Recent Tube

সাবধান! ইসলামবিদ্বেষ আপনাকে হিজড়া বানাতে পারে! জিয়াউল হক।

 সাবধান! ইসলামবিদ্বেষ আপনাকে হিজড়া বানাতে পারে!

     ক্রুসেডের মাধ্যমে মুসলিম নির্মূলে ব্যর্থ হয়ে খৃষ্টান ইউরোপীয় রাজনৈতিক ও ভ্যাটিকোনের নেতারা শক্তিশালী মোঙ্গল নেতাদের  কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। চেঙ্গিজ খাঁনের মৃত্যুর পরে তার পুত্র ওগদাই খাঁন, ওগদাই খাঁনের পরে তার পুত্র গুইউক খাঁন রাজ্যের হাল ধরেন। 

  ক্ষমতাধর মোঙ্গলদের পদতলে সারা বিশ্বের সম্পদ আর ভোগের অবারিত সুযোগ এসে ততদিনে ধরা দিয়েছে। চেঙ্গিজ খাঁন ও তার পরবর্তি বংশধরদের মধ্যে সেই পরিমান ধৈর্য্য না থাকলেও বীরত্ব, বংশীয় ও গোত্রীয় মর্যাদাবোধ, নেতার আনুগত্যের চেতনা এবং হিংস্রতা বিদ্যমান ছিল পুরোমাত্রায়।

  বাবা ওগদাই খাঁনের মৃত্যুর সময় গুইউক খাঁন ছিলেন রাজধানী থেকে অনেক দূরে কারাকোরাম এলাকায়। বড় সন্তানের অবর্তমানে সিংহাসনের হাল ধরলেন মা তুরকিনা। বিলম্ব না করে ছেলেকে ডেকে পাঠালেন রাজধানীতে। খবর পেয়ে গুইউক খাঁন ছুটে এলেন মা‘র কাছে। অধিষ্ঠিত হলেন ক্ষমতায়।

  নতুন রাজা হিসেবে গুইউক খাঁনের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন চলতে থাকলো সারা রাজ্যজুড়ে। দুর-দুরান্ত থেকে রাজারা তাদের নিজ নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি দল পাঠাতে থাকলো নতুন রাজার জন্য সম্পদ ও নজরানা, উপঢৌকন হিসেবে।

   খোরাসান, পারস্য, বাইজান্টাইন, রোম, সিরিয়া, বাগদাদসহ আশে পাশের প্রায় প্রতিটি জনপদ থেকেই দূতরা এসেছে। সকলেই চেয়েছে সব সময় এবং যে কোন মুল্যে তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। নিজেদের রাজ্যের অবস্থা যাই হোক, যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, প্রত্যেকেই মোঙ্গল রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবার জন্য দূত ও প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে ।
  আগত এইসব প্রতিনিধি দলের জন্য রাজপ্রাসাদের নিকটেই তাঁবু টানানো ও তাদের থাকা, আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হলো। নৃত-গীত, আহার-পানীয় আর নানা ভোগ উপভোগের সবরকম আযোজনও থাকলো।

   কি অবাক কান্ড, বাগদাদ কিংবা বাইজান্টাইন সীমান্তে যে রাজা বাদশহারা নিজেরা পরস্পরের গলা কাটতে ব্যস্ত, সেই তারাই মোঙ্গল দরবারে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করে আর সুর-সুরায় মজলেন! সেখানে সকলেই সুবোধ ও শান্ত, কোন রকম বাদ-বিবাদ নেই, নেই হিংষা বিদ্বেষ! 

   এসেছিলেন বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের প্রতিনিধিদলও। খৃষ্টান পাদ্রিরা সাথে এনেছিলেন নানা উপঢৌকন আর সুন্দরী নারী। সুন্দরী নারী পেতে অবশ্য গুইউক খাঁনের কোন রকম আপত্তি ছিল না। তার ঘর আলো করে ছিল ঐ বাইজন্টাইন সাম্রাজ্যেরই এক খৃষ্টান আর্মেনীয় নারী। তাকেও গুইউক খাঁন পেয়েছিলে উপঢৌকন হিসেবেই। তার রুপ যৌবনে তিনি এতোটাই মজেছিলেন যে, সগোত্রীয় নারীর পরিবর্তে ঐ আর্মেনিয় নারীকেই রাণী বানিয়েছিলেন।

     অভিষেক শুরু হতে আরও কয়েকদিন বাঁকি। রোম থেকে আগত খৃষ্টান প্রতিনিধি দল এই ক‘দিনে নিজেদের মেয়ে রাণীর সাথে বেশ কয়েকবার দেখা করলেন। সুদুর কন্সাটন্টিনেপল থেকে বয়ে আনা দূর্মূল্য উপহার বিনিময় শেষে ছোট্ট একটা মিনতিও রাখলেন তারা।

   মহান চেঙ্গিজ খাঁন পৃথিবীর বুক থেকে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করতে মাঠে নেমেছিলেন, তা হঠাৎ করে থেমে গেল! ইশ্বর তাকে আর কয়টা দিন সময় দিলে এই পৃথিবীর বুকে আর কোন মুসলমানই অবশিষ্ঠ থাকতো না। কিন্তু তেমনটা হয়নি ভাগ্যের নির্মম পরিহাস!

