কোন প্রটোকল নেই।গভীর রজনীতে গভর্ণরের বাড়িতে হাজির হলেন অর্ধ জাহানের খলিফা।
হযরত আবু দারদা( রা:)সিরিয়ার গভর্নর থাকা কালিন আমিরুল মুমিনীন উমর ফারুক (রা:)গোপনে তাঁর অবস্থা জানার জন্য কোন এক রাতের আঁধারে গভর্নর আবু দারদার (রা:)বাড়িতে পৌঁছে তাঁর ঘরের কড়া নাড়লেন।ঘরের দরজা খোলা পেয়ে উমর ফারুক (রা:)অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে পড়লেন।আবু দারদা (রা:)কারো পদ ধ্বনি আঁচ করে উঠে দাঁড়ালে দেখেন উমর ফারুক (রা:)।তাঁকে খোশ আমদেদ জানালেন এবং বসতে বললেন।মুসলিম জাহানের দুই মহান নেতা রাতের অন্ধকারেই একান্ত পরিবেশে পারস্পারিক আলোচনায় নিমগ্ন হয়ে পড়লেন।আবু দারদা(রা:)ঘরে পিদিম জ্বালাবার মত তেল না থাকায় তাঁরা একে অপরকে দেখতে পাচ্ছিলেন না।এই গুরুপ্তপূর্ণ আলোচনার ফাঁকে উমর ফারুক(রা:)আবু দারদা (রা:)এর বালিশ কেমন,আরাম দায়ক,না সাধারণ তা হাত বাড়িয়ে দেখেন,তিনি দেখতে পান যে,আবু দারদা(রা:)তাঁর ঘোড়ার পিঠের ব্যবহৃত কাপড়টিকেই রাত্রি বেলার বালিশ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এবার তিনি আবু দারদার(রা:)বিছানার অবস্থা কেমন,তা হাত বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করেন।দেখেন,গুড়ো পাথর মিশ্রিত বালি সমতল করে নিয়ে একেই তিনি বিছানা বানিয়েছেন।এরপর তিনি আবু দারদা(রা:)লেপ তোশকের অনুরুপ খোঁজ খবর নিতে লাগলেন।দেখতে পেলেন যে,লেপ তোশক বা কম্বল ইত্যাদি বলতে পাথর কণার বিছানায় তার একটি মাত্র পাতলা কম্বল যা দামেশ্কের প্রচন্ড শীত প্রতিরোধের মোটেয় উপযোগী নয়।এ দেখে তিনি আবু দারদা (রা:)কে বললেন,আমি কি আপনার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য বাইতুল মাল থেকে উপযুক্ত ভাতার ব্যবস্হা করিনি?
আমি কি মাসিক ভাতা যথাসময়ে আপনার কাছে প্রেরণ করিনি?
আপনার এ দূরাবস্হায় আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক!
আবু দারদা(রা:)খলিফাতুল মুসলিমীনকে উত্তর দিলেন,হে খলিফাতুল মুসলিমীন!রাসুল(স;)এর সে হাদিসটি কি মনে পড়ে?
উমর ফারুক (রা:)বললেন,কোনটি?
আবু দারদা(রা:)বললেন,রাসুল(স:)কি আমাদের এ কথা বলেননি?দুনিয়ায় তোমার ধন সম্পদ ও অর্থ কড়ি যেন একজন মুসাফিরের সরাঞ্জামদির চেয় বেশি না হয়?
উমর ফারুক (রা;)বললেন,হ্যাঁ!
আবু দারদা(রা:)বললেন,হে খলিফাতুল মুসলিমীন!এ সত্বেও আমরা কি করছি?
উমর ফারুক(রা:)আবু দারদা(রা:)এর কথা শুনে কাঁদতে লাগলেন!
তাঁর সাথে আবু দারদা(রা:)নিজেও কাঁততে থাকলেন!!
অত:পর তাঁদের কাঁদতে কাঁদতে রাত ভোর হয়ে গেল!!!
মানুষের একমাত্র শান্তি, স্বস্হি,নিরাপত্তা,সম অধিকার আল কুরআনের সমাজে।রাসুলের আদর্শই মানবতার একমাত্র মুক্তির পথ।ন্যায় ইনসাফ,সাম্য পেতে হলে আল কুরআনের সমাজ ছাড়া বিকল্প নেই।
নেতা নির্বাচিত করবেন চোর,ডাকাত,খুনি, জালিমকে আর সেবা ও বিচার নিবেন হযরত উমর(রা.)-এর মত,তা কি করে হয়?
------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments