Recent Tube

মতিউর রহমান মাদানীর ব্যক্তি আক্রোশের যে ফতুওয়া থেকে সাহাবীগণও ছাড় পাননি!! ইবনে যুবাইর।

মাদখালি শায়েখ মতিউর রহমান মাদানীর ব্যক্তি আক্রোশের যে ফতুওয়া থেকে সাহাবীগণও ছাড় পাননি!!

    গত পর্বের তামীম দারী(রা.)-এর দীর্ঘ হাদিস থেকে আমরা জেনেছি যে,দাজ্জাল একটি দ্বীপে শৃঙ্খলে আবদ্ধ অবস্হায় রয়েছে।এখন আমরা দেখব দাজ্জাল সক্রান্ত অন্যন্য হাদিসগুলো।

   মুহাম্মাদ ইবনে জাবির বলেন,"আমি দেখলাম হযরত ইবনু আবদুল্লাহ (রা.) কসম করে বলছেন যে," ইবনে সাইয়াদই দাজ্জাল।আমি বললাম,আপনি কসম করছেন?
হযরত জাবির উত্তরে বলেন, আমি হযরত উমর(রা.)-কে ইবনু সাইয়াদ দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে রাসূলের সামনে কসম করতে দেখেছি,অথচ,নবী (স.) তা অস্বীকার করেননি। ' সহীহ মুসলিম,৪/২২৬১।

    নাফে বলেন,হযরত ইবনু উমর(রা.) বলতেন, আল্লাহর কসম!ইবনু সাইয়াদ দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই।সহীহ আবু দাউদ, হা,, ৪৩৩০।
হযরত আবু বকর(রা.) বলেন," ইবনুল সাইয়াদ দাজ্জাল নয় বলে একবার কসম করার চেয়ে দশবার তার দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে কসম করা আমার কাছে অধিক উত্তম।ইবনু মাসউদ ও ইমাম তাবারানিও একই মত ব্যক্ত করেছেন।তবে তারা দশবার কসমের স্হলে সাতবার বলেছেন।"ফাতহুল বারী, ১৩/ ৩২৯।

    একবার সাইয়াদ রাসূল(স.)-এর সাথে বেয়াদবী করলে হযরত উমর(রা.) তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইলেন।রাসূলুল্লাহ (স.) বললেন,"তাকে ছেড়ে দাও।যার সম্বন্ধে তুমি আশঙ্কা করছ সে দাজ্জাল হয়ে থাকলে তুমি তাকে হত্যা করতে পারবে না।আর সে যদি দাজ্জাল না হয়ে থাকে তাহলে তাকে হত্যা করার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই।" সহীহ মুসলিম,হা, ৭২৩৫,৭২৪৪।
সূত্র, আলোচিত অভিযেগের কাঙ্ক্ষিত জবাব,আসলাম হোসাইন, পৃ, ১৮৮-১৮৯।

   উক্ত বর্ণনা থেকে জানা যায় যে,হযরত আবু বরক,হযরত উমর,হযরত জাবীর ইবনে আবদুৃল্লাহ, ইবনে মাসউদ,ইমাম তাবারানীসহ অনকের মতে ইবনু সাইয়াদ দাজ্জাল,আর কেউ নয়।এ ব্যাপারে তারা বার বার কসমও করেছেন এবং রাসুল(স.)-ও তার দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
  এখন প্রশ্ন জাগে যে,মতিউর রহমান মাদানীর মতে দ্বীপ আবদ্ধ থাকা ওই ব্যক্তিই যদি দাজ্জাল হয়ে থাকে তাহলে ইবনু সাইয়াদ দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে সাহাবারা এত শক্ত অবস্হানে ছিলেন কেন? তাছাড়া স্বয়ং রাসূল(স.)- ও তার দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। 

    দেখা গেল,বেশ কিছু সাহাবির মতে ইবনু সাইয়াদ দাজ্জাল।আবার কেউ কেউ মুসলিম শরীফের হাদিসের আলোকে বলেন, দ্বীপে অবস্হানরত ব্যক্তিটিই দাজ্জাল।আবার কারো মতে দাজ্জাল কোন মানুষ নয় বরং সে শয়তান।
ইমাম বুখারীর উস্তাদ নুঈাম ইবনু হাম্মাদ হযরত জাবীর বিন নাফীর, কুরইহ বিন উবাইদ,আমর বিন আসওয়াদ এবং কাসীর বিন মুররা থেকে বর্ণনা করেন যে,তারা সকলেই বলেছেন,দাজ্জাল মানুষ নয়,বরং সে শয়তান।" রশীদ ইবনে আলী রেজা,তাফসিরুল মানার,৯/৪১৫।

    ইবনু সাইয়াদ ইহুদি বংশোদ্ভূদ একজন মানুষ ছিলো।দ্বীপে অবস্হানরত ব্যক্তিটিও মানুষ ছিল।তামীম দারীর হাদিসে স্পষ্ট তাকে মানুষ বলা হয়েছে।

    সুতরাং উপরোক্ত আলিমদের মতে ইবনু সাইয়াদ কিংবা দ্বীপে অন্তরীণ ব্যক্তি দাজ্জাল নয়।বরং দাজ্জাল তৃতীয় ব্যক্তি এবং সে শয়তান।তাছাড়া কোন কোন হাদিস থেকে জানা যায় যে,দাজ্জালের আবির্ভাব হবে খোরাসান থেকে,কোন হাদিসে বলা হয়েছে ইস্পহান থেকে,আবার কোথাও বলা হয়েছে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে বের হবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, মতিউর রহমান মাদানীর মত অনুযায়ী দ্বীপের ব্যক্তিটিই দাজ্জাল হলে তার আবির্ভূতের ব্যাপারে বিভিন্ন স্হানের উল্লেখ করা হল কেন;যেখানে জানা গেল যে,সে অমুক দ্বীপে বন্দী আছে?

তাছাড়া অনেক সাহাবি ও পরবর্তী আলিমগণ ইবনু সাইয়াদকে দাজ্জাল বললেন কেন? আবার কেউ এই দুইজনকেই অস্বীকার করে তৃতীয় আরেক ব্যক্তির কথা বললেন কেন?
মাদানীর কাছে এই প্রশ্নগুলোর কোন সদুত্তর আছে? ব্যক্তি আক্রোশ মেটানোর জন্য মাওলানা মওদূদীকে গোমরাহ ফতুওয়া দিলে তো সাহাবারাসহ অনেক সলফে সালেহীন গোমরা হতে বাধ্য(নাউজুবিল্লাহ)।আলিমদেরকে গোমরাহ ফতুওয়া দিতে গিয়ে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (স.)ও তার ফতুওয়ার হাত থেকে রেহায় পাননি।এই হচ্ছে মাদানী ও অন্যন্য শায়খদের মানহাজ।
-------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments