Recent Tube

পুরুষ ও নারীদের প্রতি আল্লাহ তা'আলা এবং রাসূল সাঃ এর কঠোর নির্দেশ ; শামীম আজাদ।

পুরুষনারীদের প্রতি আল্লাহ তা'আলা এবং রাসূল সাঃ এর কঠোর নির্দেশ;

      পুরুষের প্রতি নির্দেশ 

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ 
(নবী) মুমিন(পুরুষ)দেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। 
সূরা আন নুরঃ ৩০

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ।
সূরা আহযাবঃ ৫৩

 
عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، قَالَ‏:‏ قَالَ أَبُو مُوسَى. لَأَنْ تَمْتَلِئَ مَنْخِرَيَّ مِنْ رِيحِ جِيفَةٍ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ تَمْتَلِئَا مِنْ رِيحِ امْرَأَةٍ
আবু মুসা আশ’আরী রাঃ বলেন,
“আমার কাছে নাকের দুই ছিদ্রে নারীর সুবাস আসার চেয়ে মৃত লাশের গন্ধ অধিক পছন্দনীয়।” 

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ বলেন, 
عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: لَأَنْ أُزَاحِمَ بَعِيرًا مَطْلِيًّا بِقَطِرَانٍ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أُزَاحِمَ امْرَأَةً
“(পর) নারীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেয়ে আমার কাছে দগদগে ঘা’য়ের ঔষধ লাগানো উটের কাছে থাকা অধিক পছন্দনীয়।” 
মুসান্নাফু ইবনি আবী শাইবাহ, ৪/৭। ১৭২২৯,১৭২৩০।

ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻷَﻥْ ﻳُﻄْﻌَﻦَ ﻓِﻲ ﺭَﺃْﺱِ ﺃَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﺑِﻤِﺨْﻴَﻂٍ ﻣِﻦْ ﺣَﺪِﻳﺪٍ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻪُ ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﻤَﺲَّ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﻻ ﺗَﺤِﻞُّ ﻟَﻪُ
ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ ﻓﻲ " ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ " ‏( /20 211 ـ 212 ‏) ﺭﻗﻢ 486 ، 487

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
“কোনো অবৈধ নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার পেরেক পুঁতে যাওয়া ঢের ভালো।”
আল মু‘জামুল কাবির : ২০/২১১-২১২
আস-সিলসিলাতুস সহিহাহ : ২২৬

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ ‏.‏

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মহিলারা হচ্ছে আওরাত (আবরণীয় বস্তু)। সে বাইরে বের হলে শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায় অর্থাৎ শয়তান তাকে আরও আকর্ষণীয় করে দেখায়।

মিশকাত (৩১০৯), ইরওয়া (২৭৩), তা’লীক আলা ইবনি খুযাইমা (১৬৮৫)
জামে' আত-তিরমিজি ১১৭৩

তোমরা সেই মহিলাদের নিকট গমন করো না যাদের স্বামীরা বিদেশে আছে;

عَنْ جَابِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ لاَ تَلِجُوا عَلَى الْمُغِيبَاتِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنْ أَحَدِكُمْ مَجْرَى الدَّمِ ‏"‏ ‏.‏ قُلْنَا وَمِنْكَ قَالَ ‏"‏ وَمِنِّي وَلَكِنَّ اللَّهَ أَعَانَنِي عَلَيْهِ فَأَسْلَمُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏ وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُهُمْ فِي مُجَالِدِ بْنِ سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ ‏.‏ وَسَمِعْتُ عَلِيَّ بْنَ خَشْرَمٍ يَقُولُ قَالَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ فِي تَفْسِيرِ قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ وَلَكِنَّ اللَّهَ أَعَانَنِي عَلَيْهِ فَأَسْلَمُ ‏"‏ ‏.‏ يَعْنِي أَسْلَمُ أَنَا مِنْهُ ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ وَالشَّيْطَانُ لاَ يُسْلِمُ ‏.‏ وَ ‏"‏ لاَ تَلِجُوا عَلَى الْمُغِيبَاتِ ‏"‏ وَالْمُغِيبَةُ الْمَرْأَةُ الَّتِي يَكُونُ زَوْجُهَا غَائِبًا وَالْمُغِيبَاتُ جَمَاعَةُ الْمُغِيبَةِ ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসায়াম বলেছেনঃ যাদের স্বামী উপস্থিত নেই, সে সকল মহিলাদের নিকট তোমরা যেও না। কেননা, তোমাদের সকলের মাঝেই শয়তান (প্রবাহিত) রক্তের ন্যায় বিচরণ করে। আমরা বললাম, আপনার মধ্যেও কি। তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমার মধ্যেও। কিন্তু আমাকে আল্লাহ তা'আলা সাহায্য করেছেন, তাই আমি নিরাপদ।