     এখন তারই দৌহিত্র মহান গুইউক খাঁন রাজ্যের রাজা হতে চলেছেন। যীশু খৃষ্টের একনিষ্ঠ ভক্ত রাণী যদি মহান সম্রাটকে দিয়ে মুসলিম নির্মূলে সেই অভিযানটি আবারও শুরু করান, তা হলে খৃষ্টবাদের জন্য এক বিরাট কাজ হয়। রোমের জনগণ মহামান্য রাণীকে আজীবন স্মরণ করবে। গির্জায় গির্জায় রাণীর জন্য বিশেষ প্রার্থনাও করা হবে। ইশ্বরও নিশ্চয়ই রাণীকে পুরস্কৃত করবেন।

   নিজ পিতৃভূমির পাদ্রিদের প্রশস্থিমূলক কথাবার্তায় রাজার উপরে নিজের প্রভাব জাহির করতে রাণী কথা দিলেন; রাজাকে দিয়ে ডিক্রি জারি করিয়ে দেবেন যেন, চেঙ্গিজ খাঁনের থেমে যাওয়া মুসলিম নিধন অভিযানটা আবারও শুরু হয়। খূশিতে গদ গদ পাদ্রি দল  বিশেষ প্রার্থনা করলেন রাণীর সফলতা, সুস্বাস্থ কামনায়। 

   রাণী কথা রেখেছিলেন। ইশ্বরও রাণীকে প্রতিদান দিয়েছিলেন। অভিষেক শেষে প্রতিনিধি দল বিদায়ী স্বাক্ষাতের জন্য পাদ্রিরা'সহ উপস্থিত হয়েছে রাজদরবারে। তাদের সামনে রাণী পূর্বলিখিত একটি ডিক্রিতে সম্রাটের সই করিয়ে দিলেন। সম্রাটের স্বাক্ষরযুক্ত আদেশ; প্রতিটি মোঙ্গল সেনাপতি যেন তাদের রাজ্যে যত মুসলমান রয়েছে, তাদের হত্যা করে।

   খূশিতে গদ গদ পাদ্রিরা রাজার জন্যও বিশেষ প্রার্থনা করলেন। প্রার্থনাশেষে বিদায় দিতে সম্রাট তাদের সাথে দরজা পর্যন্ত এসেছেন, সেখানেই ঘটলো বিপত্তি।

   উপস্থিত সকলের সামনে ঘটে গেলা ঘটনাটা। সম্রাটের বিশ্বস্থ ও প্রভুভক্ত শিকারি কুকুরটা আচমকা দৌড়ে এসে কামড়ে ধরলো সম্রাটের অন্ডকোষ! সম্রাট ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠলেন। কুকুরও নাছোড় বান্দাহ। সভাষদরা এগিয়ে এলেন। টানাটানি চললো কিছুক্ষণ। সম্রাট অনেক কষ্টে মুক্তি পেলেন বটে, তবে কুকুরের মুখে লেপ্টে থাকলো তার সাধের অন্ডকোষ!

   হতভম্ব পাদ্রি দল একটু আগেও সম্রাটের মঙ্গলের জন্য ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তারাসহ উপস্থিত সকলেই এ ঘটনায় এতোটাই আতংকগ্রস্থ হয়েছিলেন যে, এরপরে ঐ ডিক্রি বাস্তবায়নে সাহসও আর কেউ করেনি!

   অন্দরমহলে চরম মুসলিম বিদ্বেষী রাণী তার হিজড়া স্বামীকে নিয়ে কতোটা সুখে দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন জীবন ও যৌবন সন্মন্ধ্যে সচেতন প্রতিটি পাঠকই তা আন্দাজ করতে পারেন।

  অতএব, সাবধান! ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষে নামার আগে পরিণতিটা একবার ভেবে দেখবেন। মুসলমানরা ক্ষেত্রে বিশেষে দূর্বল হলেও তাদের আল্লাহ কিন্তু সর্বাবস্থায় এবং সর্বক্ষেত্রেই সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাধর। কথাটা মনে রাখলে সবারই কল্যাণ হবে বৈকি!
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও বিশ্লেষক।         

Post a Comment

0 Comments