِيرِ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ ارْبَعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ، إِنَّكُمْ لاَ تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلاَ غَائِبًا، إِنَّكُمْ تَدْعُونَ سَمِيعًا قَرِيبًا وَهْوَ مَعَكُمْ (رَوَاهُ الْبُخَارِىُّ فِىْ بَابِ غَزْوَةِ خَيْبَرَ)
.
   হযরত আবু মুসা আশআরী রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. যখন খাইবার যুদ্ধ করলেন অথবা তিনি বলেছেন: রসূলুল্লাহ স. যখন খাইবার অভিমুখে যাত্রা করলেন তখন একটি উপত্যকার নিকটে এসে সাহাবাগণ উচ্চস্বরে ‘আল্লাহু আকবার’ ও ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে তাকবীর-ধ্বনি দিতে লাগলেন। তখন রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করলেন: তোমরা নিজেদের প্রতি সদয় হও। তোমরা এমন কোন সত্ত্বাকে ডাকছ না যিনি বধির বা অনুপস্থিত। বরং তোমরা ডাকছ সেই সত্তাকে যিনি সর্বশ্রোতা, অতি নিকটে এবং তিনি তোমাদের সাথে আছেন। (সহীহ বুখারী, হাঃ২৯৯২, ইফাবা:২৭৮১; সহীহ মুসলিম, হাঃ২৭০৪; মুসনাদে আহমাদ:১৯৬১৯)
 .
    শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি তিরমিজী, আবু দাউদ এবং ইবনে মাজাহ শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। (জামিউল উসূল: ২১২৯)
.
     সুতরাং অকাট্য ভাবে প্রমাণিত যে, দেওবন্দী ফেরকার অন্তর্ভুক্ত চরমনাই তরিকার জিকির জায়েজ নয় বরং তা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী শয়তানি তরিকা! অথচ এ ভ্রান্ত তরিকা নির্ভুল প্রমাণ করতে তারা আল্লাহ তা'য়ালা কে নিজের সহবাস কৃত স্ত্রীর সাথে তুলনা করছে। রাসূলুল্লাহ (সা) সহ সকল সাহাবী (রা) এই ভাবে জিকির না করায় রাসূলুল্লাহ (সা)  তাঁদের সকল কে খোজার অপবাদ দিয়েছে! নাউযূবিল্লাহ!!!
.
    এর চেয়ে বড় কুফরী কথা আর কি হতে পারে? এই মারাক্তক, জঘন্য আকিদা ইহুদী, খ্রিষ্টান এমনকি মক্কার মুশরিকেরাও লালন করে না অথচ দেওবন্দী চরমনাই এমন আকিদা লালন করছে! এমনি এমনি কি তারা লাফাঝাপা করে বাঁশে ওঠে?
.
আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ 
.
إِنَّمَا ٱلْمُؤْمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ.
.
   নিশ্চয়ই মু’মিনরা এরূপই হয় যে, যখন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় (জিকির করা হয়) তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে। (সূরা আনফালঃ২) 
.
  আল্লাহ তা'য়ালা বলছেন, আল্লাহর নামে, আল্লাহর জিকির করার সময় মুমিনদের অন্তর ভয়ে ভীত পড়ে। আর চোরমনাই বলছে আল্লাহর নামে, আল্লাহর জিকির করার সময় যাদের স্ত্রী সহবাসের ন্যায় উত্তেজনার তাছির সৃষ্টি হয় না অর্থাৎ ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে তারা খোজা! নাউযূবিল্লাহ!!! চরমনাই কি প্রকৃত মুমিন?
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।         

Post a Comment

0 Comments