আবূ দাউদ (১১৩৩-২১৩৪), তাখরীজু ফিকহিস সীরাহ (৬৫)।
জামে' আত-তিরমিজি ১১৭২

عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، رَفَعَهُ قَالَ ‏ "‏ يَا عَلِيُّ لاَ تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ شَرِيكٍ ‏.‏

বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

বুরাইদাহ্ (রাঃ)হতে মারফূ' হিসেবে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে 'আলী!  বারবার (অননুমোদিত জিনিসের প্রতি) তাকাবে না। তোমার প্রথম দৃষ্টি জায়িয ( ও ক্ষমাযোগ্য) হলেও পরের দৃষ্টি (ক্ষমাযোগ্য) নয়।
হিজাবুল মারয়াহ্ (৩৪), আবূ দাঊদ (১৮৬৫)।
জামে' আত-তিরমিজি ২৭৭৭

وَعَنْ أَبي طَلحَة زَيدِ بنِ سَهلٍ رضي الله عنه قَالَ: كُنَّا قُعُوداً بِالأَفْنِيَةِ نَتَحَدَّثُ فِيهَا فَجَاءَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ عَلَيْنَا، فَقَالَ: «مَا لَكُمْ وَلِمَجَالسِ الصُّعُدَاتِ ؟ اِجْتَنِبُوا مَجَالِسَ الصُّعُدَاتِ» فَقُلْنَا : إِنَّمَا قَعَدْنَا لِغَيْرِ مَا بَأسٍ، قَعَدْنَا نَتَذَاكَرُ، وَنَتَحَدَّثُ . قَالَ: «إِمَّا لاَ فَأَدُّوا حَقَّهَا : غَضُّ البَصَرِ، وَرَدُّ السَّلاَمِ، وَحُسْنُ الكَلَامِ» . رواه مسلم

আবূ ত্বালহা যায়েদ ইবনে সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, একদা আমরা ঘরের বাইরে অবস্থিত প্রাঙ্গণে বসে কথাবার্তায় রত ছিলাম। ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সেখানে) এসে আমাদের নিকট দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘তোমরা রাস্তায় বৈঠক করছ? তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক।’’ আমরা নিবেদন করলাম, ‘আমরা তো এখানে এমন উদ্দেশ্যে বসেছি, যাতে (শরীয়তের দৃষ্টিতে) কোন আপত্তি নেই। আমরা এখানে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করা ও কথাবার্তা বলার জন্য বসেছি।’ তিনি বললেন, ‘‘যদি রাস্তায় বসা ত্যাগ না কর, তাহলে তার হক আদায় কর। আর তা হল, দৃষ্টি সংযত রাখা, সালামের উত্তর দেওয়া এবং সুন্দরভাবে কথাবার্তা বলা।
(মুসলিম ২১৬১, আহমাদ ১৫৯৩২)

নারীদের প্রতি নির্দেশ 
=============================

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا 
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
সূরা আহযাবঃ ৫৯

يَا نِسَاء النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاء إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا 
হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।  
 
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا 
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।
সূরা আহযাবঃ ৩২-৩৩

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। 
সূরা আন নূরঃ ৩১

وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ مِنكُمُ الْحُلُمَ فَلْيَسْتَأْذِنُوا كَمَا اسْتَأْذَنَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ 
তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োপ্রাপ্ত হয়, তারাও যেন তাদের পূর্ববর্তীদের ন্যায় অনুমতি চায়। এমনিভাবে আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ তোমাদের কাছে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
সূরা আন নূরঃ ৫৯

