Recent Tube

মতিউর রহমান মাদানি সাহেবের কুরআন বিকৃতিঃ ও পর্যালোচনা।

   মতিউর রহমান মাদানি সাহেবের    কুরআন বিকৃতিঃ

     মহান আল্লাহ তা'য়ালা ইসলামের প্রত্যেকটি (গুরুত্বপূর্ণ) কাজ জনগণের পরামর্শ নিয়ে, তাদের মতামত নিয়ে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ ۖ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ.
আর (হে নবী সা.) কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ করুন (তথা জনগণের মতাম নিন)। অতঃপর যখন (কোন কাজ সম্পাদন করার) সংকল্প করবেন তখন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন।
(সূরা আলি ইমরানঃ ৩/১৫৯)

   গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে অন্যতম হলো রাষ্ট্রপ্রধান, শাসক বা আমীর নির্বাচন করা। জনগণের পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বা আমীর হওয়া জায়েজ নাই বরং নিষিদ্ধ। তাই রাজতন্ত্র হারাম পর্যায়ে মাকরূহ। কারণ রাজতন্ত্রে রাজা বা আমীর হয় জনগণের কোন পরামর্শ ও মতামত না নিয়েই। ফলে ইসলামের দৃষ্টিতে রাজতন্ত্র অবৈধ।

 সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
من بايع اميرا عن غير مشورة المسلمين فلا بيعة له و لا لذي بايه.(مسند احمد)
"যে ব্যক্তি মুসলিম জনগণের পরামর্শ ও মতামত ছাড়াই (রাষ্ট্রের) আমীর হিসাবে বায়াত নেয় তার বায়াত বৈধ হবে না। আর যারা তার ইমারতের বায়াত গ্রহণ করবে তাদের বায়াতও বৈধ হবে না।"
(মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৯৩ )

 সুতরাং কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, রাজতন্ত্র হারাম বা হারাম পর্যায়ে মাকরুহ। কিন্তু মতিউর রহমান মাদানি সাহেব, আল্লামা সাঈদী (দাঃবাঃ) এর বিরোধীতা করতে গিয়ে এবং রাজতন্ত্র এর দালালী  করতে গিয়ে কুরআনে বর্ণিত ﺍﻟﻤﻠﻚ (রাজত্ব) শব্দের অর্থ রাজতন্ত্র করেছেন। অর্থাৎ কুরআন বিকৃত করেছেন। নাউযূবিল্লাহ! 
মাদানি সাহেব, কুরআনের যেখানেই ﺍﻟﻤﻠﻚ শব্দটি পেয়েছেন, সেখানে কুরআনের অর্থ বিকৃতি করে করে অর্থ করেছে রাজতন্ত্র। এর ফলে তিনি নিজেও গোমড়া ও শিরকে নিমিজ্জিত হয়েছেন তার ভক্তবৃন্দকেও গোমড়া ও শিরকে ডুবিয়েছে।

 মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, 
أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ وَيَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ.
তুমি কি জান না যে, নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর জন্যই আসমানসমূহ ও যমীনের مُلْكُ  রাজত্ব, তিনি যাকে ইচ্ছা আযাব দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। (সূরা মায়িদাঃ ৫/৪০)

أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ وَمَا لَكُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا نَصِير.
তুমি কি জান না যে, নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের مُلْكُ রাজত্ব আল্লাহর? আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। (সূরা বাকারাঃ২/১০৭)

দেখুন مُلْكُ শব্দের অর্থ রাজত্ব না করে রাজতন্ত্র করা হয় তাহলে সুস্পষ্ট শিরক হবে। "আসমানসমূহ ও যমীনের مُلْكُ রাজত্ব আল্লাহর।" রাজতন্ত্রে রাজার ছেলে রাজা হয়। আল্লাহর কি পিতা আছে? যে, তিনি তার পিতার নিকট থেকে مُلْكُ পেয়েছেন? নাউযূবিল্লাহ! 

মহান আল্লাহ তা'য়ালা কি বলেন দেখুন,
الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا.
যার অধিকারে রয়েছে আসমান ও যমীনের مُلْكُ রাজত্ব, মালিকানা; আর তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং الْمُلْكِ রাজত্বে, সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তা নিপুণভাবে নিরূপণ করেছেন। (সূরা ফুরকানঃ২৫/২)

   এদেশে ও ফেসবুকে মাদানি সাহেবের অনেক ভক্ত রয়েছে। আমরা আশা করব, তার ভক্তবৃন্দ আমাদের এ বানী তার নিকট পৌঁছে দিবেন এবং তিনি যেহেতু প্রকাশ্যে কুরআন বিকৃতি করে শিরক করেছেন সুতরাং প্রকাশ্যে তওবাহ করে তার ঈমান নবায়ন করবেন, নিজের ভুল সংশোধন করে কুরআনে বর্ণিত ﺍﻟﻤﻠﻚ শব্দটির সঠিক অর্থ ও তাফসীর পেশ করবেন।

  কেননা মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ 
إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ۖ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ.
নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার উপর অবশ্যই আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা (জাহান্নামের) আগুন। আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়িদাঃ৫/৭২)
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা গীতিকার বিশ্লেষক।         

Post a Comment

0 Comments