Recent Tube

জাল হাদীস থেকে বাঁচার উপায়ঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

                          জাল হাদীস থেকে বাঁচার উপায়ঃ

 প্রশ্নঃ মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব প্রণীত 'প্রচলিত জাল হাদীস' (নামক) কিতাব পাঠ করে দেখতে এবং বুঝতে পারলাম যে, আমরা যারা তবলীগে গিয়ে বয়ান করি ঐ বয়ানে অনেক জাল হাদীস বলে থাকি। (অনুগ্রহ করে) এর থেকে বাঁচার উপায় বাতলে দিবেন।
.
উত্তরঃ এ থেকে বাঁচার উপায় এটি যে, কোন বর্ণনার ক্ষেত্রে হাদীস বিশেষজ্ঞ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত সহীহ বলে জানা না যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত মনে যতই আগ্রহ সৃষ্টি হোক না কেন তা বর্ণনা না করা।
.
ধরুন, আপনে নিজের ব্যাপারে এরূপ অপরিহার্য করে নিবেন যে, আমি রিয়াদুস সালেহীন বা মুন্তাখাব আহাদীস এর বাহিরে কোন হাদীস বলব না। ভালোভাবে বুঝেনিন, যদি কোন রেওয়াতের ব্যাপারে তা সহীহ বলে জানা না থাকা সত্ত্বেও আগ্রহের কারণে তা আপনে বর্ণনা করেন, তবে ঘটনাক্রমে তা সহীহ হলেও আপনে গুনাহগার হবেন। কেননা আপনে তা না জেনে বর্ণনা করেছেন।
.
[ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাচাই না করে কোনো হাদীস গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। যদি কেউ যাচাই না করে যা শুনে তাই হাদীস বলে গ্রহণ করে ও বর্ণনা করে তাহলে হাদীস যাচাইয়ে তার অবহেলার জন্য সে হাদীসের নামে মিথ্যা বলার পাপে পাপী হবে। ইচ্ছাকৃত মিথ্যা হাদীস বানানোর জন্য নয়, শুধুমাত্র সত্যমিথ্যা যাচাই না করে হাদীস গ্রহণ করাই তার মিথ্যাবাদী বানানোর জন্য যথেষ্ট বলে হাদীসে বলা হয়েছে। উপরন্তু, যদি কোনো হাদীসের বিশুদ্ধতা ও নিভুলতা সম্পর্কে দ্বিধা বা সন্দেহ থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তি সে হাদীস বর্ণনা করে তাহলে সেও মিথ্যাবাদী বলে গণ্য হবে ও মিথ্যা হাদীস বলার পাপে পাপী হবে।
.
আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

كَفَى بِالْمَرْءِ إِثْمًا أَنْ يُحَدِّثَ بِكُلِّ مَا سَمِعَ.

‘‘একজন মানুষের পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বর্ণনা করবে।’’
(সহীহ মুসলিমঃ১/১০)
.
সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রা) ও মুগীরাহ ইবনু শু’বা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

مَنْ حَدَّثَ عَنِّيْ حَدِيْثًا وَهُوَ يُرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبَيْنِ.

‘‘যে ব্যক্তি আমার নামে কোনো হাদীস বলবে এবং তার মনে সন্দেহ হবে যে, হাদীসটি মিথ্যা, সেও একজন মিথ্যাবাদী।’’
(সহীহ মুসলিমঃ১/০৯)]
.
হাদীস শোনানোর সওয়াব অর্জনের আগে তাহকীক ছাড়া তা শোনানোর গুনাহ থেকে বাঁচার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া জরুরী। শরীয়ত ও সুস্থ বিবেকের দাবী হলো উপকার লাভের চেয়ে ক্ষতি থেকে বাঁচা অগ্রগণ্য।
------------------------------ 
(তথ্যসূত্রঃ দারুল ইফতা মারকাযুদ্দাওয়া আল ইসলামিয়া; মাসিক আল কাউসার, সেপ্টেম্বর ২০০৮, পৃঃ৩১-৩২)
------------------------------
লেখকে রকথাঃ 
[বিঃদ্রঃ ৩য় বন্ধনীর ভিতরে দুইটি সহীহ মুসলিমের হাদীসসহ যা বলা হয়েছে, তা প্রশ্নের উত্তরে ছিল না। আমি তা সম্পাদন করে দিয়েছি।]
-------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।         

Post a Comment

0 Comments