عَنْ حَمْزَةَ بْنِ أَبِي أُسَيْدٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ وَهُوَ خَارِجٌ مِنَ الْمَسْجِدِ فَاخْتَلَطَ الرِّجَالُ مَعَ النِّسَاءِ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلنِّسَاءِ ‏ "‏ اسْتَأْخِرْنَ فَإِنَّهُ لَيْسَ لَكُنَّ أَنْ تَحْقُقْنَ الطَّرِيقَ عَلَيْكُنَّ بِحَافَاتِ الطَّرِيقِ ‏"‏ ‏.‏ فَكَانَتِ الْمَرْأَةُ تَلْتَصِقُ بِالْجِدَارِ حَتَّى إِنَّ ثَوْبَهَا لَيَتَعَلَّقُ بِالْجِدَارِ مِنْ لُصُوقِهَا بِهِ ‏.‏

হামাযাহ ইবনু আবূ উসাইদ আল-আনসারী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যখন তিনি মাসজিদ হতে বের হওয়ার সময় দেখেন, রাস্তায় পুরুষরা মহিলাদের সঙ্গে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদের বললেনঃ তোমরা একটু অপেক্ষা করো। কারণ তোমাদের রাস্তার মাঝ দিয়ে চলাচলের পরিবর্তে পাশ দিয়ে চলাচল করা উচিৎ। সুতরাং মহিলারা দেয়ালের পাশ দিয়ে চলাচল করতো, এতে তাদের চাদর দেয়ালের সাথে আটকে যেতো।  
আবু দাউদ ৫২৭২

কন্ঠ ও পায়ের যে পর্দা আছে তা হয়ত অনেক বোনই জানেন না। এই দুটি অংশ অবহেলা করার কারণে নারীদের পর্দা শুধু পোষাকেই সীমাবদ্ধ। যার কারনে নারীদের পর্দা পূর্ণাঙ্গ হয় না।

প্রয়োজনের খাতিরে কলেজ-ভার্সিটি-বাজার যেখানেই যাক পুরুষদের সাথে কথা বলতে হয়।

নারীদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের কন্ঠ অনেক মিষ্টি, যারা খুব সুন্দর শব্দ করে হাসতে পারে। এসব কন্ঠ বা হাসিতে অনেক পুরুষ মেয়েটির চেহারা না দেখেই প্রেমে পড়ার রেকর্ডও নতুন নয়।

অনেক বোনেরা মার্কেটে গেলে দোকানীদের সাথে বেশ সুন্দর করে কথা বলেন, দোকানীদের মন গলাবার চেষ্টা করেন। ক্লাসমেট বা কাজিনদের সাথে ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বলার ব্যপারটা তো আছেই।

অথচ এই কথার ব্যপারে মহান রব সতর্ক করেছেন আমাদেরকে। কারন, এর দ্বারা নারীরা নিজেদের পায়ে কুঠারাঘাত করে।

إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا
“যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করে থাক তাহলে মিহি স্বরে কথা বলো না, যাতে মনের দুষ্ট মনের কোন ব্যক্তি প্রলুব্ধ হয়ে পড়ে বরং পরিষ্কার সোজা ও স্বাভাবিক ভাবে কথা বল।” 
সূরা আল-আহযাবঃ ৩২

এক্ষেত্রে আমার মনে খারাপ কিছু না থাকলেও অপর মানুষটির মনে থাকতেই পারে। চেহারা দেখে মানুষের মনের ভাব বোঝা আমাদের অসম্ভব। তাই আল্লাহ  আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন।

সুতরাং এমনভাবে গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলতে হবে যেন সে নারীর কন্ঠে দুর্বলতা বা খারাপ ইঙ্গিত খুঁজে না পায়।

অনেক নারী মাঝে মাঝে উঁচু জুতা পরে রাস্তায় বের হয়, যা থেকে শব্দ তৈরি হয়। আবার অনেক কম বয়সী বোনেরা রাস্তায় চলার সময় লাফালাফি বা দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। ফলে তাদের পা দৃশ্যমান হয়ে পড়ে।

অনেক বোন হাতে চুড়ি বা পায়ে নুপুর পরে বের হন। এতে শব্দ সৃষ্টি হয়। একজন মুসলিম নারীর জন্য কখনোই এরকম উশৃঙ্খলতা শোভনীয় নয়। বরং এগুলো নির্লজ্জতার অংশ। আল্লাহ এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন। নারীদের পা যথাসম্ভব ঢেকে রাখতে হবে এবং তা আরেকজনের সামনে উন্মোচন করা যাবে না।

وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ
“এবং তারা যেন তাদের পা এমনভাবে না মেরে চলে যাতে তাদের লুকানো সাজ-সৌন্দর্যের কথা লোকেরা জেনে ফেলে। 
সূরা নূরঃ ৩১

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا كَانَ الْحَيَاءُ فِي شَيْءٍ إِلَّا زَانَهُ، وَلَا كَانَ الْفُحْشُ فِي شَيْءٍ إِلَّا شَانَهُ»

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী (সাঃ) বলেনঃ নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা কোন বস্তুর কেবল কদৰ্যতাই বৃদ্ধি করে। আর লজ্জা কোন জিনিসের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে। (আহমাদ, ইবনে মাজাহ)
আদাবুল মুফরাদ ৬০৪

অনেক সময় ময়লা লেগে যাবার ভয়ে আমরা নন-মাহরামদের সামনে বোরকা উঁচুতে তুলে রাস্তায় হাঁটে। আবার অনেকে বোরকার সাইজ ছোট করে ফেলে। এমনটি করা যাবে না। বরং ময়লা হলেও পা বোরকা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। কারণ পরবর্তীতে পাক মাটি এই নাপাকি সাফ করে দেবে। তাছাড়া এ ক্ষেত্রে আগে পর্দাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

এক মহিলা সাহাবী রাসূল (সা.) কে বলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ মসজিদে আসতে আমাদের পথটি নোংরা ও নাপাক। বৃষ্টিতে আমরা কি করব? রাসূল (সা.) বলেন, এরপরে কি আর কোনও পবিত্র রাস্তা নেই? সাহাবী বললেন, হ্যাঁ আছে। রাসূল (সা.) বলেন, তাহলে ঐটির বদলে এটি (অর্থাৎ নাপাক রাস্তা থেকে যে নাপাকি লাগবে, পরের ভালো রাস্তার মাটিতে ঘষে তা পবিত্র হয়ে যাবে।” [আবু দাউদ ১/১০৪, আলবানী জিলবাব পৃঃ৮১-৮২]

দেবর মৃত্যু সমতুল্য। (মৃত্যু থেকে মানুষ যেভাবে পলায়ন বা সতর্কতা অবলম্বন করে এক্ষেত্রে তাই করতে হবে) 

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلَى النِّسَاءِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ ‏"‏ الْحَمْوُ الْمَوْتُ ‏"‏ ‏.‏

উকবাহ্‌ ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হুঁশিয়ার! (বেগানাহ) নারীদের নিকট তোমরা প্রবেশ করা পরিত্যাগ করো। সে সময় আনসারীদের এক লোক বলল- দেবর সম্পর্কে আপনার কি মতামত? তিনি বললেন- দেবর তো মৃত্যু তুল্য। 
(ই.ফা. ৫৪৮৭, ই.সে. ৫৫১১)
 মুসলিম ৫৫৬৭

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم :«صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا : قَومٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ البَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلاَتٌ مَائِلاَتٌ، رُؤُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ البُخْتِ المائِلَةِ لاَ يَدْخُلْنَ الجَنَّةَ، وَلاَ يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكذَا». رواه مسلم

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘দুই প্রকার জাহান্নামী লোক আমি (এখন পর্যন্ত) প্রত্যক্ষ করিনি (অর্থাৎ পরে তাদের আবির্ভাব ঘটবে) : 
(১) এমন এক সম্প্রদায় যাদের কাছে গরুর লেজের মত চাবুক থাকবে, যা দিয়ে তারা জনগণকে প্রহার করবে। 

(২) এমন এক শ্রেণীর মহিলা, যারা (এমন নগ্ন) পোশাক পরবে যে, (বাস্তবে) উলঙ্গ থাকবে, (পর পুরুষকে) নিজেদের প্রতি আকর্ষণ করবে ও নিজেরাও (পর পুরুষের প্রতি) আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা হবে উটের হেলে যাওয়া কুঁজের মত। এ ধরনের মহিলারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সুগন্ধও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধ এত এত দূরত্বের পথ থেকে পাওয়া যাবে।’’

(মুসলিম ৫৪৭৫, ২১২৮, আহমাদ ৮৪৫১, ৯৩৩৮৮) 
উক্ত হাদীসে كَاسِيَات عَارِيَات এর ব্যাখ্যায় অনেকে বলেছেন, তারা আল্লাহর নেয়ামতের লেবাস পরে থাকবে, কিন্তু তাঁর শুকর আদায় থেকে নগ্ন বা শূন্য হবে। অথবা তারা এমন পোশাক পরবে, যাতে তারা তাদের দেহের কিছু অংশ ঢাকবে এবং সৌন্দর্য ইত্যাদি প্রকাশের জন্য কিছু অংশ বের ক’রে রাখবে। অথবা তারা এমন পাতলা পোশাক পরিধান করবে, যাতে তাদের ভিতরের চামড়ার রঙ বুঝা যাবে। রিয়াদুস সলেহিন ১৬৪১

حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ لاَ تُسَافِرِ الْمَرْأَةُ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ، وَلاَ يَدْخُلُ عَلَيْهَا رَجُلٌ إِلاَّ وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ‏"‏‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَخْرُجَ فِي جَيْشِ كَذَا وَكَذَا، وَامْرَأَتِي تُرِيدُ الْحَجَّ‏.‏ فَقَالَ ‏"‏ اخْرُجْ مَعَهَا ‏"‏‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ মেয়েরা মাহরাম (যার সঙ্গে বিবাহ নিষিদ্ধ) ব্যতীত অন্য কারো সাথে সফর করবে না। মাহরাম কাছে নেই এমতাবস্থায় কোন পুরুষ কোন মহিলার নিকট গমন করতে পারবে না। এ সময় এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি অমুক অমুক সেনাদলের সাথে জিহাদ করার জন্য যেতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্জ করতে যেতে চাচ্ছে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তার সাথেই যাও।
বুখারী ১৮৬২

عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ كُلُّ عَيْنٍ زَانِيَةٌ وَالْمَرْأَةُ إِذَا اسْتَعْطَرَتْ فَمَرَّتْ بِالْمَجْلِسِ فَهِيَ كَذَا وَكَذَا يَعْنِي زَانِيَةً ‏"‏ ‏.‏ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেছেনঃ প্রতিটি চোখই যেনাকারী। কোন নারী সুগন্ধি মেখে কোন মজলিসের পাশ দিয়ে গেলে সে এমন এমন  অর্থাৎ যেনাকারিণী।
জামে' আত-তিরমিজি ২৭৮৬

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا خَرَجَتِ الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَلْتَغْتَسِلْ مِنَ الطِّيبِ، كَمَا تَغْتَسِلُ مِنَ الْجَنَابَةِ مُخْتَصَرٌ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যখন কোন নারী মসজিদে যাওয়ার জন্য বের হয়, তখন যদি তার গায়ে সুগন্ধি লাগানো থাকে, তবে সে এমনভাবে তা ধুয়ে ফেলবে, যেন সে জানাবাতের গোসল করছে।
সুনানে আন-নাসায়ী ৫১২৭

অন্ধ পুরুষের সামনেও পর্দা করতে হবে,

وَعَنْ أمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : كُنْتُ عِنْدَ رَسُوْلِ اللَّه وَعِنْدَهُ مَيْمُوْنَهُ، فَأَقْبَلَ ابْنُ أُمُّ مَكْتُوْمٍ، وَذَلِكَ بَعْدَ أنْ أُمِرْنَا بِالْحِجَابِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: «اِحْتَجِبَا مِنْهُ» فَقُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ألَيْسَ هُوَ أعْمىٰ : لَا يُبْصِرُنَا، وَلَا يَعْرِفُنَا ؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم : «أفَعَمْيَاوَانِ أَنْتُمَا أَلَسْتُمَا تُبْصِرَانِهِ ؟» رواه أبو داود والترمذي وقَالَ: حَدِيثٌ حسنٌ صَحِيحٌ

উম্মু সালামাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। তখন তাঁর নিকট মাইমুনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা-ও ছিলেন। এমন সময় আবদুল্লাহ ইবনু উম্মু মাকতুম এসে হাজির হন। এটা আমাদেরকে পর্দার হুকুম দেয়ার পরবর্তী ঘটনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘‘তার সম্মুখে পর্দা কর। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে কি অন্ধ নয়? সে তো আমাদেরকে দেখতে পায় না, চিনতেও পারে না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা দু’জনও কি অন্ধ? তাকে কি তোমরা দেখতে পাও না?’’
রিয়াদুস সলেহিন ১৬৩৪

وعَنِ ابنِ عباس رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أنَّ رَسُول اللهِ  صلى الله عليه وسلم قَالَ: «لاَ يَخْلُونَّ أَحَدكُمْ بامْرَأَةٍ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ» . متفق عَليْهِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মাহরামের উপস্থিতি ছাড়া কোন পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে নির্জন-বাস না করে।’’
বুখারী ১৮৬২, ৩০০৬, ৩০৬১, ৫২৩৩, মুসলিম ১৩৪১, ইবনু মাজাহ ২৯০০, আহমাদ ১৯৩৫, ৩২২১, রিয়াদুস সলেহিন ১৬৩৭

উভয়ের প্রতি একই নির্দেশ 
-------------------------------------  

يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْءَاتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَىَ ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آيَاتِ اللّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ 
হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।
সূরা  আরাফঃ ২৬

وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً 
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।  
সূরা বনী ইসরাইলঃ ৩২

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ لِكُلِّ ابْنِ آدَمَ حَظُّهُ مِنَ الزِّنَا ‏"‏ ‏.‏ بِهَذِهِ الْقِصَّةِ قَالَ ‏"‏ وَالْيَدَانِ تَزْنِيَانِ فَزِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلاَنِ تَزْنِيَانِ فَزِنَاهُمَا الْمَشْىُ وَالْفَمُ يَزْنِي فَزِنَاهُ الْقُبَلُ ‏"‏ ‏.‏

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি আদম সন্তানের মধ্যে যেনার একটি অংশ আছে। অতঃপর পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ। তিনি বলেছেন, দুই হাত যেনা করে, হাতের যিনা হচ্ছে স্পর্শ করা। দুই পা যেনা করে, অগ্রসর হওয়াই হচ্ছে পায়ের যেনা, মুখও যেনা করে, মুখের যেনা হচ্ছে চুমু খাওয়া।
সুনানে আবু দাউদ ২১৫৩

وَعَنْ أَبي سَعِيدٍ رَضِيَ اللهُ عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «لاَ يَنْظُرُ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ، وَلاَ المَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ المَرْأَةِ، وَلاَ يُفْضِي الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ، وَلاَ تُفْضِي المَرْأةُ إِلَى المَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ الواحِدِ» . رواه مسلم

আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কোন পুরুষ অন্য পুরুষের গুপ্তাঙ্গের দিকে যেন না তাকায়। কোন নারী অন্য নারীর গুপ্তস্থানের দিকে যেন না তাকায়। কোন পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে একই কাপড়ে যেন (উলঙ্গ) শয়ন না করে। (অনুরূপভাবে) কোন নারী, অন্য নারীর সাথে একই কাপড়ে যেন (উলঙ্গ) শয়ন না করে।
মুসলিম ৩৩৮, আহমাদ ১১২০৭, রিয়াদুস সলেহিন ১৬৩৫

عَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم المُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ، وَالمُتَرَجِّلَاتِ مِنَ النِّسَاءِ . وَفِي رِوَايَةٍ : لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ . رواه البخاري

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন।’
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন।’
বুখারী ৫৮৮৫, ৫৮৮৬, ৬৮৩৬, তিরমিযী ২৭৮৪, আবূ দাউদ ৪০৯৭৮, ৪৯৩০, ইবনু মাজাহ ১৯০৪, আহমাদ ১৯৮৩, ২০০৭, ২১২৪, ২২৬৩, ২২৯১, ৩১৪১, ৩৪৪৮, দারেমী ২৬৪৯, রিয়াদুস সলেহিন ১৬৩৯

তাহলে দেখুন পর্দার কত সুক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ দিক আমরা এড়িয়ে চলছি। এই এড়িয়ে চলাটা দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদের মহাবিপদ ডেকে আনে। অথচ ইসলামের সত্যিকারের মুমিন-মুমিনাগন, উম্মুল মু’মিনীনগন কত সুন্দরভাবে চলাফেরা করতেন। সেই পর্দা করতে উভয়কেই চেষ্টা করতে হবে।
  আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে সঠিক উপলব্ধি করার তৌফিক দান করুন। 
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments